* ব্যবসা কথার সব্দার্থ ..
* যাজন সম্পর্কে...
* গুরু ভক্তির লাভ
২২ শে আশ্বিন , সােমবার , ১৩৪৬ ( ইং ৯/১০/১৯৩৯ )
সন্ধ্যাবেলায় শ্রীশ্রীঠাকুর বাধের চৌকিতে বসেছিলেন — অনেকেই কাছে ছিলেন । কলকাতার একজন ব্যবসায়ী ভদ্রলােক জিজ্ঞাসা করলেন , কীভাবে কৃতকার্য হওয়া যায় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — যজন , যাজন , ইষ্টভৃতি মানুষমাত্রেরই প্রধান করণীয় —
নিজে সাধনা করতে হবে , সঙ্গে - সঙ্গে পারিপার্শ্বিককে বোঝাতে হবে , আর
ইষ্টভরণের মধ্যদিয়ে নিজের সর্বশক্তি ইষ্টে কেন্দ্রায়িত করে সত্তাকে অটুট
করে হবে । পারিপার্শ্বিক বাদ দিয়ে মানুষ চলতে পারে না , তাই পারি সেবায়
মানুষের স্বার্থ নিহিত । প্রত্যেক ব্যাপারেই যাজন ও সেবা প্রয়োজনীয় । মনে
করুন , আপনার সাইকেলের দোকান আছে । অাপনি চিন্তা করতে লাগলেন , কেমন করে
আপনি প্রত্যেককে একখানি করে সাইকেল দিতে পারেন । হয়তো অনেক সুবিধা ক'রে—
by instalment ( কিস্তিবন্দীতে ) টাকা নিয়ে একটা গরীব মানুষকেও আপনি
সাইকেল যুগিয়ে দেবার ব্যবস্থা করলেন , সঙ্গে - সঙ্গে তার কাছে যাজন করলেন —
সাইকেল দিয়ে তার কতখানি সুবিধা হতে পারে । তখন সে সাইকেল কিনল — সাইকেল -
এর advantage ( সুবিধা ) পেল । তখন সে প্রাণখুলে আপনাকে ধন্যবাদ দেবে —
অমুক অবস্থা বিবেচনা করে কত সুবিধা করে আমাকে একখানা সাইকেল জুটিয়ে
দিয়েছে । ঐরকমভাবে ব্যবস্থা করে না দিলে আমার হয়তাে সাইকেল কেনাই হতাে না
। অামার কতই সুবিধে করে দিয়েছে । তার কথা শুনে অনেকেই আপনার দোকানে আসতে
লাগল । এমনি করে আপনার ব্যবসা বাড়তে লাগল । তা না করে আপনি যদি তাকে
ঠকিয়ে বেশী লাভের দিক নজর দিতেন — তাহ'লে পরে সে টের পেয়ে লােকের কাছে
বলে বেড়াতো — লোকটা জোচ্চোর , ওর দোকানে কেউ যেও না আপনার যদি এক হাজার
খরিদ্দার থাকে আর প্রত্যেকের কাছ থেকে যদি সামান্য লাভও পান , তাও আপনি
ব'লে - কয়ে যদি নেন , তা একশত খরিদ্দারের কাছ থেকে বেশী লাভ করার চাইতেও
কি বেশী লাভজনক নয় ? আর , ব্যবসা কথাটা এসেছে —
বি — অব + সাে - ধাতু
হ'তে , অর্থাৎ যা - কিনা বিনাশ থেকে বিশেষ করে রক্ষা করে । কিন্তু যাই করতে
যাও মুলে থাকা চাই গুরুভক্তি -তাতে প্রবৃত্তি কাবেজে থাকে , সেবাবৃত্তি
তরতরে হ'য়ে ওঠে -- কাজ হয় নিখুত । এই গুরুভক্তি থেকেই মানুষ মঙ্গলের
অধিকারী হয় । তাই , গুরুকে ইষ্ট বলে । ইষ্ট মানে মঙ্গল , অর্থাৎ গুরুকে
অনুসরণ করলেই মানুষের মঙ্গল আসে । আর , এই অনুসরণের পন্থাই হচ্ছে — যজন ,
যাজন , ইষ্টভৃতি ।
10