যাজন
তীব্র তালে ধর গান
নেচে উঠুক সবার প্রাণ। ১।
নিজের স্বার্থের সেবা নিয়ে
ভাবছে যা’রা করবে সুখ,
ভ্রান্ত তা’দের উথলে তোল
পরিচর্য্যী ক’রে বুক। ২।
নিজের নিয়েই বিবশ মনে
যা’রাই কেবল প’ড়ে থাকে,
পরিবেশের চর্য্যায় লাগা-
ভরসা দিয়ে তা’দের বুকে। ৩।
অলস যা’রা অবশ যা’রা
হোক্ না তা’দের ভাঙ্গা বুক,-
ইষ্টনেশায় কৃতির রোলে
তোল্ তো উল্লে তা’দের সুখ। ৪।
যে-ধুয়ো নিয়ে থাকবি রে তুই
চিন্তা, চলন, কথায়, কাজে,
লাগলে ভাল ধরবে লোকে,
চলবেও ক্রমে অমনি ধাঁজে। ৫।
ভাল যাজন ভালই তো সে
আরো ভাল সৎ-আচারী,
আগল-ভাঙ্গা-হৃদয় যা’রা
প্রবুদ্ধ হয় তা’দের ধরি’। ৬।
জীবনটাকে চাষ ক’রে তুই
সম্বর্দ্ধনায় উস্কে তোল্,
দীপ্ত মুখে তৃপ্ত বুকে
উঠুক ফুটে অমর রোল। ৭।
প্রত্যেক তুমি, প্রত্যেক আমি,
প্রত্যেকেরই জীবনধৃতি,
এরই কিন্তু ব্যতিক্রমে
জনন-জীবন পায়ই মৃতি। ৮।
সুস্থ থাক্ তুই, সুস্থ রাখ তুই,
সুস্থি বিলা’ সব অন্তরে,
চল্ ক’রে তুই সুস্থ সবায়
হৃদ্য চর্য্যায় সবায় ধ’রে। ৯।
ছড়িয়ে পড় রে সবার মাঝে-
সবার বুকে একই টান-
বিষ্ণুতেজা হ’য়ে উঠে
তৃপণদানে সাধ রে প্রাণ। ১০।
চেতন স্বভাব, চেতন বৃত্তি,
চেতন দ্যুতি ল’য়ে চল্,
চেতনতার উৎসারণে
বাড়ুক বিবেক, বাড়ুক বল। ১১।
চেতন ভাবে দীপ্ত হ’য়ে
চেতন প্রদীপ হ’ রে তুই,
সবারে তুই উর্ব্বর ক’রে
ফেল্ না চ’ষে জীবন-ভুঁই। ১২।
সঙ্গতি সব অটুট ক’রে
সঙ্গতির ঐ চর্য্যা-সেবায়,
পারস্পরিক অনুরাগে
উচ্ছলি’ তোল্ যত সবায়। ১৩।
দৃষ্টিরে তোর নিখুঁত রাখিস্
কৃষ্টি রাখিস্ বেশ তাজা-
আচার-ব্যাভার ক’রে এমন,
উৎসারণায় গাল বাজা। ১৪।
যা’ করিস্ তুই-জীবনধৃতি
সবার মূলে আছে যা’,
পরিচর্য্যায় শিষ্ট রেখে
সবারে তুই রাখ তাজা। ১৫।
উৎসারণী উদ্দীপনায়
সবা’কে তুই চেতিয়ে রাখ,
উৎসৃজনী কৃতিচর্য্যায়
শিষ্ট যা’ পালিয়ে যাক্। ১৬।
ভাববৃত্তির উচ্ছলতায়
উস্কে তুলে চর্য্যা-টান,
নিষ্ঠানিপুণ চর্য্যাতে কর্
ইষ্টে প্রাণপ্রতিষ্ঠা-দান। ১৭।
ঊর্জ্জী যজন, উর্জ্জী যাজন,
ঊর্জ্জী -মধুর নিষ্ঠা-সেবা,
এমন গুণীর সঞ্চারণায়
বাড়েই বুকে ঊর্জ্জী বিভা। ১৮।
বলবি কইবি ভাষণ দিবি
সব সময়েই সত্তা ধ’রে,
কেমন চলায় সত্তা বাঁচে
জেনে জানিয়ে নিটোল ক’রে। ১৯।
পরের সত্তা দেখে যে-জন
আপন সত্তার মতন ক’রে,
ধ’রে ক’রে সৎ-দীপনায়
তুলতে পারে তাকে ধ’রে। ২০।
নিষ্ঠাবিপুল অনুচর্য্যা
ধকধ্বকিয়ে উঠুক জ্ব’লে,
হৃদয় দিয়ে অন্তরেরই
তৃপ্তি-বারি দে’ না ঢেলে। ২১।
উঠুক লোকে দীপ্ত হ’য়ে
সিক্ত হ’য়ে প্রীতির টানে,
হামবড়াইয়ের কাজ কি রে আর
স্বস্তি আসুক প্রাণে-প্রাণে। ২২।
উথলে উঠুক প্রাণন-মলয়
প্রাণে-প্রাণে যাক্ না ব’য়ে,
সহ্য-ধৈর্য্য-স্থৈর্য্য নিয়ে
উচ্ছলায় তা’ দে বিছিয়ে। ২৩।
গ’র্জ্জে উঠুক স্বস্তি বিপুল
তরুণ-স্রোতা কৃতি নিয়ে,
শক্তি বাড়ুক, ধী বাড়ুক তোর
কর্ রে ভাল হৃদয় দিয়ে। ২৪।
শিবের শিঙা গ’র্জ্জে উঠুক
রংকারেরই রারং-নাচে,
নিথর যা’রা জেগে উঠুক
মুহ্য যা’রা উঠুক বেঁচে। ২৫।
দেশ ও পাত্র, কাল-পরিবেশ,
বুঝিয়া-সুঝিয়া সব বিশেষ,
আদর্শকে অটুট রেখে
তৃপ্তি সবায় দিবি অশেষ। ২৬।
সঞ্চারণায় সৎ-শুভকে
সবার ভেতর চারিয়ে দিয়ে,
উল্লে হৃদয় যা’তে ওঠে
চল্ না তেমন উতল হ’য়ে। ২৭।
থাকবি যেথায় ঢালবি সেথায়
দীপন-দীপা তৃপ্তি-ফাগ,
আশেপাশের জীবনগুলিত্*
ছড়িয়ে দিবি তৃপ্তি-রাগ। ২৮।
* জীবনগুলিতে
-------------------------------------
অবস্থা, কথা, কোন কাজ
কোথায় গিয়ে কেমন দাঁড়ায়,
ঝলক-বোধের পলক নিয়ে
দেখতে পারিস্ যা’তে তা’য়,
এমনি ক’রেই লহমায় তুই
এঁচে নিবি, তেমনতর,
বিষয়-কর্ম্মের কোন্ সংঘাতে
হ’তে পারে কেমন দড়। ২৯।
সার্থকতা কোথায় কেমন
দেখে নিবি রকমে তা’র,
স্বস্তি যা’তে বজায় থাকে
সুস্থি আনে সমৃদ্ধি আর। ৩০।
সৎ কথা বা ভাল কাজ
অন্যে খারাপ বলছে যা’,
চলা-বলায় বুঝিয়ে দিও
সবার পক্ষেই ভাল তা’। ৩১।
বাধা যদি পাস্ কোথাও
বুঝে-সুঝে সমীচীন,
স্বস্তিনিপুণ করায়-বলায়
নিরাকরণে কর্ বিলীন। ৩২।
সুকৌশলের কুশল তালে
তৃপ্তি-স্ফীত ক’রে মন,
কাজে বাধা এলেই সেটার
করবি সহজ নিরাকরণ। ৩৩।
একটুখানি বাস্ না ভালো
কুটিল কালো তাড়িয়ে দিয়ে,
সবটা হৃদয় কর্ না আলো
ক্লেশসুখের আহুতি নিয়ে। ৩৪।
বচনে তুই যতই বলিস্
আচার-ব্যাভার থাকলে ঠিক,
সঞ্চারণী সন্দীপনায়
অন্তরে জাগে প্রেষ্ঠ-ঋক্। ৩৫।
অন্তরের ভাব যেথায় যেমন
চালচলনও তেমনি,
সঞ্চারণাও তেমনি চলে
স্বার্থ-চাহিদা যেমনি। ৩৬।
সন্দীপনী সঞ্চারণা
বাড়ায় নিত্য হৃদয়-বল,
ফুল্লচেতা স্বাস্থ্যচর্য্যাই
হয়ই যে তা’র ধৃতিস্থল। ৩৭।
উদ্দীপনী উদ্বোধনায়
অকাট্য অটুট যুক্তিবাদ,
কৃতিচর্য্যী তপ-দীপনায়
আনেই কিন্তু স্বস্তি-সাধ। ৩৮।
উর্জ্জীতেজা বীর্য্য নিয়ে
অনুশীলনী কৃতি-পায়,
অটুট নিষ্ঠায় সব ক’রে তুই
চলতে থাকিস্ সুচর্য্যায়;
বিলিয়ে দিবি সব হৃদয়ে
বাঁচাবাড়ার মন্ত্রগান,
নিষ্ঠা নিয়ে শুনে, ক’রে
উঠুক নেচে সবার প্রাণ;
যাজনমুখর ঐ চলনে
লোকের প্রয়োজনটি বুঝে,
চল্ ওরে তুই, বহুত মানুষ
ধন্য হবে ইষ্ট পূজে;
শক্তি পাবে, বৃদ্ধি পাবে
হৃদয়ে পাবে সুবিস্তার,
ধরার বুকে স্বর্গ এসে
তৃপ্তি দেবে বুকে সবার। ৩৯।
#যাজন
#Anusruti_part_2
#অনুশ্রুতি_দ্বিতীয়_খণ্ড
#অনুশ্রুতি_২য়
#চতুর্থ_সংস্করণ
#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
Telelegram https://t.me/amritokatha
10