📚 আলোচনা প্রসঙ্গে দ্বিতীয় খণ্ড,
🔷 গুরু ধরব না , ছাপান্ন রকম করব — তাতে কিছু হয় না !
🔷 ছেলেপেলেদের কি করে কর্মঠ করে তুলতে হয়...
🔷 ছেলেদের মধ্যে স্বতঃস্বেচ্ছ দায়িত্ববোধ গজাবে কি করে ?
[P 179-189]
শ্রীশ্রীঠাকুর খাবার পর মাতৃমন্দিরের ঘরে এসে চৌকিতে বসলেন , একটা দরজা দিয়ে ঢুকতে যেয়ে পরক্ষণেই আবার সে - দরজা ত্যাগ করে অন্য দরজা দিয়ে ঢুকলেন , যে - দরজা দিয়ে কিনা রােজ ঢােকেন । মায়েদের মধ্যে অনেকে আসলেন । যশোহরের একটি মা তীর্থ - পৰ্য্যটনান্তে বাড়ী ফেরার পথে শ্রীশ্রীঠাকুর দর্শন করতে এসেছেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর ঔৎসুক্য সহকারে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন — কোন - কোন জায়গায় গিয়েছিলি ? কী কী দেখলি ? কেমন লাগলো ?
উক্ত মা — গয়া , কাশী , মথুরা , বৃন্দাবন , হরিদ্বার , ফেরবার পথে বৈদ্যনাথও দেখে এসেছি ।
—কেমন দেখলি ?
—ভাল । হরিদ্বারের দৃশ্য বড় সুন্দর । আর , বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরে আরতির সময় দেখতে বড় ভাল লাগে । এমনি অনেকে ভক্তিভরে স্তব - স্তোত্র পাঠ করে , বেশ লাগে । তবে প্রায় জায়গায়ই পাণ্ডাদের বড় অর্থলোভ , ভিতরে কোন ভাব নেই , পয়সা আদায় করার জন্য নানা কথা বলে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — নিজেদের স্বার্থই বোঝে না । মানুষ তাে দেবার আগ্রহ নিয়েই যায় , দিতেই তো চায় । নিজেদের হ্যাংলামী দেখিয়ে মানুষের দেবার প্রাণটাকেই ছোট করে দেয় । তবে ওদের দেওয়া ভাল । যাহোক ঠাকুর - দেবতার সেবা নিয়ে আছে তাে । এইসব পাণ্ডা যারা , তীর্থগুর যারা , তারা যদি সুসংস্কৃত হয় , সদাচার - পরায়ণ হয় , যাজনমুখর হয় , শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারে যত্নবান হয় , তাহ'লে তারা কিন্তু ঢের করতে পারে । এরা জেগে উঠলে প্রত্যেকটা তীর্থ লােকশিক্ষার ক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে । আমাদের প্রাচীন কৃষ্টির ভিতর , ইতিহাসের ভিতর , শাস্ত্রের ভিতর কী আছে , তা তো আমরা ভুলতেই বসেছি । এইগুলির চর্চা , আলােচনা ও প্রচার যত হয় , ততই ভাল । তীর্থক্ষেত্রগুলির ভিতর - দিয়ে এ - সব হতে পারে । তাই , আমার মনে হয় — কুলগুরু , পুরোহিত , পাণ্ডা — এদের মুক্ত হস্তে দেওয়াই ভাল । হাজার হ'লেও তারা বামনাই ব্যবসা নিয়ে আছে । তাদের যেমন দিতে হয় , শ্রদ্ধা করতে হয় , সঙ্গে - সঙ্গে তাদের মাথায় ধরিয়ে দিতে হয় , ব্রাহ্মণ হিসাবে তাদের করণীয় কী । এদের রক্তের মধ্যেই ও জিনিসটা থাকাই বেশী সম্ভব । একবার মাথায় ধরলে আর কথা নেই । শিক্ষার ও প্রেরণার প্রয়ােজন সকলেরই আছে । এদের আমরা কেবল দোষ দিই , দোষ না । দিয়ে যদি উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করি , তাহ'লেই হয় ।
—আমরা মেয়েমানুষ , আমরা কার কী করতে পারি ?
—মেয়েমানুষ হােক , ব্যাটাছাওয়াল হােক প্রত্যেকে যদি বিহিত আচরণশীল হয় , এবং ইষ্টের ভাবে অন্যকে ভাবিত করে তােলার বুদ্ধি ও চেষ্টা যদি সৰ্ব্বক্ষণ থাকে , কে যে কী করতে পারে , আর না পারে , তার কোন লেখাজোখা নেই । তোমার ঐ নাংলা কথায় কতজনের হয়তাে চৈতন্যের উদয় হয়ে যেতে পারে । সব সময় ঐ ধান্ধায় থাকা লাগে । পরমপিতার দয়ায় তোমরা কিন্তু কেউ কম নও ।
পরক্ষণেই শ্রীশ্রীঠাকুর হেসে বললেন - বদ্যিনাথের প্যাড়া আনিসনি ?
মাটি খুশি হয়ে বললেন , এনেছি , বড়মার কাছে দিয়েছি ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — সে তাে ভাল । তীর্থ ক'রে আলি , বেশী থাকে তাে এদের সবাইকে একখানা করে দে । ( মাটি তাড়াতাড়ি গেষ্টহাউসে দৌড়ে গিয়ে সেখান থেকে কিছু প্যাড়া এনে উপস্থিত সকলের হাতে একখানা করে দিলেন । )
শ্রীশ্রীঠাকুর - তীর্থের প্রসাদ , সশ্রদ্ধ যারা , তাদের বিতরণ করা ভাল ।
মা’টি বললেন — বেশী করে এনেছি , দেশে গিয়েও অনেককে দেব ।
শ্রীশ্রীঠাকুর —খুব ভাল । তীর্থের পুণ্যে তাের প্রাণ খুলে গেছে ।
উক্ত মা মাতীর্থ করার বাসনা ছিল অনেক দিন থেকে । অনেক তীর্থ ঘুরে এসে আজ মনে হচ্ছে , এই তীর্থের মত আর তীর্থ নেই । অন্য কোথাও যাওয়া মিছে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — মিছে কেন ? এ তীর্থ যদি তোমার কাছে সত্য হয় , তবে অন্য তীর্থও তােমার কাছে সত্য । যুগে - যুগে তিনি আসেন , তার লীলার অন্ত নেই । পূৰ্বতনদের লীলাস্থলগুলি যদি আমরা দেখি , তাদের কথা যদি আমরা পড়ি , স্মরণ করি , আলোচনা করি , তবে বর্তমানকেই আরো করে বােধ করতে পারি । তাই জীবন্তের সংস্পর্শে সঞ্জীবিত হলে কিছুই মিছে নয় । তখন তােমার ভিটেমাটি , পথঘাট সবই তীর্থের অনুরঞ্জনা লাভ করে , আর তীর্থ ক্ষেত্র বলে প্রখ্যাত যে - গুলি , সে - গুলি সম্বন্ধে তাে কথাই নাই । আমাদের পূজা পার্বণ , শ্রাদ্ধ - তর্পণ , ব্রত - উপবাস , প্রায়শ্চিত্ত , দানধ্যান , অনুষ্ঠান , দশবিধ সংস্কার , কুলাচার , শাপুরাণ , দেবদ্বিজ , তীর্থ সবই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ । সদ্গুরুনিষ্ঠ হ'য়ে , আচারবান হ'য়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে আমরা যদি এগুলি বুঝতে চেষ্টা করি , তাহ'লেই বুঝতে পারি । কোনোটা উড়িয়ে দিয়ে লাভ নেই । তবে মূল ছেড়ে , ডালপালায় ঘুরে বেড়িয়ে লাভ নেই । সেইজন্য শাস্ত্রে আছে — ‘ সর্ব্বদেবময়ো গুরুঃ । গুরু ধরব না , ছাপান্ন রকম করব — তাতে কিছু হয় না , ওতে মানুষ আস্তে - আস্তে পাগলাটে হয়ে যায় । ( এই সব কথাবার্তার পর শ্রীশ্রীঠাকুর খানিকটা সময় বিশ্রাম নিলেন । )
* * * * * * * * * * * * * ** * ** * * * * * **
সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে , রাত্রের অন্ধকারে আশ্রমের সম্মুখের দিগন্তবিস্তৃত প্রান্তর এক রহস্যময় নীরবতায় নিথর হয়ে আছে , উপরের তারাভরা আকাশ হাতছানি দিয়ে অনন্তের পানে ডাকছে মানুষকে , আর তারই পটভূমিকায় সান্ত ও অনন্তের মূৰ্ত্ত মিলনবেদী পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর মানুষকে ইঙ্গিত করছেন , সীমার মধ্যদিয়ে কেমন ক'রে অসীমকে স্পর্শ করতে হয়।
কেষ্টদা শিক্ষা - সম্বন্ধে কথা তুললেন । তপোবনের শিক্ষকও কয়েকজন আছেন ।
কেষ্টদা — ত্বরিত সিদ্ধান্ত - গ্রহণের ক্ষমতা শিক্ষার মধ্যদিয়ে সঞ্চারিত করা যায় না ? এবং তা ’ কেমন করেই বা করতে হয় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — হ্যাঁ , শিক্ষকের প্রতি টান থাকলে টক - টক ক'রে হয়ে যায় । শিক্ষকের চলনাও আবার টান উদ্রেক করার মত হওয়া চাই । শিক্ষক হবে loving ( প্রীতিময় ) অথচ ছেলেদের সঙ্গে honourable distance ( সম্মান যােগ্য দুরত্ব ) রেখে চলবে , তার ইষ্টমুখীনতা এতখানি normal ( সহজ ) , active ( সক্রিয় ) ও মুখর হওয়া চাই যা ছেলেরা সবসময় feel ( বোধ ) করতে পারে । এমনতর চরিত্র ছেলেদের আকৃষ্ট করবেই , তখন সেই শিক্ষককে খুশি করবার জন্য ছেলেরাও পাগল হয়ে ওঠে । এই রকমটা থাকলে , তখন সব কাজই ক্ষিপ্রভাবে করে শিক্ষককে সুখী করবার প্রবৃত্তি হয় । তার থেকে ত্বরিত সিদ্ধান্ত - গ্রহণের ক্ষমতাও গজায় । শ্রেয়ের প্রতি টান না থাকলে সিদ্ধান্তের একটা দাড়া থাকে না , তাই তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্তে আসতে পারে না । হয়তাে জিজ্ঞাসা করছে — এখানে অসুবিধা আছে , এখানটা ছেড়ে বাড়ী চলে যাবে কিনা । তার যদি ভাললাগা বলে কিছু থাকতো তবে সব দিক এমনভাবে নিয়ন্ত্রিত করত , যা’তে এখানে তার থাকাটা হয় । কিন্তু এই যে জিজ্ঞাসা করে , তার মানে , আমার কথামত বাড়ী গেলে বেঘোরে পড়ার ভয় থাকবে না । আদত ইচ্ছা তার বাড়ী যাওয়া , এখানে ভাললাগা নেই , অথচ মনে ভয় আছে , আমার মত না নিয়ে গেলে যদি কোন ক্ষতি হয় , কিন্তু এটা হয়তো জানে যে , কেউ এখান থেকে চলে যায় সেটা সাধারণতঃ আমি পছন্দ করি না । তাই দো - আঁশলা ভাব থাকে , পট করে স্থির করতে পারে না । মানুষের নেশা যদি একমুখী হয় , তখন তার সিদ্ধান্ত - গ্রহণে দেরী হয় না । বাধাবিঘ্ন - বিরুদ্ধতা যত যাই থাক না কেন , কিছুরই তোয়াক্কা করে না সে তখন । যা সমীচীন বলে বিবেচনা করে , তা ’ করেই ।
কেষ্টদা — অনুসন্ধিৎসা তাে ধর্মের একটা প্রধান জিনিস , এর শিক্ষা কেমন করে দেওয়া যায় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — অনুরাগই মূল বস্তু , ও থাকলে সব আসে । হয়তো পট ক'রে একটা কাজ করে নিয়ে আসতে বললেন , যাতে মাথা খাটাতে হয় , পরা মাত্র বাহবা দিলেন । আবার যদি নাও পারে , এমনভাবে lead ( পরিচালিত ) করলেন যে , সে যেন নিজে থেকেই পরলো , এমন বােধটা গজিয়ে দিলেন । এমন ক'রে ছাত্রের অনুসন্ধিৎসা পুষ্ট হতে থাকে । বাস্তব কাজকর্মের মধ্যে ফেলতে হয় । শুধু পড়াশুনার মধ্যে আবদ্ধ রাখতে নেই । হয়তো একজনের একটা খবর আনতে পাঠালেন । খবর নিয়ে আসার পর , সেই সম্পর্কে যা - যা ’ জ্ঞাতব্য থাকতে পারে , পইপই করে জিজ্ঞাসা করলেন , যেটা সম্বন্ধে সে খোজ নেয়নি , সেটা আবার খোঁজ নিয়ে আসতে বললেন , তখনও আবার খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন । আপনি প্রশ্নগুলি কেন করছেন , তার বাস্তব উপযােগিতা কী , তাও আবার বুঝিয়ে দেবেন । এইভাবে এমন করে এক - একটা জিনিস ধরবেন যে , সেই ব্যাপারের দুনিয়ার যা - কিছু জানবার , যা - কিছু ভাববার , যা - কিছু করবার , তা না জেনে , না ভেবে , না করেই সে পারে না । কাজকর্মের মধ্যে ফেলে এইভাবে প্রত্যেকটা জিনিস নিখুতভাবে ষোল আনা বুঝবার , জানবার ও করবার প্রেরণা দিয়ে দিবেন । তখন দেখবেন ধীরে - ধীরে একটা ন্যাক আসবে । হয়তো পণ্ডিতকে বললেন — দারােগাদার দোকান থেকে শুনে আয় তো বার্লি কত করে ? ও হয়তো এসে আপনাকে বলল — বালি পাচসিকে করে ! আপনি তখন হয়তাে জিজ্ঞাসা করলেন — কী বার্লি পাচসিকে করে ? পাচসিকের কৌটায় কতটুকু আছে ? আর কী - কী বালি ঐ দোকানে আছে ? কোন্ বালি কেমন ? কোন্টার দামই বা কত ? কয় রকম কৌটা পাওয়া যায় ? খােলা বিক্রী করে কিনা ? করলেই বা কী দাম ? এই প্রসঙ্গে হয়তাে জিজ্ঞাসা করলেন — বালি কিসের থেকে হয় বল্ তাে ? পরে আবার দোকান থেকে খবর জেনে আসতে পাঠালেন । জেনে আসলে খুশি হয়ে খুব তারিফ করলেন । এইভাবে করিয়ে নিতে হয় । বোধ - বিবেচনার পাল্লা বাড়িয়ে দিতে হয় । আমরা যদি আধখেঁচড়াভাবে চিন্তা করি , আধখেঁচড়াভাবে কাজ করি , আমাদের নিজেদের যদি অনুসন্ধিৎসা না থাকে , চতুর - চলন না থাকে , চার - চোখাে দৃষ্টি না থাকে , কোন একটা জিনিসের ভাল মন্দ , ন্যায় - অন্যায় , সুবিধা - অসুবিধা , উপযোগিতা - অনুপযােগিতা , অন্য পাঁচটার সঙ্গে তার সম্পর্ক ইত্যাদি তলিয়ে দেখবার বুদ্ধি ও অভ্যাস যদি আমাদের না থাকে , আমরা যদি পােড়ো পণ্ডিত হ'য়ে ও প'ড়ো পণ্ডিত তৈরী করে খুশি থাকি , তবে কিন্তু অনুসন্ধিৎসার চাষ দিতে পারব না ছেলেদের মাথায় । হাতে কলমে কাজ নিজেরা যত করবেন , করাবেন , তত প্রতিপদক্ষেপে অনুসন্ধিৎসার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করবেন । শিক্ষিত লােক বলতে আমি বুঝি করিৎকর্ম্মা লোক । তাকে যেখানে ছেড়ে দেন , সেখানেই সে অজেয় । সর্ব্বকর্ম্মে সিদ্ধি তার করতলগত । তার জন্য চাই বুদ্ধিমত্তা , অনুসন্ধিৎসা ও ইচ্ছাশক্তির অনুশীলন । প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য - অনুযায়ী প্রত্যেককে নূতন - নূতন পরিস্থিতির মধ্যে নূতন-নূতন দায়িত্বের মধ্যে ফেলে কাজ হাসিল করে আসবার জন্য ক্ষেপিয়ে দিতে হয়। প্রত্যেক ছাত্রের জানা ও অভিজ্ঞতার জগৎ শিক্ষকের নখদর্পণে থাকা চাই । এমন কাজ দিতে হবে যাতে সে common sense ( সহজজ্ঞান ) এর সাহায্যে তার জানাগুলি প্রয়ােগ করে সেই কাজ করতে পারে । এইভাবে অজানাকে জানায় উপনীত করে দিতে হবে । এটা শিক্ষার একটা মূলসূত্র । আর , অন্যকে নিয়ন্ত্রিত করার ব্যাপারে ছেলেপেলেদের লাগাতে হয় । দুনিয়ায় আমাদের সব চাইতে বড় কারবার মানুষের সঙ্গে । কিন্তু নানা প্রকৃতির মানুষকে কেমন করে সত্তাসম্বর্ধনার সহায়ক করে নিয়ন্ত্রিত করতে হয় , সে - শিক্ষা আমরা ছেলেদের দিই না । ঐ শিক্ষা যদি না হয় , তবে সব শিক্ষাই নিস্ফল হ'য়ে যায় । তাই একজনের হয়তো খুব রাগ বা অভিমান হয়েছে , তখন আর একটা ছেলের উপর হয়তো আপনি ভার দিলেন , যা ! ওর সঙ্গে এমন ক'রে মিশবি , যে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ও হাসিখুশি না হয়েই পারবে না । তুই ঠিক পারবি যা ! এখনই যা । এমনতর কাজ হাসিল করতে - করতে অনেক অনুসন্ধিৎসা , অনেক শুভবুদ্ধি , অনেক চারিত্রিক বল বেড়ে যায় । তখন তার ভাবা লাগে , কোন্ ভাবে কোন্ কথাটা বললে , চোখমুখের চেহারা কেমন করলে , কণ্ঠস্বরটা কেমন হলে , হাসিটা কেমন হলে তার ভাল লাগে , এতগুলি দিক ভাবা ও কাজে ফুটিয়ে তােলা চারটিখানি কথা নয় । কতকগুলি ক্ষেত্রে এই রকম করতে - করতে দেখবেন — সে কেমন দক্ষকৌশলী হ'য়ে উঠছে । একজন হয়তো কৃপণ মানুষ , ওল্লার পাছা টিপে খায় , আপনি লাগিয়ে দিলেন আর একজনকে — ‘ ওর কাছ থেকে পাঁচ টাকা আদায় করা চাই ঠাকুরের জন্য । এইগুলি sport- এর (খেলাধুলার ) মত চালাতে হয় । এক - একজনকে দিয়ে এক - এক রকম করাতে হয় । তখন দেখবেন অনুসন্ধিৎসা - অনুসন্ধিৎসা করে বক্তৃতা করা লাগবে না , ছেলেরা আপনা থেকেই অনুসন্ধিৎসু হয়ে উঠবে । গরজ বড় বালাই । ছেলেদের অনুসন্ধিৎসু হবার গরজ ও প্রয়োজনের মধ্যে ফেলুন । নিজেদেরও সেই গরজ ও প্রয়োজনের মধ্যে নিরন্তর রাখুন — ইষ্টার্থ পূরণী স্বতঃস্বেচ্ছ অগ্ৰহমদিরতা নিয়ে , তবেই দেখবেন সহজে হবে । শিক্ষাটাকে আড়ষ্ট ও বই - খাতা - কলমের মধ্যে আবদ্ধ করে তুলবেন না , শিক্ষাটা জীবনের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত জুড়ে । আর , এর ক্ষেত্র শুধু class - room (ক্লাসের ঘর ) নয় , এর ক্ষেত্র world - room ( জগতের ঘর ) । তাই , শিক্ষককে একটা ব্যাপক দৃষ্টি নিয়ে নিজেকে নিরন্তর প্রচেষ্টা ও প্রস্তুতির উপর রাখা লাগে , তবেই তার শিক্ষা ছাত্রকে বৃহত্তর জীবনের উপযুক্ত করে তুলতে পারে । এই শিক্ষাই হয় জীবনীয় ও জীবন্ত । সাধারণভাবে মাঝে - মাঝে অনুসন্ধিৎসা উদ্দীপী প্রশ্নাদি করতে হয় , আর , ছেলেপেলে যে - কোন প্রশ্নই করুক না কেন , ভালভাবে তাদের বোধগম্য করে উত্তর দিতে হয় । আমি অঙ্কের ক্লাসে জিজ্ঞাসা করেছিলাম , এক আর এক দুই হয় কি করে ? দুটো এক বরং হ’তে পারে । পৃথিবীতে কোন দুটো জিনিসই তাে অবিকল এক দেখা যায় না , সবই তাে স্বতন্ত্র , সবই তাে বিশিষ্ট । এখন যেভাবে বলছি , সেভাবে অতো বুঝিয়ে বলতে পারিনি , যাহােক তখনকার মত যে ভাষা জুটেছিল , তা দিয়ে ঐ প্রশ্নই করেছিলাম । আমার প্রশ্ন শুনে মাষ্টার সে কি বেদম মার , আমাকে একেবারে পা’ড়ে ফেলে দিলেন । আমি বুঝতে পারলাম না আমার অপরাধটা কী , কেন এত মারলেন মাষ্টারমশায় । সেই থেকে অঙ্ক শেখা আমার চাঙে উঠে গেল । তাই শিক্ষক যেন কোন ছাত্রের প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন না হন এবং কোন ছাত্রও যেন শিক্ষকের প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন না হয় । ভালবাসায় অনুসন্ধিৎসা উৎসারিত করে দেয় , বিদ্বেষ তাকে খর্ব্ব করে । শিক্ষকের নিজে অনুসন্ধিৎসা - প্রবণ হওয়া দরকার , তাহলেই তিনি ছাত্রের বাস্তব অনুসন্ধিৎসা - প্রসূত প্রশ্ন অনুধাবন করতে পারবেন , এবং তখন তিনি যদি কোন প্রশ্নের জবাব দিতে না - ও পারেন , তাহলেও তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না । তাই শিক্ষক স্বয়ং ছাত্র না হলে শিক্ষকতা ব্যাপারে তিনি অনুপযুক্ত ।
কেষ্টদা— Intuition ( অন্তদৃষ্টি ) -র training ( শিক্ষা ) তাে দরকার ?
শ্রীশ্রীঠাকুর - হ্যা । যেমন ধরুন , একটা গাছের ডাল ভেঙ্গে আন্দাজ করতে বললেন — কতগুলি পাতা আছে বল তাে ? ” — সে একটা বললো , ঠিক হলাে না । বার - বার এমনি করলে , তখন হয়তাে সে ভুল করলেও কাছাকাছি সংখ্যা বলে । এমনি করতে - করতে পরে যেটা ধরছেন , সেইটে নির্ভুলভাবে বলছে । আমি একটা বললাম , এইভাবে নানা এৎফাঁক করে intuition- এর (অন্তদৃষ্টির ) training ( শিক্ষা ) দিতে হয় । মাথায় ধ্যান রাখতে হয় , কেমনভাবে কোন জিনিসটা ঢোকাব । নানারকম প্রবৃত্তির ধান্ধা থাকলে , সে এসব পারে না । কেষ্টদা — হিটলারের শিক্ষা - সংস্কারে প্রধান জিনিস দেখতে পাই — শরীর গঠনে দৃষ্টি । পেশী যদি সবল না হয় , স্নায়ুর সহনক্ষমতা যদি বেশী না হয় , তাদের দিয়ে কোন কাজ হওয়াই তাে সম্ভব নয় , গুরুতর চাপ পড়লেই এলিয়ে পড়বে । এ - বিষয়ে শিক্ষার মধ্যে আমরা কী করতে পারি ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — ছেলেপেলেদের কর্মঠ করে তুলতে হবে — খেলাধুলো , ক্ষেত বােনা , কারখানার কাজ , বাজার - হাট করা , বিক্রি করা ইত্যাদি নানা কাজের ভিতর দিয়ে । বিশ - পঞ্চাশ মাইল হাঁটতে হয় , এমন কাজ দিলেন । আস্তে - আস্তে চাপ দিয়ে সইয়ে নিলেন । আবার , শরীর ভেঙ্গে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখলেন । যে - কাজটা করতে পনর মিনিট লাগে , পাঁচ মিনিটে তা করে ফেলতে বললেন , এইভাবে তাদের muscle ( পেশী ) adjust ( নিয়ন্ত্রণ ) করতে হয় । শীঘ্র , সুবিধায় , সুন্দরভাবে কাজটা যে কাবেজে আনতে পারলাে , তাকে বাহাদুরী দিলেন । বাহাদুরী এমনভাবে দেবেন , যাতে যারা তা পারলাে না তারা যেন মুসড়ে না যায় । সবাইকে আশা দিতে হবে , বলবেন , “ তােরও হবে , তুইও পারবি , এইভাবে করলে এখনই পারতিস , প্রায় হয়ে এসেছিল । Appreciation ( গুণগ্রহণ ) -টা বড় জিনিস , appreciation ( গুণগ্রহণ ) rightly adjusted ( যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত ) হ'লে প্রত্যেকটি ছেলেরই evolve ( বিকাশলাভ ) করবার সুবিধা । Ego ( অহং ) প্রত্যেকেরই আছে , তাই appreciation ( গুণগ্রহণ ) দিয়ে elate ( উদ্দীপ্ত ) করতে হয় । কাউকে দমিয়ে দিতে নেই , ওতে খুব ক্ষতি হয় । আর , ছেলেরা বাড়ীতে কে কী খায় সে - সম্বন্ধে খোঁজ নিতে হয়। কম খরচের মধ্যে খাওয়া - দাওয়ার ভিতর পুষ্টির দিক দিয়ে আর কী - কী জিনিস ব্যবহার করা যায় , বাড়ীতে মায়েদের শিখিয়ে দিতে হয় । আর ছেলেপেলেরা যাতে সদাচারে অভ্যস্ত হয় , বাড়ীতে ও স্কুলে তেমনতর শিক্ষা দিতে হয় ।
কথা হচ্ছে , এমন সময় প্যাণ্ডেলের ওখানে নাটকের মহড়া উপলক্ষে কে একজন চড়াসুরে গান ধরেছে , সঙ্গে সুর - তাল - লয় - সমন্বিত নানা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গত চলছে , নিস্তব্ধ রজনীতে সঙ্গীতের এই উদাত্ত সুর বড় মধুর লাগছে । শ্রীশ্রীঠাকুর উৎকৰ্ণ হ'য়ে শুনছেন । একটু পরে কেষ্টদার দিকে চেয়ে মধুরহাস্যে বললেন — ওরা বেশ আছে স্ফূৰ্ত্তিতে ।
কেষ্টদা হেসে বললেন — হ্যা ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — আপনাদের পয়সাকড়ি থাক বা না - থাক্ , সুখী আপনাদের মত কেউ নয় ।
কেষ্টদা – পয়সাকড়ি মোটে যখন ছিল না , সবাই মিলে আনন্দবাজারে একবেলা যখন খেতাম , তখন মনে হয় সুখ আরো বেশী ছিল ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — ঠিক কইছেন ।
সরােজিনীমা শ্রীশ্রীঠাকুরকে তামাক সেজে দিলেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর তামাক খাচ্ছেন আর কথা বলছেন । কেষ্টদা পূর্বপ্রসঙ্গে আবার প্রশ্ন করলেন— আমরা ছেলেদের কর্মঠ করার পরিবর্তে , পরীক্ষা - পাশ করাতেই তো ব্যস্ত , আর তারই তারিফ করি বেশী ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — যাদের motor nerve ( কর্ম্মপ্রবােধী স্নায়ু ; ) active ( সক্রিয় ) , যাদের co - ordination ( সঙ্গতি ) বেশী , তারা পরীক্ষার পড়াও পট ক'রে আয়ত্ত করতে পারে । ওতে বরং তাদের সুবিধাই হয় । সবটার সঙ্গে সবটা co - related (জড়িত ) । প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য - অনুযায়ী এক একজনের এক - একভাবে বোধ খােলে । এক - একটা মানুষ এক - একটা জীবন্ত যন্ত্র , তাকে fully ( পুরােপুরি ) study ( অনুধাবন ) করা চাই , তবেই তাকে evolve ( বিকশিত ) করানো সম্ভব হবে । একজন হয়তাে মূলতঃ mechanic ( কারিগর ) , সে হয়তাে অঙ্ক বোঝে না , কিন্তু mechanical line- এ ( কারিগরির দিকে ) সুযােগ দিয়ে তার মাথাটা যদি খুলে দিতে পারেন , তখন হয়তো দেখবেন সেই মাথা নিয়ে অঙ্কও সে ভাল বুঝবে ।
কেষ্টদা — ছেলেদের মধ্যে স্বতঃস্বেচ্ছ দায়িত্ববোধ গজাবে কি করে ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — শিক্ষকের nerve ( স্নায়ু ) , brain ( মস্তিষ্ক ) , muscle ( পেশী ) যদি তেমনভাবে adjusted ( নিয়ন্ত্রিত ) হয় , তবে তা ’ ছাত্রদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে । আর , পড়ায় সবসময় করা খুজে বের করতে হবে , প্রত্যেকটা theoretical ( তত্ত্বগত ) জিনিসকে ছাত্রদের দিয়ে practical shape ( বাস্তব রূপ ) দেওয়াতে হবে , এবং তা দৈনন্দিন জীবনের প্রয়ােজনীয় ব্যাপারের ভিতর - দিয়ে — সে কপির ক্ষেতেই পার , আর হাতুড়ি - বাটাল নিয়েই পার ! আমার ইচ্ছা আছে , শিক্ষকদের কারখানা , কেমিক্যাল , প্রেস , কাঠের কাজ ইত্যাদি সব কাজই শেখাব । আরাে ভাবি , নতুন করে সব বিষয়ে বই লেখাব , যাতে সহজে ছেলেরা মূল জিনিসটা ধরতে পারে , এবং তার বাস্তব প্রয়ােগ শেখে । কত কথাই মনে হয় — ভাবি তপােবনের একটা নিজস্ব কারখানা থাকবে , সেখানে master - machines ( মূল যন্ত্রপাতি ) সব থাকবে , লেদ , মিলিং , প্লেইনিং সব কাজ ছেলেদের শেখান হবে , প্রেসের মেসিন থাকবে , সে - কাজ শিখবে , আর শিখবে কামারশালার কাজ , কাঠের মিস্ত্রীর কাজ , কৃষি , বাঁশ ও বেতের কাজ , ঘর বাধা , রাজমিস্ত্রীর কাজ , কাপড় - বোনার কাজ , টাইপ রাইটিং না কি ? একেবারে চৌকশ হ'য়ে বেরুবে । যে - অবস্থায় ফেলে দেবে , সেখান থেকেই কেটে বেরুবে , পেটের ভাতের জন্য আর ভাবতে হবে না । তাছাড়া তারা এক - একজন নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠবে । ‘ অঞ্জনে পটু , সাশ্রয়ী কাজে , সুন্দরে সমাপন ’ এই হবে কাজের মানদণ্ড । আর , ক্ষিপ্রতা এত বাড়াতে হবে , motor .apparatus ( কর্মযন্ত্র ) এতখানি efficient ( দক্ষ ) ও active (কর্মঠ ) করে তুলতে হবে , যাতে দেখতে না দেখতে কাজ হয়ে যায় , যেন miracle ( অলৌকিক ঘটনা ) - ' Let there be light and there was light ' . ‘ আলো জ্বলুক বলিতে না বলিতে আলো জ্বলিয়া উঠিল — এই ভাব , যাকে বলে Blitzcrieg action (বিদ্যুদ্বেগে কাজ ) ।
শ্রীশ্রীঠাকুর এইবার ঈষদা - দাকে উদ্দেশ্য ক'রে সস্নেহে বলছেন — ঈষদা - দার সব গুণ আছে , একটা দিক একটু ঠিক করে নিলে হয় । Go - between ( দ্বন্দ্বীবৃত্তি ) -টা ছেড়ে দিতে হয় । প্রথমটা একটু কষ্ট হতে পারে , কিন্তু ক’দিন কষ্ট । কিছুদিনের কষ্টের পরই একেবারে line clear ( রাস্তা পরিষ্কার ) , ছয় মাস কষ্ট করে যদি চিরদিন princely way- তে ( রাজার ছেলের মত ) থাকা যায় , তবে সারাজীবন কে pauper ( দৈন্যগ্রস্ত ) হ'য়ে থাকতে চায় ?
কেষ্টদা কথাপ্রসঙ্গে বললেন — যাজন অনেকে করে , কিন্তু যাজন কাকে বলে তা ’ বলতে পারে না , জানে না ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — না জেনেও আরম্ভ করা ভাল । পড়ার সময় কোকিল ’ - কে যদি “ কুকিল ’ উচ্চারণ করতে থাকে , ধমক দিয়ে সঠিক উচ্চারণ যদি বলে দেওয়া যায় , সে তখন ১০।২০ বার তা উচ্চারণ করে ঠিক করে নেয় । কারও হয়তাে একটু -বেশী সময় লাগতে পারে , এই যা । পড়ার অভ্যাসটা আয়ত্ত করাও কম কথা নয় , ভুল পড়তে লাগলে , যারা জানে তাদের কথায় সারে ।
কেষ্টদা — যাজন তো সব ব্যাপারের মধ্যেই হবে , ধরুন , grammar ( ব্যাকরণ ) পড়াচ্ছি , সেখানে যাজন কেমনভাবে করা যায় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর— Grammar ( ব্যাকরণ ) পড়ানাের সময় কেইসান যাজন করেছি দেখেননি ? সব জিনিস বােঝানাের জন্য টুক করে নূতন - নূতন ছােট খাট word ( শব্দ ) ও example ( দৃষ্টান্ত ) indent ( আমদানী ) করতে হয় । Grammar ( ব্যাকরণ ) পড়াতে - পড়াতে হয়তাে ' Grammar of language , grammar of life ' ( ভাষার ব্যাকরণ , জীবনের ব্যকরণ ) এই বলে আরম্ভ করলেন । Principles of being and becoming ( বাঁচা - বাড়ার নীতি ) -কে " আদর্শ - সার্থকতায় সার্থক করে তােলাই যাজন । যাই করাই , যাই শিখাই , being and ' becoming- এর ( জীবন ও বৃদ্ধির সঙ্গে তার co - ordinated relation ( জড়িত সম্পর্ক ) demonstrate ( প্রদর্শন করতে হয় । Grammar ( ব্যাকরণ ) -ই পড়াই , আর যাই পড়াই , সব বিষয়ের ভিতর - দিয়ে যদি যাজন না হয় , তবে সে পড়ান ব্যর্থ ।
এইবার রাত বেড়ে উঠেছে , শীতের রাত , আসর ভাঙ্গার উপক্রম হচ্ছে । প্রফুল্লর মা প্রফুল্লর জন্য তার এক কোণায় দাড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন । তাই লক্ষ্য করে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — মায়ের মত বন্ধু নেই , কত লোক আগেভাগে চলে গেছে । ও ছাওয়ালকে সঙ্গে নিয়ে যাবে বলে এই শীতের মধ্যে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে । ( পাশ ফিরে ব’সে খোঁজ নিলেন ) -- প্যারী কোথায় ? সেই ছাওয়ালটার ( একটি ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার রোগী ) খবর তাে আর পেলাম না ।
বিদ্যামা প্যারীদাকে ডাকতে গেলেন ।
#আলোচনা_ প্রসঙ্গে_দ্বিতীয়_খণ্ড
https://www.amritokatha.in/
Telegram https://t.me/amritokatha
www.facebook.com/Amritokatha.in1

10