অকৃতজ্ঞতা :-
অকৃতজ্ঞতা মানেই হচ্ছে কখনও কেউ যদি তোমার এতটুকু ভাল ক'রে থাকে যাতে তুমি বাঁচা বাড়ার প্রগতির পথের দিগদারী থেকে বেঁচে সুস্থ ও স্বস্থ হ'য়ে পুষ্টিলাভ ক'রেছ তা' ভুলে গিয়ে বা অস্বীকার করে সেই উপকারীর প্রতি তার বাঁচা বাড়ার প্রগতির জন্য তোমার যা করা উচিত ছিল তা' না-করা। আর এর মানেই হচ্ছে তোমার পুষ্টির জন্য দুনিয়ায় তোমার প্রয়োজনপূরক সপারিপার্শ্বিক তাকে হারিয়ে ফেলা- তোমার জীবন ও বন্ধনের পথে পোষন, পুষ্টি ও তুষ্টিকে লোকসানে ফেলে দেওয়া।
তাই বলছি, খুব সাবধান- তোমার জীবন-চলনায় যেন কোথাও অকৃতজ্ঞ না হ'তে হয় খুব নজর রেখো
যদি তোমার কখনও এমনতর অবস্থা ঘটে-বিরুদ্ধ দু'জনের কাছেই তোমার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, অথচ কোন দিকে তুমি যোগ দিলে বা সহানুভূতি দেখাইলে অন্যের ক্ষতি হওয়া অবশ্যম্ভাবী, দু'জনের ভিতর যিনি তোমার কাছে প্রধান তুমি তাকে অবলম্বন করে অন্যের কাছে যেয়ে যুক্তি, মত, মীমাংসা ও আবেদনে তাকে নিরস্ত ক'রে মিল ঘটাইতে চেষ্টা করিও।
যদি দেখ, তা-ও কিছুতেই ঘটিয়া উঠিল না, তুমি পরিষ্কার, সহজ ও বিনীতভাবে বুঝাইয়া দিও, তুমি কিছুতেই অন্যকে পরিত্যাগ করিতে পারিবে না তাকে পরিত্যাগ করা মানেই তোমার জীবন ও বৃদ্ধিকে পরিত্যাগ করা। এমতস্থলে তোমাকে অকৃতজ্ঞতার দোষে দুষ্ট তো হইতে হইবেই না বরং তাহা হইতে যদি বিন্দুমাত্রও বিরত হও, ন্যায় ও বন্ধু-আবেষ্টনী অকৃতজ্ঞতা তোমার চরিত্রকে নারকীজঘন্য উদারতায় নিরয়-নিরত করিয়া তুলিবে । তুমি তোমার আদর্শের স্বার্থ ও প্রতিষ্ঠাকে স্বার্থ করে, তোমার জীবন, চরিত্র ও চলনাকে সেই উদ্বোধনায় নিয়ন্ত্রিত ক'রেই চলতে থাক। যাদের দিয়ে তোমার ঐ স্বার্থ ও প্রতিষ্ঠা পুষ্টি পেয়েছে-তাদেরই কাছে কৃতজ্ঞ হও- জীবনে তোমার আদর্শ ও তদনুকূল ব্যাপার ছাড়া নিজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কিছুই থাকিবে না। অতএব কোথাও কৃতঘ্ন ও বিশ্বাসঘাতক হইতে হইবে না।
অকৃতজ্ঞতাই চিরদিনই কৃতঘ্নতা ও বিশ্বাসঘাতকতাকে নিমন্ত্রণ করে। এই তিনই বিশেষতঃ কৃতঘ্নতা ও বিশ্বাসঘাতকতা- যা’-নাকি নিজের স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য যে আমাকে সাহায্যে তার কৃতকর্মে পুষ্ট করিয়া পোষণে বঙ্কিত করিয়া তুলিয়াছে তা' যতটুকুই হোক না কেন-তা'র সর্বনাশে উপকারীর জীবনবৃদ্ধিকে হনন করিয়া নিমকহারামী স্বার্থে বৃত্তিপ্রান নিজেকে তার সম্পদে পুষ্ট, সম্পদশালী ক'রে তোলে বা তুলতে চেষ্টা করে-সেই হচ্ছে এমন পাপ যার প্রায়শ্চিত্ত আয্যনিদানে পাওয়া কঠিন।
এই কৃতঘ্নতা ও বিশ্বাসঘাতকতাকে যে বা যারা প্রশ্রয় ও পোষণপুষ্ট করে, তারা এদের চাইতেও আরো পাপী। কৃতঘ্ন ও বিশ্বাসঘাতক অনেকটা অনেক সময়েই নিজেই সর্বনাশে সাবাড় হয় আর এই প্রশ্রয়ী ও পুষ্টিপ্রদাতারা ব্যষ্টিসমষ্টির ধর্ম্ম ও জাতির চিরদিনই সর্বনাশ করে থাকে।
এরা সাধানরণতঃ দুর্ব্বলের সাহয্যকারী উদার মুখোস পরে পারিপার্শ্বিককে নানা কথার ভানে ভুলিয়ে, লোভ দেখিয়ে, বিপথে চালিয়ে, সর্বনাশে সমাহিত করে থাকে। এরা গা-ঢাকা দেওয়া মৃত্যুর আড়কাঠি- এদের কুটিল উদার চক্ষু থেকে নিজের যদি ভালই চাও তবে সাবধান থাকো।
10