শিক্ষা :-
বিবেচনা নিয়ে অভ্যাস
তা’তেই জ্ঞানের অধ্যাস *। ১।
চরিত্রহীন শিক্ষক
ছাত্রের জীবন-ভক্ষক। ২।
পঠন, পাঠন, লেখা
তিন মিলনে শেখা। ৩।
বাস্তবতার পরিচয়ে
বোধ ফোটেনি যা’র-
অনুশীলন আর অভ্যাসেরই
দক্ষ-কুশল টানে,
বিদ্যা ধড়ে যতই থাক্ তা’
বাস্তবতার বা’র,
(সব) হাওয়াই আলো ঝাঁঝাল কথা
অবশ চক্ষু-কানে। ৪।
বলায়-করায়-চলায় যদি
শিক্ষাটা নাই ফুটলো,
বুঝলি না তুই, ওতেই যে তোর
শিক্ষাটি চোখ মুদলো ৫।
[*অধিষ্ঠান]
শিক্ষা দিবি কী?
আচারে না থাকলে শিক্ষা
কথার ঝিকমিকি। ৬।
লেখাপড়ায় নাইকো বিদ্যা
সহায়ক তা’র বটে,
বিদ্যাবত্তা মানেই জানা
কেমনে কী ঘটে। ৭।
যেমনতর বিদ্যাবত্তা
ঐতিহ্যকে বাতিল করে-
দাঁড়াহারা হয় যদি তা’
সে-পাণ্ডিত্য কেউ কি ধরে? ৮।
বাচক বিদ্যা যতই শেখ
তা’তে কিছু হো’ক না হো’ক,
অনুশীলনী কৃতি ছাড়া
বাড়বে নাকো জ্ঞানের ঝোঁক। ৯।
চলায়-বলায় কুশল যে-জন
কুশল যাহার বোধ-বিবেকে,
এমনতর মানুষ পেলে
শিখিস্ তা’কে ধ’রে থেকে। ১০।
অশিক্ষিতে শিক্ষা দেওয়া
বরং অনেক সোজা হয়,
কুশিক্ষিতের শিক্ষক হওয়া
সেটাই কঠিন, সোজা নয়। ১১।
শিক্ষা বনাম জল্পনাতেই
কাটছে যে তোর নিশিদিন,
বাস্তবেতে নাইকো কিছু
হ’চ্ছে ক্রমেই বোধ যে ক্ষীণ। ১২।
বাস্তববিদ্ যতই তুমি
বিজ্ঞ তুমি ততই ঠিক,
জাবর-কাটা চলন যতই
অজ্ঞ-দিশা তোমায় ধিক্। ১৩।
সর্ব্ব শাস্ত্রের সব সমাহার
বোধদীপনায় নেহাৎ বড়,
সুসন্দীপনী আবৃত্তিতে
জ্ঞান আসে তাই হ’য়ে দড়। ১৪।
কোথায় কীই বা কোরূপে রয়
দীপ্ত হ’য়ে কোন্ গুণে?
চলন-বলন কেমনতর
শাস্ত্র-সাহিত্য-দর্শনে!
প্রাজ্ঞ বোধের ভাগ্য যে এই
ভজন-বুদ্ধ পার্ব্বণে,
বুঝে-সুঝে মিলিয়ে নিস্ তুই
রাখিস্ তা’ বোধ-দর্পণে। ১৫।
যেটুক জানিস্ যেটুক বুঝিস্
খাটাস্ সে-সব মঙ্গলে,
জানা-বোঝার তাল পাকাস্ নে
কল্পনারই জঙ্গলে। ১৬।
দীক্ষা নিয়ে শিক্ষা ধরিস্
আচার্য্যকে ক’রে সার,
আচরণী বোধ-চয়নে
জ্ঞানের সাগর হ’ না পার। ১৭।
বই প’ড়ে তুই হ’লি যে বই
বইয়ের নিদান ধরলি না,
ধ’রে ক’রে না চললে কি
জাগবে বোধের নিশানা? ১৮।
চর্যা নাইকো যা’র
জ্ঞান কোথায় বা তা’র?
চর্য্যাবিহীন জ্ঞান-পোষণার
মূল্য কোথায় আর? ১৯।
শ্রদ্ধানিষ্ঠা আলোচনা,
কৃতি-অনুসরণ,
সার্থকতার বিভবে হয়
ধন্য সে-জীবন। ২০।
অনুশীলনী প্রভা যদি
বোধবিভায় না ফুট্ল তোর,
আয়ত্ত ক’রে জ্ঞান-দীপনায়
হ’লি নাকো জ্ঞানবিভোর। ২১।
হাবড়-জাবড় করলে
কিন্তু শিক্ষা হয় না কোন কালে,
সদ্-বিবেকে সরল ক’রে
অভ্যস্ত হ’ সুতাল-তালে। ২২।
জ্ঞান পেতেই তোর করতে হবে
হাতে-কলমে ভেবে-বুঝে,
বাস্তবতায় সুসন্দীপ্ত
রাখতে হবে বুঝে-সুঝে। ২৩।
দেখবি যেমন নিখুঁতভাবে
করায় করবি নিখুঁত তেমন,
নিখুঁত করার এই অভ্যাসে
বৃদ্ধি পাবে জ্ঞানের অয়ন। ২৪।
জ্ঞান-অয়নে চলবি যত
দেখে ক’রে সমীচীন,
বৃদ্ধি পাবে জীবন তোমার
তেমনি পাওয়ায় হবে না হীন। ২৫।
বোধ-অভ্যাসে না এলে কিছু
দক্ষদীপ্ত সুসম্বেগে,
হয় না সিদ্ধি, পায় না বৃদ্ধি,
উচ্ছলিত হয় না রাগে। ২৬।
আবৃত্তি কর্ ভাবে-কর্ম্মে
ধারণায় তুই ধ’রে নে না,
প্রজ্বলিত প্রবাহে তা’য়
আয়ত্তেতে এনে নে না। ২৭।
বই পড়াই শুধু বিদ্যা নয়কো
বিদ্যা-করায়, হাতে-কলমে,
অনুশীলনী কৃতি-দীপনায়
স্মৃতিদীপ্ত সৎ-করমে। ২৮।
বিদ্যমানের বিদ্যাবত্তা
সম্বিৎ নিয়ে বেঁচে থাকে,
দেখা-শোনা-করা-বোঝায়
পুষ্ট ক’রে তোল তা’কে। ২৯।
বাস্তবতায় যা’ জানিস্ তুই
বিদ্যা কিন্তু তাহারই নাম,
বাস্তবতার সঙ্গতিতে
নিষ্পাদনের পরম ধাম। ৩০।
শিখতে গেলে শিখবি যা’ তুই
দেখে-শুনে দিশে কর্,
বিনিয়ে রেখে মাথায় সেটা
যেমন করবি তেমনি ধর্। ৩১।
সৃষ্টি করার নিবেশ নিয়ে
সত্তার দিকে রেখে ধী,
সত্তাপোষী করণ-কারণ
সেই দিকে সব নে সাধি। ৩২।
আবিষ্কারে মন রেখে তুই
পরিষ্কারে বুঝে-সুঝে,
উপযোগী যেমনি দেখবি
করবি তেমনি নিটোল বুঝে। ৩৩।
ধারণমুখী ধী-টি রাখিস্
বীক্ষণাটি তীক্ষ্ণ যেমন,
দীক্ষণাকে তেমনি ক’রেই
লাগাস্ কাজে লাগে যেমন। ৩৪।
সুসংস্কার ও সত্তাকুশল
যা’তেই তোমায় ধ’রে রাখে,
সেই শিক্ষায় দক্ষ হ’য়ে
অমর কর জীবনটাকে। ৩৫।
জ্ঞান-আবেগে ভাববৃত্তি
ক’রে রঙ্গিল, তৃষ্ণাতুর,
সব জানাকে আয়ত্তে আন্
হ’ বিশেষে ভরপুর। ৩৬।
বহু বিশেষের সমন্বয়ে
এক বিশেষের উদ্ভাবন,
সব-কিছুরই চেনা-জানা
ঐ বিশেষের নিরূপণ। ৩৭।
কার্য্য-কারণ-পরিণতি
বোধ-বিকাশের সূত্র যেই,
কার্য্যকারণ-অবস্থিতি
যে-জন জানে জ্ঞানী সেই। ৩৮।
বিশ্লেষণ আর সংশ্লেষণের
জানাগুলির বিচারণায়,
বোঝ্ -বিশেষের স্ফুরণ
কেমন রূপ আর গুণের সুসঞ্জনায়। ৩৯।
দক্ষ-কুশল প্রবর্তনা
সৃষ্টি করাই শিক্ষার ধারা,
শিক্ষায় দক্ষ হ’বি যেমন
প্রতিফলনেও তেমন সাড়া। ৪০।
পড়াশুনা লাখ কর না
হাতে-কলমে করবে যা’,
ধীইয়ে-ধীইয়ে বিনিয়ে-বিনিয়ে, -
তা’র সমান কিছুই না। ৪১।
চর্য্যা-চলন করণ-বলন
শোভন যাহার যেমনি,
বিদ্যাবত্তা বোধদীপনাও
তাহার কিন্তু তেমনি। ৪২।
অনুকম্পাই বোধের বাহক
বোধই আনে জানা,
এমন আবেগ নাই যেখানে
জ্ঞান সেখানে কানা। ৪৩।
কী হ’লে কী করতে হয়
কী হয় কেমন হ’লে,
কী বা ভাল কী বা মন্দ
বুঝিস্ কুতূহলে। ৪৪।
বুঝবি যেমন করবি তেমন
বোধকে খাঁটি ক’রে,
ঐ করাই তো সুস্থি আনে
স্বস্তি রাখে ধ’রে। ৪৫।
লেখাপড়া জানিস্ না-জানিস্
বাস্তব পরিচয় নিরেট কর,
পর্য্যায়ে তা’র সুদূরপ্রসারী
কী ফল দাঁড়ায় সেটাও ধর্। ৪৬।
লেখাপড়া করবি যখন
মন-মাথাতে নিস্ এঁকে,
লিখে সেটা পরখ করিস্
যায় কি না-যায় তা’ বেঁকে। ৪৭।
ভেবে যেটা বলবি মুখে
বাস্তবে তা’ মিলল কিনা,
ধারণা কি শুদ্ধ হয় রে
এমনতর কর্ম বিনা? ৪৮।
ইষ্টনেশা ঠিক থাকে তো
শিক্ষা উছল হয়,
নইলে শিক্ষা অবশ মনে
গোলামিকেই বয়। ৪৯।
ভাষার কিন্তু কমই মানে
বোধ যদি তোর বোবা হয়,
সঙ্গতিশীল বোধভাতি যে
অস্তিত্বেরই দিগবলয়। ৫০।
বোধ যখনি নিষ্পাদনে
অভ্যস্ত ক’রে তুলবে,
প্রকৃতি তোয় বুধ-তকমায়
দুনিয়ার কাছে ধরবে। ৫১।
আবৃত্তি যদি বোধ না আনে
অনুশীলনী কর্ষণায়,
বাস্তব বোধ কোথায় পাবি
শুধু কথার বর্ষণায়? ৫২।
স্বাস্থ্যকৃতি তপ-উর্জ্জনা
বাড়ে যা’তে করবি তা’ই,
নিষ্ঠানিপুণ শিষ্ট চালে
পায় না এমন কিছুই নাই। ৫৩।
জ্ঞানার্জ্জনের বাঁধ রাখিস্ নে
যত পারিস্ সুযোগ কর,
উচ্চ বিদ্যা যেমন হোক্ না
গৃহস্থালীত্* পারিস্ ধর্। ৫৪।
নীরস কিংবা সরস পর্য্যায়ে
শিক্ষা দিতে বেছে নিও,
যেমন ঝোঁক যা’র তেমনি ক’রে
কৃষ্টিপথে তুলে দিও। ৫৫।
জন্মগত এক পর্য্যায়ে
নীরস-সরস আছে যা’রা,
ন্যাক্ বুঝে তা’র নিয়ন্ত্রণে
বাড়িয়ে তুলিস্ পারার ধারা। ৫৬।
সত্তাস্বার্থী অনুশীলন
সঙ্গতিশীল সকল দিক্,
অর্থান্বিত বাস্তবতা-
সহজ পণ্ডিত সেই তো ঠিক। ৫৭।
অধ্যাপক-নিষ্ঠাবিহীন,
ধৃতি-আচরণ নাইকো যা’র,
ইষ্টনিষ্ঠা ভাঙ্গে-গড়ে
উদ্বর্দ্ধনা কোথায় তা’র? ৫৮।
(* গৃহস্থালীতে)
নিষ্ঠাবিহীন যে অধ্যাপক
চরিত্রের সু-জেল্লা নাই,
নীতি-আচার পালে না যে-
শিক্ষার্থী পাবে কোথায় ঠাঁই। ৫৯।
চারু-যুক্তি, ভাব-শুদ্ধি,
সত্তাসাধী অভিযান,
চিন্তাচলন ক’রে বিনায়ন,
আসল কবির সেই তো স্থান। ৬০।
বাস্তব যা’ দেখে-বুঝে
বিশ্লেষণ আর সংশ্লেষণে,
বুঝে-সুঝে সাবুদ চলায়
হ’বি বিজ্ঞ বিজ্ঞানে। ৬১।
ভুল ক’রে যে খায়নি ধমক
পায়নি কোন লাঞ্ছনা,
ভুল তাহারে ভুলিয়ে নিয়ে
করেই জ্ঞানে বঞ্চনা। ৬২।
বই-পুস্তকে তত্ত্ব শেখা
হয় না বইয়ের পাতা খুঁজে,
বাস্তব জ্ঞান পেতে হবে
তথ্যটাকে জেনে-বুঝে। ৬৩।
বুঝ-সুঝ আর লেখাপড়া
জ্ঞানের পথে নয় বাজে,
জীবন-চাষে যা লেগে তুই
হাতে-কলমে ক’রে কাজে। ৬৪।
হাতে-কলমে ক’রে জানা
সেই জানাই তো জ্ঞান-অর্জ্জন,
বিন্যাসে যা’ আসেই বশে
কর্ তেমনই আয়োজন। ৬৫।
আত্মিক গতির যে-কল্পনা
ধীইয়ে ধৃতি উস্কে ধরে,
কৃতি-তপে সুঠাম হ’লে
জ্ঞান-উর্জ্জনা উপচ্চে পড়ে। ৬৬।
শোন্ ওরে তুই, বলছি আমি-
জ্ঞানের যদি করবি চাষ,
আচারবান্ আচার্য্যে ধর্
চর্য্যাতে থাক তাঁ’র সকাশ। ৬৭।
ধৃতি-আচারী আচার্য্য হ’লে
তোর আচারও দিন-দিন,
ধ’রে বেড়ে উঠবে ফেঁপে
উঠবিও তুই হ’য়ে প্রবীণ। ৬৮।
পারিবারিক শিক্ষাই আদি শিক্ষা
স্বভাব-চরিত্র নিয়ন্ত্রণ করে,
পরিবারের এইটি দেখে
সেইগুলি সব লোকে ধরে। ৬৯।
শিক্ষা যেথায় গলা-টেপা
হ’য়ে রয় না কোনদিন,
শিক্ষক পায় অর্ঘ্য ছাত্রের
শ্রদ্ধাচর্য্যা অনুদিন। ৭০।
শিক্ষক-চরিত্র এমন হবে
ছাত্রের তিনি শিক্ষক-পিতা,
পিতা হ’লেই হ’তে হবে
উন্নতিশীল চর্য্যা-পাতা। ৭১।
পাতা মানেই পালন-রক্ষা কর্তা
বুঝে রাখিস্ অন্তরে,
পালন-রক্ষণ আর বিনায়ন
দীপ্তিতে তোলে শিক্ষারে। ৭২।
পরিবেশের শিক্ষক-চৰ্য্যায়
যদি না থাকে উচ্ছলন,
সে-শিক্ষা কি তবে বাড়ে?
হয় সুন্দরে বিবর্দ্ধন? ৭৩।
শিক্ষকদের পরিপালন-ভার
গ্রামের কিন্তু নেওয়া ভাল,
নইলে শিক্ষক চাকরী-বশে
হ’য়ে ওঠে ক্রমেই কালো। ৭৪।
জীবন-যাগের আহুতিতেই
জানিস্ চরিত্র শিক্ষা-সেবা,
বাস্তব-জ্ঞান সঞ্চারণা
না করলে শিক্ষা পায় কেবা? ৭৫।
জ্ঞানী হ’বি চতুর হ’বি,
করবি নিয়ন্ত্রণ সেই জ্ঞানে,
লোকের যা’তে হয়ই ভাল
সেইটি যেন রয় প্রাণে। ৭৬।
বলেছি আগে, এখনও বলি-
ঐতিহ্য, প্রথা, সংস্কার,
তা’র বেদীতেই শিক্ষা গাঁথিস্
কৃষ্টিতপা হ’য়ে অপার। ৭৭।
বাস্তব আর বিষয়েতে
যোগ্য হ’লে সমীচীন,
যোগান দিয়ে দেখবি সেটা
সার্থকতা হীন না ক্ষীণ! ৭৮।
বিজ্ঞান-সাহিত্যে ভেদ করিস্ নে,
বিজ্ঞান দেখ সাহিত্যে কোথা!
সাহিত্যটা দেখ বিজ্ঞানে
এমনি দাঁড়ায় আন্ সমতা। ৭৯।
আইন-কানুন, বিজ্ঞান-সাহিত্য
যেমন যেথায় দেখতে পাবি,
সমত্বেরই চক্ষু দিয়ে
সে-সবগুলি কুড়িয়ে নিবি। ৮০।
বিদ্যার আদিম লক্ষ্যই জানিস
অমৃতকে খুঁজে পাওয়া,
ঐশ্বর্য্য-জ্ঞান-বিভবাদি
ঐ পথেতেই কুড়িয়ে নেওয়া। ৮১।
চলতে-চলতে দেখতে-শুনতে
যা’-কিছুকে পাচ্ছ তুমি,
অস্তি-স্বস্তি-ধৃতির তোমার
ক’রেই তোল পোষণ-ভূমি। ৮২।
খুব ক’রে নিপুণ জ্ঞানে
দেখাশোনা চলার সাথে,
সব দিক্ দিয়ে সিদ্ধ যে-জ্ঞান
তা’কেই নিও ধৃতিপথে। ৮৩।
স্নেহদীপ্ত অনুকম্পা,
শিক্ষকের হবে স্বভাব-রাগ,
ঐতিহ্য-সংস্কার-নিষ্ঠ হ’য়ে
বাড়াও তোমার কৃষ্টি-যাগ। ৮৪।
স্বভাব-আচার এমনি কর
ছাত্র-প্রাণস্পর্শী হয়,
শিক্ষার প্রথা এমনি সাধো
হৃদয়ে যা’তে সঞ্চারয়। ৮৫।
অন্তঃস্থ হওয়ার বৃত্তি
যেমনটি ঝোঁক নিয়ে থাকে,
রঙিল হ’য়ে যে-কোনভাবে
স্বভাবটিকেও রাঙিয়ে রাখে। ৮৬।
অধিনায়ক আর শিক্ষক যাঁ’রা
অন্ততঃ জানিস্ তাঁ’দিগের,
পোষণচর্য্যার উপকরণে
কৃতি-বিভব বাড়েই ঢের। ৮৭।
সুযুক্ত সু-কথাবার্তায়
সঙ্গতিশীল বাস্তবে,
রঙিল ধারা এঁকে দিবি
সুসন্দীপী সদ্ভাবে। ৮৮।
বোধ-চাতুর্য্যে খুবই দেখ
নিজে কিন্তু ভেবো না ‘জ্ঞানী’,
বাস্তবতার অভিসারে
ভাবলে অমন, হবে হানি। ৮৯।
ওরে পাগল! বুঝিস্ না কি
নরক-নিশান উড়ছে কোথায়,
একটা প্রধান নমুনা দেখ-
বিদ্যালয়ের সহশিক্ষায়;
ব্যতিক্রমের সংক্রমণী বীজ
রোপণ হ’য়ে যেথা হ’তে,
সমাজ-পরিবার-দেশটা সবই
যাচ্ছে জাহান্নমের পথে। ৯০।
বেদপাঠী হ’লি ভাল,
মূর্ত বেদ কি পেয়েছিস্?
মূর্ত বেদের বিনায়নে
বেদটিকে তুই সাজিয়ে নিস্। ৯১।
খুঁটিনাটি-সহ বাস্তব করায়
জানার আওতায় আসবে যা’,
বেদের অঙ্গ তা’ই-ই কিন্তু,
স্বতঃসূক্ত বেদের তা’। ৯২।
পারিস্ যেমন রোজই দিবি
শিক্ষক যিনি তাঁ’রে তোর,
শ্রদ্ধানিপুণ তেমন অর্ঘ্যে
বৃদ্ধি পাবে জ্ঞানের জোর। ৯৩।
চলাফেরা-কথাবার্তায়
উপদেশ যেন বিচ্ছুরয়,
উপদেশের চাইতেও জানিস্
সার্থকতা স্বভাব বয়;
এমন হ’লেই ভাববৃত্তি
স্পর্শে হৃদয় ছাত্রদের,
রঙিল হ’য়ে রইবে গেঁথে
আনবে তৃপ্তি অঢেল-ঢের। ৯৪।
দেখ, চল, নাও না বুঝে
ন্যায্য কী হয় বাঁচা-বাড়ায়,
অর্জিত বিদ্যা যদি থাকে
লাগাও সত্তা-স্বস্তি-সেবায়;
এমনি ক’রেই ধন্য হ’য়ে
আরো হওয়ায় চল তুমি,
নষ্ট চলন সব দূরে যাক্
স্বর্গ হউক্ মর্ত্য-ভূমি। ৯৫।
#শিক্ষা
#Anusruti_part_2
#অনুশ্রুতি_দ্বিতীয়_খণ্ড
#অনুশ্রুতি_২য়
#চতুর্থ_সংস্করণ
#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
Telelegram https://t.me/amritokatha
10