[ P - 7 ] 🎗️ বিবাহের পূর্ব্বে মাল্য-বিনিময় কেন হয় ? 🎗️ মন্ত্র-উচ্চারণের সার্থকতা কী ? 🎗️ 'স্বামী' কথার অর্থ কী ? 🎗️ 'পতি' বলতে কী বুঝায় ? 🎗️ পত্নী' কী ? 🎗️ 'স্ত্রী' কথার মানে কী ?

 

🎗️ বিবাহের পূর্ব্বে মাল্য-বিনিময় কেন হয় ? 
🎗️ মন্ত্র-উচ্চারণের সার্থকতা কী ?
🎗️ 'স্বামী' কথার অর্থ কী ?
🎗️ 'পতি' বলতে কী বুঝায় ? 
🎗️ পত্নী' কী ?
🎗️ 'স্ত্রী' কথার মানে কী ?
🎗️ ‘ভালবাসা” বলতে কী বুঝায় ?
🎗️ একজন তা-হ'লে বহুজনকে ভালবাসতে পারে ?

১৭ই এপ্রিল, ১৯৩৪

[P 53-63]

প্রশ্ন । বিবাহের পূর্ব্বে মাল্য-বিনিময় হয়, ইহার তাৎপর্য্য কী ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। বৃত্তি-বিনিময় ।

প্রশ্ন । তার মানে ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। আমার বৃত্তি তোমাতে সার্থক হোক্, তোমার হৃদয় আমার হৃদয় হোক্—কনে এই মন্ত্রে বরের গলায় মাল্য দেয়* ।

প্রশ্ন । আর, বর ?

শ্রীশ্রীঠাকুর । তোমাতে আমার বৃত্তির বিশ্রাম হোক্, দুইজনের বৃত্তি মিলিয়া এক-এ বা আদর্শে সার্থক হোক্ ।

প্রশ্ন। মন্ত্র-উচ্চারণের সার্থকতা কী ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। স্মরণ করিয়া ভাবের উদ্বোধন, আর ভাবে অনুপ্রাণিত হইয়া

চরিত্রকে রঞ্জন।

প্রশ্ন। বিবাহে গুরু বা আদর্শের স্থান কোথায় ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। গুরু বা আদর্শ এই মিলনের সিমেন্ট,—আদর্শকে সার্থক

করিবার জন্যই বিবাহ। 

প্রশ্ন। 'স্বামী' কথার অর্থ কী ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। স্ত্রীর স্ব (Self – আত্মা, existence) আছে যাহাতে, অর্থাৎ,

স্ত্রীর অস্তিত্ব যাহার উপর ন্যস্ত, স্ত্রী যাহাতে বাঁচিয়া আছে—সে তাহার স্বামী † ।

 প্রশ্ন । ‘ভৰ্ত্তা' কে ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। যে পালন করে, অর্থাৎ যার দ্বারা পালিত হওয়া যায়, সেই ভৰ্ত্তা ৷

প্রশ্ন। ‘পতি' বলতে কী বুঝায় ? 

 ________________________________

               * “ওঁ যদেতদ্ধৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম ।

                  যদিদং হৃদয়ং মম তদস্তু হৃদয়ং তব ।”        বিবাহের মন্ত্র—পুরোহিত-দর্পণম্ 

                  আমার হৃদয় তোমার হোক। তোমার হৃদয় আমার হৃদয় হোক। 

                   † স্বামী=স্ব (Self, আত্মা) + আমিন্ (অস্ত্যর্থে) ।

শ্রীশ্রীঠাকুর । যা’কে অবলম্বন ক'রে বেঁচে থাকা যায়, যা'কে আশ্রয় করলে প্রতিপালিত হওয়া যায়, সৰ্ব্ববিষয়ে পুষ্ট বা developed হওয়া যায়, তিনি পতি । অর্থাৎ, সর্ব্বপ্রকারে পূরণ করবার capacity (সামর্থ্য) আছে এমনতর পুরুষই পতি হ'তে পারে । পতিতে পিতৃত্ব আছে— তাই, পতি ও পিতা একই ধাতু হ’তে উৎপন্ন ।

প্রশ্ন । কিন্তু তা’-হ'লেও পিতা ও পতি দুই-এর তফাৎ তো আছেই। 

শ্রীশ্রীঠাকুর । পিতা দ্বারা sexually noursihed (যৌন-সম্বন্ধে পুষ্ট) হওয়া যায় না, কিন্তু পতিতে তা' হবার বাধা নাই ; কেবল ঐ স্থলেই পিতা হ'তে পতির ভেদ । তা’-হ'লে এমনতর পিতৃ-প্রকৃতির পুরুষ যাতে sexually nourished হবারও বাধা নাই, তিনিই পতি হ'তে পারেন ।

প্রশ্ন। 'স্ত্রী' কথার মানে কী ?

শ্রীশ্রীঠাকুর । যে বেষ্টন করিয়া দীপ্তি পায়, সে স্ত্রী। স্ত্রী আসিয়াছে ‘স্তৈ’-ধাতু (বেষ্টন, দীপ্তি) হইতে ।

প্রশ্ন । 'পত্নী' কী ?

শ্রীশ্রীঠাকুর । পালন এবং রক্ষণ-ধর্মী স্ত্রী—অর্থাৎ পালন এবং রক্ষণেই যার সার্থকতা, সে পত্নী। 'পা' ধাতুর মানে পালন ও রক্ষা করা । 

প্রশ্ন । স্ত্রীকে ‘জায়া' বলা হয় কেন ?

শ্রীশ্রীঠাকুর । যাহাতে নিজেকে জন্মগ্রহণ করানো যায় অর্থাৎ যাহার ভিতরে প্রবিষ্ট হইয়া বিভিন্নরূপে আবির্ভূত হই, সে জায়া†   ।

প্রশ্ন। ‘বধূ' কাহাকে বলে ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। যে বহন করে — ministers to the needs of the husband. ‘বধূ’ এসেছে বহ্-ধাতু (বহন করা) হইতে ।

____________________________________________

  * পিতা=পা (পালন, রক্ষণ) + তৃচ্ (কর্ত্তরি)।

       পতি=পা (পালন, রক্ষণ) + ডতি (কর্ত্তরি)।

              + “পতিঃ ভাৰ্য্যাং সংপ্রবিশ্য গর্ভো ভূত্বেহ জায়তে।

                 জায়ায়াস্তদ্ধি জায়াত্বং যদস্যাং জায়তে পুনঃ ৷৷”

                                                                    —মনুসংহিতা, ৯/৮ 

         পতি স্ত্রীতে প্রবেশ করিয়া গর্ভ হইয়া পুনবার জন্মগ্রহণ করে বলিয়া স্ত্রীকে জায়া বলে।

     প্রশ্ন । স্ত্রীকে ভাৰ্য্যাও বলে, ভার্য্যা কথার মানে কী ?

     শ্রীশ্রীঠাকুর। যে আমাকে ধারণ করিয়া আছে, অর্থাৎ আমার অস্তিত্ব যাহার দ্বারা সংরক্ষিত হইতেছে, যে আমার শরীরকে অন্নজলাদি প্রয়োজনীয় বস্তুদ্বারা ভরণ (maintain) করে, — তাহার ফলে, যাহার দ্বারা হয় আমার পোষণ (nourishment) ; তাই, স্ত্রী মনোবৃত্তির অনুসারিণী, অর্থাৎ, যাহার দ্বারা আমার বৃত্তি বা আমি nourished (পুষ্ট) হই, যে আমার সার্থকতায় তাহার নিজেকে দান করিয়াছে, যাহাকে আমি সব দিক্ দিয়া পাইয়াছি এবং যে আমাকে সর্ব্বপ্রকারে গ্রহণ করিয়াছে—সে আমার ভার্য্যা* ।

    প্রশ্ন । স্ত্রীকে অর্দ্ধাঙ্গিনী, সহধর্মিণী ইত্যাদি বলা হয়—এগুলি কেবল আদরের ডাক মাত্র—না, এর কোন বিশেষ তাৎপর্য আছে ?

   শ্রীশ্রীঠাকুর। সহধর্মিণী কেন বলা হয়, তা' পূৰ্ব্বেই বলা আছে : অন্যের ধর্ম্মরক্ষা করাতেই যার ধর্ম্মরক্ষা হয়, সে-ই সহধর্মী বা সহধৰ্ম্মিণী । অৰ্দ্ধাঙ্গিনীও বলা হয় এই কারণে। যেমন, স্ত্রী পুরুষকে যেমন করিয়া

 ___________________________________

         * ভূ-ধাতুর মানে—ধারণ, ভরণ, পোষণ, দান, প্রাপ্তি, গ্রহণ ।

                                  [গণ-দর্পণ ও জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস প্রণীত অভিধান দ্রষ্টব্য । ] 

   Cf.  “সা ভাৰ্য্যা যা গৃহে দক্ষা সা ভাৰ্য্যা যা প্রিয়ংবদা

     সা ভাৰ্য্যা যা পতিপ্রাণা সা ভাৰ্য্যা যা পতিব্রতা।"

    “অল্পভুক্ স্বল্পভাষীচ সততং মঙ্গলৈৰ্যুুতা 

     সততং ধৰ্ম্মবহুলা সততঞ্চ পতিপ্রিয়া

     পিতৃদেবক্রিয়াযুক্তা সৰ্ব্বসৌভাগ্যবৰ্দ্ধিনী ।।”

   Cf. “She must be enduringly, incorruptibly good; instinctively infallibly wise-wise, not for self-development but for self-renunciation; wise, not that she may be herself above her husband, but that she may never fail from his side; wise, not with the narrowness of insolent and loveless pride but with the passionate gentleness of an infinitely variable, because, infintely applicable, modesty of service-the true changefulness of woman."             --- Ruskin 

        নারী হইবে চিরসহনশীলা, চিরশুচি ও কল্যাণী; তার প্রজ্ঞা কখনও ভুল করিতে জানে না—সহজ সংস্কারের মতই তা' । নারীর প্রজ্ঞা স্বার্থসাধনের জন্য নয়— ত্যাগের জন্য, তার প্রজ্ঞা তাকে কখন স্বামীর ঊর্দ্ধে নিতে চায় না—স্বামীর পার্শ্বচারিণী সহধর্মিণী করিতে চায়। নারীর প্রজ্ঞায় উগ্র স্বার্থান্ধ কামের সংকীর্ণতা নাই, আছে অসীম বৈচিত্র্যময় অনুরাগভরা বিনয় ও সেবানম্রতা—নারীর পরিবর্তনশীলতা ও বৈচিত্র্যের স্বরূপই এই ।       —রাসকিন

সৰ্ব্বতোভাবে maintain (ভরণ) করিতে পারে, পুরুষ নিজেকে তেমন পারে না—তেমনি স্ত্রীও নিজেকে পারে না—ইহাই প্রকৃতি* । 

     প্রশ্ন । ‘পতিব্রতা' ও ‘সতী' এ দুইটি কথার মানে কী ?

     শ্রীশ্রীঠাকুর। পতি যার বরণীয়, পতি যার প্রার্থনীয়, পতিকে সর্ব্বতোভাবে স্বীকার করাই যার সাধনা, পতিপরায়ণা, পতিকে জড়াইয়া যে জীবনধারণ করে—সে-ই পতিব্রতা †

    আর, যে পতিব্রতা স্বামীকেই তার অস্তিত্বরূপে গ্রহণ ক'রে স্বামীর স্থিতি (বেঁচে থাকা), গতি (progress — উন্নতি), উৎপাদন, বিস্তার (expansion), দীপ্তি (যশ— fame) ও বিদ্যমানতায় সর্ব্বতোভাবে প্রয়াসশীলা, অর্থাৎ, স্বামী যা'তে সৰ্ব্বতোভাবে বেঁচে থাকতে ও বৃদ্ধি পেতে পারে তাতে যত্নবতী — সেই

_________________________________

              * “যাবন্ন বিন্দতে জায়াং তাবদৰ্দ্ধো ভবেৎ পুমান্ । 

                    নার্দ্ধং প্রজায়তে সৰ্ব্বং প্রজায়তেত্যপি শ্রুতিঃ ।।”

                                                    —ব্যাস-সংহিতা, ২।১৪ 

—পুরুষ পত্নীলাভ না করা পর্যন্ত অর্দ্ধ বা অসম্পূর্ণ থাকে।

        "Each has what the other has not; each completes the other and is completed by the other.....the happiness and perfection of both depends on each receiving from the other what the other only can give."

                                                       -Ruskin 

        "The loftiest and most sacred relation of human life, that upon which the social economy must rest or go asunder-is the marriage relation-in which the complementary relation of the sexes is shown..... having a significance beyond the earthly life...... Union in marriage constitutes the complete man."

                      -Conjugal Love and its Chaste Delights'-Swedenborg

                      † “নাস্তি স্ত্রীণাং পৃথক্ যজ্ঞো ন ব্রতং নাপ্যুপোষিতম্ । 

                        পতিং শুশ্ৰূষতে যত্তু তেন স্বর্গে মহীয়তে ।।” বিষ্ণু-সংহিতা, ২৫। ১৫                 

                        “স্ত্রীভিঃ ভর্তৃবচঃ কার্য্যমের ধর্ম্মঃ পরঃ স্ত্রিয়াঃ।

                         আ শুদ্ধেঃ সম্প্রতীক্ষ্যো হি মহাপাতকদূষিতঃ ।।” যাজ্ঞবল্ক্য-সংহিতা, ১।৭৭

     অর্থাৎ, স্ত্রীদিগের পৃথক যজ্ঞ বা ব্রত ইত্যাদি কিছুই নাই, পতির শুশ্রূষা দ্বারাই তাহারা সর্ব্বপ্রকার সুখের অধিকারী হইয়া থাকে ।

    স্ত্রীদিগের ভর্তার বাক্যই   পালনীয়—ইহাই তাহাদের পরম ধর্ম্ম। স্বামী মহাপাতক-দূষিত হইলেও তাহার শুদ্ধির আশায় বহুকাল পর্যন্ত প্রতীক্ষা করা বিধেয়।

নারীতেই সতীত্ব সার্থক হয়েছে।।

    প্রশ্ন। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ও স্ত্রীর প্রতি স্বামীর attachment (আসক্তি)—নারী-পুরুষের পরস্পর এই attachment-এর (আসক্তির) ভিতর কোন পার্থক্য আছে কি ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। স্ত্রীর attachment (আসক্তি) স্বামীতে concentrated (কেন্দ্রীভূত) ; তাই, সে তাহার স্বামীর শুশ্রূষায় (সর্ব্বতোভাবে) স্বামীর ভিতরে উদ্দীপিত হইয়া জগৎকে উপভোগ করিতে চায়। পুরুষ আদর্শে অনুপ্রাণিত

   _________________________________

           " †অনুকূলা ন বাগ্‌দুষ্টা দক্ষা সাধ্বী প্রিয়ংবদা ।

              আত্মগুপ্তা স্বামিভক্তা দেবতা সা ন মানুষী ।।”    –দক্ষ-সংহিতা, ৪।৫ 

   যে অন্য কাহাকেও বাগ্দান করিয়া দুষ্টা হয় নাই, যে স্ত্রী পতির অনুকূল, যে নারী দক্ষ (expert), সাধ্বী এবং প্রিয়ভাষিণী, আত্মরক্ষণশীলা এবং স্বামীভক্তা—সে দেবী, মানুষী নহে । 

                   “তয়া ধৰ্ম্মার্থকামানাং ত্রিবর্গফলমশুতে ।।”    —দক্ষ-সংহিতা, ৪|2

ঋষি আবার বলেছেন—এবম্বিধা নারীর সাহচর্য্যে পুরুষ ধর্ম্ম, অর্থ, কাম এই ত্রিবর্গের ফল লাভক রিতে সমর্থ হয় ।

     আবার বলেছেন —“ব্যালগ্রাহী যথা ব্যালং বলাদুর্দ্ধরতে বিলাৎ । 

                                  তথা সা পতিমুগ্ধত্য তেনৈব সহ মোদতে ।।” — দক্ষ-সংহিতা, ৪।২০

অর্থাৎ, সাপুড়ে যেমন গৰ্ত্ত হইতে বলপূর্বক সর্পকে টানিয়া বাহির করিয়া তাহাকে আপন বশীভূত করে, সেইরূপ সাধ্বী স্ত্রী পতিকে (ঘোর নরক হইতেও) উদ্ধার করিয়া তাহার সহিত সহর্ষে দিন যাপন করে ।

        তাই, রাকিন লিখছেন যে, সেক্সপীয়র তাঁহার সমস্ত নাটকের মধ্য-দিয়া ইহাই দেখাইয়াছেন—পুরুষের মুক্তি ব'লে যদি কিছু কখনো হ'য়ে থাকে, সে নারীরই প্রজ্ঞা ও ধর্ম্মবলে । যেখানে তার অভাব, সেখানে পুরুষের মুক্তি ব'লে কিছু নাই।----- নারীই পুরুষকে রক্ষণাবেক্ষণ করে—শিক্ষা দেয় ও চালায়। ......... নারী তাহাকে ধ্বংসের নরক হইতে রক্ষা করে । যখন সে হতাশ হ'য়ে চিরদিনের মত বিপথগামী হইতে চাহে,—নারী যেন স্বর্গ হইতে নামিয়া আসে তাহারই সাহায্যকল্পে— কঠিনতম প্রশ্নের সমাধান করিয়া, শিক্ষকের মত তাহাকে সত্যের আলোক দেখাইয়া, কখনও বা তিরস্কারের পর তিরস্কার করিয়া সার্থকতার পথে চালাইয়া লইয়া যায়।

     Cf. “The redemption, if there be any, is by the wisdom and virtue of a woman; failing that, there is none;........It is the woman who watches over, teaches and guides the youth....she saves him from destruction-saves him from hell. He is going eternally astray in despair; she comes down from heaven to his help, and throughout the ascents of Paradise, is his teacher, interpreting for him the most difficult truths divine and human; and leading him with rebuke upon rebuke, from star to star."

                                     'Sesame & Lilies'-Ruskin

থাকিয়া স্ত্রীতে nourished (পুষ্ট) হইয়া তাহার জগৎকে স্ত্রীর নিকট উপঢৌকন দিতে চায়। আর, ইহাতে উভয়ে উভয়ের নিকট যেমনতর হয় তেমনি হয়—তাই, তাহাদের সম্বন্ধ গুরুশিষ্য-তুল্য * ।

প্রশ্ন । এই যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্বন্ধ হয় তবে তো স্ত্রীর চলা, বলা, করা ইত্যাদি যা-কিছু স্বামীকে লক্ষ্য করিয়াই – স্বামীর প্রয়োজনেই হইবে।

     শ্রীশ্রীঠাকুর । মনোবৃত্ত্যনুসারিণী যদি হয় তবে অপর male-এর (পুরুষের) সঙ্গে মেলামেশার প্রবৃত্তিই থাকে না—স্বামীর প্রয়োজনে ছাড়া। অন্য পুরুষের সঙ্গ automatically (আপনা-আপনি) cease (বন্ধ) ক'রে যাবে। যদি দেখা যায়, অন্য পুরুষের সংসর্গে যেতে ভাল লাগে — sexually (কামভাবে) না হইলেও—অথচ husband এর (স্বামীর) necessity- তে (প্রয়োজনে) নয়, সেটা হ'চ্ছে characteristic symptom (চরিত্রগত লক্ষণ) যে, সে তার husband-এর (স্বামীর) সর্ববৃত্ত্যনুসারিণী নয়। ।† 

      পুরুষেরও তাই—দুনিয়াটা ঘোরে কিন্তু তাঁর (আদর্শের) necessity (প্রয়োজন, উদ্দেশ্য) নিয়ে ; আর তাহ'লেই হয় কি, ঝগড়া, কচকচি, মারামারি, লুফালুফি সব চুকে গেল ।

      প্রশ্ন। স্বামীর আদর্শের সঙ্গে স্ত্রীর কেমন সম্বন্ধ থাকবে ? শ্রীশ্রীঠাকুর । আদর্শের সঙ্গে স্বামীর যেরূপ সম্বন্ধ, তার স্ত্রীরও তাই—তবে তার বৈশিষ্ট্যে যা’-কিছু প্রভেদ । অর্থাৎ, স্বামীর inclination (আসক্তি) যেমন

____________________________________________

      * "Man....not only her protector and provider but her priest. He not only supports and provides but inspires the souls of women so admirably calculated to receive suggestions."

       -G. S. Hall

       অর্থাৎ, নারীর পক্ষে...... পুরুষ কেবল রক্ষক ও পালক নহে—তাহার ধর্ম্মযাজকও, — পুরুষ তাহাকে কেবল ভরণপোষণ করে না—তাহার আত্মাকে নব-নব ভাবে উদ্দীপিত করে । আর, নারীর প্রকৃতির বিশেষ প্রশংসনীয় গুণই এই যে,   '` সে (পুরুষ হইতে) অতি সহজে ভাব গ্রহণ করে। —জি. এস. হল

       † “যস্য ভার্য্যাশ্রিতান্যত্র পরবেশ্মাভিকাঙ্ক্ষিণী ।

        ..... সা জরা ন জরা জরা ।।”             —কূর্ম্মপূরাণ

যে স্ত্রী অন্যত্র আশ্রয় করে, পরগৃহকে আনন্দজনক মনে করে, – সে জরা—জরা জরা নহে।

হবে আদর্শের wishes-গুলি (ইচ্ছা বা বৃত্তিগুলি) fulfil (সার্থক) করার, তার জীবন দিয়ে,—তেমনি স্ত্রীর inclination ( ঝোঁক ) থাকবে always (সর্বদা) স্বামীর complement বা পরিপূরক হওয়া; তার মানেই আদর্শে উভয়ে মিলে সার্থক হওয়া ;—তাঁর ইচ্ছাকে fulfil (সার্থক) ক'রে, ‘তোমারই ইচ্ছা হউক পূর্ণ মোদের জীবন-মাঝে’—এমনতর ।

      প্রশ্ন । আদর্শ হইতে স্বামী যদি বিচ্যুত হয়, তবে কী হইবে ? 

      শ্রীশ্রীঠাকুর। ‘পতিত’ মানেই আদর্শ হইতে বিচ্যুত হওয়া, আর, বিবাহে cement-ই (সিমেন্ট বা বজ্রলেপই) আদর্শ। আর্য্যদের বিবাহের মন্ত্রেই আছে—‘বৃহস্পতি তোমাকে আমাতে যুক্ত করিয়া দিউন' । আর, এই বৃহস্পতিই হইতেছেন ভগবান্, গুরু ও আদর্শ।

     এই সিমেন্ট যদি কোনোপ্রকারে ধ্বংস হইয়া যায় তাহাদের অন্তর হইতে তবে দুইটি আলাদা জিনিস স্বভাবতঃই যে আলাদা হইয়া যাইবে—তাহার আর কথা কী ? যে স্থলে স্বামীর আদর্শ-বিচ্যুতি ঘটিয়াছে সেখানে স্ত্রীর, আদর্শে যুক্ত থাকিয়া স্বামীর উন্নয়নের সংস্থান করাই শ্রেয়ঃ । তাহাও যদি না হয়, তবে স্ত্রীর আদর্শমুখর হওয়াই তাহার ধর্ম্মকে অর্থাৎ being and becoming-কে (বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধি পাওয়াকে) স্ব-স্থ রাখিতে পারে।

       প্রশ্ন। পত্নীর যদি স্বামীর আদর্শ হইতে বিচ্যুতি ঘটে ?

      শ্রীশ্রীঠাকুর। তাহ'লে তো সাধারণতঃই স্বামীর স্ত্রীর প্রতি inclination (টান) থাকেই না। সে-স্থলে তা’-হ'তে যতদূর সম্ভব—অন্ততঃ আদর্শ-বিষয়ে—aloof (তফাৎ) থাকাই উচিত। আর, যদি সে আদর্শের wishes-গুলি (বৃত্তিগুলি) তার জীবনে fulfil (সার্থক) করার বাধা জন্মায়, তবে সে-স্থলে তা হ'তে দূরে সরে থাকাই সমীচীন, – সে বিষয়ে কোনোপ্রকার complementary (পরিপূরক) সাহায্যের আশা করাই উচিত নয়। এতে হয়তো difference (অমিল) আরো বেড়ে যাবে, কিন্তু এর extreme limit-এ (চরম সীমায়) যেয়ে সুফলও ফলতে পারে—যদিও শাস্ত্রে এমনস্থলে সর্ব্বতোভাবে ত্যাগেরই উপদেশ দেওয়া আছে। আর, এটা সত্যই,—কারণ, তাহ'লে স্ত্রীর সহধর্মিণীত্বই সে-স্থলে ঘুচে যায়; সে আর তার নারীও থাকে না, ভাৰ্য্যাও থাকে না, পত্নীও থাকে না—শুধু কামক্ষুধা-পরিতৃপ্তির যন্ত্র-মাত্র । 

      প্রশ্ন । স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ঠিক-ঠিক ভালবাসা আছে কি না—তার অব্যর্থ test (পরখ) কী ?

     শ্রীশ্রীঠাকুর। স্বামী যদি অন্য-কোন স্ত্রীকে স্ত্রীর মতন ভালবাসে, তাহাতে যদি স্ত্রীর আক্রোশ, ঈর্ষ্যা, দুঃখ ইত্যাদি জন্মে,—তাহা হইলে বুঝিতে হইবে বিপরীত—অবশ্য সেই প্রিয় যদি স্বামীর জীবন, কর্ম্ম এবং খ্যাতির অন্তরায় না হয় ।

     প্রশ্ন । সতীন বিদ্বেষের কারণ তাহ'লে !

     শ্রীশ্রীঠাকুর। প্রিয়র প্রিয়-র প্রতি যে-কারণে বিরোধ উৎপন্ন হয়—সপত্নীর প্রতি বিরোধের কারণও তাহাই। স্বামী যাহাদের স্বার্থের ক্রীড়নক, ভাগী হইলে তাহাদেরই ঈর্ষ্যা ও বিদ্বেষের উৎপত্তি হয় ; আর, পতিকে পুষ্ট বা তুষ্ট করাই যাহাদের স্বার্থ,—অংশীদারে তাহাদের আনন্দ, হর্ষ, ভালোবাসা ইত্যাদিই স্বাভাবিক ।

     প্রশ্ন । ভাই-বৌ ও ভ্রাতৃ-গৃহবাসিনী ননদে কখনো কখনো বিরোধ উৎপন্ন হয়—ইহার কারণও কি ঐ ?

  শ্রীশ্রীঠাকুর। নিশ্চয়, ইহা কাহাকেও বলিয়া বুঝাইতে হইবে না। স্বার্থের দ্বন্দ্বেই বিরোধ, আর স্বার্থের পূরণেই মিলন—ইহা জীবেরই প্রকৃতি । প্রিয় যাহার পুষ্টির উপাদান, প্রিয়র পুষ্টিতে যাহাদের আত্মপুষ্টির ভাব বা ধারণা নাই, – সে মূঢ়রা ভ্রান্ত স্বার্থের বশবর্তী হইয়া প্রিয়কে sacrifice করিয়াই (বলি দিয়াই) থাকে—নতুবা অশেষ দুঃখ-কষ্টের আগুনে জ্বলিয়া মরিবে কাহারা ? যে-স্ত্রীরা স্বার্থের জন্য প্রিয়ঘাতিনী,— সপত্নী-বিদ্বেষ তাহাদের চরিত্রগত, আর ভ্রাতৃ-গৃহবাসিনী ননদকে তাহারা সহ্য করিতে পারে না; যখনই যাহার দ্বারা স্বার্থ প্রতিরুদ্ধ হয়, তখনই তাহার প্রতি দোষদৃষ্টি আসিয়াই থাকে ।

প্রশ্ন । তাহ'লে মেয়েদের বিয়ে হ'লে পর শ্বশুর-গৃহে গিয়া কী করা উচিত—কী attitude-এ ( ভাবে) থাকা উচিত ?

শ্রীশ্রীঠাকুর । যে-মেয়ের সর্ব্বতোভাবে স্বামীর উদ্বর্দ্ধনই লক্ষ্য, স্বামীকে চায়না যে তার ভোগের ক্রীড়নক করতে, স্বামীকে তার আদর্শে পরিপূরিত ক'রে তোলাই যার জীবনের সার্থকতা,—তার প্রথম এবং প্রধান কর্ত্তব্যই—শ্বশুর-শাশুড়ী কিংবা তৎস্থানীয় যারা, – ভাসুর, ননদ যারা নাকি তার (স্বামীর) পোষণীয় পারিপার্শ্বিক, সর্ব্বতোভাবে তাদের সেবা করা,—যাতে তা’রা হৃষ্ট হয়, পুষ্ট হয় । সে সংসারে নিজের সেবা দ্বারা সম্রাজ্ঞীর মত হ'য়ে দাঁড়ায়* । শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবা মানেই হ'ল—তার স্বামীর basis of existence-এর (জীবনের ভিত্তির) সেবা । আর, যে-স্ত্রী তা' হতে বিমুখ, খুব দেখা যায়—তা রা কখনও শত ভালোবাসার ধাঁজে দাঁড়িয়েও স্বামীকে পুষ্ট, তুষ্ট ও উদ্বর্দ্ধিত করতে পারে না । তাই, তার কাছে স্বামীর প্রতিষ্ঠাও এক-কথায় আকাশ-কুসুম । এ-কথা ঠিক জানবেন, স্বামীর শুভানুধ্যায়ী কোন-স্ত্রী তার শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবাবিমুখ হ’তেই পারে না—আর তা' জ্ঞাতসারেই হোক্ আর অজ্ঞাতসারেই হোক্‌ । এই সেবা মানে কিন্তু আদর্শকে sacrifice করা (বলি দেওয়া) নয়, বরং environment হ'তে (চারিধার হ'তে) আদর্শের interest-এর (স্বার্থের ) পরিপূরণ ।

   প্রশ্ন । আচ্ছা, তা' তো বুঝলাম । তা-হ'লে বাপ-মায়ের সেবা-শুশ্রূষায় যদি স্বামীর অমত থাকে, তবেও কি স্ত্রীর তাদের সেবা করা উচিত ?

    শ্রীশ্রীঠাকুর । নিশ্চয় ! পিতামাতা original (আদিম) আদর্শ । তাহা হইতে তাহার যাহা-কিছু উদ্বর্দ্ধন বা পুষ্টি, — তাহার আরম্ভ, এমন-কি prenatally imparted (জন্মের পূর্ব্ব হইতে সঞ্চারিত)। তাই, পিতা-মাতা প্রত্যেক মানুষেরই অব্যর্থ মঙ্গলকামী—অবশ্য ইহাতে ভ্রান্তি থাকিতে পারে । তাই, স্বামীর যদি তাহার পিতামাতার প্রতি অনুরক্তি না থাকে, তবে বুঝিতে হইবে সে তাহা হইতে—যে কোনোপ্রকারে হউক – বিচ্যুত বা পতিত হইয়াছে ; আর, এই পতনের অনুসরণ করিয়া স্বামীকে আরো পতিত করা নারীর বৈশিষ্ট্যের ঘোর অবমাননা ছাড়া আর কি ! তাই, স্বামীর অনুমতি বা ইচ্ছা ছাড়াও, যাহা করিলে স্বামীর উন্নতি অবাধ হইবে, অপঘাত করিবে না—মুখ্যতঃ বা গৌণতঃ তার স্ত্রীর

___________________________________

     * “ওঁ সম্রাজ্ঞী শ্বশুরে ভব সম্রাজ্ঞী শ্বশ্ৰাং ভব। 

        ননান্দরি সম্রাজ্ঞী ভব সম্রাজ্ঞী অধিদেবৃষু ।।”

             —বিবাহমন্ত্র, পুরোহিত দর্পণ, ৪৩৪ পূঃ দ্রষ্টব্য শ্বশুরে সম্রাজ্ঞী হও, শাশুড়ীতে সম্রাজ্ঞী হও, ননন্দ ও দেবর প্রভৃতিতে সম্রাজ্ঞী হও ।

অবশ্য করণীয় ; আর, ইহা না করিলে সে স্ত্রী—যত ভালই হউক – স্বামীর উন্নতিকে উদ্বেগসঙ্কুল ও অবসন্ন করিবে সন্দেহ নাই । তাই, স্বামীর পিতা-মাতা, ভাই-ভগিনী ইত্যাদির সেবাশুশ্রুষা করিয়া স্বামীর জন্য যতদূর করা সম্ভব তাই করা বরং উচিত।

     আরো, পিতা-মাতা, ভাই-ভগিনী ইত্যাদির সেবা করা পুরুষেরই কর্তব্য। তাই, ইহা করিলে এই কৰ্ত্তব্য বা সেবা উল্লঙ্ঘন করার অপরাধ হইতে স্বামীকে নিষ্কৃতি দেওয়াই হইবে।

     আরো কথা, সে যদি তাহার শ্বশুর-শাশুড়ীতে সেবাপরায়ণা না হয়, তাহারা (স্বামী-স্ত্রী) যাহার শ্বশুর-শাশুড়ী, তাহা হইতেও তাহারা সেবা ও শুশ্রূষা পাওয়ায় প্রায়শঃ বঞ্চিত হইবে—ইহাই স্বাভাবিক । ইহাতে পারিবারিক বন্ধন বিচ্ছিন্ন হইবে, ভ্রান্ত স্বার্থ আসিয়া পরিবারের প্রত্যেককে অধিকার করিয়া বসিবে, দুর্দ্দশা দাউ-দাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠিবে— সুনিশ্চয়। অবশ্য, এই সবই করিতে হইবে স্বামীতে সম্যক থাকিয়া — তাহারই জন্য। Wisely and aptly (সুকৌশলে এবং যথাযথভাবে) সেবায় সংসারে সম্রাজ্ঞী হওয়াই স্ত্রীর কাম্য ও আদর্শ ।

    প্রশ্ন । ভালবাসায় তো পারিপার্শ্বিকে প্রিয়ের প্রতিষ্ঠা। কিন্তু য়ুরোপে তো দেখি, বিবাহের পরেই স্বামী-স্ত্রী পিতার family পরিত্যাগ ক'রে আলাদা হয় । আজকাল আমাদের দেশেও অনেক মেয়েরা যেন তাদেরই অনুসরণ করছে,—বিবাহিতা নারী স্বামীকে নিয়ে আলাদা থাকতে চায় । এটা কি ভালবাসা নয় ?

    শ্রীশ্রীঠাকুর । হ্যাঁ, ভালবাসা তো বটেই কিন্তু সে নিজের স্বার্থকে,—স্বামীকে নয়, তার being-becoming-কে (অস্তিত্ব ও বৃদ্ধিকে) নয় । আর, এ আরবেই হোক্, য়ুরোপেই হোক্ আর আমেরিকায় হোক, যেখানেই স্ত্রী স্বামীতে—তার বৃত্তিগুলিতে মুগ্ধ,—স্বামীর being and becoming-ই স্ত্রীর অস্তিত্ব এবং সমৃদ্ধি, সেখানেই কঠোর অথচ সহজ প্রচেষ্টা তার ভেতরে তার পারিপার্শ্বিক নিয়ে তাকে solid unit-এ (অখণ্ড ঐক্যে) প্রতিষ্ঠা করা* ।

____________________________

    *"Wherever a true wife comes, this home is always round her......but home is yet wherever she is ; and for a noble woman it stretches far round

    আর তা’ যেখানে নাই—যেখানেই হোক না কেন—ফাঁকে নিয়ে vampire like sucking-এর (ভ্যাম্পায়ার নামক বাদুড়ের মত রক্তশোষণকরার) সুবিধা করা মাত্র,—আর কিছুই নয় । 

   প্রশ্ন। ‘ভালবাসা” বলতে কী বুঝায় ?

   শ্রীশ্রীঠাকুর । যখনই দেখা যায়— কেহ কাহারও মঙ্গলের জন্য উদ্‌গ্রীব, আর মঙ্গল দেখলেই তুষ্ট ও হৃষ্ট হয়, খ্যাতিগান স্বভাবসিদ্ধ—বুঝিতে হইবে সে তাহাকে ভালবাসে । ভালবাসা মানেই হচ্ছে, প্রিয়ের ভালোয় বা মঙ্গলে বাস করা বা প্রিয়র মঙ্গলপরায়ণতা ।

প্রশ্ন। একজন তা-হ'লে বহুজনকে ভালবাসতে পারে ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। হ্যাঁ, একজন বহুজনকে ভালবাসতে পারে—যদি তার ভালবাসার কোন কেন্দ্র থাকে।

প্রশ্ন। 'ভালবাসা'র কেন্দ্র মানে ?

শ্রীশ্রীঠাকুর। অর্থাৎ, যাহাকে ভালবাসিয়া sensation of love-এর সহিত—ভালবাসার বোধের সহিত— সে পরিচিত হইয়াছে,– যাহাতে নাকি তাহার বৃত্তিগুলি enlightened and elevated হইয়া ওঠে, অর্থাৎ, উদ্দীপ্ত, উন্নত ও পরিপুষ্ট হয় ।

_____________________________________

her.....shedding its quiet light far for those who else were homeless. "This I believe to be the woman's true place and power. But to fulfil this, she must be.....incapable of error. She must be enduringly incorruptibly good; instinctively, infalliably wise." -Ruskin

অর্থাৎ, সত্যিকারের স্ত্রী (wife) যেখানে থাকুন না কেন, সেখানেই তাহাকে বেষ্টন করিয়া গৃহ গড়িয়া ওঠে । আর, মহীয়সী নারীকে লইয়া যে গৃহ, তাহার পরিধি তাহার চারিদিকে বহুদূর পর্য্যন্ত ছড়াইয়া যায়—গৃহের শান্ত রশ্মিচ্ছটা দূরদূরান্তরে বিকীর্ণ হয় । এই নারী-মাহাত্ম্যের অসদ্ভাবে ইহারা হয়তো অন্য-হিসাবে গৃহহীনই হইত । আমার বিশ্বাস, ইহাই নারীর প্রকৃত স্থান ও শক্তির নির্দেশক । কিন্তু নারীর এই বৈশিষ্ট্য সার্থক করিতে হইলে নারীর এমন হওয়া চাই যে, ভ্রমপ্রমাদ তাহার স্বভাববিরুদ্ধ—চির পবিত্র— চরিত্রদুষ্টি তাহার পক্ষে অসম্ভব— তার জ্ঞান হবে সহজাত-সংস্কারের মত সহজ এবং ভুলভ্রান্তিহীন ।   –রাস্কিন

নারীর পথে শ্রীশ্রী ঠাকুরঅনুকূল চন্দ্র 

প্রশ্নকর্তা ও পাদটীকা সংযোজক :-

শ্রীপঞ্চানন সরকার, এম-এ

#narir_pothe 

#নারীর_পথে

#দশম_সংস্করণ 

#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ

🪔 https://www.amritokatha.in/ 🪔 👈

Telelegram https://t.me/amritokatha

https://www.facebook.com/Amritokatha.in1?

         face book