রাষ্ট্রধর্ম :-
পরস্পরের দীপন পূরণ
স্বার্থে গাঁথাই ভ্রাতৃধরণ। ১।
গণ্ডীস্বার্থী হবে যে
নকল নেতা জানিস্ সে। ২।
ইষ্ট নাই নেতা যেই
যমের দালাল কিন্তু সেই। ৩।
লোকপূরণ উপেক্ষি যে
গণ্ডীস্বার্থ ধরে,
শিষ্ট নেতা নয়কো সে-জন
নকল হ’য়েই মরে। ৪।
মানুষকে যে সইতে নারে
যে-জন তা’দের বয় না,
লাখ মোড়লি ঝাঁকুক না সে
নেতা তা’রে কয় না। ৫।
যতই কেন থাক না নিয়ে
দুঃখ-ব্যথার জল্পনা,
বাঁচা-বাড়ার বুভুক্ষুরা
শুনবে না সে কল্পনা;
সেই ঝোঁকেতে মন বেঁধে নে
উন্নতি যা’য় বর্দ্ধনা,
করায়-বলায় তাই ক’রে চল্
কতই পাবি বন্দনা। ৬।
মরণ-তরণ সেবা যাঁহার
ইষ্টে অটুট টান,
সম্বেগেতে উছল সবাই
তিনিই সবার প্রাণ,
তিনিই জানিস্ স্বভাবনেতা
নেতামি-বালাই-হীন,
দুঃখ-বিষাদ-বিপদ জয়ে
তিনিই তরান দীন। ৭।
পূর্ব্বঋষি পিতৃকৃষ্টি
অস্বীকারে ধরবি যা’,
পাতিত্য তোর আসবে ওরে
নষ্ট হবে জাতীয়তা। ৮।
আদর্শকে ঘায়েল ক’রে
চুক্তি-রফায় বাঁধতে দল,
যতই যাবি পড়বি ঘোরে
হাতে-হাতেই দেখবি ফল। ৯।
অযুতই দল থাক্ না বাহাল
এই দুনিয়ার মাঝখানে,
না হ’লে এক ইষ্টস্বার্থী
সর্ব্বনাশেই মরণ আনে। ১০।
মিলন করার যতই কায়দা
ঝাড়িস্ বুদ্ধিমান,
একাদর্শে নিয়ন্ত্রণই
মিলন-সংস্থান;
এ ছাড়া তোর বুদ্ধিমত্তা
যতই পাতবে জাল,
সবই কিন্তু হবে ব্যর্থ
বাড়বে রে জঞ্জাল। ১১।
যত রকমই হো’ক না মানুষ
এক আদর্শে ক’রে ভর,
বাঁচা-বাড়ার উপাসনায়
হয় যবে তাঁ’র অনুচর;
ঐক্য তখন আপনি আসে
বিড়ম্বনা নাইকো আর,
অনায়াসে তা’রাই বসে
তক্তে প্রীতি-প্রতিষ্ঠার। ১২।
পূর্ব্বতনে শ্রদ্ধাভরা
দায়িত্বশীল স্বভাব-মন,
ইষ্টীপূত এমন জনই
প্রতিনিধির পাত্র হন। ১৩।
মানুষেরে প্রীত ক’রে
দীপ্তি পান যিনি,
এই দুনিয়ায় তিনিই রাজা
তোমার রাজাও তিনি। ১৪।
প্রবৃত্তি তোর যা’-কিছু সব
এক-নিয়ামক যতই হবে,
ততই জানিস্ সাথর্কতায়
সামঞ্জস্যে বিনিয়ে র’বে,
এই আদর্শে পড়শীস্বার্থ
বাস্তবে আপন থাকলে হ’তে,
ওর সাথেতে আপনি আসবে
নেতৃত্ব তোর অলক্ষ্যেতে;
জন-নিয়ামক আধিপত্য
দণ্ডবিধি আসবে সাথে,
সৈন্য-সহ রাজ্য নিয়ে
আসবে মুকুট আপনি মাথে। ১৫।
এক ভাষারই রকমফেরে
একই রীতির ধাঁজ বিশেষ,
খাদ্য-জলে যেথায় গজায়
সেই মাটিতেই তা’দের দেশ। ১৬।
একটি ভাষা নানান ধাঁজে
যতেক সীমায় রয়,
সাম্রাজ্যেরই খণ্ড বিশেষ
প্রদেশ তা’রেই কয়। ১৭।
ইষ্টানুগ সেবা আর
সন্ধিৎসা যায় মারা
তখনি জানিস্ খতম-পথে
দেশটা হ’ল সারা। ১৮।
একটি ভাষা চলন-বলন
দ্রষ্টা নেতা এক যেথায়,
শক্তি সেথায় উপচে চলে
বোধ-সমৃদ্ধি-বিজ্ঞতায়। ১৯।
অবাধে ভাল করতে পারে
সেই তো স্বাধীন,
উচ্ছৃঙ্খলায় মরণ আনে
তাই তো পরাধীন। ২০।
যে-নীতিতে বাঁচা-বাড়া
হ’তেই থাকে বীর্য্যহীন,
তা’রেই কি কয় ধৰ্ম্মনীতি
রাজনীতি কি সেই রে দীন?
ধৰ্ম্ম যেথায় বাঁচা-বাড়ায়
মুখর চলায় বীর্য্যবান,
ধৰ্ম্মনীতি তা’রেই জানিস্
রাজনীতিও তাই ধীমান। ২১।
ইষ্টস্বার্থী সন্ধিৎসা সেবা
থাকলে জাতকে রুখবে কেবা। ২২।
ছোট্ট-ছোট্ট নীতির চলন
দূরদৃষ্টি-অনুপাতী,
ইষ্টানুগ একপ্রাণতা
গড়েই কালে মহান জাতি। ২৩।
একের জয়ই সব বুকে বয়
বোধে উচ্ছলা,
ইষ্টীপূত দেশটিতে সেই
লক্ষ্মী অচলা। ২৪।
আদর্শ যা’র কথার খেয়াল
বৃত্তি চালক যা’র,
স্বাধীনতা তা’র মুষড়িয়ে হয়
টুকরোমির বাহার। ২৫।
অভীষ্টটি পেতে গেলেই
চলতে হবে সেই চলায়,
যা’ করে যা’ পেতে হবে
না করেও কি তাই রে পায়!
সংস্কারের পথ এড়িয়ে চ’লে
স্বরাজ কভু দেয় ধরা?
চাষ-আবাদ কিছু না ক’রেই
পাস্ কি রে ক্ষেত ধানভরা। ২৬।
অবাধে ভাল করতে পারাই
স্বাধীনতা কয়,
উচ্ছৃঙ্খলের প্রশ্রয় পাওয়া
স্বরাজ কিন্তু নয়। ২৭।
আদর্শপথে পরের স্বার্থ
যতই আপন মানবি,
সেই চলনে আসবে স্বরাজ
এই তুক তা’র জানবি। ২৮।
দেশের সেবার ধুয়ো ধ’রে
জানিস্ কী যে করলি তা’,
কী পেতে কী করতে হয়
আছে কি তা’র দর্শিতা? ২৯।
এক হাত যেমন অন্য হাতের
স্বার্থ-ব্যথার মমতায়,
না ডাকলেও সে নিজেই চলে
অনুকম্পায় ধরতে তা’য়;
এমনতরই প্রতি অঙ্গ
প্রত্যেকেরই মমতায়,
যেমন ক’রে এক প্রাণনে
এ ওর সম্বেদনে ধায়;
ঐতো হ’ল সাম্য তেজের
বৈধী স্বার্থ বিধান-ডাক,
যা’র ফলেতে শরীরটা তোর
সাম্যে বাড়ে এড়িয়ে পাক;
জাতটা যখন ঐ পথেতেই
গজিয়ে ওঠে পরস্পর,
সংগঠনের ঐ তো বিধান
থাকলে ওটুক কিসের ডর? ৩০।
আপন ধান্ধায় থাকলি ব্যস্ত
পরের বেলায় বঞ্চনা,
অন্যের ভালয় পেট কামড়ায়
কতই পাস্ তুই লাঞ্ছনা;
লাখ দলেরই নেতা তোরা
এক আদর্শে আস্থা নাই,
লাখ ভাগেতে টুকরো রইলি
লক্ষস্বার্থী কোন্দলবাই;
লোকের দুঃখে বুক হাসে তোর
পরের স্বার্থ নিজের নয়,
ইষ্টস্বার্থী কেউ হবি না
এতেও কি রে স্বরাজ হয়? ৩১।
ইষ্টস্বার্থে নিজেরে যদি
নাই করিলে নিয়ন্ত্রিত,
হিংসা-দ্বেষে ভাবছিস্ স্বরাজ
হবে রে তোর হস্তগত?
পড়শী নিয়ে নিজে যবে
ইষ্ট-পথে পারবি যেতে-
সবাই যখন সবার হবে
সহায়-সম্পদ-হৃদয়েতে,
চাওয়ার স্বরাজ উবে গিয়ে
বিজয়গানের উচ্ছলায়,
হেলে-দুলে সামনাচনে
আসবে স্বরাজ স্বস্তিবায়। ৩২।
পৃথক-পৃথক দল যখনই
এ ওর স্বার্থ নয়,
ইষ্টহারা বেকুবপারা
সবাই সবার ক্ষয়। ৩৩।
দলের স্বার্থ পৃথক যখন
টুকরোমি যাহার ন্যায়,
বিপাক আসে শীতের হাওয়ায়
মৃত্যু মিটির চায়। ৩৪।
যুগ-গুরু আর পূর্ব্বতনে
শ্রদ্ধানতি যা’র মলিন,
এমন জনায় প্রতিনিধি
নয়কো করা সমীচীন। ৩৫।
পূর্ব্ব ঋষির নিন্দা করে
বর্তমানে নাইকো নতি,
দ্বন্দ্বভরা ধর্মকথায়
রাষ্ট্র ভাঙ্গে মন্দমতি। ৩৬।
আদর্শেতে নয়কো রত
সার্থকযুক্ত নয় জীবন,
শুভাশুভ বুদ্ধিহারা
ব্যর্থ তাহার নির্ব্বাচন। ৩৭।
সৎসংহতি ভাঙ্গন ধরায়
নির্ব্বাচনে এমন মত
সমর্থনেও পাপ উপজয়,
বিপাক-দশার সিধে পথ। ৩৮।
রাজশক্তি হাতে পেয়েও
সৎ-এর পীড়ক যা’রাই হয়,
দেশকে মারে, নিজেও মরে,
রাষ্ট্রে আনে তা’রাই ক্ষয়। ৩৯।
নতির দানে রাজা যদি
মর্য্যাদা না দেয় মহৎজনে,
রাষ্ট্র-সমাজ ক্ষয়েই চলে
দুর্ব্বিপাকের উচ্ছলনে। ৪০।
রাষ্ট্রশাসনদণ্ড দেশের
চললে শিথিল পায়,
শিষ্ট দলি’ অজ্ঞ বেকুব
লোকশাসনে ধায়। ৪১।
ইষ্টহারা ধর্ম যেথায়
কিংবা ধৰ্ম্ম নেই,
দেশ কোথা তা’র ?-শুধু চীৎকার,
শেয়াল ডাকে ফেই। ৪২।
হিংস্র যা’রা ফন্দি তা’দের
ছোট্ট দলে টুকরো ক’রে
প্রতিদলটি পরস্পরের
স্বার্থদ্রোহে রাখতে ধ’রে;
সেই নীতিটি তা’দের নীতি
জন্মে বহু দুর্ব্বল হয়,
যা’র ফলেতে করতে পারে
উদর পূরে তা’দের ক্ষয়;
শক্তিশালী গড়তে রে জাত
যে আদর্শ যত বলবৎ,
সেইটি জানিস্ তা’দের কাছে
অর্ব্বাচীন আর অতি অসৎ;
আর্য্যনীতি বেকুব নীতি
ধৃতিই তা’দের পণ্ড মাথার,
অলস-বেকুব কুত্তা করা
নীতিই তা’দের উচ্চে সবার;
ওরে বেকুব বেভুল তোরা
আর্য্যঘরের ধীর ধীমান,
এখনও তোরা দেখ রে বুঝে
সর্ব্বনাশ ঐ আগুয়ান;
এখনও তোরা দাঁ
ড়া রে ফিরে
আর্য্যনীতি গাণ্ডীব কর্,
ভীমের গদা আন্ রে হেঁকে
ম্লেচ্ছ যা’ তা’ রুধেই ধর্;
সামগানেতে আকাশ-বাতাস
কাঁপিয়ে তোল্ ফাঁপিয়ে তোল্,
আর্য্যকৃষ্টি ক’রে বৃষ্টি
যা’-কিছু সব গজিয়ে তোল্;
স্বস্তি পাবি, শান্তি পাবি
থাকবি সুখে হ’য়ে অমর-
শম্বুকের ঐ একসা-হোম
নিভিয়ে দিতে হ’ তৎপর। ৪৩।
#Anusruti_part_1
10