🔷 ব্যবহার:-
নিতে চায় দেয় না
তা’র হাভাত যায় না । ১।
দিতে যে পারে না
পাওয়া তা’র ঘটে না । ২।
যতর স্বার্থে স্বার্থবান্
ততই বড় তাহার মান । ৩।
বাঁচ তুমি দানে যা’দের
আগেই মোছ অভাব তা’দের । ৪।
বলার ভিতর ভাল যা’ তা’য়
ফলিয়ে তুলিস্ বাস্তবতায় । ৫।
বাঘ-নখেতে ধরবি তা’ই
বিবেক-বলে করবি যা’ই। ৬।
ঘৃণা, লজ্জা, মান, অভিমান
ভয়-আদিরে বিদায় দিয়ে,
প্রেষ্ঠস্বার্থে ওঠ রে ফুটে
প্রাণনধারায় উচ্ছলিয়ে । ৭।
পারিপার্শ্বিক হৃদয়গুলি
প্রেষ্ঠে বেঁধে তোল্,
উপভোগে অঢেল হ’বি
নিত্য নবীনভোল। ৮।
নিজেই বুঝে হ’তে রে পাকা
ধাক্কা খেতে হবেই অনেক,
বহুদর্শীর হাত ধ’রে তাই
দূর করিস্ তোর শঙ্কা যতেক । ৯।
সব কথারই বাঁক যদি রয়
আবেদনী ঠারে,
সেইতো ভাল ঘাত লাগে না
কা’রও অহঙ্কারে । ১০।
চাকর-বাকর-মজুর প্রতি
মেজাজ-চলন যেমনই,
স্বভাবতঃ জানিস্ লোকের
প্রকৃতি প্রায় তেমনই । ১১।
অনুরোধী আবেদনে
আদেশ দিতে হয়,
এই স্বভাবের এস্তামালে
গায় লোকে তা’র জয়। ১২।
স্বার্থক্ষুধ অবহেলা
অকৃতজ্ঞ ব্যবহার,
প্রিয়জনার হৃদয়খানি
বিষিয়ে আনে হাহাকার । ১৩।
আবেগভরা গুণগ্রাহিতার
তৃপ্ত দীপনসুর,
মন-মানুষের আকর্ষণে
করেই ভরপুর । ১৪।
বাঁচাবাড়ার বিরোধ-নীতি
উগ্রমুখী দেখতে পেলে,
দাপট-বাধায় রুখিস্ ধীমান
প্রজ্ঞা, শৌর্য্য, দীপ্তি জ্বেলে । ১৫।
কাউকে দুষে ক’সনে কথা
ইষ্টে দ্বেষ না হ’লে,
দুষলেও এমন বলিস্ নাকো
বর্দ্ধনা যায় দ’লে। ১৬।
উপকারের আশায় যদি
দেয় কিছু কেউ তোরে,
নিলেই তাহা করবি তাহার
সৎদীপনায় ভ’রে। ১৭।
বলবে ব’লে ভাবছ যাহা
ত্বরিত ভেবে ফলাফল,
সুফল পেতে সুকৌশলে,
বলতে পেলেই পাবি বল । ১৮।
ইষ্টানুগ সংহতিকে
বজায় রেখে সর্ব্বথা,
সব ব্যাপারেই সকল কাজে
হিসাব ক’রে কস্ কথা। ১৯।
একটু ক’রে ধীর-চলনে
হয় না অভ্যাস এস্তামাল,
অমনতর চললে বাড়েই
ব্যর্থ-বেফাঁস কুজঞ্জাল;
যা’ করবি তুই, বুঝলে মনে
এক ঝাঁকিতে কর তাহা,
সমানে চল্ সেই চলনে
এমন চলাই ঠিক রাহা। ২০।
বৈদ্যে রুষ্ট করেই যা’রা
বাক্যে আর ব্যবহারে,
ব্যাধির বালাই বয়ই তা’রা
কষ্ট দিয়ে রোগী মারে । ২১।
শিষ্টাচারে শঠ-প্রতারক
না-ই যদি হয় জয়,
তুল্য ভয়াল সংঘাতে কর্
শাঠ্যবুদ্ধি ক্ষয় । ২২।
যেমন আসুক বাধা মন্দ-
প্রত্যুৎপন্নবুদ্ধি দিয়ে,
দূরদৃষ্টির নিয়ন্ত্রণে
নিবিই শুভে মোচড় দিয়ে । ২৩।
আগের বলা-করার সাথে
পিছের যদি বেমিল হয়,
সামঞ্জস্য-সার্থকতায়
এনেই করবি শুভময় । ২৪।
শত্রু কেউ তোর হ’তে পারে
দেখলে মনে জানি,
আগেই মিত্র করবি তা’রে
সেবা-সম্বেদ দানি’। ২৫।
ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা তোর
বাঁচাবাড়ার সূত্র ধরি,’
সব ব্যাপারে এই চলনে
সার্থকতায় উঠবে ভরি’। ২৬।
বিশেষ-কিছু করতে গেলেই
জিজ্ঞাসি’ নিস পাঁচজনে,
উপায়টিও নিস্ শুনে তুই
উদ্দেশ্যটি সম্পূরণে;
আত্মম্ভরীর বিরাগ হ’তে
রেহাই পাবি নিছক ওতে,
সমর্থনে থাকবে মানুষ
রাখিস এটা ঠিক মনে । ২৭।
যে-কাজে যা’য় ভার দিবি তুই
স্বাধীনভাবে বাড়তে দিস্,
করার পথে বেচাল শুধু
কড়া নজরে তাড়িয়ে দিস্। ২৮।
উপকারে উছল হ’য়ে
আত্মপ্রসাদ-মনে,
দেয় যদি কেউ নিস্ তাহা তুই
বিনীত সম্ভাষণে । ২৯।
অত্যাচারের সায় দিতে কেউ
মিনতি করে যদি,
লুব্ধ ক’রে চাহেই দিতে
রুধিস্ তাহার গতি । ৩০।
দুই পক্ষকেই বুঝে-সুঝে
করিস্ মতের নির্ণয়ন,
মন-গড়া একপেশে বুঝে
ঘটায় কিন্তু অঘটন । ৩১।
বৃত্তিতাড়ায় আগল-পাগল
স্বভাব যা’দের সাম্য-ভাঙ্গা,
সহিস্-বহিস্ নিয়ন্ত্রণে
উৎচেতনে রাখিস্ চাঙ্গা;
এই চলনে স্বভাব রেখে
সব সময়ই চলিস্ যদি
বিরাগভাজন কমই হ’বি
থাকবি শ্রেয়ে নিরবধি। ৩২।
যেমন প্রাণে যা’ দিবি তুই
তেমনি দেবার অনুসৃতি
হবে লোকের জানিস্ খাঁটি,-
দুনিয়ারই এই প্রকৃতি । ৩৩।
বাদ-প্রতিবাদ স্বার্থবিবাদ
ঘটেই যদি জীবনটাতে,
যত পারিস্ ত্বরিত-ঝটিত
চেষ্টা করিস্ তা’ মেটাতে;
তা’তেও যদি নাই মেটে গোল
ন্যায় ও প্রমাণ দৃঢ় থাকে,
বিরোধ ছেড়ে ন্যায়-বিচারে
মিটাস্ গিয়ে শত্রুতাকে । ৩৪।
মন্দরে তুই নিরোধ করিস্
সম্ভব যদি হয়,-
প্রতিক্রিয়ায় মন্দই আসে
নিরাকরণে জয়। ৩৫।
পরের কুশল দক্ষতাকে
ক’রে যা’রা খর্ব্ব,
খাটে আত্ম-প্রতিষ্ঠাতে-
কুহকে খায় সর্ব্ব। ৩৬।
যতই ভাববে তোমারে কেউ
বোঝে না বা খতায় না,
বুঝবে তোমার চিন্তা-চলন
তা’দের কিছুই জোগায় না । ৩৭।
সাক্ষী-প্রমাণ মিলবে যাহা
মেনে নিয়ে তাই
দেখবি তাহার কোনটা কিতক
সমীচীনে নাই;
উচিত যা’ তার ভুলপ্রমাদে
কিংবা বিক্ষেপতায়
ছিন্ন হ’লেও নিবি তাহা
এলে সার্থকতায়,
বিরুদ্ধ যা’ তাৎপর্য্যে তা’র
অর্থ-বাস্তবতায়,
মিল না হ’লে দেখবি ভেবে
কী পর্য্যায়ে ধায়;
সামঞ্জস্যে এনে এ-সব
যথার্থতার ছবি
কল্পনাতে দেখলে এঁকে
প্রায় নিশ্চয় হ’বি। ৩৮।
শ্রেষ্ঠ কিংবা শ্রেষ্ঠ বর্ণের
প্রণাম নিতে নেই,
এটি হ’ল নিছক জানিস্
অধঃপাতের খেই। ৩৯।
উভয়পক্ষ জেনে-শুনে
সৃষ্টি ক’রে মতবাদ,
চলায়-বলায় করবি তেমন
নইলে ঘটে ঘোর প্রমাদ । ৪০।
নেবার বেলায় আত্মীয়তা
দেবার বেলায় নয়কো কেউ,
চাটুর মত ফেরেই তা’রা
বাঘের সঙ্গে যেমনি ফেউ । ৪১।
কটু কথা এলেও মনে
কিংবা মন্তব্য,
বলিস্ না তা’, বলতে হ’লেও
বলবি সুভব্য । ৪২।
আপন-করা আপ্যায়িতে
সুষ্ঠু-চতুর ব্যবহারে,
শত্রুকেও করলে সেবা
চলবে জীবন দীপ্তি-ভারে। ৪৩।
দুষ্ট হ’লেও নিসনে সে-দোষ
ইষ্টস্বার্থে যদিই চলে,
বিনাশ আনে মিথ্যা যা’ তা’
রুখবি পারিস্ যে-কৌশলে । ৪৪।
তা’র অবস্থায় পড়লে তুমি
কী কর না জেনে,
দোষ দিও না কা’রও তুমি
নিও না তা’ মেনে । ৪৫।
যে-কথাটি আসছে মনে
ত্বরিত ভেবে পূর্ব্বাপর,
বললে তাহা সুকৌশলে
চলায় হ’বি সুতৎপর । ৪৬।
বঞ্চনারই কুটিল প্রেমে
চাস্ যদি তুই অব্যাহতি,
যা’কে দিয়ে পুষ্টি রে তোর
পুষ্টিতে তা’র রাখ মতি । ৪৭।
বকল্মা যদি না-ই দিস্
নকল সাধু সাজিস্ না,
সাধু সেজে গুরু হ’য়ে
মানুষ নিকেশ করিস্ না। ৪৮।
না লুকিয়ে যেখানে যা’
ভালয় খাটে জানিস্,
তেমনি ক’রে বিবেচনায়
সেখানে তাই বলিস্,
এমনিতর চলন নিয়ে
যতই চলতে পারবি,
নিরুদ্ধ তোর মনটি খুলে
ঋজুই হ’তে থাকবি । ৪৯।
কাউকে যদি বলিস্ কিছু
সংশোধনের তরে,
গোপনে তা’ বুঝিয়ে বলিস্
সমবেদনা-ভরে। ৫০।
ঋণ কা’রও তুই ক’রে থাকলে
রাখিস্ মনে এই চলাটি,
চাওয়ার আগেই নজর রেখে
ফিরিয়ে তা’রে দিবিই খাঁটি । ৫১।
কুৎসা-কুত্মটিকায় কি হয়
জ্ঞানের আলো বিচ্ছুরিত?
তাচ্ছিল্যেরই ফট্কা মেরে
কুৎসা করিস্ বিদূরিত । ৫২।
ষড়যন্ত্র হ’চ্ছে বুঝে
তোর বিরুদ্ধে হ’য়ে রুষ্ট
ভেবে দেখবি তা’র মূলে কে?
তা’কেই গিয়ে করবি তুষ্ট। ৫৩।
এমনভাবে ঋণ দিস্ তুই
যেন সইতে পারিস্,
না পেলেও তোর হয় না ক্ষতি
তা’কেও তুলে ধরিস্। ৫৪।
বাধাই যদি হ’স্ রে তুই
খারাপ কিছু অন্যায়ের,
এমন ক’রেই বাগিয়ে নিস্ তা’
পথ না থাকে তোর ক্ষয়ের। ৫৫।
কা’রও কিছু অনিচ্ছায় তা’র
করতে অধিকার
সখের উপর জুলুম ক’রে
করিনে আব্দার;
জবরদস্তির ফলেতে তুই
দুঃখ পেয়েই যাবি,
বেকুব চলায় সমবেদনার
কা’রেও কি তুই পাবি? ৫৬।
ওরে ঋণী, আয় রে কাছে
আমার কথা শোন,
ধার করলেই শোধ দিও তা’
কমিয়ে প্রয়োজন । ৫৭।
উপকারী ভুল ক’রেও তোর
করলে অপকার,
তোর যা’ কথা বলিস্ তা’রে
কু করিস্ না তা’র। ৫৮।
লোকে যা’রে শ্রেষ্ঠ মানে
তা’রেও কিন্তু তুই মানিস্,
যা’তে শ্রেষ্ঠ সে হয়েছে
সেবায় তাহার সেইটে নিস্ । ৫৯।
তোমার করার অনুকম্পায়
কেউ যদি না দিত,
চালবাজি আর বাহাদুরী
কোথায় তোমার রইত ? ৬০।
যে তোরে রে দিয়েই বাঁচায়
নিজের করার ফলটি রেখে,
না দিয়ে তাঁ’য় খানে কিন্তু
দিস্ তাঁ’রে নিজ খাবার থেকে । ৬১।
আয় বুঝে ব্যয় না ক’রে তুই
ব্যয়ের বহর বাড়িয়ে নিলি,
সংস্থিতিকে কুড়ুল মেরে
বৃদ্ধিরে তোর চুলোয় দিলি । ৬২।
জীবিকা-নির্ব্বাহভার
করিয়া গ্রহণ,
পোষণ-পালনে পুষ্টি
দেন যেই জন;
তাঁ’কে সেবি’ বিনিময়ে
করিলে গ্রহণ;
দক্ষতা লাঞ্ছিত হয়
নিশ্চয় বচন। ৬৩।
ছোট্ট যা’রা স্নেহভরে
আপ্যায়িতে আপন রাখিস্,
উন্নয়নী ব্যবহারে
যত পারিস্ তাদের বহিস্। ৬৪।
ইষ্টভ্রাতা খারাপ হ’লেও
নজর রাখিস্, দেখিস্ তা’য়,
অন্যে যেন দলতে নারে
ক্রুর-কুটিল ধৃষ্টতায় । ৬৫।
লোক-সমক্ষে বললে যাহা
সবাই পায় সুফল,
বুক ফুলিয়ে এমন কথা
যতই পারিস্ বল। ৬৬।
বিশ্বাসঘাতক কৃতঘ্নতার
দেখলে ঘৃণ্য চাল,
বলবি সবায় জ্বলনদ্রোহে
রুখবি হামেহাল । ৬৭।
তুই না হ’লে চলে না কা’রও
বাগে ফেলে জানিয়ে দেওয়া,
হামেহালই এ কসরতে
তিক্তে জীবন, ব্যর্থ পাওয়া। ৬৮।
মানুষের মন-বৃত্তিভূমে
কোন্ কথাটি কেমন গড়ায়,
সেই দিকে তুই নজর রেখে
কহিস্ কথা সেই দাঁড়ায় । ৬৯।
গুরুর প্রতি টান কমে যায়
এমন সঙ্গে হুঁশিয়ার,
সর্ব্বহারা ঘিরবে নইলে
ক্ষয়ে নিকেশ দুর্নিবার । ৭০।
আপন-করা সমবেদনার
সুরটি ফুটে উঠলে,
সেই সুরেতে শাসন করিস্,
শান্তি হবে-বুঝলে? ৭১।
আপদ-বিপদ হ’লে কারও
করছে মানুষ দেখলে ঢের,
ভিড় করিসনে, লক্ষ্য রাখিস্
তামিল কর্ প্রয়োজনের;
সবাই মিলে হট্টগোলে
করার বেগে ধাস্ যদি,
করা হবে না, পণ্ড হবে,
নষ্ট হবে তা’র গতি । ৭২।
পূরণ-প্রবণ বর্তমানে
করলি বাতিল হেলার সুরে,
পূর্ব্বঋষির সব-কিছু যা’
দিলিই ফেলে আস্তাকুঁড়ে;
পূরণ-প্রবণ বর্তমানে
পূর্ব্বতনে যদি দেখিস্,
পূর্ব্বতনে আগে ক’রে
বর্তমানই পাবি জানিস্ । ৭৩।
পূর্ব্বমহান বাতিল করে
বাহাদুরী করতে বাহাল,
যতই বড় হোক না রে সে
ধরিস্ নাকো তা’র নাগাল । ৭৪।
ঋণের তাগিদ এলে পরে
ফিরানে তা’য় খালি হাতে,
যেমন থাকিস্, পারিস্ যদি
ক’রেই দেখ না কী হয় তা’তে । ৭৫।
গোপন কথায় যাসনে কোথাও
না ডাকলে কেউ অনাহুত,
লুকিয়ে শুনলে গোপন কথা
মিথ্যা যে পাপ হয় অযুত । ৭৬।
কা’রও যা’তে ক্ষতি না হয়
এমনি ক’রে সব জনায়
বাড়িয়ে দিয়ে তুলবি পদে,-
পদ দিলে তা’ পাওয়াই যায়। ৭৭।
কা’রও কোন ন্যায্য মতে
দিস্ না কোন বাধা,
অমিল হ’লেও বুঝিয়ে বলিস্
যে-বোধটি তোর সাধা। ৭৮।
ওরে বেকুব নিন্দা ক’রে
হ’তে চাসনে বড়,
নিন্দুকের তুই সেরাই হ’বি
এই কথাটিই দড় । ৭৯।
ব্যথার কথা বললে রে কেউ
শুনিস্ আগ্রহ নিয়ে,
যেটুকু পারিস্ মুক্ত করিস্
সার্থক-সেবা দিয়ে। ৮০।
তোমার ভাল যেমনি দাঁড়ায়
পড়শীদের উপর,
তা’দের ভালও অনেকাংশে
তোমার করার ‘পর। ৮১।
কেউ না কেউ দেয় ব’লেই তোর
জীবন-চলনা সম্ভব হয়,
না পেলেও কি পারতিস্ বাঁচতে?
কোথায় যেতিস্ হ’য়ে ক্ষয়। ৮২।
ধৰ্ম্মপথে ন্যায়পরতায়
সাম্য দোলে হাসিমুখে,
সাম্যে থাকা হরেক রকম-
ভাঙ্গলে জীবন যায়ই দুখে। ৮৩।
কথা কইবে গুড়ের মত
লেপ্টে র’বে গায়,
মিষ্টি কথাও শক্ত হ’লে
উল্টো পানেই ধায় । ৮৪।
কাউকে আপন করতে হ’লেই
আপন-আপন ভাববি তা’য়,
সপক্ষে তা’র করবি-কইবি
দেখবি দোষ তা’র উপেক্ষায়। ৮৫।
ব্যক্ত ক’রো বাঞ্ছিত যা’
বাক্যে এঁকে ভঙ্গীভরে,
স্নেহল-দৃষ্টি গুণগ্রাহিতায়-
তা’তেই লোকের হৃদয় হরে । ৮৬।
প্রীতিপূর্ণ মেলামেশা
দীপন-মধুর বাণী,
শ্রদ্ধোদ্দীপী অনুচর্য্যা
হৃষ্ট করে প্রাণী । ৮৭।
কথা কইবি এমনভাবে
উত্তর পাবি ঈপ্সিত,
দক্ষবাচী এমন হ’লেই
কৃতার্থে তুই উন্নীত । ৮৮।
প্রেষ্ঠ-স্বার্থ কোন্ কথাতে
কেমন চলন-ব্যবহারে,
নজর রাখলে এমন চলায়
শ্রেয়ই কিন্তু পায় তা’রে। ৮৯।
চাহিদা-মাফিক ব্যবহারটি
চলা-বলা তেমনিতর,
হাওয়ার তালে পা-টি ফেলে
চলাই হচ্ছে বুদ্ধি দড়। ৯০।
বয়স বেশী দেখবি যেথায়
দিবিই সেথায় যোগ্য মান,
সম্বন্ধ আর বর্ণ-শ্রেষ্ঠে
করবি যোগ্য শ্রদ্ধা দান । ৯১।
সৎ যা’ তা’কে করতে কায়েম
করিস্-কহিস্ যা’,
সবই হবে ধৰ্ম্মপ্রদ
খাঁটি জানিস্ তা’। ৯২।
জলদ-তালে কইবে কথা
বুঝ-দীপনায় সমঝাভাবে,
কইবে যা’ তা’ স্বল্পক্ষণে-
এমনি কওয়ায় তৃপ্তি পাবে । ৯৩।
তোড়ের রোখে এক ঝাঁকিতে
উদ্বোধনায় উন্নতি,
চারিয়ে যদি নাই দিলি তোর
প্রত্যয়ের কী হিম্মতী? ৯৪।
খুঁচিয়ে কিংবা উপেক্ষাতে
শত্রুতাকে বাড়িও না,
মুগ্ধ রেখো তোমার পানে
দিয়ে শুভ-বর্দ্ধনা । ৯৫।
যে-চাহিদায় যেই না আসুক বুঝলে সমীচীন,
ফুল্লদানে করবি তা’রে
তৃপ্তি-সমাসীন। ৯৬।
যেথায় দেখবি দ্বন্দ্ব নেহাৎ
এটা ঠিক কি ওটা ঠিক,
সামঞ্জস্য হয় যাহাতে
বিনিয়ে ধরবি তেমনি দিক । ৯৭।
গুণগরিমায় আঘাত দিয়ে
কসনে কথা সম্ভবমত,
অনুরোধী আবেদনের
সুরে কথা ক’স্ নিয়ত । ৯৮।
নিন্দা কা’রও শুনলেই তা’
ভাবিস্ নাকো নেহাৎ ঠিক,
ভজালে বা খতালেই তা’
বাস্তবে প্রায় হয় অলীক । ৯৯।
ভুল কিংবা আক্রোশে কেউ
করলে দোষারোপ,
তড়িঘড়ি বুঝ-প্রমাণে
করবি তা’র বিলোপ । ১০০।
মিত্রকেই যে শত্রু করে
উপকারীর অপকার,
বিশ্বাসঘাতক হয়ই সে
নরক তাহার দুর্নিবার । ১০১।
মিষ্টি-সরস ভরসা-ঘেরা
সেই কথনই জানিস সেরা । ১০২।
ভালই যদি বাসবি কা’রও
শোন্ কী কইতে চাই,-
ভাবিস্-বলিস্-বাসিস্ ভাল
কাজেও করিস্ তাই। ১০৩।
কাম-কুহেলে পড়িস্ যখন
আমার কথা শোন্-
মাতৃচিন্তা-বিভোর হ’য়ে
সৎকাজে দিস্ মন । ১০৪।
দোষ দিয়ে দোষ করবি ক্ষালন
এমনি বেকুব তুই?
দোষ দিয়ে দোষ মাজলে পরে
দোষ বাড়ে শুধুই। ১০৫।
দোষেরে তুই করবি ঘৃণা
দোষীরে কিন্তু নয়,
এই কথাটি রাখিস্ মনে
হ’বি রে নির্ভয়। ১০৬।
নেবার বেলা আপন বল
দেবার বেলা পর,
এ স্বভাবটি থাকলে পাবে
অপঘাতের বর। ১০৭।
যা’র কাছে তুই পেলি, পাগল!
তা’রেই আগে পূরণ কর,
তাই যদি রে করতে পারিস্
তবেই সত্যি স্বার্থপর। ১০৮।
তোমার অভাবে দিচ্ছে যা’রা
তা’দের কেন দিচ্ছ না,
এমনি যদি চলতে থাক
মুক্ত-বিপাক হ’চ্ছ না। ১০৯।
আলস্য আর দোষদৃষ্টি
থাকে যদি তোর,
দুঃখ-আঘাত-অবসাদে
হ’বি রে বিভোর। ১১০।
নটের মতো চল্ ওরে তুই
ভবরঙ্গ-মঞ্চমাঝে,
ইষ্টস্বার্থ রাখতে অটুট
কর্ অভিনয় তেমনি ধাঁজে। ১১১।
অন্যায়ী যে অত্যাচারী
ব্যাঘাত আনে উন্নতিতে,
রুদ্ধ করিস্ শক্তি দিয়ে
বুদ্ধি-বিচার-সৎবিধিতে;
ণ-স্বরূপা ব’লেই জানিস
নিজ প্রসূতি জননীরে,
বর্দ্ধনে তাই থাকিস্ সজাগ
বাঁচাবাড়ার নীতি ঘিরে;
রঙ্গিল থাকিস্ ইষ্টপ্রাণে
স্বার্থে তাঁহার প্রতিষ্ঠাতে,
ণত্ব-জ্ঞানের হবেই উদয়
ঝলসে যাবে জগৎ তা’তে। ১১২।
#ব্যবহার
#Anusruti_part_1
#অনুশ্রুতি_প্রথম_খণ্ড
#অনুশ্রুতি_১ম
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
#শ্রীশ্রীঠাকুর_অনুকূলচন্দ্ৰ
🪔 https://www.amritokatha.in/ 🪔 👈
Telelegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokatha.in1
10