🔷 শিক্ষা সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা...
🔷 কর্মফল বদলানো ...
🔷 ঠাকুরের অন্য জন্মের স্মৃতি...
🔷 মঙ্গল ছাড়া অমঙ্গল প্রসব করবেই না...
🔷 প্রয়োজন তার চাইতে বেশী খেলেই আয়ু কমে..
🔷 শ্রীশ্রীঠাকুরের সুপুরির কৌটায় বিষ..
৪ ঠা ভাদ্র , মঙ্গলবার , ১৩৪৭ ( ইং ২০/৮/১৯৪০ )👇
আজ বিকেলে ফকিরবাবু ( বন্দ্যোপাধ্যায়— Rajsahi Division- এর Inspector of schools ) শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে এসেছেন । শ্রীশ্রীঠাকুর বাধের ধারে তাসুতে বসা । শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে আব্দারের সুরে বলতে লাগলেন — দেখুন , আপনি এমন একটা arrangement ( ব্যবস্থা ) করে দেন যাতে আমাদের ছেলেদের আর কোন অসুবিধা না হয় , এমনিভাবে করবেন যা'তে আপনার পরে অন্য কেউ তা উল্টাতে না পারে ।
ফকিরবাবু — তা চেষ্টা করলে এখানে একটা centre ( কেন্দ্র ) করা যায় । আর , তপোবনের ছেলেদের সম্বন্ধে office ( অফিস ) -এর impression ( ধারণা ) এই যে , এখানকার ছেলেরা আগে অন্য school- এ পড়ে সেটা গােপন করে , তাই খুব scrutinise করে ( খুটিয়ে দেখে ) । Certificate ( সার্টিফিকেট ) নিয়ে আসলেই তো গণ্ডগােল থাকে না ।
শ্রীশ্রীঠাকুর— Certificate ( সার্টিফিকেট ) যদি অনেও , তাহলে due time ( উপযুক্ত সময়ে ) -এর আগে পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা করতে পারেন না ?
ফকিরবাবু — হ্যা , তাও পরা যেতে পারে — যদি কিনা এখানকার shortened course ( সংক্ষিপ্ত পাঠক্রম ) -এর special method ( বিশেষ নিয়ম ) সম্বন্ধে University ( বিশ্ববিদ্যালয় ) -কে convince ( বিশ্বাস করানো যায় । আমরা হয়তো এসে দেখলাম যে পড়ান খুব ভাল হয় — তা’তে চলবে না , system ( ব্যবস্থা ) -টাকে satisfactorily ( সন্তোষজনকভাবে ) explain ( ব্যাখ্যা) করতে হবে , and that must be convincing ( এবং সেটা প্রত্যয়ােৎপাদী হওয়া চাই )।
শ্রীশ্রীঠাকুরআগে আমি যখন কেষ্টদা , গােপাল , পঞ্চাননদা , বঙ্কিম ইত্যাদিকে নিয়ে আরম্ভ করেছিলাম , তখন কিন্তু wonderful effect ( আশ্চৰ্যজনক ফল ) দেখেছি । কতজনেই তো তিন বছরে পাশ করেছে , আর এই যারা পাশ করেছে , তাদের শেখাটাও third rate worth- এর ( ওছা ) নয় । শিক্ষাপদ্ধতি - সম্বন্ধে যা বলেছি বা করে দেখেছি , তখন ওরা কিছু - কিছু লিখে রাখত , সবটা লেখা এখন দেখছি , লেখা না - থাকলে কিছুদিন পর জিনিসটা মাথায় থাকে না । তাই এবার আমি ঠিক করেছি , ( প্রফুল্লকে দেখিয়ে ) এদের নিয়ে আর দুটো ব্রাহ্মণ M. A. জোগাড় করে নূতন করে আরম্ভ করব , প্রশ্নোত্তরছলে “ শিক্ষা - প্রসঙ্গে ” বলে একখানা বই হয়ে যাবে। সেটা Convincing (প্রত্যয়-সন্দীপী ) হবে কিনা জানি না । কারণ , আমি তাে বলব আমারমতো ক'রে অামার ভাষায় । আমার experience ( অভিজ্ঞতা ) -গুলি আমি ঢেলে দিয়ে যাব । লেখাপড়া জানি না , মুখ মানুষ , তাই জানি না , কী হবে । তবে আমি দেব আমার যা আছে — আপনাদের তা থেকে খুজেপেতে নিতে হবে — আপনাদের রকমের সঙ্গে মিলাতে গেলে পারব না ! এখন তো একটু কমেছে , আগে আমি বি - এ পাশ শুনলেই ভয় পেয়ে যেতাম । তবে আমি যা দিয়েছি সে কেষ্টদার উস্কানীতে । কেষ্টদা যখন বলতে লাগল — ইংরাজীতে দেন , ইংরাজীতে দেন , আমি তো মনে - মনে হাসতাম , তারপর ফাজলামি করে । বলা শুরু করলাম । ওরা বলল -- হয় ; হয়তো হয় , রোক্ চেপে গেল , যা মনে আসে বলতে লাগলাম , যেন মেঘগুলি উড়ে - উড়ে যেত , আমি ধরে - ধ'রে ছুড়ে - ছুড়ে ফেলতাম । হঠাৎ যদি একটা word drop ক'রে ( শব্দ পড়ে যেত) , তখন জিজ্ঞাসা করলে আর বলতে পারতাম না , তাই নিয়ে ওদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাথা ঘামাতে হতো । তারপর কেষ্টদ্য আবার ছড়া চাইল । আমি কি ছড়া বলতে পারি ? ছোটবেলায় সবাই যেমন লেখে , আমিও হয়তো কবিতা ২|১ টা লিখেছি । কিন্তু ছড়া বলা কি সম্ভব? কেষ্টদার ঠেলায় বলতে আরম্ভ করলাম , বললাম । ওরা তো খুব বলে , দেখেন তাে আপনি একটু , আর শােনেন । এই যে এ - সব আমি বলতাম , করতাম এর পেছনে আমার একটা রস ছিল , মা'র কাছে বাহাদুরি নেবার ইচ্ছা ছিল প্রবল । যা করতাম এই আশায় করতাম — মা শুনে বলবেন , বেশ হয়েছে — সেই ছিল আমার সার্থকতা , আমার পুরস্কার । মা চলে গেছেন , এখন আর কোন রস পাই না ।
শ্রীশ্রীঠাকুর কেষ্টদাকে ( ভট্টাচাৰ্য ) ছড়ার খাতা নিয়ে আসতে বললেন । কেষ্টদা আসলেন , পড়া শুরু হলো । একের পর এক , এমনি ক'রে ঘণ্টাখানেক ধরে নানাবিষয়ক বহু ছড়া পড়া হ'ল ।
ফকিরবাবু তাে অবাক ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — এ কি ছাপানাের মতাে হয়েছে ?
ফকিরবাবু — বলেন কী ? এ তো ছড়া নয় , এ যে উন্নত ধরণের কাব্য , কতকগুলি জিনিস খুব সুন্দর হয়েছে ।
ছড়া পড়ার পর শ্রীশ্রীঠাকুর বলছেন — আমাদের এখানে education ( শিক্ষা) -টা নিতান্ত domestic ( ঘরোয়া ) রকমের হয় । B. A. , M. A পাশ করেও এখানকার ছেলে - মেয়েরা বুঝতে পারে না যে তারা educated . ( শিক্ষিত ) হয়েছে । তারা চলবে - ফিরবে , কথা কইবে নাংলা রকমে , আপনাকে এক গ্লাস জল দেবে , তাও সেইভাবে । একবার কলকাতা থেকে একটি matriculate ( ম্যাটিকুলেশন পাশ ) মেয়ে আশ্রমে এসে দেখে যে B. Sc . পাশ একটি মেয়ে অজপাড়াগাঁর মেয়েদের মতো মাজায় কাপড় বেঁধে কালি - ঝুলি মেখে হাড়ি মজছে । তাকে দেখে সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারল না যে , সে অতখানি educated ( শিক্ষিতা ) ।
ফকিরবাবু অত্যন্ত উৎসাহ - উদ্দীপ্ত হয়ে উঠলেন । গল্পে - সল্পে আরো কিছু সময় কাটলাে । তারপর ফকিরবাবু শ্রীশ্রীঠাকুরকে প্রণাম করে গাত্রোখান করলেন । শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে আবার আসতে বললেন ।
৫ ই ভাদ্র , বুধবার , ১৩৪৭ ( ইং ২১/৮/১৯৪০) 👇
দুপুরবেলায় ঘুম থেকে উঠে শ্রীশ্রীঠাকুর সহাস্য বদনে তসুতে বসে আছেন , কেষ্টদার ( ভট্টাচাৰ্য ) সঙ্গে নানা গল্প করছেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — কতকগুলি কথা মনে হয় , তাকে যেন নিছক কল্পনা বলতে পারি না , স্মৃতি বলেই মনে হয় । তা না হলে প্রত্যেক বারই একই রূপ নিয়ে হাজির হবে কেন ? Fact ( বাস্তব ব্যাপার ) না হলে এমন হয় না । বেশ যেন মনে পড়ে , একটা পাহাড়ে দেশ , তার মধ্যে বিরাট একখানা পাথর , কত লতা , ফল তার গা - বেয়ে উঠেছে , পাশে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে নদী বয়ে যাচ্ছে , নদীটা প্রসারের তুলনায় খুব গভীর । আরাে মনে হয় — বিরাট মাঠ , horizon- এর ( দিগন্তের) ওপারে , দূরে অতিদূরে — কুষ্টিয়ার কলের চাইতেও দূরে সোনা দিয়ে মােড়নি বিরাট মন্দিরের চুড়ো , আমি যেন এসব জায়গায় কখন ছিলাম ।
একটু পরে প্যারীদা একটা ছড়া এনে দিলেন । ছড়াটার মর্ম হ'ল এই যে কৰ্ম্মফল খণ্ডন হচ্ছে কিনা এটা বুঝতে গেলে দেখতে হবে , সৎকর্মে আমরা বাস্তবভাবে ব্যাপৃত হ'য়ে উঠেছি কিনা । শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — ভাল কাজ করতে আরম্ভ করলেই যে তখন - তখন সব ভাল ফল পাওয়া যাবে , সে কোন কথা নয় । আগের খারাপ কাজের ফল দেখা দেবেই । কাজের effect ( ফল ) আছেই , তা ’ রুদ্ধ হবে না , কিন্তু সেটা মানুষ এমনভাবে manipulate ( নিয়ন্ত্রণ ) করতে পারে , utilise ( ব্যবহার) করতে পারে যে মঙ্গল ছাড়া অমঙ্গল প্রসব করবেই না । খারাপটা আসবে , কিন্তু তা খারাপ করতে পারবে না । যেমন নরেনদা , তার হাত - পা পুড়ে গেল , সেই অবস্থাতেই এমনতর pose ( রকম ) নিয়ে দাড়াল যে environment ( পরিবেশ ) পৰ্য্যন্ত মুগ্ধ হয়ে গেল । নিজের অত পুড়ে গেছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে সকলকে ধ'রে ধ'রে নিতে লাগল , আর ওরই মধ্যে যাজন সুরু করে দিল । এমন আবহাওয়া সৃষ্টি করে ফেলল যে যাদের কম পুড়েছিল , নরেনদার ভাব দেখে নিজেদের যন্ত্রণার কথা ভুলে গেল ভাবল , যেন কিছু হয়নি । অত বড় একটা accident- এর ( দুর্ঘটনার ) ভিতর দিয়ে environment ( পরিবেশ ) -কে কেমন win ( জয় ) করে ফেলল , এমনি হয় ।
রাজসাহী থেকে একটি ভাই এসেছেন । তিনি বেকার অবস্থায় আছেন বলে জানালেন ।
শ্রীশ্রীঠাকুর —একমাস নিজে উপায় ক'রে ইষ্টভৃতি কর । তখন পথ ঠিক পাবি।
সন্ধ্যাবেলায় শ্রীশ্রীঠাকুর Philanthropy Office- এ ব'সে নফরদার (ঘােষ) সঙ্গে কথা বলছিলেন — অসুখ - বিসুখ যে হয় তার মূলে রয়েছে কোন - না - কোন বৃত্তি , সেই বৃত্তিবশে তদনুরূপ চলনায় মানুষ চলে , তারপর আসে অসুখ । ওখানে সন্ধান না করে , ওতে হাত না দিয়ে যত - ভাবে যত জায়গাতেই খোঁজা যাক না কেন , যত ঔষধই খাওয়া হোক না কেন , কিছুতেই কিছু হয় না । ওষুধ রােগটা আটকে রাখতে পারে , এইমাত্র — যেমন একজন লােককে দরকার হলে বেঁধে রাখা যায় । কিন্তু কারণকে অপসারিত না করলেওষুধ বন্ধ দিলেই আবার যা তা ' । চলাটা ঠিক করলেই অনেক অসুখ সেরে যায় , ওষুধ বিশেষ খাওয়ার দরকার করে না — তবে একদম যে দরকার হয় না এ - কথা বলি না । ওষুধ body ( শরীর ) -কে fit ( উপযুক্ত ) করতে সাহায্য করে । চরকে এই ধরণের কী - একটা শ্লোক আছে । অনেকের খাওয়া - দাওয়া সম্বন্ধে এতই রােক যে , তার অসুখের জন্য যদি তাকে কয়েকদিন থানকুনির ঝোল খেতে দেওয়া যায় , সে হয়তো চোখ - মুখ খিচিয়ে বিকট বিরক্তির সঙ্গে বলবে— থানকুনি থানকুনি থানকুনি ( শ্রীশ্রীঠাকুর এমন বিচিত্র ভঙ্গীতে বলতে লাগলেন যে সকলে দেখে তো হাসতে হাসতে বাঁচে না । ) — আর কিছু চোখে দেখে না যত সব ছােটলোকদের কাণ্ড - কারখানা । আমি বাবাকে আগেই বলেছিলাম , তা না , বাবার ছােটলোকের ঘর থেকে মেয়ে না আনলেই নয় , আমার জীবনটা একেবারে নষ্ট করে দিল । অবশ্য , প্রকৃতপক্ষে হয়তাে তার পছন্দমতােই এ বিয়ে হয়েছে । স্বী যত্নসহকারে রােগী স্বামীকে উপযুক্ত পথ্য দিতে গেলে সে হয়তাে রেগে তার গায়ে খড়ম ছুড়ে মারল , মাজাই কেটে গেল । লোভের বশে মানুষ কী করে আর না - করে , তার ঠিক নেই । আর , মানুষ যে নিয়ম পালন করে তার মধ্যেও তার বৃত্তির খেয়ালটুকু বাদ দেয় না । সে হয়তো থানকুনির ঝোলই খাচ্ছে , তার মধ্যে একটু আবার লঙ্কা রােজ টিপে নিচ্ছে , ভাতে - ভাত খাচ্ছে , তার মধ্যে দু - চামচ ঘি ঢেলে নিচ্ছে , বলে — ও না হ'লে কি হয় । পারা যায় ! এই অনিয়ম করা সত্ত্বেও সে মনে করে , সে ঠিকভাবে চলছে । মানুষ তার বৃত্তি - সম্বন্ধে কেমন বেহুশ ও blind ( অন্ধ ) , আর এমনিভাবে চ'লে কোন ফল না পেয়ে শেষে বিজ্ঞের মতো আপসােসের সুরে বলে — হ্যাঁ ! হ্যাঁ ! সব দেখেছি , সব করেছি — ও কিছুতেই কিছু হয় না , কোনটায় কোন ফল নেই , সব বাজে কথা । এই জন্যই ভগবানের আর এক নাম বিধি , বিধিকে না মেনে কারো পারার জো নেই । মানুষ প্রবৃত্তির বিধিকেই মানে , কিন্তু জীবনের বিধিকে , সুখের বিধিকে মানে না — তাই দুঃখ হয়ে ওঠে অনিবার্য । তোমার অসুখ করেছে , তখন হয়তো তােমার কাঁঠাল খেতে ইচ্ছে করল , খেলে — একটা কাঠাল খেতে গিয়ে সারা জীবনের কাঠাল খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল , তখন না খেলে কত কী পথ খোলা থাকত । তাই বুঝেসুঝে চলার দরকার , ভেবে দেখতে হয় — কোম, নিয়মে , কোন্ কায়দায় , কেমনভাবে চলে , ফিরে , খেয়ে , আচরণ করে তুমি ভাল থাক — আর তেমনিভাবেই চলতে হয় ।
পাবনার District Inspector of Schools ( জিলা ইনস্পেক্টর অব কুলস ) এসেছেন । তিনি জিজ্ঞাসা করলেন — শরীর সুস্থ থাকলে বেশী খেলেও তো অনেকের ক্ষতি করে না , বেশ সহ্য হয় ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — যা প্রয়োজন তার চাইতে বেশী খেলেই তাে তার চাপ আমাদের Stomach , Nerves , Heart ( পেট , স্নাযু় , হৃদয় ) ইত্যাদিকে বইতে হবে । কিন্তু আপনি - আমি তাে Sperm ও Ova- র product ( শুক্র ও ডিম্বের ফল ) —একটা limited energy ( সীমিত শক্তি নিয়ে জন্মেছি , আর তাই নিয়ে চলেছি । এই life - potency ( জীবনীশক্তি ) -কেই বলে অযু় , এই আযু় ; যদি অযথা অপব্যয় করি — এ তাে ফুরােবেই , শরীর দুর্বল হবেই — তা হয়তাে বহু পরে টের পাওয়া যায় । পঞ্চাশ বছর বয়সে শরীরের উপর অত্যাচার করা সত্ত্বেও হয়তাে আপনার ক্ষতি করে না , ষাট বছর বয়সে আপনি হয়তাে দেখবেন আশি বছরে আপনার শরীর যতখানি অপট ও জীর্ণ হতো , তাই হয়ে গেছে । অনিয়মের effect ( ফল ) তাে আছে ।
রাত দুপুরে , আন্দাজ দুটো - আড়াইটার সময় , তরু - মা এসে প্রফুল্লকে ডাকলেন — শ্রীশ্রীঠাকুর ডাকছেন । শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে যেতেই বললেন — ঐ ছড়াটা কী রে ? ভালবাসার আছে একটি ছােট্ট সাবুদ লক্ষণ । তখন ছড়ার খাতা খুজে বের করে নিয়ে সেটা কেষ্টদার হতে দেওয়া হ'ল । কেষ্টদা সেটা পড়লেন । পড়া হ'লে পরে শ্রীশ্রীঠাকুর কালিদাসীমাকে ডেকে বললেন — শুনলি কালিদাসী ? ছড়াটার অর্থ এই যে — প্রিয়কে দেখার হাজার মানুষই থাক না কেন , নিজে না দেখলে , তত্ত্বাবধান না নিলে , উপযুক্ত ব্যবহার ও ব্যবস্থিতি নিয়ে প্রিয়র সর্বব্যাপারে ব্যাপৃত না থাকলে ভালবাসার জনের কিছুতেই তৃপ্তি আসতে পারে না — প্রিয়র ব্যাপারে তার সেবাহন্ত সর্বদা ও সর্বত্র সক্রিয় থাকবে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর নিজে নিজেই বলছেন — আমার কিন্তু আপনাদের জন্য ওমনি হয় । এত মানুষের মধ্যে একটা ছােট ছেলে ‘ ক্যা ’ করে উঠলেও আমি যেন কেমন হ'য়ে পড়ি ।
আজ রাত এগারটা সাড়ে - এগারটার সময় টের পাওয়া গেছে যে , শ্রীশ্রীঠাকুরের সুপুরির কৌটায় কে নাকি বিষ রেখে গেছে । সুপুরি খেয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের শরীর যারপরনাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে । এইরকম একটা ভীষণ মারাত্মক ষড়যন্ত্র ঘটে গেছে অথচ শ্রীশ্রীঠাকুর কেমন নিরুদ্বিগ্ন মনে সহজভাবে গল্প করছেন ।
#Alochona_prosonge_part_1
#আলোচনা_প্রসঙ্গেপ্রথম_খণ্ড
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
https://www.amritokatha.in/
Telegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokathaa
10