আদর্শ :-
ইষ্ট তোমার-
প্রশস্য বা প্রেষ্ঠ তোমার-
বাঁচাবাড়ার সত্তাধৃতি,
আদর্শ কিন্তু তিনিই তোমার-
ভর-জীবনের নেতৃনীতি। ১।
ঐতিহ্য-কুল-সবৈশিষ্ট্যের
তোমার যিনি নিয়ামক,
বাঁচাবাড়ার নেতা তিনিই
সত্তার তিনি বিধায়ক;
শিষ্টাচারী সুনিষ্ঠ যে
অনুকম্পী দরদ-প্রাণ,
তিনিই কিন্তু সবার প্রিয়
তোমারও কিন্তু তিনিই স্থান;
জীবনপথে চলার সাথে
অনুসরণ যদি তাঁ'রই কর,
দুনিয়া-দেশটি ন্যায্য বিভায়
সঞ্চারণায় হবে দৃঢ়;
তাঁ'র অনুসরণ ক'রে চল-
আচার-ব্যাভার-বিভব নিয়ে,
সংস্থা তোমার তিনিই জেনো-
তাঁ'র নিদেশে হৃদয় দিয়ে;
স্ব-এর বৈশিষ্ট্য রাখেন যিনি
ধারণ-পালন-বর্দ্ধনায়,
সেইতো ধৃতি, সেই নিয়মন,
স্ব-বিনায়ন স্বাধীনতায়। ২।
লতা যেমন বৃক্ষ ধ’রে
বেড়ে ওঠে পাকে-পাকে,
লোকগুলিও যে তেমনিতরই
প্রেষ্ঠ ধ’রে বাড়তে থাকে। ৩।
ধারণ-পালন যিনিই করেন
সব যা’-কিছুর সুসম্বেগে,
ঈশ্বরই তাঁ’র উৎস জানিস্
চলেন তিনি নিত্য যোগে। ৪।
ঈশ্বরেরই যোগ-চলনের
সার্থকতা ঐখানে,
রুদ্ধ না হয় স্রোত জীবনের
তৃপ্ত থাকিস্ তুই প্রাণে। ৫।
সব দেবতার সমাহারেই
পুরুষোত্তমের সৃষ্টি,
সহজ মানুষ নররূপে
করেন ধৃতি-বৃষ্টি। ৬।
পুরুষোত্তমের পরম-লক্ষণ
বৈশিষ্ট্যপালী সদাই সে,
জীবন-ধর্ম্মের স্বভাব-নেতা,
নিয়মনা তাঁ’র সকাশে। ৭।
সব সত্তা আপূরণী-
পুরুষোত্তম তা’রে বলে,
ব্যর্থ হ’লে তোমার জীবন
সার্থকতায় ধরেন তুলে। ৮।
বর্তমানই বিদ্যমান-
কৃতিবিজ্ঞ বিশেষ জন,
ইষ্টনিষ্ঠ গুণান্বিত
উদ্ধাতা কিন্তু তিনিই হন। ৯।
জীবন-বৃদ্ধির উৎস যিনি
তিনিই কিন্তু নারায়ণ,
স্বভাবটা যাঁ’র ঐ ধরণের
তিনিই মূর্ত্ত অবতরণ। ১০।
আবর্তিত যিনি ভবে
লোকবর্দ্ধনী আবেগ নিয়ে
সেই স্বভাবের অনুশীলনে
তোমাতেই ওঠে তা’ বিনিয়ে। ১১।
তিনি মূর্ত্ত অভিষিক্ত
জীবন-জগৎ-উদ্ধারণ,
তাঁ’র নিদেশে সব সেধে নে-
যা’তে আসে উন্নয়ন। ১২।
প্রবৃত্তিরই অপচারে
উচ্ছৃঙ্খলায় ধৃতি যখন,
বোধ বিনিয়ে সত্তাটিকে
সৎ চলনে করেন স্থাপন,-
যাঁ’র প্রসাদে এমনতরই
হ’য়ে চলে ধৃতি-পায়ে
ধৰ্ম্মস্থাপক তিনিই তো হন
বাঁচান জীবে জীবন-দায়ে। ১৩।
ঐশ্বর্য্যেরই উৎস কোথায়
ধৃতি কোথায় তোর,
দেখলি নে তুই খুঁজে-পেতে
ওরে ভাগ্য-চোর। ১৪।
বুদ্ধি-বিবেক-বিবেচনা
কেন্দ্রায়িত না হ’লে,
দীপনকৃতির তাপন-স্রোতে
কভু কি তা’য় ফল ফলে? ১৫।
আদর্শেতে অটুট থেকে
ধৰ্ম্ম-কৃষ্টির অনুশীলন,
ভাগ্যদেবীর আহুতি যে
থাকলে নিখুঁত কৃতি-চলন। ১৬।
আচার্য্যেরই সস্তূপণা
ভর-জীবনে রেখে ধ’রে,
কৃতি-দীপন ঝোঁক রেখে চল্
আপদ্-বিপদ্ নিকেশ ক’রে। ১৭।
অভিপ্রেত যা’-কিছু তাঁ’র
প্রিয়পরম ইষ্ট যিনি-
তোমার হ’য়েই যেন ফোটেন-
চলায়-বলায় স্বতঃই তিনি। ১৮।
ধান্ধা সকল বন্ধ ক’রে
বান্দা হ’ তুই আদর্শের,
তাঁ’রই চর্য্যার ধান্ধা নিয়ে
ইষ্টীপথে হ’ তুই ঢের। ১৯।
প্রেষ্ঠ যদি শ্রেষ্ঠ না হন
তোমার পরিবেশে,
শ্রেয়ত্ব তোর রইবে কোথায়
চ’লবি কি আপসোসে? ২০।
গুরুই যে তোর মন্ত্রদাতা
জীবনপালী নেতা তোর,
তাঁ’রই মতে চলিস্ ওরে
রাখিস্ বাঁধা ভক্তি-ডোর। ২১।
বাজার ঘুরে বাছতে গুরু
নিষ্ঠা গেল জাহান্নমে,
ভাঙ্গবে কি তোর শঙ্কা মনে
হবে কি কিছু লাখ জনমে? ২২।
ওরে পাগল! এখনও শোন,
এখনও ধর্ আচার্য্য-গুরু,
তাঁ’রেই ধ’রে যুক্ত হ’ তুই
উঠুক বেড়ে তপের তরু। ২৩।
জীবন-নাথকে হেলায় ফেলে
জগন্নাথকে দেখতে গেলি,
জীবন-নাথই যে জগন্নাথ
অহঙ্কারে না দেখতে পেলি। ২৪।
প্রেষ্ঠ হ’তেও প্রীতি-চর্য্যা
সক্রিয়তায় যেথায় রত,
লাখ কথা তুই ক’স্ না মুখে
সেই যে রে তোর প্রিয় দড়। ২৫।
প্রেষ্ঠ-রক্ষায় সাবধানে থাকিস্
ফাঁকায় রেখে তাঁ’র প্রয়োজনে,
সময়-মতন না হ’লে কথা
আপদ্ আসে ঐ তোরণে। ২৬।
প্রেরিত-পুরুষ আর মহাজন
সৎ-বর্দ্ধনার স্বর্গদূত,
বৈশিষ্ট্যপালী আপূরয়মাণ,
ন’ন্ তাঁহারা নরক-ভূত। ২৭।
নিবেদিত ইষ্টে যা’-সব
ধার ক’রে-যদি তা’ না দাও,
কিংবা সেবার বিনিময়ে
যদি তুমি কিছুও নাও,
শুনে রাখ-শক্ত কথা-
বিভবক্ষয়ী অভিসার,
বিভূতি তোর আসবে নাকো
সম্পদ্-স্বস্থ হবি না আর। ২৮।
শিষ্য হ’লেই গুরু হবে
সেটা কিন্তু নয়কো ঠিক,
চরিত্র আর চলন-বলন
বোধ-বিকাশী তা’র নিরিখ। ২৯।
ইষ্ট-গরব যা’র হৃদয়টা
পেয়ে ব’সে আছে,
দীপ্ততেজা উর্জ্জী
উছল অমন ক’জন আছে? ৩০।
যাদুকর তো নয়কো গুরু
ধারেন নাকো যাদুর ধার,
যাদু ভেঙ্গে সব দেখানো
এইতো তাঁহার ব্যবহার। ৩১।
যাদুকর নয় গুরু কিন্তু
যাদু ভাঙ্গাই তাঁ’র স্বভাব,
যাদু ভেঙ্গে দেন দেখিয়ে
ভর-দুনিয়ার স্বরূপ-ভাব। ৩২।
সদ্গুরুই তো আচার্য্যগুরু
কৃতিতপে জানেন যিনি,
কৃতি-তপী সার্থকতার
বিভূতি ঐ,-কৃতী তিনি। ৩৩।
দেব-দেবতা হাজার ধরিস্
আচার্য্য যা’র ইষ্ট নয়,
স্পষ্টতর বুঝে রাখিস্
জীবন-চলায় নেহাৎ ভয়। ৩৪।
সব-দেবতার জ্যান্ত প্রতীক
বুঝে রেখো ইষ্ট তোমার,
সেবাপ্রতুল ইষ্টনিষ্ঠা
তপ-দীপনা সেইতো পূজার। ৩৫।
ইষ্টই তো বিভুর প্রতীক
নরলোকে মূর্ত্তনা,
যাঁ’র চরিত্র-স্বভাবাবেগে
উচ্ছলে তাঁ’র মূর্ছনা। ৩৬।
প্রেষ্ঠ জানিস্ সাম্যকেন্দ্র-
জীবন-চলার সাম্য-গান,
দৃষ্টি রেখে তাঁ’তেই করিস্
সমত্বেরই অভিযান। ৩৭।
ইষ্ট তোমার সাম্যকেন্দ্র
নিষ্ঠা-চৰ্য্যা যত তাঁ’তে,
সাম্য-চলায় বিনিয়ে চালায়
তাঁ’রই শুদ্ধ ভাব-আভাতে। ৩৮।
পুরুষোত্তম আসেন যখন-
সব গুরুরই সার্থকতা,
তাঁ’কে ধ’রলে আসে নাকো
গুরুত্যাগের ঘৃণ্য কথা। ৩৯।
পুরুষোত্তম সবার গুরু
সবার ধাতা পূর্য্যমাণ,
ধৃতিচর্য্যী সবারই তিনি
ভজনমূর্ত্ত ভগবান্। ৪০।
পুরুষোত্তম দুনিয়ায় এলে-
সম্মিতিশীল অনুচলন,
ব্যবহারে যা’ ফুটে ওঠে
সেইটি তো তাঁ’র পরখন। ৪১।
সব-আচার্য্যের যোগযজ্ঞ
যজ্ঞেশ্বর নামটি তাই,
মূর্ত তিনি লোকের ধাতা
সব বৈশিষ্ট্যের পূরণা-ই। ৪২।
করার তপে বিভোর যিনি
নিষ্পাদনে তিনি বিভু,
দেখে জেনে নিয়মনায়
জ্ঞান-গৌরবে তিনিই প্রভু। ৪৩।
ভজনদীপ্ত হৃদয় যাঁহার
চর্য্যাকৃতি-তপচলনে,
লোকবর্দ্ধনা স্বভাব যাঁহার
ভগবত্তা রয় সেখানে। ৪৪।
পুরুষোত্তম-পূজা জানিস্
সত্তা তোদের অর্ঘ্য দিয়ে,
সবার স্বার্থ-অন্বয়ে তাঁ’র
আরতি হয়,- দে জানিয়ে। ৪৫।
সপ্তস্বর্গ সপ্তপাতাল
জানিস্ না তা’-মাতাল তবু,
মত্ত নেশায় রিক্ত দিশায়
খাচ্ছ শুধু হাবুডুবু! ৪৬।
দীন-দয়াময় ডাক্ছে রে ঐ
এখনও তুই ওঠ রে জেগে,
জীবনব্রতে ব্রতী হ’য়ে
ইষ্টপথে চল্ রে বেগে। ৪৭।
অশেষ দয়াল আছেনই তিনি
দয়ার কিছু নাইকো শেষ,
তাঁ’র দয়াকে পাবেই তত
উৎসর্জ্জনায় যত বিশেষ। ৪৮।
তিনি ধরলে ফয়দা কী তোর
তুই যদি তাঁ’য় না ধরিস্,
তাঁ’র প্রতি তোর নিপুণ-চর্য্যাই
করবে তোরে উছল জানিস্। ৪৯।
তিনি তোমায় ধ’রেই আছেন
একাল-সেকাল সবকালে,
তোমার ধরা হয় তখনই-
ভক্তিতে প্রাণ দিলে ঢেলে। ৫০।
ঘটে-ঘটে তিনিই আছেন
তোমার ঘটেও তেমনি,
ঘট-অস্তিত্বের স্বস্তি পালা-ই
তাঁ’রই পূজা সেমনি। ৫১।
তোমারেই করিয়াছি
জীবনেরই ধ্রুবতারা,
এ জীবনে কভু আমি
হব নাকো পথহারা। ৫২।
#আদর্শ
#Anusruti_part_2
#অনুশ্রুতি_দ্বিতীয়_খণ্ড
#অনুশ্রুতি_২য়
#চতুর্থ_সংস্করণ
#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
🪔 https://www.amritokatha.in/ 🪔 👈
Telelegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokatha.in1
10