🔷 যাজন সম্পর্কে..
🔷 ecto - plasmic body ( আতিবাহিক সত্তা )
🔷 সন্তানদের চরিত্রগঠন - সম্বন্ধে..
৪ ঠা কার্তিক , শনিবার , ১৩৪৬ ( ইং ২১/১০/১৯৩৯ )
সকালে শ্রীযুক্ত খেপুদার ( প্রভাসচন্দ্র চক্রবর্তী ) বারান্দায় শ্রীশ্রীঠাকুর একখানি বেঞ্চে বসে আছেন — প্রশান্ত বদনে । বাবলগাছের ফাক দিয়ে হেমন্তের স্নিগ্ধ কিরণ এসে লুটিয়ে পড়েছে পায়ের তলে , আশেপাশে বহু মা ও দাদারা দাড়িয়ে অাছেন । শ্রীশ্রীঠাকুর যাজন - সম্পর্কে বললেন — যাজন হ'লাে দৈনন্দিন জীবন - চলনার পথ বাতলে দিয়ে elate ( উদ্দীপ্ত ) করে actively Ideal- এ interested ( সক্রিয়ভাবে আদর্শে অনুরক্ত ) করে তোলা । ঠাকুরের কথা কওয়া লাগে শেষে ।
আগেই যদি বলতে সুরু কর - ঠাকুর না হলে কিছু হবে না ’ — সেটা তােমার পক্ষে সত্য হলেও তার কাছে কী ? যাই কর না কেন , তার problem- এর ( সমস্যার ) মধ্য থেকে যেতে হবে । সেখান থেকে গেথে তােলা লাগে , তবেই শক্ত হয় । দেখেন না , ভিত থেকে লােহা দিয়ে গেঁথে তুললে কেমন শক্ত হয় । যে যেখানে যা নিয়ে আছে , তা থেকে আরম্ভ করতে হবে । তােমার প্রতি interested ( অনুরক্ত ) হওয়ার সঙ্গে - সঙ্গে তােমার Ideal- এ ( আদর্শে ) interested ( অনুরক্ত ) হবে । মন্মথদা ( দে ) —মেয়েদের ক্ষেত্রে কেমন ? শ্রীশ্রীঠাকুর — মেয়ে তাে আর পুরুষ না । তাকে মেয়ের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে চলতে হবে । মেয়েরা তো যেখানে - সেখানে যাজন করে বেড়াতে পারে না আপনাদের মতো । বিধিসঙ্গতভাবে পরিবারের সেবা - শুশ্রুষার মধ্য দিয়ে তাদের সব । তা না - করে তথাকথিত প্রগতিবাদী মেয়েদের মতাে চললে — তারা বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলে ! একটি দাদা বলছিলেন — স্বস্ত্যয়নী - ব্রত গ্রহণের প্রয়ােজনীয়োতা বুঝি -- কিন্তু নিয়ে কী - ক'রে চালাব তাই ভাবি ! শ্রীশ্রীঠাকুর — যেমনভাবে খাওয়া - দাওয়া চলে — তেমনিভাবেই স্বস্ত্যয়নী আরম্ভ করে দিতে হয় , দিয়ে ভাবতে হয় — কী করা যায় , না যায় । তবেই করা যায় ।
২৮ শে কার্তিক , মঙ্গলবার , ১৩৪৬ ( ইং ১৪/১১/১৯৩৯ )
দুপুরে খেয়ে এসে বিছানায় শুয়ে শ্রীশ্রীঠাকুর কেষ্টদাকে ( ভট্টাচাৰ্য ) বলছেন —আমার মনে হয় , sperm ( শুক্রকীট ) যে আতিবাহিক সূক্ষ্ম উপাদান বহন করে শরীর সৃষ্টি করে , মৃত্যুর পরও সেই উপাদান হয়তাে থেকে যায় — নষ্ট হয় না এবং তাকেই বলে লিঙ্গ - শরীর । তা ’ এত সূক্ষ্ম যে আগুনে তা পােড়ে না , একেই বলে ecto - plasmic body ( আতিবাহিক সত্তা ) । আর , মানুষের বেলায় এটা যদি সত্য হয় , তবে গাছপালা , কাপড় - চোপড় , ইট - কাঠ সবক্ষেত্রেই এমনতর । তাই আমার মনে হয় , মৃত্যুর পরও মানুষ কাপড় পরতে পারে , ইচ্ছা করলে কিছু খেতে পারে — সেই অবস্থায় যেমন ক'রে তা সম্ভব । এমনতর মনে হয় — সত্য - মিথ্যা জানি না । সন্ধ্যার পরে শ্রীশ্রীঠাকুর মাতৃমন্দিরের পিছনে বকুলতলায় বসে সিথির ভবতারণদার ( বসু ) সঙ্গে নানা - বিষয় আলোচনা করছেন — কেষ্টদা ( ভট্টাচাৰ্য ) ও খেপুদা ( চক্রবর্তী ) সেখানে বসে আছেন — শ্রীশ্রীঠাকুর প্রফুল্লকে একটা বাণী পড়ে শােনাতে বললেন - সন্তানদের চরিত্রগঠন - সম্বন্ধে একটা বাণী প'ড়ে শােনান হল । শ্রীশ্রীঠাকুর বুঝিয়ে বলতে লাগলেন - বাপ হয়তাে নিজের গুরুজনকে দেখিয়ে ছেলেকে বলছে — ওকে প্রণাম কর , অথচ নিজে প্রণাম করছে না , এটা বড় খারাপ । নিজে প্রণাম করে তারপর তাকে বলতে হয় , তবেই ফল হয় । তার - পর , বাপ হয়তো সন্তানের কাছে তার মায়ের ন্যায্য প্রশংসা করে না , কিংবা মা হয়তো বাপের গুণের কথা কয় না , এতে খুব ক্ষতি হয়— regard ( শ্রদ্ধা ) বাড়ে না । আর , মা - বাপ যদি ছেলেমেয়েদের সামনে ঝগড়া - বিবাদ করে , তার দরুন দারুণ কুফল ফলে । শ্রীশ্রীঠাকুর বলতে লাগলেন — এই যে টাকা - পয়সা ! একে আমি তত মূল্য বান মনে করি না , কেউ দিলে কিছু পাওয়ার দরুন যে খুব একটা খুশি হই তা ” নয় , কিন্তু যে দিচ্ছে , দেওয়ার urge ( আকুতি ) -টাই তার পক্ষে মঙ্গলজনক দেখে ভাল লাগে । অবশ্য কিছু পেলে ভাবি — পাঁচজনের অভাব মেটাতে পারব , যার যা দরকার দিয়ে দিই , এর উপর আমার লোভ নেই , টান নেই, সব চেয়ে বড় জিনিস হচ্ছেন আপনারা । অামার এমন স্বভাব যে কার'ও যদি একটু অসুখ করে , তাহলে মনে হয় , আমার কী - যেন মস্ত ক্ষতি হয়ে গেল , মন খারাপ হয়ে যায় , আবার মানুষের সঙ্গে আমার সম্বন্ধও তাদের খারাপ নিয়ে কেউ এসে একটা সুখের সংবাদ , কৃতার্থতার সংবাদ দেয় না , অসুবিধায় পড়লেই আমার কাছে আসে । একজন হয়তো প্রার্থনা করছে — ঠাকুর , আমি এই লটারির টিকিট কিনেছি , পাঁচ হাজারের বেশী যা পাই , সব তোমার । পাঁচ হাজারের বেশী এক পয়সাও আমি রাখব না । হয়তো পঞ্চাশ হাজার টাকা পেল । তখন আর দেখা পাওয়ার জো নেই ! ওই টাকাগুলি দিয়ে নিজের সর্বনাশ করে সব্বস্বান্ত যখন হবে তখন হয়তাে আমার কাছে এসে দাড়াবে । কিন্তু তখন তাকে দেখে একথা বলতে পারি না — তুমি অমন করেছ , তাই এমন হয়েছে । সে - কথা তখন মনে পড়ে না , তার কষ্ট দেখে ব্যথিত হয়ে পড়ি , তাকে না দেখে পারি না , তার অবস্থা দেখে ভুলে যাই ।
আলোচনা প্রসঙ্গে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র 👆
#Alochona_prosonge_part_1
#আলোচনা_প্রসঙ্গেপ্রথম_খণ্ড
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
https://www.amritokatha.in/
https://www.facebook.com/Amritokathaa
10