চরিত্র :-
ধ’রে থাকাই স্বভাব যা’দের
থাকলে কৃতি-উজ্জনা,
জীবন তা’দের রয় না ফাঁকা
উল্লে ওঠে নন্দনা। ১৯৮।
মূৰ্ত্ত ভজন যে ভগবান্
আত্মনিয়োগ তাঁ’র সেবায়,
নাইকো যাহার ন্যায়-সততা
কোথায় শুভ তা’র বিভায়? ১৯৯।
জাতবর্ণে নাইকো শ্রদ্ধা
নাইকো গৌরব, আত্মসম্মান,
এমন লোকে ক’রেই থাকে
অন্য খেতাবে পরিচয় দান। ২০০।
ক্রুর হয় যা’র দুর্ব্বলতা,
অন্য বংশের পরিচয়ে
আত্মপ্রসাদ যা’রাই লভে-
যায়ই তা’রা ক্রমেই ক্ষ’য়ে। ২০১।
পরবংশের পরিচয়ে
নিজেকে যা’রা মানিয়ে নেয়-
ঐ সংক্রামণ এড়িয়ে চলিস্,
নইলে পড়বি আত্মহায়*,
সংক্রামণে তা’দের জানিস্
লোকবৈশিষ্ট্য ঘায়েল হয়,
হিংস্র-দুর্ব্বল হয়ই তা’রা
লোক সমাজও করে ক্ষয়। ২০২।
ব্যতিক্রমী দুষ্ট চলন
বলনও হয় তা’র ব্যতিক্রমে,
জীবন-জাতির দীপ্তি নাশে,
নিঃশেষ ক’রে ক্রমে-ক্রমে। ২০৩।
সৎ যাহারা, অসৎ জেনেও
তা’তে কিন্তু চলে না,-
অন্তরস্থ বৃত্তি তা’দের
নিরোধ করে, ধরে না। ২০৪।
যে-বিষয়ে নেতৃত্ব করবি
চলবি তেমন চরিত্র নিয়ে,
খাওয়া-দাওয়া চলা-বলায়
স্ফুরিত হয় সবটা দিয়ে। ২০৫।
আচরণে স্থিতি আসে
ভাব নিয়ে তা’র সঙ্গে,
চরিত্রে সেটা চারিয়ে গিয়ে
চালায় নানা রঙ্গে। ২০৬।
*আত্মঘাতে
মন যাহাদের ছন্নছাড়া
এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়,
ভাবে রাজা, ভাবেই ফকির
কর্ম্মে স্থিতি তা’রা না পায়। ২০৭।
টুকরো-টাক্রা সবই করে
নিষ্পাদনে রয় না মন,
বারো-ভজা মানুষ তা’রা
ঘোরে নিয়ে ভাবের ধন। ২০৮।
বাচক জ্ঞানীর নাইকো কৃতি
শোনা-কথায় ঘুরে বেড়ায়,
জ্ঞান-আশিসের সার্থকতা
কৃতিহারা ভোগে না পায়;
ভাঙ্গাগড়ার অস্থিরতায়
স্থিত-ধী তা’রা কেমনে হবে?
মানুষেরই যে দুষ্ট চলন-
বোধে সেই তা’র লেখা রবে;
ব্যবস্থিতির সঙ্গতি আর
কুশলদীপ্ত অনুচলন,
আসে কি তা’র অন্তরেতে
নিষ্পাদনী অনুশীলন? ২০৯।
অপটুত্ব নিজের যা’-যা’
সে-সব ক’জন বুঝে থাকে?
মানুষের শুধু দোষ দিয়ে তা’রা
নিজের দোষটি পুষে রাখে। ২১০।
নিজের দোষকে অতিক্রম ক’রে
গুণান্বিত হ’তে হয়,
গুণান্বয়ী ব্যবহারটা
করেই লোকের হৃদয়-জয়। ২১১।
ভাল ইচ্ছা অনেকই আছে
করে কিন্তু মন্দ,
ভাববৃত্তি তা’র মন্দে রঙিল
এতে কোথায় সন্দ। ২১২।
অহঙ্কারের তোয়াজ করলে
ভালমন্দ সবই করে,
নিষ্ঠাবিহীন ভাববৃত্তি
যখন যা’ পায় সেটাই ধরে। ২১৩।
জ্ঞান যদি রয় তা’তেই বা কী
কৃতিটারই বা দাম কোথায়?
দক্ষ-নিপুণ যে-জন যেমন
ওজনটিও তেমনি তা’য়। ২১৪।
প্রাজ্ঞ-প্রীতি নিয়মনায়
ব্যাপ্ত করে হৃদয়-রূপ,
ব্যবহারও তেমনি হয়
ব্যর্থতা হয় নিশ্চুপ। ২১৫।
যত কথাই বলুক যে-কেউ
অসৎক্লিষ্ট ব্যবস্থা,
যে করে তা’র বুঝিস্ মনের
তীব্র কুটিল অবস্থা;
ঐ দেখে তুই ঝলক বুঝে
সাবধানেতে বুঝে চলিস্,
বলা-কওয়া সেই তালিমে
হিসেব ক’রে তেমনি করিস্। ২১৬।
লোল লালসায় মুগ্ধ হ’য়ে
অপকৃষ্টে যা’রাই ধায়,
নিজ-নিকেশের পথে তা’রা
সবার নিকেশ করতে চায়। ২১৭।
মহাপণ্ডিত “হোক্ না যে-কেউ
হোক্ না অশেষ মহাজন,
ব্যতিক্রমে যেই না টানুক
সর্ব্বনাশের দূত যে হন। ২১৮।
লাভ কিসে হয় জানিস্ নাকো
হানিও জানিস্ তেমনই,
মূর্খতা তোর দস্তুরই এই
চলনই তোর এমনই। ২১৯।
হোক্ না যে-কেউ যত বড়,
ব্যক্তিত্বে তা’রা অনেক ছোট,
বৈশিষ্ট্যকে ভেঙ্গে যা’রা
শ্রেয়কে করে খর্ব্ব-খাটো। ২২০।
গুরুর নিদেশ মানে না যা’রা
করে নাকো তা’র অনুশীলন,
পাপ-পীড়িত হয়ই তা’রা
আচার্য্যকেও করে পীড়ন;
ভ্রষ্ট তা’রা, নষ্ট তা’রা
কৃতিচলন নাই যা’দের,
সঙ্গতিশীল হয় না কৃষ্টি
ধৃষ্টতাই সার তা’দের;
অলস-ইচ্ছা উন্মাদনা
ভ্রান্ত-বুদ্ধি তা’দেরই হয়,
জয়কে তা’রা তুচ্ছ ভাবে
সার্থকতাই পরাজয়;
ধন্য নয়কো, গণ্যও নয়
নগণ্যতাই বুদ্ধি যা’র,
শ্রেয়কে তা’রা ভ্রান্ত বলে
ক্লান্তি-বিবশ হয়ই সার;
শক্তিবিহীন অর্থবিহীন
তোড়বাজিতে যুক্তিজাল,
র’চে তা’রা রটিয়ে পাকায়
জঞ্জালেরই শরজাল;
নিজেকে নিজে ধন্য ভাবে
অপগন্ড গর্ভস্রাব,
কৃতবিদ্য হওয়ায় ভাবে-
এ-সব বাজে নষ্টভাব। ২২১।
ভাববৃত্তি-বিভবই তো
সত্তাটারই সংগঠন,
নিষ্ঠা অটল তা’তেই যেমন
কৃতি-কুশল সেও তেমন। ২২২।
নিষ্ঠাতে তোর ভাববৃত্তি
অটল হ’ল যেই যেমন,
দুনিয়াটার সংহতি তোর
আসতে লাগ্ল সেই তেমন। ২২৩।
ভাববৃত্তির স্থৈর্য্য-চলন
যেমনটি যা’র যত,
নিষ্ঠাদ্যুতি শ্রদ্ধাদীপন
কৰ্ম্মরতিও তত। ২২৪।
যে-বৃত্তিতে আছ তুমি
তদনুগ কৰ্ম্ম নিয়ে,
হ’চ্ছ কিন্তু তেমনি তুমি
তেমনতরই দক্ষ হ’য়ে। ২২৫।
ভাববৃত্তির নিয়োগ যেমন
কর্ম্মও হয় তেমনি,
তেমনতরই প্রতিষ্ঠা পায়
বাস্তবতায় যেমনি। ২২৬।
ভাববৃত্তি রঙিল হ’য়ে
যা’তে যেমন স্থিতি বাঁধে,
সে-মানুষটা তেমনতরই
সে-বিষয়টি তেমনি সাধে। ২২৭।
ইষ্টনেশায় কৃতি নিয়ে,
উর্জ্জী-তেজা ভাববৃত্তি,
চলায়-বলায় অটুট চলে
ভরদুনিয়ায় রেখে কীর্ত্তি,-
চরিত্রও তা’র তেমনি ফোটে
জোটেও তেমন পরিবেশ,
বিনয়দীপ্ত ব্যক্তিত্ব তা’র
জাগিয়ে তোলে সকল দেশ। ২২৮।
লোক তো তা’কেই দেবতা কয়
সেই ভাবেরই করে পূজা,-
ভাববৃত্তির সংবেদনায়
জ্ঞান যেথা রয় দক্ষতেজা। ২২৯।
আচার, ব্যাভার, ভক্তি, জ্ঞানের
সঙ্গতিটি যেথায় যেমন,
শ্রেয়ত্ব আর সমৃদ্ধিও
সেই মানুষে জানিস্ তেমন। ২৩০।
দয়ার যারা বাজে খরচ
ক’রে চলে নিত্যদিন,
বেতাল চলায় দয়া তা’দের
হ’য়েই থাকে ক্রমে ক্ষীণ;
নিষ্ঠানিপুণ কৃতি-চৰ্য্যায়
বোধ-বিবেকের অর্ঘ্য নিয়ে,
দয়ার পূজায় শিষ্ট যা’রা-
সমৃদ্ধই হয় দয়া পেয়ে। ২৩১।
স্বার্থলোলুপ চাহিদা কিন্তু
করেই খর্ব্ব জীবন-দম,
ইষ্টনিষ্ঠ ভক্তি-চর্য্যায়
করেই জীবন কৃতিক্ষম। ২৩২।
প্রিয়’র প্রতি নিষ্ঠা নিটোল
অদম্য যা’র উর্জ্জনা,
শ্রেয়চর্য্যাই ঈপ্সা যাহার
হয়ই যে তা’র বর্দ্ধনা। ২৩৩।
ওজঃ-দীপ্ত স্বতঃস্রোতা
উর্জ্জী-তেজা যে যেমন,
অনেক অগুণ গুণে এনে
জীবনও তা’র দাঁড়ায় তেমন। ২৩৪।
একটি গুণের উচ্ছলতা
বাক্য-ব্যাভার-সদাচারে,
বহু অগুণের বিনায়নে
সৎ-সুনিষ্ঠ করেই তা’রে। ২৩৫।
অসৎ লোভটি যা’দের সতেজ
বৃত্তিস্বার্থী যেমন হয়-
সৎ যা’রা ঐ ফাঁদে প’ড়ে
সেই চলনটিই বেছে লয়;
সৎ-প্রধান কি অসৎ-প্রধান
আচার-ব্যাভার-কাজে দেখো,
তেমনি ক’রে বুঝে-সুঝে
মানুষটিকে চিনে রেখো। ২৩৬।
খারাপ হ’তে চায় না কেউ
খারাপ ক’রেও ভালই চায়,
মন্দ ক’রেও ভাল’র তকমায়
বাহাদুরি গেয়ে বেড়ায়। ২৩৭।
নিষ্ঠা যা’দের অটুট-নিষ্ঠ
যত মন্দই তা’রা হোক্,
সৎ-এর নিষ্ঠায় ভালই সে হয়
মন্দে বাড়ে অসৎ ঝোঁক্। ২৩৮।
ভর্ৎসনা যা’রা সইতে নারে
নিষ্ঠা তা’দের নয় পাকা,
ভাল’র খোলস প’রে তা’রা
ব্যক্তিত্বকে দেয় ঢাকা। ২৩৯।
যতই চতুর হও না তুমি
ভাল কাজে লাগালে তা’,
চাতুর্য্য তখন ভালই করে
মঙ্গলই আনে বিজ্ঞতা। ২৪০।
শিষ্ট-অটুট আনুগত্য
নাইকো যাহার অন্তরে,
ব্যতিক্রম আর বিক্ষেপ কিন্তু
আছেই হৃদয়-কন্দরে। ২৪১।
দুষ্ট-দৃপ্ত অন্তঃকরণ
ভ্রষ্ট যা’ তা’ই রাখে ধ’রে,
সুযোগমত সুবিধা পেলেই
কাজে তা’ সে হাসিল করে। ২৪২।
বাস্তবে যা’র নাইকো মিল,
সঙ্গতি তা’র তেমনি ঢিল। ২৪৩।
বিপর্য্যয় আর ব্যতিক্রমের
স্বার্থ-লুব্ধ বিবেচনা,
ব্যক্তিত্বতে আনেই কত
ক্ষোভদৃপ্ত কী লাঞ্ছনা! ২৪৪।
নিষ্ঠানিপুণ নয়কো যা’রা
উত্তেজনায় যা’ই করুক,
স্বভাবে তা’দের নেই সঙ্গতি
শৃঙ্খলাহীন-যা’ই ধরুক। ২৪৫।
কথাবার্ত্তা , আচার-ব্যাভার
বুদ্ধি-বিবেক, চাল-চলন,
যা’র হয় ভাল, হৃদয়গ্রাহী
বিভূতি হয় তা’র বলন। ২৪৬।
নিষ্ঠা-বিবেক-বিহীন যা’রা
চঞ্চল অন্তঃকরণ-
উলট-পালট্ চাল-চলনে
চলেই অনুক্ষণ। ২৪৭।
অহং-মূঢ় যা’দের স্বভাব
বিনা চর্য্যায় চায় কর্ত্তা হ’তে,
কর্তৃত্বটা বজায় রেখে
স্বার্থসেবায় চায় লাগাতে। ২৪৮।
ধৃতিহারা চর্য্যা যা’দের
কৃতিহারা হয়ই তা’রা,
ধাপ্পাবাজির কর্তা-বুদ্ধি
উছল চলা করেই খোঁড়া। ২৪৯।
নিষ্ঠানিপুণ নয়কো যা’রা-
বিহীন কৃতি-ঊজ্জনা,
যা’ই করুক না অমন তা’রা
লাভ তা’দের হয় বঞ্চনা। ২৫০।
ধাপ্পাবাজির লোভানিতে
নিজেকে লুকিয়ে অন্য নামে
প্রবর্ত্তনা করে যা’রা-
গতিই তা’দের জাহান্নমে। ২৫১।
শোনা কথায় আস্থা ক’রে
কল্পনাতে যা’রাই দেখে,
ভাল কিংবা কুৎসিত অন্তর-
রকম দেখে বুঝো তা’কে। ২৫২।
সাধু-বিদ্বান্ যতই না হও
চলন-কৌশল বুঝলে না,
হৃদয়টাকে বিনিয়ে নিয়ে
ব্যবস্থা করতে পারলে না। ২৫৩।
সাধুবেশই যে শুদ্ধ হবে-
দর্শন, শ্রবণ, জ্ঞান-যোজন,
সব সময়ে সেটা যে ঠিক
ভাবিস্ নাকো তা’ কখন। ২৫৪।
বস্তু-যুক্তি-ব্যবহারে,
দেখাশোনার মাধ্যমে,
সিদ্ধ-শুদ্ধ যে-জন যেমন
শিষ্টও তেমনি রকমে। ২৫৫।
ব্যতিক্রমী অশিষ্ট যে
উর্জ্জীতেজা যতই হো’ক-
যায় না কভু কোনদিনই
অশিষ্টতার অন্তর-ঝোঁক। ২৫৬।
বাঁচতে-বাঁড়তে চায় তো সবাই
বিকৃতি তা’দের যতই থাক্,
নীচকৰ্ম্মা নীচমনারই
উৎকর্ষতে রয় বিরাগ। ২৫৭।
কূটকচালি ধান্ধা নিয়ে
দিন যদি যায় তোর চ’লে,
বিশ্বাস-প্রীতির লাখ কথা তোর
ধ’রবে নাকো তোরে তুলে। ২৫৮।
ভাঁওতাবাজির রাহাজানি-
স্বার্থপোষার কায়দা নিয়ে
যতই চল,-উৎসর্জ্জনা
বইবে নাকো হৃদয় দিয়ে। ২৫৯।
মহৎ-প্রধান সাধু-সজ্জন
বুদ্ধ-ঈশা-শ্রীচৈতন্য-
শ্রদ্ধাহীনের কে ভগবান্
স্বার্থপোষার কায়দা ভিন্ন? ২৬০।
কেমনতর দেখবে তুমি-?
তোমার কাছে মন্দ ক’জন!
অন্যের নিন্দা করার স্বার্থে
কা’র তোষণ কর কেমন। ২৬১।
সততা যা’দের সহজ থাকে
নিন্দা কুড়িয়ে বেড়ায় না,
একের নিন্দা করতে গিয়ে
অন্যের সাধুত্ব বাড়ায় না। ২৬২।
স্বার্থনেশা কঠোর যা’দের
বুদ্ধি-বিবেক কুটিল হয়,
বেকুব-জটিল উৎসারণায়
শুভ যা’ তা’র করেই ক্ষয়। ২৬৩।
স্বার্থসেবী মিথ্যুক যে
দুষ্ট-স্বভাব কুটিল প্রাণ,
জীবনতালের গতিই যে ঐ,-
আত্মস্বার্থ তা’র ভগবান্। ২৬৪।
গুণকর্ম্মের সুসম্মিতি
নিষ্পন্নতায় যেমনি হোক্,
আচার-ব্যবহার-চরিত্র নিয়ে
ব্যক্তিত্বে তা’র তেমনি ঝোঁক। ২৬৫।
অন্তরে কিসে কেমন দম
চ’লে পরেই বোঝা যায়,
করণ-কারণ কোথায় কেমন
তা’তে আরো হয় প্রত্যয়;
যে-জন চট্লে যে-রূপ ধরে
অন্তরেও তা’র সেই অভিপ্রায়,
বুঝে-প’ড়ে কৃতি-চলায়
বেছে-গুছে নিবি তা’য়। ২৬৬।
আত্মম্ভরি অহঙ্কারী
যা’রাই থাকে এ দুনিয়ায়,-
ভাল করলেও মন্দই বোঝে
দুরদৃষ্টে রয় কি রেহাই? ২৬৭
চরিত্রটি নিস্ দেখে তুই
স্থিতিশীল কি চঞ্চল,
তেমনিভাবে বিনিয়ে নিয়ে
পারিস্-বাড়াস্ সতের বল। ২৬৮।
নিষ্ঠা যা’দের চঞ্চল হয়
ধূর্ত্ত-কুটিল হয় তা’রা,
বিশ্বস্তি তা’দের সাময়িক পাবি
চাঞ্চল্যেতে প্রায় সারা। ২৬৯।
ইষ্টনিষ্ঠ ভজনদীপ্ত
সেবাচর্য্যা অনুরাগ-
ধৃতিকৃতি স্বতঃস্রোতা-
ঐ চরিত্রই ঐশী যাগ। ২৭০।
লোকবর্দ্ধনী নিষ্ঠারতি
ধৃতিচর্য্যা প্রতি ঘটে,
বোধ-বিবেকে চলা-ফেরা
ভগবত্তা তা’তেই বটে। ২৭১।
অনাচার আর উচ্ছৃঙ্খলার
নিষ্ঠাহারা অনুচলন,
চরিত্রকে খর্ব্ব করে,
কমিয়ে চলে কৃতি-ধরণ। ২৭২।
অন্তরেতে কুৎসিত যা’রা
বুদ্ধিতে কূট খেলোয়াড়,
ব্যক্তিত্বটাই ভ্রষ্ট তা’দের
বেকুব, হিংস্র জানোয়ার। ২৭৩।
নিষ্ঠাবিহীন বাগ্বিলাসীর
আপ্তকথায় প্রত্যয় নাই,
প্রত্যয়হীন অভিনিবেশে
অর্থবোধের কোথায় ঠাঁই? ২৭৪।
অন্তঃস্থ পাপপ্রবৃত্তি
গুপ্ত থাকে ব্যক্তিত্বে যা’র,
ঠোকা পেলেই সজাগ হ’য়ে
প্রকাশ করে সম্পদ্ তা’র। ২৭৫।
অর্থস্বার্থী যা’রাই জানিস্
ইষ্টার্থী সে অটুট নয়,
বৃত্তি-খোরাক অগোছাল বুদ্ধি
’তেই তা’রা মত্ত রয়। ২৭৬।
নিষ্ঠাবিভব শিষ্ট ধারায়
ভাববৃত্তি সিক্ত যা’য়,
গরবও তা’র মিষ্টি হ’য়ে
উছল ক’রে তোলে সবায়। ২৭৭।
তোমার সাথে তুলনা ক’রে
কেটা কেমন দেখ দেখি,
ভজনদীপ্ত ধৃতিমুখর
আশে-পাশে কেউ আছে নাকি? ২৭৮।
জানে না কিন্তু অনেক বলে
অধঃপাতে তা’রাই চলে। ২৭৯।
ভজনদীপ্ত ধৃতিচর্য্যী
যা’রাই বেশী তোমার চেয়ে,
ভগবানও সজাগ সেথায়
গুণে-জ্ঞানে দীপ্ত হ’য়ে। ২৮০।
10