📚 আলোচনা প্রসঙ্গে দ্বিতীয় খণ্ড,
🔷 অপকর্ম করেও তাে বহু মানুষ বেশ সুখে - স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটিয়ে দেয় ?
🔷 সদ্গুরু লাভ হলে কৰ্ম্মফল বদলে যায়...
🔷 দয়া কথার মানে...
[ Pag 145 - 155]
শ্রীশ্রীঠাকুর ঘুম থেকে উঠে মাতৃমন্দিরের উত্তর দিকে আশ্রম - প্রাঙ্গণে বকুল গাছতলায় একটা হাতলওয়ালা লম্বা বেঞ্চে এসে বসলেন । ধীরে - ধীরে লোক জমা হতে লাগল । এক - একজন এসে প্রণাম ক’রে বসছেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর গ্রামের একজন মুসলমানের জন্য একটি লেপ তৈরী করতে দিয়েছিলেন , হরেনদা সেই লেপ তৈরী করে নিয়ে এসেছেন । শ্রীশ্রীঠাকুর লেপ দেখে খুব খুশি , বললেন — বেশ হইছে । আজই দিয়ে দিস , শীতে বড় কষ্ট পাচ্ছে ওরা । ••••••••• তা ’ লেপ তাে করিছিস ভাল , একটা ওয়াড় যদি করায়ে দিবের পারতিস্ , খুব ভাল হতো ।
হরেনদী — লেপই জোটে না , তার উপর আবার ওয়াড় ! এই রকম লেপ ওরা কোন দিন গায় দিছে ?
শ্রীশ্রীঠাকুর – দূর পাগল ! শুধু লেপের থেকে ওয়াড়ওয়ালা লেপে যে আরাম বেশী হয় , সে তো বুঝিস্ ? আরামবোধ সকলের শরীরেই আছে । ওয়াড় দিয়ে দেওয়াই ভাল । দিবিই যখন একটু খুঁত রাখবি কেন ? যা , বাজারে যেয়ে ওয়াড় করায়ে নিয়ে আয় গে । সন্ধ্যে - নাগাদ ওয়াড়শুদ্ধ লেপ ওর বাড়ী পৌঁছে দিয়ে আসবি ।
হরেনদা — এখন আবার টাকা পাব কোথায় ? আর এতদিনই যখন গেছে , একদিন দেরী করলি হয় না ? আমি এইমাত্র সহর থেকে আসে দুটো খাওয়া দাওয়া করে এখানে চলে আসছি । এখন আমার ঘুম পাইছে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — তুই শালা বুঝিস্ না । কাচ্চাবাচ্চাশূদ্ধ ওদের একটা রাত বেশী শীতে কষ্ট পাতি দিবি ক্যান্ ? তােরা থাকতি ওরা অযথা একদিন বেশী দুর্ভোগ ভুগবে ক্যান্ । •••••••••••• বোঁ করে সাইকেলে দৌড় মার , দেখিসহানে তাের ঘুম কোথায় পালায়ে যায় । অর , ওয়াড় ঠিক করে ওদের লেপ যখন দেওয়া হয়ে যাবে তখন দেখবি শরীরে কত স্ফূর্তি আসে । ••••••••• ও ডাক্তার ।
কিশােরীদা ( দাস ) তাড়াতাড়ি এসে হাজির হলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর — কয়ডা টাকা ওরে এখনই জোগাড় করে দাও তো , ওই লেপটার ওয়াড়ের জন্য । এক্ষুণি নিয়ে অস , দেরী করাে না , ও সন্ধ্যে - নাগাদ ওয়াড় করে নিয়ে আসবে । কিশোরীদা মিনিট - পাঁচেকের মধ্যে কয়েকটা টাকা এনে হরেনদার হাতে দিয়ে বললেন — এই নিয়ে যাও , আরাে যদি কিছু লাগে আমার কাছ থেকে নিয়ে নিও ।
শ্রীশ্রীঠাকুর এইবার হরেনদার দিকে চেয়ে হেসে বললেন — এইবার দাও তুফান মেল চালায়ে ।
হরেনদা প্রস্থানেদিত ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — তাড়াতাড়ি যেতে গাড়ী , ঘোড়া , মানুষ - গরুর উপর লক্ষ্য রাখিস্ কিন্তু !
হরেনদা , আচ্ছা ’ বলে বিদায় নিলেন ।
সাধনাদি ( শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রথমা কন্যা ) শ্রীশ্রীঠাকুরকে প্রণাম করে বেঞ্চখানির পূর্ব পাশে এসে দাড়ালেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — কি রে , কখন আসলি ?
সাধনাদি — এই একটু আগে । মা’র কাছে ছিলাম ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — তোর শরীরটা এমন শুকিয়ে যাচ্ছে কেন ?
সাধনাদি — পেটটা ভাল নয় । যা খাই , হজম হয় না ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — ওষুধপত্র খাস না ?
সাধনাদি- “ হ্যাঁ । প্যারীদা তাে ওষুধ দিচ্ছেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — আচ্ছা আমি প্যারীর কাছে শুনবােনে । ••••••••• তাের শ্বশুর শাশুড়ীর শরীর ভাল তাে ?
সাধনাদি — মােটামুটি ।
একটু পরে সাধনাদি আবার শ্রীশ্রীবড়মার কাছে গেলেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — সাধনা লেখে বড় সুন্দর । কি বলেন যােগেশদা ?
যােগেশদা ( চক্রবর্তী ) -হ্যা । ওর লেখাগুলি পড়ে বােঝা যায় , ওর conception ( ধারণা ) কত clear ( পরিষ্কার ) ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — শুধু conception ( ধারণা ) নয় , ওর জীবনের একটা গভীর যোগ আছে এর সঙ্গে । ওর আওতায় আশ্রমের মেয়েগুলির মধ্যেও একটা রং ধ'রে গেছে । শ্বশুরবাড়ীতে গিয়েও চাল - চলন , আচার - ব্যবহারে মুগ্ধ করেছে শ্বশুর শাশুড়ীকে । পরমপিতা করেন , ও সুস্থ শরীরে সুদীর্ঘজীবী হ'য়ে বেঁচে থাকে ।
বরিশাল থেকে একটি দাদা এসেছেন , তিনি কর্মকার , লোহার কাজ করেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে বলছেন — শুধু পেট চালিয়েই খুশি থাকিস না । তোর কাজ খুব ভাল করে শিখবি । এই তােদের উজিরপুরের কর্মকারই নাকি এমন পােলদি দিতে পারতো , যার কাছে শেফিল্ড - ই হার মেনে যেত । তোর পূর্বপুরুষরা কামান - বন্দুক পৰ্যন্ত তৈরী করে গেছে । তারা লোহার জিনিস এমন তৈরী করতে পারতো , যা শত - শত বছর আলো - জল - হাওয়ার মধ্যে থাকলেও মরচে ধরতাে না । এই কর্মকার - জাতির একটা বিরাট ইতিহাস আছে । সেই ইতিহাস খুড়ে বের করতে হয় । আর , জাতীয় ব্যবসায়ে উৎসাহিত করতে হয় সবাইকে । কাজকর্মের বিশেষ - বিশেষ কলা - কৌশল যা বিশেষ - বিশেষ পরিবারে সীমাবদ্ধ আছে , যার অনেকগুলি লােপ পেতে বসেছে , সেগুলিকে আয়ত্ত করতে হয় , উদ্ধার করতে হয় , লিপিবদ্ধ করতে হয় । সেই সঙ্গে - সঙ্গে ঘরোয়া প্রাচীন সরল রকমটা বজায় রেখে বৰ্ত্তমান বিজ্ঞানের কী - কী সাহায্য গ্রহণ করে কাজের মানটাকে উন্নীত করা যায় , সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয় । তােমাদের ভিতরকার শিক্ষিত ছেলেরা যদি এই কাজে লেগে যায় , ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায় যারা করছে , তারা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করলেও তা'দিগকে যদি সঙ্গবদ্ধ করে তোলা যায় , তাদের সুতর শিক্ষার ব্যবস্থা যদি করা যায় , তবে আমার মনে হয় , তােমরা এই যান্ত্রিক যুগে অনেক কিছু অবদান দিয়ে যেতে পার । তোমাদের ভিতর থেকে এমন - সব শিল্পী , এমন - সব কারিগর , এমনসব আবিষ্কারক গজিয়ে উঠতে পারে , যারা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেবে । আর , বিশেষ করে লক্ষ্য রাখতে হয় , যাতে আমাদের দেশের উপযোগী করে কুটিরশিল্পের যন্ত্রাদি আবিষ্কার করতে পার । আমাদের দেশের অবস্থা কী , কী - কী কুটিরশিল্প এখানে চলতে পারে , সেগুলির উপর লক্ষ্য রেখে যন্ত্র বানাতে হবে । ছোট - ছোট যন্ত্রের সাহায্যে কেমন করে লাভাবহ শিল্পের প্রবর্তন করা যায় , তাও তােমাদিগকে দেখিয়ে দিতে হবে । সঙ্গে - সঙ্গে সম্ভব হ'লে সমবেত চেষ্টায় বিভিন্ন স্থানে শিল্পের জন্য সস্তায় বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে । বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যতীতও যাতে যন্ত্রগুলি লাভজনকভাবে পরিচালনা করা যায় , সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে । ফলকথা , বৈদ্যুতিক বা বাষ্পশক্তির সাহায্য না নিয়েও তােমরা যেন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রতিযােগিতার সম্মুখীন হতে পার । বৈদ্যুতিক বা বাপশক্তির সৃষ্টি ও প্রয়ােগ বর্তমান অবস্থায় সর্বত্র সম্ভব হবে না , সেইজন্যই এই কথা বলছি । এইগুলি যদি তোমরা করতে পার , তাহলে দেখবে , তোমরাই হয়ে উঠবে দেশে শিল্প - পুনরুজ্জীবনের অগ্রদূত ।
বেলা প'ড়ে এসেছে । শ্রীশ্রীঠাকুর বরিশালের কর্মকার - দাদাটির সঙ্গে কথা শেষ করে তামাক খেলেন । পরে বললেন — চল , বেড়িয়ে আসি । এই ব'লে শ্রীশ্রীঠাকুর উঠে পড়লেন । উঠে আশ্রমের সামনে দিয়ে বাঁধের পাশের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসলেন চরে । সঙ্গে সামান্য কয়েকজন লােক । সূৰ্য্য তখন আবীর ঢেলে দিয়েছে পশ্চিম দিগন্তে , আর , তারই আভায় ঝিলের জলের দৃশ্য মনােরম বর্ণাঢ্য হ’য়ে উঠেছে । এখন শস্যাদি বেশী কিছু নেই মাঠে । দিগন্তবিস্তৃত প্রান্তর খানিকটা রিক্ত ও ধূসর । জায়গায় - জায়গায় দু'চারটে গরু , ছাগল ইত্যাদি চরে বেড়াচ্ছে । ঝিলের ওপাশে জলা জায়গাটায় একদল বক ব'সে আছে শিকারের সন্ধানে । আশ্রমের পাশে বাশবনে কতগুলি গ্রাম্য পাখী আপন মনে কলরব করছে । তাছাড়া চতুর্দিক নীরব , নিস্তব্ধ । শ্রীশ্রীঠাকুর চরের দিকে খানিকটা এগিয়ে একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আত্মহারা হয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখছেন ।
কিছুক্ষণ পরে রহস্যাবিষ্ট দৃষ্টিতে ফিরে চাইলেন , বললেন — এইসব দৃশ্য দেখতে - দেখতে নাম করলে খুব তাড়াতাড়ি উদ্দীপন হয় , শব্দ জাগে । নাম না করলেও শব্দ পাওয়া যায় । তােরা শুনতে পাচ্ছিস না ?
উপস্থিত সবাই বললেন না ।
—কী রে প্রফুল্ল , কিছু টের পাস্ না ?
-না , শুধু মনটা যেন ফাঁকা হয়ে আসছে ।
-ঐ তো ভাল লক্ষণ । চেপে নাম কর । খোলামেলা সব ঠিক পাবি । সৃষ্টিরহস্যের মানচিত্র উদ্ঘাটিত হয়ে যাবে । উরে বাবা ! (শ্রীশ্রীঠাকুরের শরীর চম্কে উঠলো ) —কত কী যে দেখা যায় তার কি অবধি আছে ? লক্ষ কোটি জীবনের ছবি দেখতে - দেখতে যেতে হয় । পৃথিবীর জীবন , তােমার জীবন , অনন্ত অতীত পর্দার পর পর্দা উদ্ঘাটিত হয়ে যায় । প্রচণ্ড অনুভবের চাপে ধড় ফেটে যেতে চায় । কষ্টও খুব , আনন্দও খুব । কষ্ট হলে কি হয় ? ছাড়ার জো নেই । নেশায় যেন অবশ করে টেনে নিয়ে যায় । নামের একটা নেশা আছে , সেই নেশা ঘাড় ধরে নাম করিয়ে নেয় । তুমি নাম করবে না ভাবলেই কি তখন নাম ছাড়তে পার ? ঐ নেশা তােমাকে রাহুর মত গ্রাস করে ফেলবে । তার কবল থেকে রেহাই পাবে না । কু - প্রবৃত্তি যেমন করে মানুষকে পেয়ে বসে , সু - প্রবৃত্তিও অমনি ক'রে পেয়ে বসে । নাম করতে - করতে দেখবে , নাম তোমাদের পেয়ে বসবে । নাম যখন পেয়ে বসবে , তখন আর ভাবনা নেই । সেই অবস্থাটা আনবার জন্যই প্রথমে চেষ্টাযত্ন করে নিয়মিত নাম করতে হয় । আগ্রহভরে নাম করতে - করতে ভিতরের ঠাকুর জেগে ওঠেন । তিনি জেগে উঠলে , সব সময় কেবল আসল ঠাকুরকে খোঁজেন । তার সেবা , তার যত্ন , তার স্মরণ , তার মনন , তার পূজা , তাঁর প্রীতি , তার প্রতিষ্ঠা এই ছাড়া তার সময় কাটে না । আর - সব তার কাছে নিরর্থক ও অবান্তর মনে হয় । যা - কিছু তাকে পরিপূরণ করে , প্রীত করে , তা , হাজার কষ্টকর হলেও সেখানে সে এক পায়ে খাড়া । আবার , ঐ ঠাকুরের পরিপন্থী যা ’ , তা ’ লাখ সুখের , আরামের ও আকর্ষণের হ'লেও , সেখানে সে ঠায় দাড়িয়ে থাকে কাঠ হয়ে , এক পা - ও এগােয় না সেদিকে ।
কথা বলতে - বলতে শ্রীশ্রীঠাকুর আশ্রম - অভিমুখে রওনা হলেন । চোখ - মুখ তার আনন্দে ফেটে পড়ছে , কথার মধ্যে ঈশ্বর - মত্ততার একটা অনির্বচনীয় অনুরণন , যা প্রাণকে পাগল করে তােলে , আকুল করে তোলে শ্রীভগবানের জন্য ।
হাটতে - হাঁটতে থমকে দাড়িয়ে সুধামাখা দৃষ্টি মেলে এক - একজনের পানে চেয়ে এক - একটা কথা তার মনে খােদাই করে দিচ্ছেন ।
বলছেন — শালী । দুনিয়ার সবাই পাগল । মেয়েমানুষ , নাম - কাম , টাকা পয়সা , পাণ্ডিত্য কতকিছুর জন্যই মানুষ পাগল হয় , কিন্তু আদত জিনিসের জন্য মানুষ পাগল হতে চায় না । তাকে পেলে কিছুই অ - পাওয়া থাকে না । আর, পাওয়া মানে হওয়া । ইষ্টকে তােমার মধ্যে বসিয়ে দিলে তােমার বৈশিষ্ট্যমত তুমি যা ’ হও , সেইটেই হলো তােমার ইষ্টপ্রাপ্তি । আর , এই ইষ্টের জন্য মানুষ যখন পাগল হয় , তখনই হয় সে প্রকৃতিস্থ । তার আগ - পৰ্যন্ত মানুষ অল্পবিস্তর অপ্রকৃতিস্থ জীবন যাপন করে । প্রবৃত্তির অধীন যেখানে যে যতটুকু , অপ্রকৃতিস্থও সেখানে সে ততটুকু তেমনি । আবার , এই অসঙ্গতি সে নিজে কিন্তু ধরতে পারে না , আবার , কেউ বললেও কাৰ্য - কারণ দেখিয়ে সেইটেই support ( সমর্থন) করে। তবে যারা সদ্গুরু গ্রহণ করে খানিকটা সেইপথে চলতে চেষ্টা করে , তাদের একটা মস্ত লাভ হয় এই যে , তারা নিজের ভুল কিছু - কিছু ধরতে পারে । ভুলকে ভুল ব'লে যে ধরতে পারে , তার পক্ষে তা শােধরন অনেক সহজ । উমেশদা ( বহিরাগত সৎসঙ্গী ) -ঠাকুর ! ভুল ধরতে পেরেও তো সব সময় শােধরান যায় না , তাতে ভিতরে একটা কষ্ট থাকে । ওর থেকে তো দেখি , অদীক্ষিত যারা , তারাই ভাল আছে , তাদের একটা আত্মসন্তুষ্টির ভাব আছে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর - পাঠাকে বলি দেবার আগে যখন ধান - দূর্বা খেতে দেয় , তখন পৰ্য্যন্তও তাে সে তা ’ সন্তুষ্ট চিত্তেই খায় । যখন কেউ টোপ ফেলে মাছ ধরে , তখন মাছও তো সন্তুষ্ট চিত্তেই টোপ গেলে । কিন্তু সে - সন্তুষ্টি তাদের সে - সত্তাকে কতখানি পূষ্ট করে , তা কি তারা ভেবে দেখে ? সদ্গুরুকে ধরেনি , কাজকর্ম করে , খায় - দায় বেশ আছে , তাদের বেলাও তেমনি । যে ভুল তার বিনষ্টির পথকেই উন্মুক্ত করছে , তাকেই হয়তাে সে মহা পুণ্যকর্ম ব'লে আঁকড়ে ধরে থাকে । ঐ ভুলের জমায়েৎ কর্মফল যখন হুড়মুড় করে তার ঘাড়ের উপর নামে , তখন হয়তো সে আর নিজেকে সামলাতে পারে না ।
উমেশদা — অপকর্ম করেও তাে বহু মানুষ বেশ সুখে - স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটিয়ে দেয় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — কর্মের ফল সব সময় হাতে - হাতে বোঝা যায় না। পূর্বে হয়তো তার কিছু ভাল করা আছে , তার ফলে এখন হয়তো সুখে - স্বাচ্ছন্দ্যে আছে, আবার এখনকার অপকর্মের ফল হয়তো পরে দেখা দেবে । মোটের পর কৰ্ম্মানুযায়ী ফল ফলবেই , সে আজই হােক আর কালই হোক । তবে মানুষ ইষ্টার্থী হ'লে , তার ভালমন্দ সবকিছুকেই ইষ্টাৰ্থপূরণী ক’রে তুলতে চায় , আর ঐ মহড়ায় পড়ে তার সবকিছুর একটা শুভ - নিয়ন্ত্রণ হতে থাকে । তাই বলে , সদ্গুরু লাভ হলে কৰ্ম্মফল বদলে যায় ।
শ্রীশ্রীঠাকুর কথা বলতে - বলতে আশ্রমে এসে পৌছেছেন । বাঁধের ধারে তাসুতে এইবার তক্তপােষের উপর পাতা বিছানায় বসেছেন । ব'সে একবার তামাক খেলেন । কাজল কেমন আছেন খোজ নিতে বললেন । কাজলের খবর পূজনীয়া ছােটমার কাছ থেকে শুনে এসে বলা হলাে । উমেশদা প্রভৃতি বাইরে দাড়িয়েছিলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — ঠাণ্ডায় বাইরে দাড়ানে । ভিতরে এসে বয় । যে কয়জন ছিলেন ভিতরে এসে বসলেন ।
উমেশদা - আপনি বলছিলেন , সদগুরু লাভ হ'লে কর্মফল বদলে যায় । কেমন ক’রে সেটা সম্ভব হয় , যদি বুঝিয়ে বলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর — ধর , তােমার কর্মফল এমন আছে যে একটা সময় তােমাকে বাড়ীছাড়া হয়ে পথে - পথে ঘুরতে হবে । ধর , তােমার স্ত্রী তােমাকে এতই উত্যক্ত করছে যে বাড়ীতে টেকা তোমার দায় — তােমার তখন পথে - পথে ঘাের ছাড়া উপায় নাই । তুমি হয়তাে সদগুরু গ্রহণ করেছ এবং যজনশীল । তখন হয়তো তুমি বাড়ীর এই অবস্থায় কিছুদিন আলগা থেকে কোন ঋত্বিকের সঙ্গে যাজন - ব্যপদেশে গায়ে - গায়ে ঘুরে বেড়ালে । তুমি যাজনে এমন মগ্ন হয়ে আছ যে , সেই আনন্দে তােমার শরীর - মন ভাল হয়ে গেল । যে - সময়টা খুব দুঃখে কাটা উচিত ছিল , ইষ্টস্বার্থ - প্রতিষ্ঠার হিল্লেয় পড়ে সেইটে পরম আনন্দের হয়ে উঠলো । এইরকম হয় ।
উমেশদার মুখখানি আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো । তিনি হেসে বললেন আপনি আমার খবর জানলেন কি করে ? আমি তাে আপনাকে বলিনি । যে উপমা দিয়ে বােঝালেন , সেটা যে আমার নিজের জীবনেরই ঘটনা ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — আমি কলাম কি ? তুই - ই তো কওয়ালি । বস্তু , ব্যক্তি বা পরিস্থিতি যখন যে - বোধ জাগায় মাথায় তখন তাই কই । আমি যে শালা কিছুই জানি না ।
উমেশদা — মানুষ অপকর্ম করেও যখন দেখি সুখে - স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে , তখন দুই - এক সময় মনে হয় , ঐ পথেই চলা ভাল । ওতেই বোধ হয় ভগবানের দয়া বেশী পাওয়া যায় , দরিদ্র থাকতে হয় না ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — দয়া তার কখনও ছাড়ে না আমাদের । তবে দয়া কথার মধ্যে আছে রক্ষা । নিজের ও অপরের সত্তা - সংরক্ষণী কর্ম যে যত করে , সে তার দয়াকে তত বেশী আয়ত্ত করে ও অনুভব করে । কর্মের কথা বলছি এইজন্য যে , কর্ম ছাড়া শুধু চিন্তায় কিন্তু হবে না । অপকর্ম করেও সাময়িক ভাল থাকতে পারে কেন , সে তাে পূৰ্বেই বলেছি । তবে এটা ঠিক — অবিবেকী যে , অপকর্ম করেও তার পৈশাচিক উল্লাস ঠিক থাকতে পারে , কিন্তু ভিতরে - ভিতরে তার সত্তা দিন - দিন শুকিয়ে যেতে থাকে । অন্তরের এই শূন্যতা ও শুষ্কতার বােধকে এড়িয়ে চলার জন্য সে হয়তাে আরাে অপকর্মে গা ঢেলে দেয় । কিন্তু সে যতই খাক - পরুক , আরাম করুক , শান্তি বা স্বস্তিবােধ ব'লে জিনিস তার জীবনে থাকে না । ঐশ্বর্যের স্তুপের মধ্যে থেকেও সে মহাদরিদ্রের জীবন যাপন , করে। আবার , সুকেন্দ্রিক সৎকর্মশীল যে , প্রতিমুহূর্তেই তার প্রাণ পুষ্ট হ'তে থাকে জীবনীয় আনন্দ - রসে । সে ভিক্ষুকের বেশে পথে - পথে ঘুরেও যদি বেড়ায় , তবু তার বুক ভরা থাকে । আবার , তার দরিদ্র থাকাও লাগে না । অবশ্য , কেউ - কেউ স্বেচ্ছায় দারিদ্র্যের জীবন বরণ করে নেয় , তারা ঐশ্বর্যের ঝামেলা বাড়নি পছন্দ করে না । তারা নিজেরা যথাসম্ভব স্বল্পে জীবন - ধারণ করে । কিন্তু অন্যকে দেবার বেলায় তারা হয় মুক্তহস্ত । আমাদের বীরেনদাকে দেখলেই হয়। আরো কত এমন আছে । ভােগ - ঐশ্বর্যের উপকরণ না - থাকাটা যদি একটা অপরাধের ব্যাপার হতো , তাহলে পুরুষােত্তম শ্রীকৃষ্ণ দুর্যোধনের রাজভােগ ছেড়ে বিদুরের খুদকুঁড়ো অতখানি শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করতেন না । শ্মশানবাসী সৰ্ব্বত্যাগী দিগম্বর শিব আমাদের পূজার পাত্র হতেন না । রবীন্দ্রনাথ বলেছেন-
“ যে মুহূর্তে পূর্ণ তুমি
সে মুহূর্তে কিছু তব নাই
তুমি তাই পবিত্র সদাই ।’
ফলকথা , রাজা হ'য়েও জীবনের গৌরব নেই যদি সুকেন্দ্রিক চরিত্র না থাকে , আর ফকির হয়েও জীবনে অগৌরব নেই যদি ঐ চরিত্র থাকে । সে ফকির থেকেও অন্যকে রাজা বানিয়ে ছেড়ে দেয় । যেমন করেছিলেন চাণক্য । আর , সে চাক বা না চাক , ঐশ্বৰ্য্য তাকে দাসীর মত সেবা করে ধন্য হয় । নারায়ণ যেখানে , লক্ষ্মীর আবির্ভাবও সেখানে অবশ্যম্ভাবী ।
সন্ধ্যার অব্যবহিত পরে মাতৃমন্দিরের দোতলায় শঙ্খ , ঘন্টা , কাঁসর বেজে উঠলো । এখন আশ্রমের মেয়েরা সমবেতভাবে আরতি , বিনতি - প্রার্থনাদি করছেন । আজ সাধনাদি উপস্থিত আছেন , তাই সকলের খুব আনন্দ ।
শ্রীশ্রীঠাকুরের তাসুতে ধূপ - দীপ দেওয়া হয়েছে । ধূপের পবিত্র মিষ্টি গন্ধে ঘরখানি আমোদিত ।
শ্রীশ্রীঠাকুর নির্বাক । কারও মুখে কোন কথা নেই । এই মধুর পরিবেশে প্রত্যেকে প্রাণমন ভরে নয়নাভিরামকে দেখছেন । কিছুক্ষণ পরে শ্রীশ্রীঠাকুর আপন মনে বলছেন — যদি কতকগুলি ইষ্টপ্রাণ ভাল scientist ( বৈজ্ঞানিক ) , mechanic ( কারিগর ) ও artist ( শিল্পী ) পেতাম , তাহলে অনেক কাজ করা যেত ।
প্যারীদা - কী কাজ ?
শ্রীশ্রীঠাকুর র — কতরকম তো বলিছি । আরাে মনে হয় , মানুষের সূক্ষ্মতর অনুভুতিকে জাগাবার জন্য আরাে অনেকরকম নুতন musical instrument( বাদ্যযন্ত্র ) , paintings ( অঙ্কন ) ইত্যাদি করা যায় ; বহু ভাল scent ( গন্ধ ) বের করা যায় । সাধন - ভজনের সময় রূপ , রস , গন্ধ ও শব্দের নানা রকমারি অনুভূতি হয় । সেই - সব জিনিসকে আমরা যদি বাহ্যিক রূপ দিতে পারি , তবে তা মানুষের সূক্ষ্মতর তর্জাতীয় অনুভূতির উদ্বোধনে সহায়তা করবে । খুব মাথাওয়ালা মানুষ চাই । আর তারা এইভাবের ভাবুক হওয়া চাই । তারা এই নিয়ে লেগে - পড়ে থাকবে । এমন - সব বাদ্যযন্ত্র করা যায় এবং এমন সব গৎ তাতে বাজান যায় যে , তা মানুষের মনকে বিশেষ - বিশেষ ঈপ্সিত স্তরে পৌছে দেবেই কি দেবে । রংয়ের এমন সমাবেশ করে এমন - সব ছবি আঁকা যায় , যে - সব ছবি দেখলেই মানুষের মন অন্তমুখী হয়ে উঠবে । এমন - সব গন্ধ । বের করা যায় , যে - গন্ধ মানুষের মনকে অবশ্যই পবিত্রভাবে উদ্দীপ্ত করে কারণ মুখী করে তুলবে । আশা , উদ্যম , ভরসা যা - ই সঞ্চারিত করতে চাই , তাই - ই তৎক্ষণাৎ সঞ্চারিত করতে পারবে , এমন শব্দ , গন্ধ ও রূপের সৃষ্টি করা অসম্ভব কিছু নয় । পুরাে scientific accuracy ( বৈজ্ঞানিক যাথার্থ্য ) নিয়ে আমরা এটা করতে পারি । শুনেছি , যা - কিছুরই একটা wave ( তরঙ্গ ) আছে , এই wave- এর ( তরঙ্গের ) আবার একটা specific ( বিশিষ্ট ) চেহারা আছে । রকমারি জিনিসের রকমারি wave- এর ( তরঙ্গের ) আবার একটা সম্পর্ক আছে । একজনের mental wave- এর (মানসিক তরঙ্গে ) হয়তাে deficiency ( খাকতি ) আছে ; শব্দ , গন্ধ ও রূপের মাধ্যমে প্রয়ােজনীয় wave ( তরঙ্গ ) impart (সঞ্চারিত ) করে আমরা হয়তো তার ঐ mental deficiency (মানসিক নূন্যতা ) cure ( আরোগ্য ) করতে পারি । শরীরের ব্যাধি , মনের ব্যাধি সারাবার ব্যাপারে গভীরতর শক্তি ও বােধের জাগরণে এগুলি কাজে লাগান যেতে পারে । তেমন মানুষ পেলে আমি অনেকখানি ধরিয়ে দিতে পারি । কিন্তু এর পেছনে আদাজল খেয়ে খাটা লাগবে ।
প্রফুল্লতাহলে তো মানুষের জন্মগত সম্পদ কম হ'লেও আটকাবে না । শ্রীশ্রীঠাকুর — খাদ্য , ওষুধপত্র , নামধ্যান , উন্নত - স্তরের শব্দ , গন্ধ , দৃশ্য , পরিবেশ , পূথিঁপত্র ইত্যাদির সাহায্য পেলেই সবাই যে সমানভাবে তার সুযােগ গ্রহণ করতে পারে , তা কিন্তু নয় । যার গ্রহণক্ষমতা যেমন , সে উপকৃত হবে তেমনি ততটুকু । সেটা আবার নির্ভর করে জন্মগত সংস্কারের উপর । একটা ঘটির পরিমাপ বা পরিমাণ যতটুকু , ততটুকু জিনিসই এ ঘটিতে ধরবে , এখন ঐ ঘটিতে তুমি যা - ই রাখ । তুমি ইচ্ছা করলে সােনাও রাখতে পার , আবার ছাইও রাখতে পার । তােমার ঘটিটা যতটুকুই হােক , তা যদি মূল্যবান জিনিসে ভরা থাকে , তাহলেই হ’লাে । ঘটি ছােট বলে তােমার দুঃখ করবার দরকার নেই । কোনটা মূল্যবান জিনিস , কোন্টা বাজে জিনিস তার একমাত্র মানদণ্ড হলো , সেটা ইষ্টের কাজে লাগে কেমন , কতটুকু । ঘটির কথা বললাম , এটা কিন্তু নিতান্ত উপমাচ্ছলে , তীব্র ইষ্টানুরাগে মানুষের আধারও যে বড় হয়ে না যায় , তা নয় । মানুষ যদি তার জন্মগত সম্ভাব্যতার মধ্যে চরম যতখানি , অনুশীলনের সাহায্যে ততখানিই বাস্তবায়িত করে তােলে সে - ই যথেষ্ট । প্রতিলোম যদি না হয় , কোন মানুষের মধ্যে সম্ভাব্যতা যে নিতান্ত কম থাকে , তা আমার মনে হয় না ।
কথা হচ্ছে এমন সময় কালীষষ্ঠীমা এসে হাজির হলেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে হাসিখুশি হ’য়ে বললেন - এই দেখ , পয়মন্ত মানুষ আ’সে গেছে । দেখলিই শালা পরাণ ঠাণ্ডা ।
কালীষষ্ঠীমা–যারে দেখলি পরাণ ঠাণ্ডা হয় , তার কাছেই তো মানুষ আসে । আমিও তাে ঠাণ্ডা হবার জন্য আপনার কাছে ছুটে - ছুটে আসি । সংসারের যে ঝামেলা ।
শ্রীশ্রীঠাকুর ( সহাস্যে ) —আমি কালীষষ্ঠী , কালীষষ্ঠী করে হা - পিত্তেশ ক'রে ব'সে থাকি , কালীষষ্ঠীর কি সময় আছে , সে আমার কাছে এসে ব'সে থাকবে ? তার কত কাজ ।
কালীষষ্ঠীমা - না ঠাকুর ! মস্করার কথা না । যখনই রাগ - ধাগ ক'রে আপনার কাছে কিছু বলতি আসি , আপনি হাসায়ে - রসায়ে ভুলায়ে দেন । কিন্তু সংসারে বড় জ্বালা । যতই করা যাক , খুশি করা যায় না কাউকে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর- —একজনের খুশির জন্য সব না করলি কি জনে-জনে খুশি করা যায় ? আমি কালীষষ্ঠী , কালীষষ্ঠী করি , কালীষষ্ঠীর পাত্তা পাই না , কালীষষ্ঠী ছাওয়াল - ছাওয়াল করে , কলবাড়ী - কলবাড়ী করে , সেগুলি গােছায়ে আওতার মধ্যি আনতি পারে না । ••••••• • এইতো দেখ দুনিয়ার হল , এখন কি করবা বল ?
কালীষষ্ঠীম — কতবার শুনিছি আপনার মুখে । বুঝিও সব । কিন্তু আমরা হলাম যে জ্ঞানপাপী । ঘর - সংসারের ' পর - ই তো আমাদের টান বেশী । আপনার উপর সেই টানটা হ'লে তাে দুঃখ অনেক কমে যেত ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — আমি ঘর - সংসার , বিষয় - আশয় কোনটা বাদ দিতে কই না । ওগুলি যদি ইষ্টের জন্য হয় , তাহলে কোন ভাবনা নেই । তোমার মধ্যে যদি সেই ধাঁজ থাকে , তবে ছেলেপেলেদের মধ্যেও তা ' ঢুকে যাবে । সংসার ভাল করে করতে পারবা , অথচ জড়ায়ে প’ড়ে হাবুডুবু খাবা না । ( একটুক্ষণ চুপ করে থেকে পরে বললেন ) -তুই যদি ভাল গিন্নী না হতিস্ , তাহ'লে কাচ্চাবাচ্চাদের নিয়ে সংসারটা কি এইভাবে তুলে ধরতি পারতিস ? আর , তাের ছাওয়ালরাও কিন্তু তোকে ভালবাসে খুব । তোর পর টান না থাকলি এতখানি পারত না ।
কালীষষ্ঠীমা — সবই আপনার দয়া ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — সে তাে হলো । আমাকে ভুরে তো দিলি না , আমি পায়েস খাব ।
কালীষষ্ঠীমা — ভূরে তাে যোগাড় ক’রেই রাখিছি , যেদিন ক'ন , এনে দেব ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — যেদিন আবার কী ? এখনই এনে বড় বৌয়ের কাছে দে । আজ রাত্রেই ভুরের পায়েস খাব । তাড়াতাড়ি নিয়ে আয় । উনােনে আঁচ থাকতিথাকতি নিয়ে আসা চাই ।
কালীষষ্ঠীমা দ্রুতপদে প্রস্থান করলেন ।
#আলোচনা_ প্রসঙ্গে_দ্বিতীয়_খণ্ড
https://www.amritokatha.in/
Telegram https://t.me/amritokatha
www.facebook.com/Amritokatha.in1

10