পুরুষ ও নারী :-
নারী পাবে পুরুষ-চলা
পুরুষ নারীর মতন,
পাগলা কথার ফোকলা মানে
দুয়েরই এতে মরণ;
নারীর ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠা নারী
ধাত্রী পাত্রী মাতা সে,
পুরুষ কিন্তু পৌরুষে ধায়
গৌরব-গুরু উল্লাসে । ১।
নারীদেহের গড়ন-পেটন
কোষের উপাদান,
পুরুষ-পোষক ব’লেই কিন্তু
ভিন্ন তা’র আধান ৷ ২৷
ধাত্রী যা’রা পাত্রী যা’রা
হোত্ৰী-নেত্রী-প্রাণ,
আহৃতিদক্ষা পোষণ-দীপ্তা
লক্ষ্মী লোকত্রাণ;
শিষ্টা নারীর বিশেষ স্বভাব
ঐ তো নারীর স্থান । ৩।
পূরণ-প্রবণ পালন নিয়ে
বৃদ্ধির হ’য়ে রথী,
পুরুষ চলে কৃষ্টিরথে
নিয়ে গৌরব-গতি । ৪।
পূরণ-প্রবণ পরস্পরের
সাম্য-স্বার্থী অনুকূলে,
পূরণ-করা গড়ন-ভরা
কৰ্ম্মে সত্তা ওঠে ফুলে ৷ ৫৷
বউ-সৰ্ব্বস্ব হ’লি যেই
শয়তানেতে ধ’রল সেই । ৬।
বীরত্ব যা’র মেয়ে-মহলে
বাগ্-বিলাসে ধায়,
বাস্তবতার আতপ-তাপে
শুকিয়ে ওঠে প্রায় । ৭।
মানদূরত্ব হটিয়ে দিয়ে
নারীর সঙ্গ করে,
এমন জনায় নিশ্চয় জানিস্
কাম-ডাইনী ধরে । ৮।
নারীমুখো রোখালো যা’রা
তা’রা কিন্তু কাপুরুষ,
বাহাদুরী সবই তা’দের
ভজে জেনো মেয়েমানুষ । ৯।
স্ত্রী-আনতি উদ্বোধনায়
তা’তেই মজে থাকল যে,
সেই প্রেরণা বাইরে ছুটে
অযুতে ফুটে ওঠে না সে,
সার্থকতায় শতেক ঘাটে
পূর্ণ করে না পড়শীপাটে,
যতেক পাখা উঠুক তাহার
মাছির রাজা জানিস্ সে । ১০।
পুরুষ যখন নারীর প্রতি
অবাধ অনুরাগে,
সমবেদনায় জর্জরিত
রঙ্গীন প্রীতির ফাগে,
পুরুষ-প্রীতি সমবেদনা
ব্যথায় বীতরাগ—
সে-পুরুষের নষ্ট মাথা
কামেই সজাগ । ১১।
উচ্চে নারীর একনিষ্ঠ
ফুল্লরাগের দ্যোতনায়,
জীবন-জয়ে দীপ্ত পুরুষ
নিত্য নবীন মূৰ্চ্ছনায় । ১২।
জাত-জনম-জীবন নারীর হাতে
শুচির নিয়ম তাই হয় মানাতে । ১৩।
নারীর পথে পুরুষ যখন
প্রগতিশীল নারীর টানে,
পুরুষত্বের বিলীনতায়
যাবেই উবে ধ্বংস-পানে;
নারী যখন পুরুষ-ছাঁচে
গ’ড়ে তোলে তা’র প্রকৃতি,
নারীত্বে তার পেত্নী-ভাবের
ঘ’টেই থাকে কুবিকৃতি । ১৪।
ভয়-সমীহ-সম্মান
আদরেও থাকে দূরত্বমান;
ভক্তি-আনত শ্রদ্ধামদির
অটুট টানেও সাম্য স্থির;
আবেগ-রাঙ্গা আসঙ্গেতে
মাখামাখি রয় না মেতে;
স্নেহ-মমতা এতেই জানা
পবিত্রতার ঐ নিশানা । ১৫।
কুমারী একটু বড় হ’লেই
পুরুষ ছুঁতে নেই,
যথাসম্ভব এর পালনই
উন্নয়নের খেই । ১৬।
বাপ-ভাই ছাড়া কারু কাছে
নিতে নাইকো কিছু,
নিলেই জেনো হয় মেয়েদের
মনটা অনেক নীচু । ১৭।
গান-বাজনা কি উৎসবে
কিংবা ভ্রমণেতে,
বাপ-ভাই ছাড়া পুরুষ সঙ্গে
দিনে মেয়ে যেতে,
এই নীতিটি করলে পালন
কমই হবে মেয়ের স্খলন,
পুণ্য-ভরা সুফল পাবি
চলবি শুভে মেতে । ১৮।
শাসন-ভরা ভয়-সমীহে
মিতসোহাগ-আদরে
গজিয়ে উঠলে দক্ষ-সেবায়
সেই মেয়ে ঘর আলো করে । ১৯।
দেখে-শুনে কথা ক’য়ে
নতজানু নতির প্রাণে,
ভয়-সমীহ উঠলে ফুটে
তবেই নারী যোগ্যা মানে । ২০।
পতিব্রতী উপাসনায়
আলোক-লোকে সতী গজায়,
ও-তপস্যায় থাকলে জোর
পালায় দুঃখ-বিপাক ঘোর । ২১।
সতীর বাড়া পুণ্য নাই
বংশ-সমাজ আলো,
এই সতীত্বের উপাসনায়
অটুট আবেগ জ্বালো । ২২।
দুনিয়া হ’তে স্বর্গদ্বার
সতীর আলোয় পরিষ্কার,
বৃত্তিভেদী একমুখতা
আনেই সেবায় উচ্ছলতা;
দুঃখ-কষ্ট যাই-না আসুক
থাকলে সতী ঘরে
শুভ হ’য়ে বন্দনা গায়
মলয় দোদুল ভরে । ২৩।
সতীর হাওয়া লাগলে গায়
পড়শী বেড়ে ঊর্দ্ধে ধায় । ২৪।
জীবন-বৃদ্ধি চর্য্যা ক’রে
সাধলে স্বামীর উন্নতি,
পতিব্রতা কয়ই তা’রে
সিদ্ধ-কামা সেই সতী । ২৫।
সতী-পতিব্রতার চেয়ে
ধর্ষিতা যদিও ন্যূন,
প্রেষ্ঠমুখী তপের বলে
থাকে না কালে ঘুণ । ২৬।
স্বামীর প্রতি তুখোড় টানে
বৃত্তিভেদী নন্দনায়,
চলছো যখন মেয়ে তুমি
পাতিব্রত্য রয় সেথায়;
ঐ সাধনায় সিদ্ধ হ'লেই
সতী হবে তুমি,
বংশ তোমার উজল হবে
উজল সমাজ-ভূমি । ২৭।
ছেলে-মেয়ে একযোগেতে
করলে পড়াশুনা,
পড়ার সাথে বাড়ে প্রায়ই
কামের উপাসনা;
কাম-কল্লোল নাই যদি পায়
সৎনিয়ন্ত্রণ শুভে,
ভ্রষ্ট হবে জন্মধৃতি
পড়বে পাগল-কূপে । ২৮।
শোন্ রে বলি আমার মেয়ে
আমার নিছক কথা,
চলিস্ শুনে সেই পথেতে
বুঝিস্ দিয়ে মাথা ;
তুষ্টি প্রীতির পথে স্বামীর
জীবন, যশ আর বৃদ্ধি,
বৃত্তিভেদী অটুট টানে
হয় সতীত্বে সিদ্ধি । ২৯।
স্বামীর বর্ণ-বংশ-গৌরব
সবার চাইতে শ্রেষ্ঠ জানিস্,
সেই বর্ণ-বংশ-আচার
প্রাণপণেতে রাখিস্ মানিস্ ৷ ৩০ ।
পেটের ছেলেয় থাকেই নেশা
স্বামীর প্রীতির সুরে,
অন্যেতে যা'র ভালবাসা
রয় ছেলে তা'র দূরে । ৩১।
কত অল্পে কত বেশীর
পোষণ করতে পারিস,
গৃহিণীপনার তুকটিই এই
নিছক মনে রাখিস্ । ৩২।
ঘর-করনার কাজে-কর্ম্মে
সতত রাখিস্ কড়া নজর,
প্রয়োজন বুঝে কত অল্পে
করতে পারিস্ কত সুন্দর;
এই অভ্যাসের নিয়ন্ত্রণে
লক্ষ্মী বউটি হ’বি,
অল্পের ভিতর উপচে দিয়ে
সাশ্রয়েতে র'বি । ৩৩।
ঘর-করনার প্রত্যেক কাজে
দেখবি হিসাব করে,
কেমন কোথায় কী রাখলে তা'র
নাশ ঘটে না ওরে;
কেমন করে কী হ'তে কী
বাঁচিয়ে রাখা যায়,
সুষ্ঠু-স্বল্প তুকের ভিতর
কী লাভ কোথায় ;
এই নজরে এই হিসাবে
দেখবি রাখবি করবি,
টগবগিয়ে গৃহস্থালী
উচ্ছলতায় ধরবি । ৩৪।
কটমটিয়ে সুপুরি খাওয়া
নাক ডাকিয়ে পাড়া ঘুম,
ঘুমের মুখে চপ্চপানি
লালাপড়া বেমালুম;
দেখলে এমন পুরুষ-মনের
অনুগতি দৈন্য পায়,
এড়িয়ে চলার মেজাজ জাগে
সম্বেগও তার মিইয়ে যায়;
মুখে ঘামে চুলে গন্ধ ম
য়লা কাপড় সায়া—
কুৎসিত এমন চলন-চালে
তিক্ত পুরুষ-মায়া । ৩৫।
পিতৃ-গৌরব শীলযুতে রাখ
শ্বশু-শ্বশুরে মহিমায়,
ভ্রাতৃদ্যুতি দীপন হৃদয়ে
দেবরে পালিও দ্যোতনায়;
মাতৃস্বভাব-সুরভি আহরি ’
সৌরভে রাখিও প্রকৃতি,
ভগিনী-স্নেহল পালন-পরশে
ননদে দানিও সুকৃতি;
নিজসত্তার প্রতীক জানিয়া
স্বামীরে এমনই সেবিও,
দৈন্যে হানিয়া ঈশচেতনায়
তাঁহারে সজাগ, রাখিও;
পরিজন হ’তে আহরি’ আদর
সেবা-সম্মান-প্রতীতি,
তুষিও পুষিও নিয়ত সবারে
রেখো মেয়ে মোর এ-নীতি । ৩৬।
শ্বশুর-শাশুড়ী মমতা-প্রবণ
দীপন পুষ্টি-তালে,
পূজারিণী বৌ যেখানে
ঘর-করনা পালে,
লক্ষ্মী আসে আপনি সেথায়
পদ্মশঙ্খ নিয়ে,
কৃষ্টি-দোলায় দুলিয়ে তোলে
জীবন-জ্যোতি দিয়ে । ৩৭।
ভক্তিভাজন শ্বশ্রু-শ্বশুর
পূজ্য দেব-দেবীর,
তাঁদের প্রতি সেবাশীলা
করবি যে তদবির,
প্রাণের উৎস পরশ পেয়ে
যেমন সুখী ওঁরা,
সন্তানও তোর প্রতি তেমন
হবেই ভক্তিভরা । ৩৮।
পিতা, মাতা, গুরুজনে
বউ-এর সেবা পেল না কেউ,
স্ত্রী তোর সে কেমনতর ?
বাঘের সঙ্গে যেমনি ফেউ । ৩৯।
শ্বশুর-শাশুড়ী যেমনই হ’ন্
ভক্তি-সেবায় অনুক্ষণ,
তাঁদের অভাব-প্রয়োজনে
সবার আগে কর পূরণ;
রাখবি তাঁদের দীপ্ত করে
নিয়ত রাখবি এইটি ধ’রে,
এমনি ক’রে যতই চলবি
ক্রমে-ক্রমেই দেখবি বুঝবি,
কত জঞ্জাল-আবৰ্জ্জনা
পেয়ে নিছক মাৰ্জ্জনা,
উছল প্রাণে তৃপ্তিভরে
রাখবে তোরে দীপ্ত করে । ৪০।
শ্বশুর, ভাসুর, দেবর, ননদ
এদের প্রতি যেমন,
কথাবার্তা সেবা-কায়দা
প্রাণের প্রসারণ;
যেমনভাবে করবি আপন
অভ্যাস-ব্যবহার,
সন্তানেরও হৃদয়টি তোর
ফুটবে সে-প্রকার । ৪১।
স্বামী-সম্পদ দৈন্যে দলিত
না হয় এমনভাবে,
পিতৃকুলের নাশিতে আপদ
কভু না বিরতি পাবে । ৪২।
স্বার্থ-ব্যাহত ধৃষ্ট-কুটিল
হইয়া শ্বশুরকুল,
পিতৃকুলেরে অযথা পীড়িলে
নাশিও তাহার মূল । ৪৩।
শ্বশুরকুলের ঋদ্ধি যেথায়
আঘাতে পিতৃকুল,
প্রাণপণে তা’র নিরসনে করো
সিদ্ধ শ্বশুরকুল । 88।
পিতৃকুলের দুর্দ্দিনে নারী
শ্বশুর-গৌরব বাহিয়া,
স্মিত বদনে অভয়ে দাঁড়াও
পিতৃদৈন্য নাশিয়া । ৪৫।
পিতৃকুলের সঙ্গতি যদি
শ্বশুরকুলে না দলে,
সে-সঙ্গতি নারী প্রাণ-উপচারে
সাধিও যাহাতে ফলে । ৪৬।
মাতৃত্বটি সত্যি সজাগ
জানিস্ মেয়ে সেইখানে,
পরের ছেলের দরদ-ব্যথায়
মাতৃ-ঝলক যেই প্রাণে । ৪৭।
সত্তাপ্রতীক একই পুরুষ
যত নারীর রয়,
সম্বন্ধে সতীন হয় তাহারা
সমসত্তা বয়;
অবলম্ব আশ্রয় এক
একই স্বার্থ একই টান,
বেদন-ব্যথা একই তা’দের
সার্থকতার একই স্থান;
এ-বোধ যখন অবশ-কাবু
বৃত্তি-রঙ্গিল স্বার্থ-কুটিল,
বাতুল-বেভুল দুৰ্দ্দশাতে
নারীর জীবন হয়ই জটিল । ৪৮।
স্বামীর টানে মনটি আছে
সতীনে নাই সম্প্রীতি,
স্বামীর টানটি স্বার্থ-কুটিল
মিথ্যাচারী দুর্নীতি । ৪৯।
সমান ব্যথার দরদী সতীন
সমান সুখের মূর্ছনা,
সমান ঝঙ্কার প্রাণ বেয়ে যায়
হ’লেও ভিন্ন সৰ্জ্জনা । ৫০।
সতীন-পেটের ছেলেমেয়ে—
নিছক নিজের ব’লেই জানিস্ ,
পালন-পূরণ করবি তা’দের
অটুটভাবে এইটি মানিস্ । ৫১।
জ্যেষ্ঠা সতীন যত্ন ক’রে
সুখ-সুবিধা ছোট্টদের
না দেখলে তা’য় অলক্ষ্মীতে
উবেই আভা সম্পদের । ৫২।
সতীন-ছেলে নয়কো নিজের
এমন কথা ভাববি না,
স্বামীর সত্তা উড়িয়ে দিতে
এমন কিন্তু বলবি না । ৫৩।
পিতৃকুলেতে অবজ্ঞা ঢালিয়া
শ্বশুরকুলের ভজনা,
শুভ আমন্ত্রণ-হারা হয় নারী
ব্যতীপাতে ক্ষয় সাধনা । ৫৪।
বাপের বাড়ী হামেহাল
থাকলে নারী পয়মাল । ৫৫।
বাপের বাড়ী পুষলে মেয়ে
পুষ্টবৃত্তি মাথা তোলে,
প্রবৃত্তি তা’র বশ থাকে না
প্রায়ই নষ্ট অনেক স্থলে । ৫৬।
বাপের বাড়ী থাকে ভাল
সেই গৌরবে তৃপ্তি পায়,
শ্বশুর-গর্ব্বে প্রাণ নাচে না
অপটু তা’য় রাখতে বজায়,
নারী এমন কুলক্ষণের,
জন্ম- জীবন নয় পূরণের,
গড়ন-আবেগ নাই সে-নারীর
দৃপ্ত সম্পদ ক্ষয়েই ধায় ৷ ৫৭৷
মেয়ের চাকরী মহা পাপ
বিপর্যস্ত শ্বশুর-বাপ ৷ ৫৮ ৷
অসতীত্বের কুয়াসী স্তর
মেয়ের চাকরী করা,
ধী-টি জানিস আবছা হ'য়ে
লোভেই পড়ে ধরা । ৫৯।
যে-মেয়েরা চাকরী করে
জনন-জাতি তা’রাই হরে । ৬০।
বৃত্তিঝোঁকা হ'লেও নারী
বংশে উচ্চ হ’লে,
শ্রেষ্ঠ-পানে ধায়ই নজর
নীচকে ঠেলে চলে । ৬১।
বৃত্তি অবশে যে-নারীর
নষ্টে নম্য, মতি অস্থির । ৬২।
স্বামী ছাড়া পুরুষপ্রাণ
মারছে উঁকি নষ্টাপানা । ৬৩।
নষ্টা নারী তা’রেই কয়
স্বামী ছেড়ে যে অন্যে বয় । ৬৪।
স্বামীদ্বেষিণী নারী যা’রা
প্রসব করে কু,
আদর্শহীন হ'লে পুরুষ
বৃত্তিমুখী মেকু । ৬৫।
পরের বাবা, পরের দাদা
পরের মামা বন্ধু যত,
এদের বাধ্য-বাধকতায়
সম্বন্ধটি যাহার যত;
অনুরোধ আর উপরোধে
ব্যস্ত সারা নিশিদিন,
কামুক মেয়ে তা’কেই জানিস্
গুপ্ত কামে করছে ক্ষীণ । ৬৬।
বৃত্তিলোলুপ আবিল চাওয়ায়
স্বার্থ-শোভার প্রয়োজন,
কুট্নিগিরি ক’রে যবে
অবশ করে মেয়ের মন;
সেই ফাঁদেতে নিজে প’ড়ে
অসতী হয় মেয়ে—
বৃত্তিতাড়ায় সকল হারায়
অধঃপাতে যেয়ে ৷ ৬৭ ।
নারী যখন পুরুষ নিয়ে
বন্ধুবান্ধবতায়,
ভাববিলোলী সহানুভূতি
সেবায় এগিয়ে যায়;
নারীর ব্যথায় নাই কোন টান
ব্যস্ত পুরুষ নিয়ে,
অলক্ষিতে কাম-পেত্নী
ধরেছে তা’রে গিয়ে । ৬৮।
অসতীত্বের কুটিল ঝোঁকই
ছাড়ায় আপন কুলে,
মানগরবী দম্ভদাবী
কুলটা ক’রে তুলে । ৬৯।
স্বামীছাড়া পুরুষ-সঙ্গে
গোপন-পথে ঘরে,
যেতে নাইকো জানিস্ মেয়ে
রাখিস্ মনে ক’রে । ৭০।
স্বামী ছেড়ে পুরুষান্তরে
গেলে টান তা’য় ধরলে পরে,
কামবিলোলী অবশতায়
মেয়েরা সতীত্ব হারায় । ৭১।
ভ্রষ্টা নারী তা’রেই জানিস্
স্বামী ছেড়ে যেই,
বৃত্তিটানের কুহক নেশায়
পরের ধরে খেই;
পাতিব্ৰত্য ভানেই থাকে
ভজে অন্য পুরুষ,
গোপন উপপত্নী হয়
ভ্রষ্টা মেয়েমানুষ । ৭২।
পাতিব্ৰত্যে হ’লেও পতিত
স্বামীর কুলেই ভ্রষ্টা র’য়ে,
বৃত্তিঘাতী অনুতাপে
পতিপ্রাণতায় আরো হ’য়ে,
প্রায়শ্চিত্তে যথাবিধি
হ’তে থাকলে চলায়মান,
লোকচক্ষুর অজানপথেই
হ’য়ে থাকে তার উত্থান;
কিন্তু যদি পুনঃপুনঃ
দিশাহারা বৃত্তিচাপে,
ভ্ৰষ্টপথেই চলতে থাকে
কৃতঘ্নী হয় রিপুর দাপে ;
অশেষ পাপের নিঠুর আঘাত
জীবন-জনন করেই নিপাত,
এখনও নারী সাবধান হ’
পতির চর্য্যায় অটুট র’ । ৭৩।
একমুখতায় অবহেলে
বৃত্তিমুখী গেলি হ’য়ে,
তাই অসতী তরল মতি,
শ্রেষ্ঠ একে চল্ ব’য়ে । ৭৪।
অসতী হ’লেই সৰ্ব্বনাশ
কুলটার তো আরও,
দ’গ্ধে-দ’গ্ধে সে তো মরেই
মরণ সমাজেরও । ৭৫।
অসতী যদি হয়ই কেউ
হয় না যেন কুলটা,
মরবে তাতে দ’গ্ধে ওরে
বাড়বে তা’তে পাপ-ঘাটা । ৭৬।
পাগলী বেকুব মেয়ে আমার !
যদি অসতী হয়েই থাকিস্,
অনুতাপের আগুন জ্বেলে
ইষ্টানুগ তপে ফেলে
বৃত্তি-আবিল মন-কুলটায়
আগেই নিকেশ করিস্ । ৭৭।
কুলটাও যদি হয়েই থাকিস্
বর্ণঘাতী হ’স্ না,
নীচের অনুগমন ক’রে
কুজননে সমাজ ভরে,
অপার নরক সামনে ক’রে
আরও নরকে ধাস্ না । ৭৮।
শয়তানেরই কুহকী চর
মেয়ে তোদের সর্ব্বনাশে,
কাঁপিয়ে দিয়ে আর্য্যদেবে
বিক্ষোভিত করে ত্রাসে ;
এখনও তোরা নিঝুম ঘুমে?
ছোট্ রে দিয়ে অট্টহাস,
লক্ষ্যভেদী পদাঘাতে
বর্শা ছাড়ি কর্ নিকাশ । ৭৯।
ধৰ্ষণমুখী যদিই বা হ’স্
পরাক্রমী মেয়ে,
মারবি না হয় মরবি তখন
রাখিস্ কীর্তি ছেয়ে ! ৮০ |
ইতর নীতির প্রগতি-পথ
শম্ভুশূলে কর্ নিরোধ,
মেয়ে আমার, সতি আমার !
খড়্গশূলে রোধ বিরোধ । ৮১।
বহ্নিশিখায় খোপা বেঁধে
পাপহননী ত্রিশূল ধর্,
সিংহ-ধাওয়ায় খড়্গা নিয়ে
অসুরবুদ্ধি নিপাত কর্ । ৮২।
শার্দুলেরে বাহন ক’রে
সাপের ফণার মালা প’রে
কালবোশেখী ঝঞ্ঝাবেগে
ছোট্ রে নারী ছোট্ রে ছোট;
দত্যিদানার নীচবাহানা
আর্য্যাবর্তে দিয়ে হানা
ঘূর্ণীপাকের বেতাল গাঁথায়
হুলিয়ে-ভুলিয়ে দিচ্ছে চোট;
দশপ্রহরণ দশহাতে ধর
বক্ষ বিদরি’ ধ্বংসি’ ইতর,
সূর্য্যরাগী বজ্র তেজে
আর্য্যনারী! শত্রু টোট্ । ৮৩।
বুকের আগুন দাউদহনে
সাধ্বী মেয়ে জ্বালিয়ে তোল,
বৃত্তিজ্ঞানীর ইতর নীতি
পুড়িয়ে হুলুর করে রোল । ৮৪।
ওরে সতি! সাধ্বী মেয়ে !
আর্য্যনীতির ব্যাঘাত যা’,
সাপের মুখে চুমুক দিয়ে
উগ্রে সে-বিষ নাশ্ রে তা’ । ৮৫।
সাধ্বী তোরা নারী তোরা
ফাগুন রাগে আগুন জ্বাল্,
দুর্ব্বিনীত ইতরামি যা’
জ্বালিয়ে ফ্যাল্ পুড়িয়ে ফ্যাল্ । ৮৬।
শঙ্খ ফুঁকে অমর হাঁকে
উচ্চ রোলে পুরুষ-বুক,
তাথৈ থিয়ায় নাচাও নারী
বৰ্ম্মে ঢেকে মৃত্যুমুখ ৷ ৮৭।
আর্য্যকৃষ্টি-মাতাল সাড়ী
পর্ রে আর্য্য মেয়ে,
আর্য্যগর্ব্বে গরবিনী
চল্ দোদুলে ধেয়ে;
অমৃতেরই ভাণ্ড করে
পদ্মবনে অমর স্বরে,
ছেলেপিলেয় কৃষ্টি-হাওয়ায়
অমর মদির কর্ যেয়ে । ৮৮।
সতীর তেজে ঝসে দে মা
নিঠুর-কঠোর অন্ধকারে,
মদন-ভস্ম বহ্নি-রাগে
বৃত্তিরিপু দে ছারখারে;
প্রণবতালে ইষ্ট-মন্ত্রে
ঝঙ্কারি’ তোল্ সকল তন্ত্রে
বিষাণ-হাঁকে রুদ্র দোলায়
বজ্র হানি’ মৃত্যুদ্বারে;
আয় ছুটে আয়, আয় মা আমার !
ধর দীপকে আর্য্যতান,
ফুলিয়ে তোল্, দুলিয়ে তোল্
তাথৈ তালে আৰ্য্যমান । ৮৯।
#পুরুষ_ও_নারী #Anusruti_part_1#অনুশ্রুতি_প্রথম_খণ্ড#অনুশ্রুতি_১ম#ষষ্ঠ_সংস্করণ#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
🪔 https://www.amritokatha.in/ 🪔 👈
Telegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokathaa
10