ধৰ্ম্ম:-
অন্যে বাঁচায় নিজে থাকে
ধৰ্ম্ম ব’লে জানিস্ তা’কে। ১।
ধৰ্ম্মে সবাই বাঁচে-বাড়ে
সম্প্রদায়টা ধৰ্ম্ম নারে। ২।
ধর্মে জীবন দীপ্ত রয়
ধৰ্ম্ম জানিস্ একই হয়। ৩।
যত জানিস্ ধৰ্ম্ম ব’লে
মূলে সব এক-গজিয়ে চলে । ৪।
দর্শনেরই বস্তাবাহী
বলদ নয়কো, সাধু যা’রা,
বরং পটু ন্যায়ের যোদ্ধা
বিধির বাহক জানিস্ তা’রা। ৫।
এক ত্রাতা এক প্রাণ
মন্ত্র একে অধিষ্ঠান । ৬।
সম্বেগ-হারা কৰ্ম্মপ্রাণ
আধ্যাত্মিকতার বন্ধ্যা টান । ৭।
আধ্যাত্মিকতা অবশ যা’র
কর্মপ্রেরণা মূঢ় তা’র। ৮।
ইষ্টরাগে বিধির পথে
উপচয়ে চলা,
একেই বলে ধৰ্ম্ম খাঁটি
নইলে নিষ্ফলা । ৯।
কৰ্ম্ম-হারা ধৰ্ম্ম
অন্ধতমর বৰ্ম্ম। ১০।
কাজে করে ধর্ম্ম
যেই তা’র বাড়া মানুষ নেই। ১১।
বাঁচা-বাড়ার মর্ম্ম যা’
ঠিকই জেনো ধৰ্ম্ম তা’। ১২।
নিজের ধান্ধায় থাকল যা’রা
জ্যান্ত মরা রইল তা’রা,
ইষ্টধান্ধায় ঘুরল যে
বাজিমাৎ করল সে। ১৩।
যা’ করলে বাঁচা-বাড়া
সমন্বয়ে বেড়েই যায়,
তা’কেই জানিস্ ধৰ্ম্ম ব’লে
ধৰ্ম্ম থাকে আর কোথায় ? ১৪।
বাঁচা-বাড়া নিঝুম হ’ল
পড়শী উছল হ’ল না,
এতেও কি রে বলতে চাস্ তুই
ধর্ম্মে করিস্ বন্দনা ? ১৫।
বাঁচা-বাড়া ক্ষুণ্ণ যা’তে
এমনতর নিছক যা’,
অধৰ্ম্ম তা’ হবেই হবে
পাপ ব’লেও তুই জানিস্ তা’। ১৬।
নিজের বাঁচা-বাড়ার সাথেই
অন্যে বাঁচা-বাড়ায় ধরা,
ওইটাকেই তো ধৰ্ম্ম বলে
ঐ চলনই ধৰ্ম্ম করা ।১৭।
নিত্য জীবনে ধৰ্ম্ম যেখানে
নন্দনে পায় মূর্ছনা,
অর্থ, কাম, মোক্ষ
হ’য়ে স্ফীত বক্ষ
কত করে তা’রে অর্চ্চনা । ১৮।
যেমন চলায়-বলায়-খাওয়ায়
বাঁচা-বাড়ায় হয় ধৃতি,
ধৰ্ম্ম জানিস্ সেই চলনে
সেই তো জানিস্ সার নীতি । ১৯।
ধৰ্ম্ম যদি নাই রে ফুটলো
জীবন-মাঝে, নিত্য কর্ম্মে,
বাতিল করে রাখলি তা’রে
কী হবে তোর তেমন ধৰ্ম্মে? ২০।
ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাপর
হ’য়ে ধৰ্ম্মে চলবে যত,
ধৰ্ম্ম আনবে অর্থ তোমার
কাম-মোক্ষ তেমনি তত । ২১।
কৰ্ম্ম-মাঝে ধর্মকে যে
পালন করতে পারল না,
ধৰ্ম্মে-কর্ম্মে আনল বিভেদ
পদে-পদেই লাঞ্ছনা। ২২।
ইষ্ট-নেশার বিভোর টানে
স্বাস্থ্য-বিধি পালবি রে,
ভাল-কিছু এলেই মনে
তক্ষুণি তা’ই করবি রে;
পরিস্থিতির বাঁচা-বাড়ায়
যত্ন নিয়ে সর্ব্বক্ষণ,
ইষ্টপানে উচ্চেতিয়ে
ধরবি তুলে তা’দের মন;
ইষ্টভৃতি জোগাড় ক’রে
নিত্য করিস্ নিবেদন,
শক্তি পাবি মুক্ত হ’বি
একেই বলে ধৰ্ম্মায়ন । ২৩।
ইষ্টভৃতে দীক্ষা বাঁচে
শরীর বাঁচে কৰ্ম্মে,
সদাচারে সমাজ বাঁচে
জীবন বাঁচে ধর্ম্মে। ২৪।
ধৰ্ম্ম যদি অভ্যুদয়
পূর্ব্বপুরুষ-জাগরণ,
তাই কি তবে ধৰ্ম্ম হয়
বেঁচেই যা’তে হয় মরণ ? ২৫।
ধৰ্ম্ম যদি বাঁচা-বাড়াই—
কেরদানি আর কসরতে,
উল্টো কথার পণ্ডামিতে
কেউ যদি কয় তা’ ছাড়তে-
মতিচ্ছন্ন তা’রেই জানিস
আত্মম্ভরী বাঘডাঁশা,
বাঘের মত দেখতেও যদি
শূয়োর-মুখো সেই নাসা। ২৬।
এক মাটিতে বাঘও গজায়
শেয়াল-শূয়োরও জন্মে,
এরাও কি তাই সবাই সমান
সমানই জাতিতে ধৰ্ম্মে?
যদি এক প্রাণনে আনতে পারিস্
শেয়াল হরিণ বাঘ বারণে,
পৃথক হ’লেও দেখতে পাবি
ধৰ্ম্ম কোথায় কী ধরণে । ২৭।
লক্-লেলিহান ফোঁসফোঁসানী
সরীসৃপী দুইটি চোখ,
আঁধার-ঢাকা চামড়াখানা
ফাঁকির লোফায় বেজায় রোখ;
শয়তানী ঐ অন্ধকারী
কালসাধুর বেশভূষা,
তপ্পা মেরে হুজুগ দিয়ে
করছে সবায় বাদুড়-চোষা। ২৮।
মরণভেদী ধৰ্ম্ম হেঁকে
চল্ প্রবর্ত্তক সাধু ওরে,
দীন-দুনিয়ার আগল-পাগল
মম্মদিগ্ধ ব্যথিতরে-
ধ’রে তুলে গর্জ্জরোলে
দীপ্ত কর্ রে ধৰ্ম্মচালে,
আগলহারা বুকের টানে
গা’, ওরে গা’, স্বস্তিতালে । ২৯।
পিতৃপুরুষ কৃষ্টি যদি
থেকেই থাকে তোর বজায়,
যে-পথ ধ’রেই চলিস্ ধৰ্ম্মে
জাত কি তা’তে নিপাত যায়? ৩০।
ধৰ্ম্ম দিয়ে জাতের তফাৎ
এও কি কোথায় হয়?
জনন থেকেই জাত যে গড়ে
ধরন-ধারণ কতই ধরে
রেত-শরীরী অমর-চলায়
মূর্ত্ত ধাপে বয়;
ধর্ম্মে সবাই বাঁচে-বাড়ে
সম্প্রদায়টা ধৰ্ম্ম না রে,
জন্মজীবন দীপ্ত করে-
ধৰ্ম্ম একই হয় । ৩১।
মতবাদ হো’ক না যা’ই
হো’ক না গুরু যে জাত-জন,
সেইটি রে তুই ধৰ্ম্ম জানিস্
করতে পারে সব পূরণ। ৩২।
উপার্জন যা’র হৃষ্টচিত্তে
প্রেষ্ঠে প্রতুল করল না,
নিছক জানিস্ ধৰ্ম্ম তাহার
অভ্যুদয়ে ধরল না। ৩৩।
দান ও দয়া ধৰ্ম্মপথে
হ’লে সুশাসিত,
প্রাপ্তি তাহার সম্বৰ্দ্ধনে
চলেই সুনিশ্চিত । ৩৪।
সব যা’-কিছুর পূরণ পাবি
গড়ন সাথে অভ্যুত্থান,
সেইটি ধ’রে চোখ খুলে চল্
সেইতো ধৰ্ম্ম উছল প্রাণ । ৩৫।
ইষ্টস্বার্থ পথে চ’লে
নিজের বাঁচা-বাড়ার ধাঁজে
রাখলে অন্যের বাঁচা-বাড়ায়
ধৰ্ম্ম থাকে চেতন সাজে। ৩৬।
পাপে যখন আসে ঘৃণা
আসে আক্রোশ, অপমান,
ইষ্টপ্রাণন ফেঁপে ওঠে
তবেই পাপের পরিত্রাণ । ৩৭।
অভ্যুদয়ী যেখানে যা’
সব বৈশিষ্ট্য পূরণ করে,
ভাঙ্গন ঝোঁকের বেচাল চলন
ধৰ্ম্ম জানিস্ রুধেই ধরে। ৩৮।
ধৰ্ম্ম যখন নিবু-নিবু
মনে ভরবে মল,
টলমল যুক্তজীবন
কৰ্ম্ম হয় বিফল। ৩৯।
ধৰ্ম্ম তোমার ইষ্টার্থেতে
পাচ্ছে কিনা বর্দ্ধনা,
চতুব্বর্গই হ’চ্ছে তাহার
সুষ্ঠু শোভন লক্ষণা । ৪০।
বাঁচা-বাড়া খিন্ন যেথায়
আচরণ মলিন,
খুঁজে-পেতে দেখিস্ সেথায়
ধৰ্ম্ম স্বাস্থ্যহীন । ৪১।
পূরণ-বাণী গড়নপ্রবণ
সন্ত-সাধু-প্রেরিতদের,
যে জাত-জনের হো’ন না তিনি-
বিভেদ-বাণী ম্লেচ্ছদের । ৪২।
তথাগতদের মধ্যে বিভেদ
করে যে-জন সে আর্য্যক্লেদ । ৪৩।
কৃষ্ণ-রসুল বিভেদ ক’রে
বুদ্ধ-ঈশায় প্রভেদ গণিস্,
আরে ওরে ধৰ্ম্মকসাই
কুটিল দোজখ মনেই রাখিস্;
এক বাপেরই পাঁচটি ছেলে
দেখলি না তুই চোখটি মেলে,
কাউকে বাপের করলি স্বীকার
কাউকে বললি নয়,
কা’রে রে তুই দিলি ধিক্কার
গাইলি কাহার জয়? ৪৪।
ধৰ্ম্মবিধি সবই সমান
দেখতে শুধুই রকমফের,
লাখ সম্প্রদায় থাক না কি তা’য়?
রইলে একই ইষ্ট জের । ৪৫।
পূর্ব্বপুরুষ জাত-গরিমা
জানিস যা’তে ছাড়তে হয়,
এমনতর ধর্মবাণী
জগদগুরুর নিছক নয় । ৪৬।
পূর্ব্বপুরুষ চেতন-ধারা
ধর্ম্মে যদি ছাড়তে হয়,
জোর গলাতে বলছি আমি
নিছক সেটি ধৰ্ম্ম নয়। ৪৭।
পারম্পর্য্যে ইষ্টজেরটি
যখনই যে ভাঙ্গল,
গণসমষ্টির ব্যষ্টিমূর্ত্তি
তখনই সে মারল । ৪৮।
পূর্ব্বতনে বাতিল ক’রে
যারাই ছড়ায় ধৰ্ম্মজাল,
আর সবারে সাবাড় ক’রে
তা’রাই চায় থাকতে বাহাল । ৪৯।
পূর্ব্বপুরুষ ধরন-ধারণ
পূরণ-পথে নবীন গড়ন,
অভ্যুদয়ী চলন-চালন
ধর্ম্মেরই এই উৎক্রমণ । ৫০।
মতবাদে জাতের ফারাক
ইষ্ট-তফাতে বংশভেদ,
ধৰ্ম্ম-ধারার চলন-চালে
হয় না জানিস্ জাত-বিভেদ । ৫১।
ঈশ্বরেরই উপাসনায়
হিংসা-সাধন পশুবলি,
বিশ্বপ্রভু নেন না তাহা
যায় না তাঁ’তে সে-সকলই। ৫২।
জীবন-বৃদ্ধির আরাধনায়
অহিংসাভরা অনুষ্ঠানে,
রকমারি আবেগ-চলন
উদ্দেশ্য এক ভগবানে,
থাকেও যদি এমনতর
প্রকারভেদ সাধনার-
ধর্মযুদ্ধের দোহাই দিয়ে
আনলে বিরোধ নরক তা’র । ৫৩।
হিংসা-দ্বেষী বৃত্তিবিধুর
পালন-পূরণ মিলন-হারা,
চতুর চালে ধর্ম্মনীতির
সমর্থনে দিয়ে কাড়া,
ভরদুনিয়ার প্রেরিতদের
কা’রও ভক্তি-অছিলায়
অন্য প্রেরিত-নীতির দলন
করতে যদি কেহ ধায়,
তা’রেই নিছক কাফের জানিস্
ধর্মদ্রোহের কারণ সেই;
তা’কে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া
অবজ্ঞা সে ঈশ্বরেই। ৫৪।
ইষ্টতীর্থ আরাধনার
ম্লেচ্ছীদলন জানতে পেলে
প্রাণশক্তি বুদ্ধিশক্তি
শরীরশক্তি সকল ঢেলে-
নিপাত করি’ সেই দলনে
ইষ্টতীর্থ-আরাধনার
গৌরব-স্তম্ভে অটুট ক’রে
অটল রাখলে প্রতিষ্ঠার,
ধৰ্ম্মযুদ্ধ তা’কেই বলে
এমন আহব করলে জয়,
শক্তরাগে বৃত্তিগুলি
ইষ্টস্বার্থে গ্রথিত হয়;
আবেগভরা ইষ্টটানের
আগলভাঙ্গা ঝটিত বেগে
অতিপাতকীও ঝলক-তপে
স্বর্গ লভে দীপক রাগে। ৫৫।
শিষ্য-গুরুর ভেদ গণে না
এক নজরে ভজে,
ধৰ্ম্ম তাহার দ্বিধা হ’য়ে
দুর্বিপাকেই মজে । ৫৬।
পূর্ব্ব ঋষি মানে যা’রা
এক আদর্শ ভিন্ন ধারা। ৫৭।
প্রেরিতে যে প্রভেদ করে
অন্ধ তমোয় সাবাড় করে। ৫৮।
ধৰ্ম্ম যেখানে বিপাকী বাহনে
ব্যর্থ অর্থে ধায়,
তখনি প্রেরিত আবির্ভূত হন
পাপী পরিত্রাণ পায় । ৫৯।
আপ্তপূরণ ধারাটি তোর
বাতিল ক’রে অকৃতজ্ঞ,
সেই হৃদয়টি নিয়ে যাচ্ছিস্
প্রেরিতে ধ’রে হ’তে প্রজ্ঞ?
কায়দা-কলম ভণ্ডামি তোর
খাটতে পারে মানুষের কাছে,
ভাবিস পাবি পাগল অজান
রেহাই বিধির বান্দার কাছে? ৬০।
জগৎমাঝে যে জাত-সমাজ
উঁচু-নীচু যেই না জন,
পূরণ-প্রবণ-সাধু-প্রেরিত
নমস্য সবার তাঁ’রাই হন। ৬১।
ধর্ম্মের নামে দোহাই দিয়ে
হরেক রকম ভানে
সাধু সেজে অনেক পুরুষ
মেয়ে ভুলিয়ে আনে,
ধৰ্ম্মে কামবৃত্তি-সেবা
নেই কখনো জানিস্,
ফুসলানিতে দেখিস্ নারি!
কভুও নাহি পড়িস্। ৬২।
প্রেরিতে বিভেদ নাই যাহাদের
রসুল ব’লে মানে,
উপকারীর স্বতঃই গোলাম
মরেও যদি প্রাণে,
শান্তিবাদী শান্তি-সন্ত্রী
দীপ্ত-পূরণপ্রীতি,
সন্ধ্যা পাঁচে উপবাসে
গায় ঈশত্বের গীতি;
সব প্রেরিতের পূরণ-মতের
সেবক-সাধক প্রাণ,
পূর্ব্বপুরুষ সূত্র-ছেঁড়া
নয়কো ইতর টান;
একেশ্বরে হৃদয় ঢালা
শান্ত মতিমান,
জনসেবী জীবন-উপাসক
তা’রাই মুসলমান;
এমনতর রেশও যেথায়
নয়কো বিদ্যমান,
রসুল-প্রেমের মুখোসপরা
শঠকপটী প্রাণ। ৬৩।
ধৰ্ম্ম ঘোষে বাঁচা-বাড়ায়
ভরদুনিয়ায় একই ধাঁজে,
বক্তা ঋষির পথটিও এক
বিভেদ শুধুই ব্যক্তিমাঝে;
ধৰ্ম্মনীতি তাই রে সমান
যেথায় কেন যানে আরে,
দেশ-কাল আর পাত্র-ভেদে
পৃথক যা’ তা’ ব্যবহারে;
সেই দেশ আর সেই কালেতে
সেই অবস্থায় সেই আচার
ধৰ্ম্মপন্থী হয়ই জানিস্
পুষ্টি যা’তে বাঁচা-বাড়ার;
খ্যুটি ছাঁচে দিগ্গজী প্যাঁচে
ক’সনে রে আর বিভেদ-কথা,
অকাট্য একই ধর্ম্মে সবার
হ’য়েই আছে সার্থকতা । ৬৪।
পূরণ-গড়ন যুগের যা’-যা’
স্বতঃ গজিয়ে সংস্কারগুলি,
জন্ম নিয়ে সহজ করায়
পূর্ব্বতনে গেঁথে তুলি,’
দীপন আলোয় জনপদের
আঁধার নিকেশ করে দ্যায়,
বাঁচা-বাড়ার সামগানেতে
সংস্পর্শীদের সব নাচায়;
ঐ মানুষে আর্য্য সবাই
যুগাবতার ব’লেই গণে,
বিশেষ নতি তাঁ’কেই পূজে
প্লাবন আনে তাঁ’র যাজনে। ৬৫।
ইষ্টগুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক গুরু বংশধর,
রেত-শরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর । ৬৬।
একস্রষ্টা অদ্বিতীয়
নাইকো যা’র মনে,
প্রেরিতকে অস্বীকারে
উপাসনা গণে;
পূর্ব্বতনে প্রেরিতদের
স্বীকারে নাই টান,
প্রেরিতে বিভেদ করাই যা’দের
স্পদ্ধী অভিযান;
হত্যা করি’ পূজে ঈশ্বর
মাংসে উদর ভরে,
সেই প্রত্যয়ের নিছক টানে
যা’রা জীবন ধরে;
পূর্ব্ব-পূরণ বর্তমানে
শ্লেষের গাথা গায়,
প্রেরিত-তীর্থ অবজ্ঞাতে
দলতে থাকে পায়;
যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি
পড়শী-সেবা নেই,
ম্লেচ্ছ-কাফের তা’রাই জানিস্
শয়তানসেবী সেই। ৬৭।
একস্রষ্টা অদ্বিতীয়
যে-জন মনে জানে,
প্রেরিত প্রতীক তাঁ’রই পথ
গাঁথা যাহার প্রাণে;
পূর্ব্বতন প্রেরিতদের
স্বীকার-নতির টান,
প্রেরিত বিভেদ করে নাকো
এমনি মতিমান;
হত্যা করি’ ঈশ্বরকে
করলে নিবেদন,
সেই রক্ত-মাংস তাঁ’তে
পৌঁছে না কখন;
প্রত্যয়টি এমনি যা’র
হৃদয়েতে গাঁথা,
পূর্ব্ব-পূরক বর্ত্তমানে
নতিতে হেঁট মাথা;
তীর্থে হৃদয় দীপনভরা
দীপ্ত অনুরাগ,
যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি
পড়শী-সেবী যাগ;
এমনতর প্রাণ যেখানে
সৎ-উপাসক সেই,
নতি চলে বিনয়-রাগে
শ্রেষ্ঠ তাঁহাতেই। ৬৮।
কুম্ভীরেরে বাহন ধ’রে
সর্পে করে তুই আয়ুধ,
বৃশ্চিকেতে তৃণটি ভ’রে
ম্লেচ্ছ নীতি কর অবুধ । ৬৯।
দুঃখ-আঘাত-অবসাদে
ডরবি কেন আর্য্য ছেলে,
ফণীর মণি তুলতে কেন
পারবি না রে বুদ্ধি ঢেলে । ৭০।
পূর্ব্বতনে নতির ধারায়
পূর্ব্বকৃষ্টি-সম্পূরণে
ছিটিয়ে দিয়ে সে-সম্পদে
ধরেন যিনি উদ্বর্দ্ধনে,
তাঁ’কেই বলে পুরুষোত্তম
ভগবানের দোস্ত জানিস্,
তাঁ’রই নীতির কৃতঘ্নতায়
পিতৃপুরুষ কৃষ্টি ছাড়িস্?
ওরে বাতুল মত্ত পাগল
ম্লেচ্ছ বেবুঝ কাফের তুই!
কা’র দোহাইয়ে কী বলিস্ তুই
মিথ্যা ধ’রে চলছিস্ নুই’;
ধৰ্ম্ম যেথায় বাঁচা-বাড়া
তার কি আবার বদল হয়?
চলন-গুণেই ক্রম-পূরণে
ঘোষেই ধৰ্ম্ম বিধির জয়;
খেয়ালবশে মিথ্যে কথায়
দোহাই দিয়ে দোস্ত খোদার,
এমন বলা বলিস্ না রে
মুক্ত ক’রে দোজখ-দ্বার! ৭১।
আর্য্য তোরা ছাড়লি যেদিন
পর্য্যায়ী যুগ-পুরুষোত্তমে,
উৎসহারা খণ্ড ধ’রে
জীবন দিলি জাহান্নমে;
রক্তে আর্য্যমদির তা’রা
আজও জাগে স্তিমিত আঁখি,
এখনও নে প্রাণভরে ডাক,
চল্ সিধে চল্ সে-পথ রাখি’;
খড়গ ধ’রে ফিরে দাঁড়া
বর্শা ধ’রে মুষ্টি-করে,
ম্লেচ্ছ-বধির চলনা যত
বিদায় কর্ রে নিকাশ করে;
ওই ওঠে দিন যদিও মলিন
মেঘলা যাবে ফুটবে দ্যুতি,
সেবার অন
ল উঠুক জ্বলি’
ইষ্টযজ্ঞে দে আহুতি;
ফের্ ওরে ফের্ ঈশানদেবের
ঐ শোনা যায় মন্ত্র হাঁক,
দুষ্ট যা’ তা’ চুরমারি’ কর
অমর আকাশ দীপ্ত ফাঁক । ৭২।
পূর্ব্বতনে নতির ধারায়
পূরণ-স্থিতি গড়ন সাথে,
সমাধানে সমাহারী
বিধির নীতি নিয়ে মাথে;
জাতকে দিতে অমরণের
মন্ত্রমুখর অটুট আলো,
তাঁ’রই নীতির হোমটি তুমি
অন্তরেতে নিত্য জ্বালো;
বুঝে-সুঝেও যা’রা তাঁ’রে
ধরে না বা ধরতে নারে,
ম্লেচ্ছ তা’রাই মরণ-বধির
হানেই জাতে মরণ-কালো;
দূরে রাখিস্ সাবধানেতে
ধরিস্ আলো তা’দের পানে,
ভেঙ্গে যদি পারিস্ আনিস্
মৃত্যুঘ্নী তোর আহব-বাণে ! ৭৩।
10