🔷 শত্রুদের মধ্যে সহজেই মিল করতে পারে..
🔷 আদর্শ ও বিবাহ - বিধি ঠিক থাকলে balance ঠিক থাকে…
🔷 বাঙ্গালা ভাষায় যথাযথভাবে সাড়া নিতে ও দিতে আমরা অভ্যস্ত হতে পারিনি একেই বলে cultural conquest ( কৃষ্টিগত পরাভব )...
🔷 বেদাভ্যাস কোন্টাকে বলব , করতে হবে কী ?
২৯ শে আষাঢ় , শনিবার , ১৩৪৭ ( ইং ১৩/৭/১৯৪০ )
শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে কেষ্টদা শ্রীশ্রীঠাকুর - কথিত কতকগুলি ছড়া পড়ছিলেন । শ্রীশ্রীঠাকুর একটা ছড়ার ব্যাখ্যা - প্রসঙ্গে বললেন — কারাে অদ্রোহ প্রতিষ্ঠা হ'লে সে শত্রুদের মধ্যে সহজেই মিল করতে পারে ।
সর্ব্বজ্ঞত্ববীজ - সম্পর্কে আলােচনা - প্রসঙ্গে বললেন — সর্ব্বজ্ঞত্ববীজের রকমটা অনুসন্ধিৎসার ফলে যার মধ্যে ফুটে ওঠে , সে যে - কোন অবস্থাকেই তার নিজের favour ( আয়ত্ত ) -এ নিয়ে আসতে পারে । শ্রীকৃষ্ণের জীবনে এটা খুব স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় — তার সব জীবনটা যেন একেবারে ভগবান । অর , সব কিছুর এমনতর অনুকূল নিয়ন্ত্রণই organisation (সংগঠন) ।
কথায় কথায় শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — ছড়াগুলির minimum conception ( নূনতম বোধ ) যদি প্রত্যেক পরিবারে থাকে এবং তারা কাজের ভিতর - দিয়ে যদি তা অনুসরণ করতে চেষ্টা করে , তবে আর কিছু লাগে না ।
সরােজিনীমা শ্রীশ্রীঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন , আমাদের খোকা সিনেমা দেখতে চাচ্ছে , কী করব ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — না , যেতে দিয়ে কাজ নেই ।
তার একটু পরেই অরুণ এল । তাকে দেখে বললেন — দ্যাখ , যতদিন এখানে সিনেমা না গড়ে তুলতে পারবি , ততদিন সিনেমা দেখতে যাবি না — কেষ্টদা কিংবা তাের মা যদি নিয়ে যেতে চায় এবং না গেলে দুঃখিত হয় , তখন ছাড়া । অরুণও খুশি হয়ে রাজী হলো । শ্রীশ্রীঠাকুর কেষ্টদাকে বললেন — ওকে সদাচারগুলি শেখাবেন , সন্ধ্যাটাও যেন রীতিমতাে করে ।
৩১ শে আষাঢ় , সােমবার , ১৩৪৭ ( ইং ১৫/৭/১৯৪০ )👇
শ্রীশ্রীঠাকুর বিকালে তাসুতে বসে হাসতে - হাসতে বলছিলেন — ছড়াগুলির হয়তাে কত অদর হবে , স্কুলের পাঠ্য হবে , এর কত ব্যাখ্যা হবে , আবার জন্মগ্রহণ করলে সেগুলি পড়তে হবে , হয়তো ব্যাখ্যা বুঝতে পারব না , মার খেতে হবে মাষ্টারের কাছে — সেইজন্যই কি এইগুলি লিখছি !
কেষ্টদা মনুসংহিতা থেকে শ্রীশ্রীঠাকুরকে পড়ে শােনাচ্ছিলেন— “স্ত্রী আয় ব্যয় সমস্ত বিষয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করবে ।
” শ্রীশ্রীঠাকুর বলতে লাগলেন — বউ হওয়া কি সােজা কথা , সূধা এদিক থেকে অনেকখানি । রুক্মিণীর কথা শুনেছি , সে নাকি এমনভাবে সব ঠিক করে রাখত যে , কেষ্টঠাকুরের কিছু ভাবতেই হতো না । Josephine ( যােশেফাইন নেপােলিয়ানের স্ত্রী ) ও শুনেছি , যুদ্ধের জন্য funds ( অর্থ ) পর্যন্ত collect ( সংগ্রহ ) করত ।
পরে কথায় - কথায় কেষ্টদা জিজ্ঞাসা করলেন — আপনি তাে experience ( অভিজ্ঞতা) থেকে সব কথা বলেন , কিন্তু এত কী - ক'রে মনে থাকে ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — মনে কি আর থাকে , মনে পড়ে— line ( সূত্র ) বাধা আছে একটার সঙ্গে - সঙ্গে তার সব কথা এসে পড়ে , সব বােধ করা কিনা , এ তাে fact ( মর্মকথা ) —তাই এ বিজ্ঞান বলে । এর একটা কথার গণ্ডগোল হয়ে গেলে সব গণ্ডগোল হয়ে যাবে । যা - যা নিয়ে একটা কিছু হয় , অন্যান্য সবটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মায় mechanism ( কলাকৌশল ) শুদ্ধ motto ( ছড়া ) -গুলিতে দেওয়া হয়েছে । এ সত্ত্বেও যতদূর পারি , সহজ করতে চেষ্টা করেছি বরাবর । সন্ধ্যাবেলায় প্রফুল্লকে ডেকে বললেন — দুটো জিনিস— Ideal ( আদর্শ ) ও Eugenics ( বিবাহ - বিধি ) ঠিক থাকলে balance ( সমতা ) ঠিক থাকে ।
তার একটু পরে গম্ভীরভাবে নিশ্চয়তার কণ্ঠে বললেন , দ্যাখ , ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠাপর হয়ে যজন , যাজন , ইষ্টভৃতি ক'রে যাওয়াই সব , এর জেল্লা যার যত বেশী এবং বৃত্তি যার যত নিয়ন্ত্রিত — সেই তত বড় হয়েছে তারাই কোন - না কোন ভাবে এটা করেছে ।
অনেক রাত্রে একটি দাদা শ্রীশ্রীঠাকুরকে একটি অভিযােগ জানাতে আসেন । তখন সেই সঙ্গে সংশিষ্ট কয়েকটি ভাইকে শ্রীশ্রীঠাকুর ডেকে পাঠান । আসলে অভিযোক্তাকে শ্রীশ্রীঠাকুর বলতে লাগলেন — যখন শুনেছিলে তখনই শুনে নেওয়া উচিত ছিল , সত্যি ব্যাপারটা কী , মিটমাট করে ফেলা উচিত ছিল । তিন মাস ধরে তোমার মনের মধ্যে এ - সব অনুযােগ মজুত হয়ে তোমার মাথা গরম হয়ে উঠেছে , মানুষের কথায় বিশ্বাস করতে - করতে তােমার বিশ্বাস সহজ হয়ে গেছে । এখন সবই তুমি বিশ্বাস করতে পার ! কেউ যদি বলে যে আমি তােমার সর্বনাশ করতে চাচ্ছি , তা তুমি বিশ্বাস করতে পার , কিন্তু তােমার সম্বন্ধে সে - কথা কেউ বললে আমি বিশ্বাস করতে পারি না ।
সংশিষ্ট একটি দাদাকে বললেন — পরের কাছে শুনেই তুমি চটে গেলে । কিন্তু বেকুব । তুমি বিনীতভাবে সব কথা ওকে গিয়ে খুলে বলতে পারলে না ? তা না করে অযথা যার - তার কাছে স্পর্ধা প্রকাশ করতে লগালে ? এটা ভাল করনি ।
আর - একজনকে লক্ষ্য করে বললেন — এরা এমন হয়েছে যে , একজনের কথা আর একজনকে এমন করে বলবে যাতে বিরােধ বাধে , পরস্পরের মধ্যে মিল যা'তে হ'তে পারে সেদিক দিয়ে যাবে না — এই রকমটাই —এই রকমটাই সংহতি নষ্ট করে । অমিলের নিরসন করে মিল করতে পারাই তাে কৃতিত্ব । সেই বুদ্ধি যদি না গজায় , সকলেরই ক্ষতি ।
৪ ঠা শ্রাবণ , সসামবার , ১৩৪৭ ( ইং ২০/৭/১৯৪০ )
শ্রীশ্রীঠাকুর শ্রীযুত অনাথ চৌধুরীর জন্য আজ নিজেই অর্থ - সংগ্রহে বেরিয়ে ছিলেন । টাকা চাইবার সে কী অপূর্ব ভঙ্গী ! তিনি চাইলে দিয়ে যেন মানুষ কত তৃপ্তি বোধ করে , শত অসুবিধা - সত্ত্বেও কেউ ‘ না ’ বলে না , যেমন করে হোক কিছু যােগাড় করে দেয়ই । বিকালে হঠাৎ প্রফুল্লকে বললেন — কেষ্টদার জন্য যদি বি - এ পাশ assistant ( সহকারী ) যােগাড় করে দিয়ে তুই আর বীরেন তপোবনে যাস , তাহলে এখনই আরম্ভ করে দিতে পারি । Education ( শিক্ষা ) কাকে বলে দেখে নেব ।
তােরা সব research ( গবেষণা ) করবি — কেষ্টদা মাঝে - মাঝে যাবে— “ শিক্ষা প্রসঙ্গে একখানা বেরিয়ে যাবে ।
এরপর শ্রীশ্রীঠাকুর খবরের কাগজ পড়া শুনলেন ।
৬ ই শ্রাবণ , সােমবার , ১৩৪৭ ( ইং ২২/৭/১৯৪০ ) 👇
রাত্রে শ্রীশ্রীঠাকুর খেয়ে আসবার পর বাঁধের ধারের তাসূতে অনেক কথা হলো । মাছ , মাংস , পেঁয়াজ , রসুন খাওয়ার অপকারিতা - সম্বন্ধে অনেক কথা বললেন ।
তারপর বলতে লাগলেন — ইংরাজীর প্রতি সবার কেমন একটা ঝোক রয়েছে । নানাপ্রসঙ্গে যদি ইংরাজীতে বের হতাে তাহলে সবাই বেশী পড়তাে , আলােচনা করতো । বাঙ্গলায় যে - সব বিশ্লেষণ করে দেওয়া হয়েছে তাতে যেন ভাল লাগে , মাথায় ধরে না , বোধগুলিও বাঙ্গলায় প্রকাশ না করে ইংরাজী শব্দেই বলে , বাঙ্গলা ভাষায় যেন stimulus পায় না । Stimulus ব'লে ফেললাম ‘ উত্তেজনা কথা ব্যবহার না করে stimulus কথা ব্যবহারেই যেন মন সাড়া দেয় । বাঙ্গালা ভাষায় যথাযথভাবে সাড়া নিতে ও দিতে আমরা অভ্যস্ত হতে পারিনি একেই বলে cultural conquest ( কৃষ্টিগত পরাভব )।
কেষ্টদা বললেন — আমার মনে হয় , বাঙ্গলা ভাষা তত developed পুষ্ট নয় , অনেক সূক্ষ্ম ও বিচিত্র বােধ ও ভাবের চর্চা বা পরিচয় বাঙ্গলা ভাষায় হয়নি । আপনার ‘ সৃজন - প্রগতি ' বলতে গিয়ে ইংরাজীতে একটা শব্দও coin ( উদ্ভাবিত ) করা দরকার হয়নি , কিন্তু বাঙ্গলায় কত শব্দ coin ( উদ্ভাবন করতে হয়েছে— অবশ্য বাঙ্গলায় যেটা দিয়েছেন সেইটাই বেশী accurate ( যথাযথ ) । Stimulus কথাটার যতগুলি facet ও phase ( দিক ) আছে , উত্তেজনা এই শব্দের তা নেই ।
তখন অনুভূতির বর্ণনা , সৃজন - প্রগতি ইত্যাদি - সম্বন্ধে কথা উঠলো । শ্রীশ্রীঠাকুর — যতদূর বলা যায় , তা আমি বলেছি , কিছু বাদ রাখিনি । এখন বোধহয় আর অমন বলতে পারি না । ভাবি , কেমন করে বললাম । কেষ্টদা তাে বললেন , Science and Religion blended ( বিজ্ঞান ও ধর্ম মিশ্রিত ) হ'য়ে গেছে — কোন পার্থক্য নেই । এত বললাম , বোধ করলাম , কিন্তু আমার যে কিছু - একটা হলাে তা মনে হয় না , আমি যা ছিলাম তাই আছি ।
প্রফুল্ল — আপনার কি কিছু নূতন লাগে না ? কিছু পেলেন বা হ'লেন বলে বোধ করেন না ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — না , কিছুই না , একই রকম ।
কেষ্টদা , আপনি যে এম - এ পাশ করেছেন তাতে কিছু হয়েছেন বলে মনে হয় ? কেষ্টদা- না ।
প্রফুল্লকে জিজ্ঞাসা করলেন — তাের ?
প্রফুল্ল — না তো ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — ঐ রকম ! আমাকে যদি কেউ বিশেষ মর্যাদাসূচক কিছু বলতাে , আমার কিছুই মনে হতো না । তবে ভাবতাম , মা যেন শােনেন । মাকে তাক লাগিয়ে দেওয়া — এই ছিল আমার ব্যবসা । এই ছাড়া কোন ব্যবসা আমি জীবনে করিনি । মা আবার আমার সামনে কিছু বলতেন না । খ্যাপাকে ( শ্রীযুত প্রভাসচন্দ্র চক্রবর্তী ) ডেকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতাম , মা কি বলে - টলে । খ্যাপা বলতাে , ধান - চালের কথা , জায়গা - জমির কথা , আমার কথা কিছু বলত না । জিজ্ঞাসা করতেও পারি না , অথচ মনে - মনে লােভ - মা আমার কথা কী বলেন একবার শুনি । সারা দুনিয়া আমার প্রশংসা করুক তাতে আমার কিছু আসে যায় না , আমি কেয়ারও করি না , মা'র খুশি ছাড়া কিছুতেই যেন খুশি বােধ করতে পারতাম না , মা’র কাছ থেকে কিছু না পেলে মন সাড়া দিত না কাগজগুলি বের হলে মা’র কাছে দিতাম , মা প'ড়ে কী বলে ; মার বাহবা পেলেই হল । মা গিয়ে জীবনের কোন সার্থকতা নেই । মা , কেবল বলা আরম্ভ করেছিলেন — তােরে দিয়ে আমার সব আশা পূর্ণ হয়েছে , আর কিছু বাকি নেই । তখন মা'র অবস্থার জন্য মন খারাপ , তাই ও কথাতেও তত আনন্দ বােধ করতে পারিনি ।
প্রফুল্ল - মনের গভীরে গেলে আমরা তো কেমন benumbed ( অবশ ) হয়ে পড়ি , কাজকর্ম করতে পারি না , দুটো একসঙ্গে চলে কী করে ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — একসঙ্গেই তো চলে , আমি তাে তাই করেছি , করছি ।
প্রসঙ্গক্রমে ভাববাণী ও অনুভূতি - বর্ণনার তুলনা করে বললেন — এ দুটোর মধ্যে অনুভূতির বর্ণনাই ভাল , এতে বােধ বেশী , মুগ্ধীভাব কম , কিন্তু সমাধি অবস্থায় মুগ্ধীভাব বেশী , বােধ কম ।
শ্রীশ্রীঠাকুর কেষ্টদাকে বললেন — যদি মানুষের কিছু জ্ঞান হয় আমার কথা দিয়ে , তার জন্য কৃতিত্ব অাপনারই , আপনিই সব আমার ভেতর থেকে বের করেছেন ।
‘ কথাপ্রসঙ্গে তাড়াতাড়ি ছাপানাের জন্য কেষ্টদাকে বললেন । কেষ্টদা জিজ্ঞাসা করলেন — বেদাভ্যাস কোন্টাকে বলব , করতে হবে কী ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — এই যেমন আপনি মনুসংহিতা পড়েছেন , মনুসংহিতার নীতিগুলি বর্তমান অবস্থায় সমাজে কেমন করে প্রয়ােগ করা যায় তা ভাবছেন , করছেন একেই বলে বেদভ্যাস । বেদাভ্যাস মানে ঋগ্বেদ - যজুৰ্বেদ ইত্যাদি শুধু পড়া নয় ! বেদ মানে recorded experience ( লিপিবদ্ধ অভিজ্ঞতা ) , বেদাভ্যাস মনে সেই experience ( অভিজ্ঞতা ) জেনে নিয়ে কাজে লাগিয়ে তারপর মিলিয়ে দেখা ।
প্রফুল্ল — জাতিস্মরতার মধ্যে অদ্রোহের স্থান কোথায় ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — দ্রোহভাব থাকলে মন obsessed ( আবিষ্ট ) হয়ে থাকে , নানারকম ভাবের উদয় হয় , সবটার expression ( ভাব ) দেওয়া যায় না , repression ( নিরােধ ) হয় — এতে জাতিস্মরতার ব্যাঘাত জন্মায় । •••••• যারা অত্যাচারে - অত্যাচারে আমার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে , তুলছে , তাদের কথা মনে হলে ভাবি , ওদের উপর রাগ করলে যদি ওদের কোন ক্ষতি হয় , মারা যায় , তাই অমনি মনে আসে— Let them enjoy their little days , their lowly bliss receive , Oh do not take lightly away the life -- thou canst not ive . ( তারা তাদের স্বল্প দিনগুলি উপভোগ তাদের অকিঞ্চিৎকর অনন্দ উপভোগ করুক , যে - জীবন তুমি দিতে পার না — তা অতি তুচ্ছভাবে তুমি নষ্ট করো না । )
ওদের প্রয়োজনের সময়ে ওরা কিছু চাইলে তখন ভাবি The necessity is greater than mine . ( তােমার প্রয়োজন আমা - অপেক্ষা বড় ) , যা চায় , না দিয়ে পারি না ।
#Alochona_prosonge_part_1
#আলোচনা_প্রসঙ্গেপ্রথম_খণ্ড
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
https://www.amritokatha.in/
Telegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokathaa
10