🔷 ectoplasmic body ( লিঙ্গশরীর ) সূক্ষ্ম দেহ...
🔷 destiny ( ভাগ্য ) কী করে তৈরি হয়....
🔷 চাণক্য নিজের দাতগুলি ভেঙ্গে ফেললেন.
🔷 মাতৃ ভক্তি..
🔷 ভগবান কী সুখে সুখী হন না , দুঃখেও কষ্ট পান না..
🔷সৰ্বজ্ঞত্ববীজ..
৬ ই চৈত্র , বৃহস্পতিবার , ১৩৪৭ ( ইং ২০/৩/৪১)
শ্রীশ্রীঠাকুর প্রাতে নিভৃত - নিবাসে কেষ্টদা ( ভট্টাচাৰ্য ) , শরৎদা ( হালদার ) , অবিনাশদা ( ভট্টাচার্য ) , নিবারণদা ( বাগচী ) প্রভৃতির সঙ্গে আনন্দ - উদ্দীপ্ত ভঙ্গীতে কথাবার্তা বলছেন । কণ্ঠস্বরে ও চাউনিতে তার কী যেন যাদু - তার ভিতর - দিয়ে তাঁর অপার বিশ্বাস ও আশাবাদিতা মুহূর্তে মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে যায় ।
যুদ্ধবিগ্রহ ও তজ্জনিত নানা অসুবিধার বিষয়ে কথা উঠলো । শ্রীশ্রীঠাকুর — যুদ্ধবিগ্রহ যা হচ্ছে তাতে যে - কোন result- ই ( ফলাফলই ) হােক না , পরমপিতার দয়ায় আপনাদের সুবিধাই হবে । আপনাদের কিছুতেই আটকাতে পারবে না । আপনাদের মানুষ যােগাড়ের কথা বলি , উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহের কথা বলি , আরো ভাল কৰ্মী পেলে আপনারা আরাে কতখানি করতে পারতেন । ভাল - ভাল কর্ম্মী জোগাড় করা ছাড়া পথও নেই । আপনারা কটা মানুষ , কোন দিক ঠেকাবেন ? যেমনতর দিন আসছে তাতে সারা দুনিয়ার মানুষের আর কোন পথই থাকবে না । পরমপিতার এ মহা - অবদানের জন্য সবাই তৃষিত হয়ে উঠবে । দেখবেন আপনাদের অপ্রস্তুতির জন্য সেদিন যেন কেউ বঞ্চিত না হয় ।
কোন একজনের অসাক্ষাতে তার চলনার অসঙ্গতি - সম্বন্ধে নিজেদের মধ্যে তীব্র আলোচনা হচ্ছিল । সেই আলােচনা শুনে শ্রীশ্রীঠাকুর হঠাৎ বাধা দিয়ে বললেন — অমনতর আলোচনা করলে মনের অবস্থা এমন হবে যে , ওকে আর tolerate ( সহ্য) করতে পারবি না , toleration ( সহ্যশক্তি ) না থাকলে tackle করতে ( নিয়ে চলতে) পারবি না , ওর কেবল দোষই দেখবি , morale ( নীতিবােধ ) খারাপ হয়ে যাবে । তাই বলে এ মনে করিস না যে , আমি ওর বাস্তব দোষটা সংশোধন করতে বারণ করছি । তা ঢের করবি । তা না করলে তো ওর সঙ্গে শত্রতা করা হবে । তবে কারও সম্বন্ধে এমনতরভাবে সমালোচনা করা বা মনােভাব পােষণ করা ভাল না , যাতে তার প্রতি মন বিরুপ হয়ে ওঠে , সহানুভূতি লােপ পায় । দোষটাকে ঘৃণা কর , কিন্তু , দোষীকে ঘৃণা করলে তাকে শুধরাতে পারবে না । দোষদীর্ণ যারা , তােমাদের ভালবাসার প্রয়ােজন তাদেরই সব চাইতে বেশী , কারণ , সেই ভালবাসা পেয়ে তারা তোমাদের যত ভালবাসতে শিখবে , শ্রদ্ধা করতে শিখবে ততই তাদের কল্যাণ — অবশ্য তোমরা যদি ইষ্টানুগ চলনে চল ।
ক্ষেত্ৰমা আসলেন কলকাতা থেকে । শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে দেখে খুব খুশি হয় সহাস্যে সােল্লাসে বলে উঠলেন — কি রে , কখন আলি ? তোর শরীর তাে খুব ভাল হইছে । কত বড় টিউমার হইছিল , দেখি ? শ্রীশ্রীঠাকুর মাঝে - মাঝে তামাক খাচ্ছেন এবং প্রসন্ন হাসিতে সকলের মুখপানে চেয়ে তাদের অন্তর যেন পরিপ্লাবিত করে দিচ্ছেন । এরপর ectoplasmic body ( লিঙ্গশরীর ) -সম্বন্ধে আলােচনা শুরু হলাে । প্রফুল্ল — একটা মানুষের যখন জন্ম হয় , তখন তার পূৰ্ব্বজন্মের ectoplasmic body ( লিঙ্গশরীর ) -টার অবস্থা কী হয় ? শুনেছি , সেটা যেখানে সঙ্গতি পায় সেখানে এসে রূপায়িত হয় । সে তো একটা শরীর , আর পিতামাতা থেকে আমরা পাই আর - একটা শরীর । এই দুই শরীরের সামঞ্জস্য খুজে পাই না । আবার , সে - শরীরটা এই শরীর বা পিতামাতার শরীরে ঢোকে কখন কীভাবে — এও তাে এক সমস্যা , আর ঢোকেই বা কী করে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর —আমরা যে ভাব বা ভাব - দেহ ( ectoplasmic body ) নিয়ে off ( বিগত ) হই , সেই ভাব বা ভাব - দেহের tuning ( সঙ্গতি ) যে - দম্পতির উপগতিকালে সৃষ্টি হয় , সেইখানেই আমাদের অর্থাৎ সেই ভাব বা ভাব - দেহের পুনরাবির্ভাব হয় । ভাব - দেহটা এতই সূক্ষ্ম যে সে যে - কোন স্থানে যে - কোন মুহর্তে প্রবেশ করতে পারে , তা'তে তার আটকায় না । আর প্রকৃত প্রস্তাবে ভাব - দেহ ও পিতামাতা থেকে প্রাপ্ত দেহ যে আলাদা তা নয় , ঐ ভাবদেহেরই জৈবী রূপায়ণই যেন এইটে । তুমি ও তােমার ফটো যেমন আলাদা দুটো মানুষ নয় , এও তেমনি । ভাবদেহ তথা পিতামাতার gene ( জনি ) -তে আমরা যেন বীজাকারে থাকি , আর সেইটেই যেন বৈধী বিধানের ভিতর - দিয়ে ফুটে ওঠে । ••••••••• যাই বল , মানুষের অমৃতত্ব লাভ না হ'লে কিছুই হলো না । অমৃতত্ব অমৃতত্ব কই , তারও মূল কথা হলাে স্মৃতিবাহী চেতনা । আমার জানাটা যদি environment - a ( ontforfata ) conscious identification সনাক্তকরণ ) না পায় , তবে তার সার্থকতা কী ? তবে একলার স্মৃতিবাহী - চেতনা হয়ে সুখ নেই , অনেকের হয় , তবে ‘ বোধয়ন্তঃ পরষ্পরম ’ হয়ে আনন্দ করা যায় । •••••••••
এক - একটা জন্তুকে দেখে কোন মানুষের কথা , আবার কোন - কোন মানুষকে দেখে এক - একটা জন্তুর কথা পট করে মনে পড়ে । আমি ভাবি , এ - সব কী , তবে আমি তাে পাগলও না ।
শরৎদা destiny ( ভাগ্য ) , দৈব ইত্যাদি সম্বন্ধে কথা তুললেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর অভিধান থেকে destiny- র ধাতুগত অর্থ দেখতে বললেন । শ্রীশ্রীঠাকুর — যাতে বা যা ’ নিয়ে আমার স্থিতি , অবস্থান বা দাঁড়ানটা দাঁড়িয়ে আছে তাই - ই আমার ভাগ্যের নিয়ামক । অর্থাৎ , আমার ভজনা যেমন , ভাগ্যও তেমন ।
মানুষের অনুরাগ ও সেবা যাকে ধ'রে যে - পথ বেয়ে যেমন চলবে , তার ভাগ্যও হয়ে উঠবে তেমনি । আর , দৈব কথাটাও এসেছে বিধাতু থেকে , তার মানে প্রকাশ , যে চরিত্র , চলন ও বুদ্ধি আমার মধ্যে প্রকাশিত , প্রকট ও দীপ্ত , আমার কর্মও হয় তেমন , ব্যবহারও হয় তেমন , আর প্রাপ্তিও হয় তেমনতর , বিধির বিধানে , পারিপার্শ্বিকের ভিতর দিয়ে । মানুষ এই সহজ কথাগুলি বোঝে না , না - করে পাওয়ার বুদ্ধিতে কত mal - psychology ( বিকৃত মনােবিজ্ঞান ) ঝাড়ে ।
৮ ই চৈত্র , শনিবার , ১৩৪৭ ( ইং ২২/৩/১৯৪১ )
শ্রীশ্রীঠাকুর সকালে নিভৃত - নিবাসে বসেছেন । নিভৃত - নিবাসটি যেন ঘরের মধ্যে ঘর , তিনদিক আটা - সাটা দেওয়াল দেওয়া , সামনে দক্ষিণ দিকটা খোলা । ঘরখানির উপরে কুঞ্জলতাদির বেষ্টন , ঘরের মাঝখানে একটি তাসু , তাতে বিছানা পাতা , পাশে র ্যাকে ক'রে কতকগুলি বইপত্র , তার পাশে ঘড়ি , কলম , খাতা ইত্যাদি । শ্রীশ্রীঠাকুর সেখানে দক্ষিণাস্য হয়ে বসেন । সামনে বিরাট মাঠ ও চর , ৮।১০ মাইল অর্থাৎ কুষ্টিয়া পর্যন্ত ফাকা , অদূরেই মাঠের মধ্যে হ্রদের মত একটা বিরাট জলাশয় , নিভৃত - নিবাসের ৫০।৬০ হাত দূরে কাছাকাছি কয়েকটা বনঝাউ গাছ , ঝাঁকে - ঝাঁকে কতরকমের পাখী সেখানে উড়ে এসে বসে , আবার আচম্বিতে কলরব করে উড়ে যায় । মাঠে কৃষকরা চাষবাষ করে , সেখান থেকে আনন্দে গান গেয়ে সােনার শস্য ঘরে তোলে । আকাশের আলোছায়া , রোদ - বাদল , জ্যোৎস্না অন্ধকার , দিগবলয়ের নানা রঙীন লীলা এখান থেকে পুরোমাত্রায় উপভােগ করা যায় । বর্ষাকালে পদ্মা যখন ফেপে - ফলে আশ্রমের পাদদেশ পর্যন্ত ধেয়ে আসে তাকে ধৌত করতে , তখন এ - ঘরের আকর্ষণ হয় আরাে সুনিবিড় । চারিদিক জলে জলাকার , মাঝি - মাল্লারা পাল তুলে সারিগান গেয়ে দলে - দলে নৌকা বেয়ে যায় , জেলেরা ডিঙ্গী নৌকায় মাছ ধরে , আর ক্রমাগত জলের ঢেউগুলি বাঁধের উপর আছাড় খেয়ে পড়ে , আর সেই শব্দ যেন মনকে সবকিছু থেকে টেনে নিয়ে যায় দূরে — অতিদূরে , অন্তরের অন্তঃপুরে — প্রিয়তমের সোহাগ - সিক্ত মণিমন্দিরে । এই নিভৃত - নিবাসে ব'সে শ্রীশ্রীঠাকুর কেষ্টদাকে ( ভট্টাচার্য ) বলছেন — যেখানে যার প্রয়ােজন , সেখানে তাকে দিয়েই কাজ করবেন । এক জায়গায় প্রফুল্ল , বীরেনের দরকার হলো , আর - এক জায়গায় হয়তো ব্রজেনদার দরকার হলাে যখন যেখানে যাকে দিয়ে হয় । মানুষগুলি ঠিক - ঠিক লাগাতে পারলে , অল্প মানুষ । দিয়েও ঢের কাজ হয় । প্রত্যেককে যথাস্থানে লাগান , যোগ্যতায় উদ্বর্ধিত করে তোলা এবং পারস্পরিক যােগসূত্র সৃষ্টি করে পরস্পরকে পরস্পরের সহায়ক করে তোলা এই - ই organisation ( সংগঠন ) । আমি যে এত কাণ্ড করেছিলাম আমার hand ( কর্মী ) ছিল মাত্র কিশোরী আর মহারাজ , পরে আসলাে গোসাই । এদের সব শিখিয়ে দিতাম , তাই এরা গল্প করত । কোথায় কী করতে হবে , কী বলতে হবে বলে দিতাম , সেইমত ওরা চলতে - বলতে চেষ্টা করতো , এর ফলে ব্যাপার তো নেহাৎ কম হয়নি তখন । এরা যে খুব পণ্ডিত বা বিদ্বান তাও তাে নয় । তবে ওদের টান ছিল তরতরে — শ্রুটি - বিচ্যুতি যাই থাক না কেন । ওরা তখন নেশাখােরের মতাে চলতো , এই নিয়ে মাতাল হয়ে থাকতাে । অমনটা নাহলে কাজও হয় না । সে কী দিনই গেছে । আবার ঐ রকমটা জাগিয়ে তুলুন । একটা ছোট্ট nucleus ( কেন্দ্র ) হ'লে সেইটেই দেখবেন চারিয়ে যাবে । শ্রীশ্রীঠাকুর নিভৃত - নিবাস থেকে বেরিয়ে তাতে এসে বসলেন । ধীরে - ধীরে লোকজন আসতে লাগলো , পর পর তিনটি দাদা আসিলেন , একজনের অসুখ , একজনের অভাব , আর একজনের সহকর্মীর সঙ্গে অসঙ্গতি । শ্রীশ্রীঠাকুর প্রত্যেককে যথাযােগ্য সমাধান ও ব্যবস্থা দানে উদ্দীপ্ত করে তুললেন । সহকর্মীর সম্বন্ধে যিনি অনুযােগ করছিলেন , শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে বললেন — প্রত্যেকের একটা ধরণ আছে , এই ধরণটা বুঝে যে - যে জায়গায় তার সঙ্গে লাগে সেই সব জায়গায় একটু পাশ কাটিয়ে গেলেই হয় । এরপর কেষ্টদা সৰ্বজ্ঞত্ববীজ - সম্বন্ধে প্রশ্ন তুললেন । শ্রীশ্রীঠাকুর — সর্বজ্ঞত্ববীজ মানে এ নয় যে Materia Medica ( মেটিরিয়া মেডিকা ) -খানা তার মুখস্থ । সৰ্বজ্ঞত্ববীজের তাৎপর্য হলো — তা থাকলে মানুষ যে - কোন situation ( অবস্থা ) বা affair ( ব্যাপার ) -এ পড়ুক না কেন , সেখানে বিহিত সমাধান বা বৈধী করণীয় কী তা সে বুঝতে পারে , বলতে পারে । একটি সত্যই নানারূপে লীলায়িত হয়ে উঠেছে নানা বৈশিষ্ট্যে , এর মূল mechanism ( মরকোচ ) যে উপলদ্ধি করে , তার মধ্যেই সর্বজ্ঞত্বের সম্ভাবনা ফুটে ওঠে । তাই সৰ্বজ্ঞত্ব বলেনি , সর্বজ্ঞত্ববীজ বলেছে । বীজ কথাটার একটা বিশেষ সার্থকতা আছে ।
পাতঞ্জলে আর - একটা আছে - ক্লেশকর্ম্মবিপাকাশয়ৈরপরামৃষ্টঃ পুরুষবিশেষ ঈশ্বর । তার মানে এ নয় যে তিনি অর্থাৎ অবতার - কল্প পুরুষ ক্লেশ বোধ করেন না । তিনি বোধ করেন সব , কিন্তু তাতে অভিভূত হন না , unbalanced ( সাম্যহারা ) হন না । অনেকে বলে , তিনি সুখে সুখী হন না , দুঃখেও কষ্ট পান না , সব তার কাছে অভিনয় — এ কিন্তু একটা অস্বাভাবিক ধারণা । অনেকে এই ধারণায় তার প্রতি cruel indifference ( নিষ্ঠর ঔদাসীন্য ) নিয়ে চলে , এটা যে কতখানি সবর্বনেশে ব্যাপার তা বলে শেষ করা যায় না । কথা হলো , তিনি আমাদের মতাে সুখ - দুঃখ বোধ করেন , তার মন ও ইন্দ্রিয়গ্রাম। তীক্ষ্ণ ও তাজা বলে তিনি বােধহয় আমাদের থেকে একটু বেশী করেই বোধ করেন । তিনি খান , দান , বেড়ান । তার অসুখ - বিসুখও করে , মনও খারাপ হয় । কিন্তু এসব সত্ত্বেও তিনি এ ছাড়া অনেক কিছু ; আর , স্বীয় সত্তার চেতনা হারিয়ে তিনি কখনো আত্মহারা হন না । আমি হাসি , কাদি , যাই করি — আমি যে - শিবচন্দ্র চক্রবর্তীর ছেলে এটা ভুলিয়ে দিতে পারে না ।
এরপর sexology ( যৌন - বিজ্ঞান) -সম্বন্ধে কথা উঠলো । শ্রীশ্রীঠাকুর স্মিতহাস্যে বললেন- Sexology- সম্বন্ধে আমি যত কথা বলেছি , তা বাৎস্যায়নের মতো না হলেও তার বাচ্চার মতো ।
কেষ্টদা চাণক্যের মাতৃভক্তির প্রসঙ্গে বললেন — গল্প আছে , একদিন একজন দৈবজ্ঞ এসে চাণক্যের মাকে বলেছিল যে , চাণক্যের সামনের দাঁতগুলি যেমন উচু , এটা একটা পরম সুলক্ষণ , ও একদিন রাজা হবে । চাণক্য তখন বাড়ীতে ছিল , পরে যখন বাড়ীতে ফিরে আসল , সেই সময় মা কৃত্রিম অভিমানভরে বললেন —দৈবজ্ঞ বলছে , তােমার যেমন দাঁত উচু , একদিন তুমি রাজা হবে , রাজা হ'লে তো আমাকে ভুলে যাবে , তখন কি আর আমার কথা মনে থাকবে ? চাণক্য সেই কথা শুনে তাড়াতাড়ি গিয়ে নােড়া দিয়ে তাজা দাতগুলি ভেঙ্গে ফেললেন । তার কথা হ'লল , দাঁত থাকলে যদি রাজা হ'তে হয় , এবং রাজা হবার ফলে যদি মাকে ভুলে যেতে হয় , সে দাত রেখে লাভ কী ? শ্রীশ্রীঠাকুর — এই হলাে আদত মাল । তোমার এমন কোন প্রবৃত্তি বা পছন্দ থাকবে না , যা ’ প্রেষ্ঠকে ছাপিয়ে ওঠে , যা তুমি quickly ( ত্বরিতভাবে ) , easily ( সহজভাবে ) ও willingly sacrifice ( স্বেচ্ছায় ত্যাগ) করতে পার না প্রেষ্ঠের জন্য । ঐ ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠাপন্নতা — সর্বত্রই ঐ এক কথা , ও - ছাড়া আর কথা নেই । গীতায় যে এত কথা তারও সার এই ।
শ্রীশ্রীঠাকুর চক্রপাণিদাকে ( দাস ) তাড়াতাড়ি চলে এসে তপােবনকে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চেষ্টা করতে বললেন । নিবারণদাকে ( দত্ত ) বললেন — নিবরণদা ! আপনি with every urge and energy ( আবেগ ও উৎসাহ - সহকারে ) ক্ষিতীশদাকে ( সান্যাল ) assist ( সাহায্য) করুন ।
নিবারণ দা — আমি কি পারব ?
শ্রীশ্রীঠাকুর - হ্যা । কেন পারবেন না ? খুব পারবেন , আপনি টাকা collection ( সংগ্রহ ) করুন , দালানগুলি তুলে ফেলুন ।
নিবারণদা — আপনার আশীৰ্ব্বাদ থাকলে পারব ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — অশীৰ্ব্বাদ কী ? এইই তো আমার প্রাণের ক্ষুধা ।
শ্রীশ্রীঠাকুর আহেদকে বললেন — আমাকে কয়েকটা ভাল কলার চারা জোগাড় করে দিতে পারিস ?
অহেদ -তা পারি ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — তাহলে দিস । আমি কয়েকজনকে বাড়ীতে কলাগাছ লাগা বার কথা কইছি । তারা নিজের জোগাড় করবে কিনা ঠিক কি ? অন্ততঃ জোগাড় করে দিলি যদি লাগায় ।
10