আর্য্যকৃষ্টি :-
আর্য্য ভারতবর্ষ আমার
জ্ঞান-গরিমা-গরবিনী,
দ্যুতিপ্রেক্ষা স্ফুরক প্রজ্ঞা
দ্যুলোক দীপকমালিনী,
রক্ত তপন ক্ষিপ্ত আলোক
রশ্মিপুলক ঝলক-ঝলক
দীপ্ত রিক্ত পাবক অনঘ
মৃত্যুবিজয়-দায়িনী!
নভোমণ্ডলে সামগীতিকা
নাচে দোদুলে তারা-বালিকা
থির চঞ্চল কত ছলিকা
অমর ছন্দে প্রণব-লিখা
ঋষি-মানস ঋকপ্রতীকা
প্রজ্ঞাপূরক জ্যোতিষশিখা
দুরিত দাপট বিনায়িনী!
হোমের অনল নাচে ছল-ছল
বহে সরস্বতী সিন্ধু প্রবল
দৃষদ্বতী দিল অর্ঘ্য আঁচল
স্ফুরিত ইন্দু স্মিত ঢল-ঢল
চলে ভাগীরথী ডাকে কল-কল
সাগর-ধৌত চরণ-যুগল
তুঙ্গ ধবল কিরীটিনী;
অযুত রশ্মি দীপ্ত কেন্দ্র
পুরুষোত্তম চির অতন্দ্র
জাগে আহ্বান বিপুল মন্দ্র
অমর লপনা জীবন সান্দ্র
আর্য্যগরিমা গভীর মন্ত্র
ছলকি’ সত্তা একটি তন্ত্র
ভারত বিশ্বঋতায়িনী। ১।
ধ্বনিয়া ধমনী হৃদয়তন্ত্রী
বাজিল প্রণবে নাচিল যন্ত্রী
আলোক-পরশে জাগিল তন্ত্রী
গাহিল ঋক্ ঋষি মহান্-
বন্দে পুরুষোত্তমং বন্দে আর্য্যপিতৃন্
বন্দে মাতৃবর্গান্ বন্দেহং কৃষ্টিদৈবতান্;
গরজি’ গহনে গবেষী প্রাণ
অযুত প্রজ্ঞা করুক দান
স্বস্তি-মন্ত্রে দীপিয়া তান
রহুক অমর আর্য্যস্থান-
বন্দে পুরুষোত্তমং বন্দে আর্য্যপিতৃন্
বন্দে মাতৃবর্গান্ বন্দেহং কৃষ্টিদৈবতান্;
মথিত সিন্ধু উলসি’ অমর
অমিয়-প্রলেপী দ্যুতিয়া বর
সৃজন জলদে নাশি’ ঊষর
পূরণ-অর্ঘ্য করুক দান-
বন্দে পুরুষোত্তমং বন্দে আর্য্যপিতৃন্
বন্দে মাতৃবর্গান্ বন্দেহং কৃষ্টিদৈবতান্;
ঋদ্ধি-সমিধ আহরি’ আবার
টুটিয়া বাঁধন ম্লেচ্ছ আচার
মুক্ত হউক আর্য্য বিভার
দীপালি দীপনে বিশ্বপ্রাণ-
বন্দে পুরুষোত্তমং বন্দে আর্য্যপিতৃন্
বন্দে মাতৃবর্গান্ বন্দেহং কৃষ্টিদৈবতান্ । ২।
ফেনিল ঊর্মি গর্জ্জি’ ধায় ঐ
তরঙ্গের তালে নাচি থৈ-থৈ
দীপন দক্ষ অমোঘ অবাধ
টানে টেনে লয় সবারে,
আর্ত্তী ডাকিছে, কে আছ কোথায়?
ধ’রে তোল মোরে রাখ বেদনায়,
মৃত্যুমথিত আঘাত-বিপাকে
ঐ ঐ ওরে সাবাড়ে;
শোন্ ওরে শোন্ হাঁকে নারায়ণ
জ্যোতিনিক্কণ প্রণবে-
ইষ্টস্বার্থী প্রাণে
দীর্ণী বজ্র-টানে
অমরণ পায় মানবে। ৩।
আলোক পায়ে লালচে শাড়ী
প’রে পথটি বেয়ে,
চলছে বোধি-বিনয়গড়া
আমার পল্লীমেয়ে;
মুখে মাখা চাঁদনী আভা
চোখে জীবন-উদ্দীপনী,
কথায় বাজে আগল-ভাঙ্গা
আদর লাজুক সন্দীপনী;
হাতে তাহার সুধার পেলব
স্পর্শে ফোটে পদ্ম-স্নেহী,
নজরপারের সতী যেন
ঘনিয়ে এসে হ’ল দেহী;
সরল আভায় শরীরটি ওই
উঠছে ফুটে দীপ্তি জ্ঞানের,
বুকের মাঝে খেলছে যেন
বীচিমালা ভক্তি-প্রেমের;
স্নেহের গাঁথায় মুক্তি যেন
ছুটছে চ’লে শক্তি পায়,
দেবতা-অসুর যক্ষ-মানব
ভক্তি-বিভোর নতি জানায়;
আর্য্য মেয়ে অমনি হ’য়েই
জ’ন্মে থাকে আর্য্য ঘরে,
সঞ্জীবনী উচ্ছলতায়
ওই কোলই তো আর্য্য ধরে। ৪।
তন্দ্রী অরুণ-ললিত দীপ্তি
লিপ্ত কপোল-প্রতিভা,
স্মিত গৌরব ললাটে ক্ষরিছে
অমর ইন্দু লালিভা;
স্থির চঞ্চল আয়ত নয়ন
খরদর্শন ক্ষরণে,
পলকে মৃদুল ছলকি-ছলকি’
ধায় সম্বিৎ হরণে;
স্ফীত বহ্নি-দৃপ্ত কুটিল
কঠোর সুন্দর ক্ষপণে,
বীর্য্যগরিমা দ্রোহ-ঈক্ষণে
রুধিছে শীতল মরণে;
বপু-বিচ্ছুরিত অমর নিক্কণ
ঘোষিছে আর্য্য-গরিমা,
নতিবিহ্বল প্রেষ্ঠ-পূজারী
দেখিয়া শিহরে কালিমা;
চরণ-চলনে বিজলী লিখনে
ভরসা করিছে লপনা,
আর্য্যপ্রতীক বালসুন্দর
দীপ্ত ব্রাহ্মী বপনা । ৫।
মিহির রাগে অগ্নিতেজে
জ্বালিয়ে দিয়ে পাপের পাঁজা,
বাঁধন যত খড়েগ কেটে
জাতটা ওরে কর্ রে তাজা। ৬।
আর্য্যকৃষ্টি তপনদীপ্তি
দ্যুতিয়া সৃজিল অযুত ইন্দু,
দ্যুলোকদীপনা তারকা-লসিত
লাজললিত দিকিনী হসিত
বিজয় প্রজ্ঞা অমরা ধ্বনিতে
দানিল তরণ-জীবন-সিন্ধু;
ঋদ্ধি হোমে সকল দিক
নাচায়ে তুলিল ঋষির ঋক্
ছলকি’ শ্রবণা সম্বিৎতালে
বরিয়া বীজিল ব্রহ্ম-বিন্দু;
অন্ধ তমসা দীপ্ত হৌক
আর্য্যকৃষ্টি জীবিত রৌক
হিন্দোল তালে স্বস্তিমন্ত্র
করুক দীর্ণ জাতির অন্দু। ৭।
আর্য্যশোণিত লাল লালিমায়
নিঝুম গর্ব্বে এখনো রয়,
এখনো শিথিল আর্য্যধমনী
অমরণ-গানে রুধির বয়;
বেতাল বেভুল বাতুলের মত
যদিও আর্য্য আপন-ভোলা,
অমরণ-সুর এখনো তা’দের
স্নায়ুর তন্ত্রে দিচ্ছে দোলা;
শঙ্খচক্রী আজও নারায়ণ
ধৰ্ম্ম স্থাপনে জনম লন,
বৃত্তিমদির যদিও তাহার
ব্যগ্র তবুও করিতে বোধন;
ওঠ্ রে আর্য্য বজ্রদন্তে
মুষ্টিকরে ধ’রে আয়ুধ যত,
কৃষ্টি মেখলা বেদ-কিরীটে
তাড়া রে তোদের বিপাক শত! ৮।
আর্য্যকৃষ্টি সৎনীতি সব
জাগিয়ে রাখতে সংস্কারে
আচার-বিনয়-বিদ্যা-তপে
নিষ্ঠা-ব্রতে সৎকারে,
দান-প্রতিষ্ঠা-আবৃত্তি আর
তীর্থ-পর্য্যটন ক’রে
কুলের ঝাঁঝাঁল রোখ বিশেষে
সজাগ রাখে অন্তরে,
এমন ষে তা’র কুলের ধারা
নিরাবিলই মুক্ত রয়,
কুলীনত্ব সেই তো রাখে
তা’কেই লোকে কুলীন কয়। ৯।
ঝঞ্ঝারাগে ঝড়ের বেগে
বজ্রসুরে ধর্ রে তান,
আর্য্যস্থান, পিতৃস্থান
উচ্চ সবার পূর্য্যমাণ। ১০।
কোন্ বেকুব শিখিয়ে দেছে
আর্য্য যা’রা পৌত্তলিক,
পুতুল-পূজো করে না তা’রা
পূজক আপ্তবীর-প্রতীক;
ভরদুনিয়া দেখ খুঁজে তুই
স্মারক-পূজক কেই বা নয়,
যা’র যেমনটি লাগে ভাল
তেমনি পূজোয় সবাই রয়। ১১।
ইষ্টীপূত রক্ত তোদের
বীর্য্যবাহী আলোকময়,
প্রেষ্ঠ একে সংহতি তোর
রুদ্র-শিঙ্গায় গাচ্ছে জয়;
কৃষ্টি-বৃষ্টি সৃষ্টি তোদের
দৃষ্টি নাশে ধৃষ্টতায়,
গবেষণায় মত্ত গভীর
নাচছে জীবন জাতীয়তায়। ১২।
আর্য্য তা’কেই বলে-
কৃষ্টি-পথে দৃষ্টি নিয়ে
ইষ্টতপে চলে,
রক্তে গাঁথা আর্য্য আভা
তপঃ-কুতূহলে। ১৩।
বৃত্তিপথেই কৃষ্টি যা’দের
সত্তা মেরে ভোগ,
ম্লেচ্ছতপার শ্লেষ্য নীতি
অনার্যকৃৎ রোখ। ১৪।
ছোট্ট যা’রা দৃকদূরতার
সহজ জ্ঞানে নাই সঙ্গতি,
কোন হুজুগে প্রাজ্ঞদিগের
হীনত্বে চাস্ পরিণতি?
শ্রেষ্ঠ উচ্চ যাঁ’রাই জানিস্
তাঁ’রাই সাথী বিবর্দ্ধনে,
তাঁদের যদি করিস্ রে হীন
ভ্রষ্ট হ’বি উৎ-চলনে;
তাই, ওরে শোন, অবোধ বেকুব,
কৃষ্টিধারায় ইষ্টরথে
চল্ ছুটে চল্ মহৎ পেতে
মহান বেগে তাঁ’দের পথে। ১৫।
দীপ্ত-তেজা আর্য্যজাতি
পূরণ-গড়ন স্বভাবপ্রাণ,
এক ত্রাতা এক মন্ত্র
তন্ত্র একে অধিষ্ঠান। ১৬।
অমর রাগে শম্ভু হাঁকে
শোন রে আর্য্য! ঐ রে শোন,
ফণীর মালায় মরার হাড়ে
বাজে অমরণ ফণাৎ ঠন্। ১৭।
আর্য্যবিষাণ উঠল হেঁকে
মন্ত্রসুরে বজ্রদীপী,
সূর্য্য-আলোয় ঝকমকে ওই
কৃষ্টিমাণিক কপাল-লিপি,
ঋক্-নাচনে সাম-দোলনে
যজুর সুরে আবার সাধ,
আর্য্য জাতি বাঁচুক উঠুক
অমর রহুক আর্য্যবাদ। ১৮।
দশবিধ সংস্কার
আর্য্যাচারে কেন জানিস্?
জন্মগত সংস্কারের
তোষণ-পোষণ ওতেই মানিস্। ১৯।
গর্জ্জরোলে চমকভাঙ্গা
জাগ্ রে ওরে আর্য্য জাত,
ঊষার আলোয় চোখ মেলে চা’
বিদায় ক’রে দুঃখরাত;
শোন্ ওরে শোন্ বিষাণ বাজে
চমক-দোলায় ডিডিম ডীন,
ফুল্লতালে ওঁকারে গা’
ইষ্টস্বার্থী ধ’রে বীণ;
অমল-ধবল মলয় রোলে
গর্জ্জে পিনাক ঐ গাণ্ডীব,
মরণ-তরণ আহব ডাকে
সঞ্জীবনীর সৃজনদীপ। ২০।
কাৰ্ম্মুকেরই ঝিমিৎ ঝনক
বজ্রবহ্নি জ্বলন-রোলে
পিনাকেরই দৃপ্ত মাতাল
ডমরুরই ডিডিম বোলে,
গাল বাজিয়ে থিয়াথিয়ায়
পাগলা ভোলার ববম দুলে
চল্ রে ওরে চলন্ত প্রাণ
মুহ্যমানব ধর্ রে তুলে। ২১।
ঝমঝমিয়ে চমচমিয়ে
স্বস্তি-নিশান ধ’রে ধা,
ধাপে-ধাপে দাপে-দাপে
ছেঁটে-কেটে সব বাধা। ২২।
ইষ্টস্বার্থী মাতাল বেগে
মৃত্যু-ঘাতী অমরতা
লভেই লভে আর্য্যকৃষ্টি, -
ওতেই তো তা’র বিশিষ্টতা। ২৩।
বিপ্লব আন্ বিদ্রোহ আন্
রুধিতে মরণ-আয়োজনে,
বজ্ররে ধর্ মরিস্ তো মর্
পেতে নিরন্তর অমরণে। ২৪।
হোক না সাধু পাপী ধনী
হোক না গরীব আর্য্য যা’রা,
হৃদয়-চাপে ফিনকি দিয়ে
রক্তে ছোটে আর্য্যধারা;
যে যেমনই হোক না জানিস্
অবাধ বোধে নিছক বুঝিস্,
মরণ-দানব নিধন-স্পদ্ধী
ভারত-আর্য্য শ্রেষ্ঠ তা’রা। ২৫।
অত্যাচারে নির্যাতনে
কৃষ্টি আজি মলিনমুখ,
করতে দলন ইষ্টপথে
ঘুচিয়ে ফেল কৃষ্টিদুখ। ২৬।
স্বস্তি-ভেরী অনাহতে
বাজছে শুধুই স্বাধীন হ’,
ইষ্টনেশায় কৃষ্টি ধ’রে
ক্ষিপ্ত কৃপাণ-বৃত্তি ব’। ২৭।
আবেগ যদি থাকেই ওরে
অন্তরায়ে ধ্বসিয়ে ধা,
বাধ-হননী তীব্র চালে
দক্ষতাতে রেখেই পা;
ফুৎকারে সব কুটিল কাল
অগ্নিনালের জ্বলনদাপে,
উড়িয়ে দে, পুড়িয়ে দে
অবশ করা যতেক পাপে;
সার্থকতায় বেঘোর নেশায়
কর্ম্মে করি’ হাতিয়ার,
ছুটলে ওরে আর্য্য ছেলে
ভরদুনিয়ায় কী ভয় তা’র। ২৮।
সিংহরাগে কাঁপিয়ে কেশর
ওরে আর্য্য প্রবীণ যুবক!
মরণটাকে মুষড়ে এনে
দিবি পুড়িয়ে ধ’রে পাবক;
শোকের আঘাত মৰ্ম্মদিগ্ধ
হারান ব্যাপার ঘুচিয়ে নিতে,
পারবি কি রে ব্রাহ্মী ছেলে
এক চুমুকেই সাবাড় দিতে?
ওঠ্ ওরে ওঠ্, হান্ ওরে হান,
নিভে গেছে কত দীন প্রধান,
ব্রাহ্মী বজ্রে মরণটাকে
নিকেশ ক’রে জীবনে আন্! ২৯।
উৎপাতে সব হকচকিয়ে
স্বস্তি-চলায় অটুট চল্,
পূর্ণতেজে চূর্ণ ক’রে
পাপকে ভেঙ্গে বাড়াও বল। ৩০।
বাঁচন-বাড়ন গানে তোরা
নাচন-দোলায় তান ধরি’,
রবাব-বীণার নিলয় তানে
তালে বাজা কিঙ্গরী। ৩১।
আপন ভাল বোঝে না যা’রা
আরাম পেলেই খুশি হয়,
এমনি লোকের মত নিয়ে কি
নিয়ম-নীতি কৃষ্টি রয়? ৩২।
কুটিল ধুয়োয় চললি ওরে
মিথ্যা স্মৃতির দোহাই নিয়ে,
পূর্ব্ববাহী বর্তমানে
ধরলি না রে হৃদয় দিয়ে;
হ’লি নিপাত মারলি রে জাত
আর্য্যকৃষ্টির গর্ভস্রাব,
বিষাণ-রাবে পিনাক হাঁকে
কী বলে শোন্ রুধির চাপ! ৩৩।
পিতৃকৃষ্টি পূরণ-প্রবণ
থাকলে অটুট সেই ধারাটি,
শাক্ত হ’স্ আর বৈষ্ণবই হ’স্
খৃষ্টান মুসলিম সবই খাঁটি;
ঐ চলা তোর বাতিল করে
স্বর্গেও যদি যাস্ রে তুই,
জোর গলাতে বলছি আমি
স্বর্গও তোর নরকভুঁই। ৩৪।
আর্য্যজাতির স্বভাব-ধাঁজই
বস্তুপথে ভাবকে দেখা,
সেইটি এনে বাস্তবতায়
ওরই আরো ধরতে শেখা;
বস্তুবিহীন ভাবের বিলাস
অনার্য্যদের পাগলা ধাঁজ,
নাই-এর পথে নাই-নারায়ণ
আর্য্যেতরের স্বপ্নরাজ! ৩৫।
অঘমর্ষী যজ্ঞ ক’রে
মন্ত্রে করি’ হোম,
পঞ্চবর্হির স্মরণ নেওয়াই
পরিশুদ্ধি-ক্রম। ৩৬।
অঘমর্ষী যজ্ঞ ক’রে
পঞ্চবর্হি কর পালন,
শুদ্ধ হ’বি বুদ্ধ হ’বি
নাচবে বুকে সৎবোধন। ৩৭।
অঘমর্ষী যজ্ঞ ক’রে
পাতিত্য সব পুড়িয়ে দে,
সপ্তার্চ্চিকে বরণ ক’রে
পঞ্চবর্হি স্মরণ নে। ৩৮।
দৃপ্ত তপা তৃপ্তি নিয়ে
ভৃত্যজীবন রুধেই ধর্,
জৃম্ভি’ কৰ্ম্মে ধর্ম্মে বৰ্ম্মে
ঋক্দৃকেতে হ’ তৎপর;
ঋষির ছেলে আর্য্য তোরা
ছুঁস্ নে কভু গোলামখানা,
অবাধদাপে অন্তরায়ে
কররে নিকাশ দিয়ে হানা। ৩৯।
প্রেষ্ঠ-পূজা উবিয়ে দিয়ে
অবজ্ঞা আর অপমানে,
দন্তী-সেবায় চাটু পালি’
দক্ষ দাঁড়ায় সমুত্থানে!
হামবড়ায়ী বৃত্তিপূজায়
লাগিয়ে করে বাজিমাৎ,
শিবশ্রেষ্ঠে তখনই সে
অপমানেই করে কাত;
দক্ষের মেয়ে সতী তখন
মৰ্ম্মদিগ্ধ শিবনিন্দায়,
আত্মাহুতি যজ্ঞে দিয়ে
পুড়িয়ে ফেলে আপনায়;
সতীর ব্যথায় গর্জ্জে’ তখন
ভূতরা নাচে থিয়া-থিয়ায়
চুরমারি’ সব দিমিক-দিমিক
যজ্ঞ অনল নিভিয়ে দ্যায়;
প্রলয় নাচন ধিন-তা-ধিন
চূর্ণ করি’, দীর্ণ করি’,
উবিয়ে দেয়, পুড়িয়ে দেয়
চৰ্ম্ম করীর হাতে ধরি’;
সাপের ফণা গর্জ্জে’ ওঠে
মরার খুলি ঠঠন্ ঠন,
শব-সতীরে কাঁধে ল’য়ে
পাগলা তখন শিবনাচন;
দন্তী অহং অবনতির
কুটিল কঠোর দীর্ণীঘাতে
ওড়ে মাথা, অজের মুণ্ড
শোভেই তখন দক্ষ কাঁধে;
দক্ষতা যদি সার্থকতায়
প্রেষ্ঠ-পূজা নাই রে ধরে,
দক্ষযজ্ঞ অমনি হ’য়েই
মানুষ-মাথার নিকাশ করে। ৪০।
রক্তে এখনো আর্য্য-আলোক
লুকিয়ে বহে আর্য্যকুলে,
তপের পথে চল্ ছুটে চল্
দেখবি রে তুই চক্ষু খুলে;
বিদ্যুতেরই আর্য্য-চমক
উঠছে ফুটে ধমক-ধমক,
লকলকিয়ে টগবগিয়ে
বহ্নি হোমের উঠছে দুলে’। ৪১।
পূর্ব্বতনে পারম্পর্য্যে
তাঁ’দের দেওয়া কৃষ্টি-পথ,
আবিল কালের ময়লা মাটি
জুটিয়ে যবে আনে বিপদ,
সবগুলি তা’র নিকেশ ক’রে
পরিষ্কারে ফুটিয়ে ফেলে,
আরোতরের অমোঘ খবর
জীব-জগতে দেন রে ঢেলে,
পূর্ব্বানত বিরাটি প্রাণ
পূরণ-গড়ন সিদ্ধ মানুষ,
আর্য্য ভজে পুরুষোত্তম
প্রতীক সেই মহাপুরুষ। ৪২।
ক’জন ওরে মহৎ জোটে
দীন দুনিয়ার সমাজ-পটে,
শ্রেষ্ঠ বিনা কৃষ্টি কোথায়
ব্যষ্টি-বৃদ্ধি কোথায় ঘটে?
বাঁচা-বাড়াই বুদ্ধি যদি
শ্রেষ্ঠ-পথে যদিই প্রীতি,
ধর্ ওরে ধর্ পূজায় বিভোর
হ’য়ে শ্রেষ্ঠে বাড়াস্ স্থিতি। ৪৩।
ফাগুনেরই আগুনফাগে
ভর-দুনিয়া লালে লাল,
দেখিস্ নাকি পুড়ছে ওরে
জগৎজোড়া পাপ-জাঙ্গাল!
অমর-গানের স্বস্তি-হাওয়া
সঙ্গে তা’রই দিয়ে যোগ,
ওরই মাঝে দুলছে রে দেখ
জীবন-জয়ের অটুট ভোগ। ৪৪।
পদ্ম আসন ধার-ভরা ক্ষেত
মায়ের পায়ে কৃষি-শিল্প,
বাহন মায়ের তা’রই যন্ত্র
ওড়না মায়ের একীতন্ত্র;
আর্য্য-গরিমা কেয়ূরহস্ত
নেত্র মায়ের স্নেহলদীপ্ত,
মায়ের মাথার মুকুটে ঝলসে
ইষ্টস্বার্থ দীপন-মন্ত্র!
অগণিত সুত জড়িমা
টুটিয়া ললাটে লসিত অমর ইন্দু,
ক্ষীরভরা পীন অ,যুত ধারে
ক্ষরিছে জীবন অমিয় সিন্ধু;
স্মৃতির বোধন মাল্য কণ্ঠে
নাকের বেশর উপনিষৎ,
শ্রুতির চুমকি ঝকমকে ওই
চলনে চমকে ওঁ তৎসৎ!
চারিবর্ণে ঝলকে কেশ
আমার মায়ের এমনই বেশ,
...........এই তো দেশ!
স্বস্তি স্বস্তি ওঠে কলরব
সাম্য দুলিয়া ফুলিয়া ধায়,
ইষ্ট-আনত বিপ্লবী প্রাণ
বিদ্রোহ দলি’ নতি জানায়! ৪৫।
______________________________
#আর্য্যকৃষ্টি
#Anusruti_part_1
#অনুশ্রুতি_প্রথম_খণ্ড
#অনুশ্রুতি_১ম
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
🪔 https://www.amritokatha.in/ 🪔 👈
Telelegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokatha.in1
10