🔷 হজরত বুদ্ধের মধ্যে পার্থক্য করে **
🔷ঋষির নামে বিশ্ববিদ্যালয় **
🔷ইষ্টভৃতিতে যাজন হয় ** motor part ( শিল্পী - অঙ্গ ) এবং দৈব হ'লাে sensory part ( অনুভূতি - অঙ্গ ).... অর্থাৎ কতকগুলি অজানা জানা হয়ে আসে ;
২৪ শে মাঘ , বুধবার , ১৩৪৬ ( ইং ৭/২/১৯৪০ ) 👇
বাঁধের ধারে তালুতে ব'সে শ্রীশ্রীঠাকুর এক মৌলভী সাহেবের সঙ্গে বিকালে আলাপ করছিলেন । পূর্ববর্তী ও পরবত্তীদের কথা রসুল কত ক'রে ব'লে গেছেন — এমন কি বলেছেন শুনেছি , এত prophet ( প্রেরিতপুরুষ ) আসবেন , যাদের সবার নাম দেওয়া সম্ভব নয় । এও নাকি বলেছেন — যে প্রেরিতপুরুষদের মধ্যে প্রভেদ করে এবং একজনকে ছােট করে আর - একজনকে বড় করতে চায় সেই কাফের । বাপের হয়তো পাঁচ ছেলে আছে — তাদের একজনকে বাপের ছেলে বলে সম্মান দিলে , অন্যদের তার ছেলে বলে স্বীকারই করলে না , এতে বাপকেই কি খাটো করা হলোনা? পৌত্রের মধ্যে যদি ঠাকুরদাকে দেখতে না পেলে তবে ঠাকুরদাকেই দেখা হয়নি । পৌত্রের মধ্যে ঠাকুরদা আছেন — পরবত্তীর মধ্যেও পূর্ববত্তী আছেনই । টিকা - টিপনীই সর্বনাশ করে , সােজা কথাটা ঘুরিয়ে বাঁকা করে ফেলে । আদত জিনিসটা বোঝা যায় । সেখানে কোন গরমিল নেই । ব্যাখ্যার কেন্দানিতেই গণ্ডগােলের সৃষ্টি হয় । একদল আছে , তারা খােদাকে মানে কিন্তু রসুলকে মানে না — এমন অসম্ভব কথাও মানুষ কয় ? হজরত রসূল , হজরত ঈশা , হজরত বুদ্ধের মধ্যে অনেকে আবার পার্থক্য করে এর চেয়ে ভুল আর নেই ।
রাত্রিতে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — বাঙ্গলায় যে কয়টা Division ( বিভাগ ) আছে , সেই কয়টা University ( বিশ্ববিদ্যালয় ) হওয়া দয়কার । এক - এক ঋষির নামে এক - একটা University ( বিশ্ববিদ্যালয় ) হবে । তাদের work revive ( কাজ পুনরুদ্ধার ) করা , সেই সম্বন্ধে research ( গবেষণা ) করা , তাদের idea popularise করা ( মত সাধারণের ভিতর প্রচার করা হবে তার প্রধান বৈশিষ্ট্য — অন্যান্য সব বিষয়ও পড়ান হবে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর শুতে যাবার আগে বললেন — আজ ইষ্টভৃতি - সম্বন্ধে আট দশ টা ছড়া দিয়েছি ।
প্রফুল্ল — আপনি যে movement ( আন্দোলন ) করতে চাচ্ছেন — ইষ্টভৃতি তার একটা মস্ত factor ( উপাদান ) ।
শ্রীশ্রীঠাকুর — মহাভারতের সময়ও নাকি যাজন ও লােকশিক্ষার বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা ছিল ; ঋত্বিক , অধ্বর্য্যূউল্লেখ মহাভারতে পাওয়া যায় শুনেছি ।
প্রফুল্ল — আপনার movement ( আন্দোলন ) -এর সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের move ment ( আন্দোলন ) সবদিক থেকে মেলে , যেন parallel movement ( প্রতিরূপ আন্দোলন ) , politics- এর ( রাজনীতির কথা পর্যন্ত বাদ যায়নি । শ্রীশ্রীঠাকুর — মেলে নাকি ? আমি ইচ্ছে করে কিন্তু কিছুতে হাত দিইনি , সব evolve করছে ( উদ্ভিন্ন হয়েছে ) , কেমন করে যেন এসে পড়ছে ।
১০ ই আষাঢ় , সােমবার , ১৩৪৭ ( ইং ২৪/৬/১৯৪০ )👇
কেষ্টদা ( ভট্টাচাৰ্য ) এবং অন্যান্য সকলে সন্ধ্যায় শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে বসে যুদ্ধের বিষয়ে আলাপ - আলোচনা করছেন । শ্রীশ্রীঠাকুর বাইরে চৌকিতে তাকিয়া ঠেস দিয়ে অদ্ধশায়িত অবস্থায় আছেন । হঠাৎ শ্রীশ্রীঠাকুর বলতে লাগলেন যা আরম্ভ করা হয়েছে যদি propagate ( প্রচার ) করার সময়টুকু পাওয়া যায় , এর মধ্যেই যদি কিছু বিপৰ্যয় না ঘটে তবে এই হয়ে দাড়াবে the world rescue ( জগৎ - উদ্ধারের পথ ) । আর , এটা খুব normal ( স্বাভাবিক ) Utopian ( কাল্পনিক ) কিছু নেই এতে । Bengal ( বাংলা ) যদি একটা unit হয়ে দাড়ায় , Bengal ( বাংলা ) যদি ঠিক হয় , তখন সহজেই আর সব হয়ে যাবে । ভারত এক লহমতেই জগতের গুর হতে পারে ।
এরপর শ্রীশ্রীঠাকুর তামাক খেতে - খেতে কথাবার্তা বলছেন — এমন সময় দূর থেকে শ্ৰীযুত হেম চৌধুরীকে দেখামাত্র চকিতে নল ছেড়ে দিয়ে উঠে দাড়িয়ে তাকে ‘ দাদা ' ব'লে পরম সমাদরে অভ্যর্থনা করে বসলেন । তিনি একখানা চেয়ারে বসার পর নিজে বসলেন ।
১১ ই আষাঢ় , মঙ্গলবার , ১৩৪৭ ( ইং ২৫/৬/১৯৪০ )👇
সকালবেলায় শ্রীশ্রীঠাকুর ছোট ঘরে বসে বলছিলেন — ইষ্টভৃতি জিনিসটা আগে ছিল , স্বস্ত্যয়নী জিনিসটা আমি গুছিয়ে দিয়েছি — স্বস্ত্যয়নীর form ( স্বরুপ ) -টা দিয়েছি , এটা সেদিক থেকে নতুন , আগে থাকলেও বোঝা যেত না। ইষ্টভৃতি ও স্বস্ত্যয়নী যদি করে তবে দেখি , দুই - এক পুরুষে . হয়ে যায় ! দুই - এক পুরুষ পরে বোঝা যাবে ।
ইষ্টভৃতিতে পুরুষকার ও দৈবের যাজন হয় — এর মানে জানতে চাইলে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন — পুরুষকার হলো motor part ( শিল্পী - অঙ্গ ) এবং দৈব হ'লাে sensory part ( অনুভূতি - অঙ্গ ) । ইষ্টের জন্য কতকগুলি করা হ'লে — করার যে accumulated effect ( সঞ্চিত ফল ) তা আমাদের বোধে ধরা দেয় — অর্থাৎ কতকগুলি অজানা জানা হয়ে আসে এর ভিতর - দিয়ে , তার ফলে সেই জান - মাফিক পরে কাজ করতে সুবিধা হয় । ইষ্টানুগ বোধ , অভ্যাস ও প্রেরণা তদনুগ কর্ম্মেই প্রবৃত্ত করে । এইভাবে চলে ।
প্রশ্ন করা হলো — যে - কোন কাজ করা হােক না কেন , তারই তো effect ( ফল ) আছে — শুধু ইষ্টভৃতি কেন ?
শ্রীশ্রীঠাকুর — যাদের কোন principle ( আদর্শ ) নেই — তারা ধরতে পারে না , effect ( ফল ) -টা কাজে লাগাতে পারে না , তাদের experience ( অভিজ্ঞতা ) হয় না । কারণ , প্রবৃত্তি তাদের নাকে দড়ি দিয়ে যখন যেভাবে চালায় , তারা সেইভাবে চলতে বাধ্য হয় । বিচার - বিশ্লেষণ করে সত্তাপােষণী রকমে চলতে পারে না ।
১২ ই আষাঢ় , বুধবার , ১৩৪৭ ( ইং ২৬/৬/১৯৪০ )
শ্রীশ্রীঠাকুর বিকালে Philanthropy office ( সৎসঙ্গ অফিস ) -এ এসে বসেছেন । কয়েকজন মুসলমান ভদ্রলােক town ( সহর ) থেকে এসেছেন । তাদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসা করলেন — আপনার claim ( দাবী ) কী ? Jesus , ' Mohammed ( যীশু , মহম্মদ ) সকলেই তো তাদের claim ( ( দাবী ) জানিয়েছিলেন , আপনার কি তেমন কোন claim ( দাবী ) আছে ? শ্রীশ্রীঠাকুর — আমি claim ( দাবী ) -ফ্লেইম বুঝি না — তিনি যা বলান , করান — তাই বলি , করি । আমি হলাম ঢাকের বায়ার মতাে ।
#Alochona_prosonge_part_1
#আলোচনা_প্রসঙ্গেপ্রথম_খণ্ড
#ষষ্ঠ_সংস্করণ
https://www.amritokatha.in/
Telegram https://t.me/amritokatha
https://www.facebook.com/Amritokathaa
10