বিধি:-
বিধি হ'লো তা'ই-
যে-আচারে সুস্থ জীবন,
থাকে না বালাই। ১।
বিধি ততই বদলালো-
প্রকৃতির কৃতি-করণ
যেথায় যেমন পাল্টালো। ২।
পেতেই যদি চাও-
যা' হ'তে তুমি চা'চ্ছ পেতে
তৃপ্তি ঢেলে দাও। ৩।
প্রাপ্তিই যদি চাও, -
আপন হ'য়ে আপন ক'রে
তৃপ্তি প্রাণে পাও। 81
যে-চাহিদায় যেমন চলন
পাওয়াতেও আসে তেমনি বলন। ৫।
যেমন হবে কৃতি
পাবেও তেমনি মতি। ৬।
যা'কে যেমন মানবে
তা'কে তেমন জানবে। ৭।
আস্থা, কৌশল, চাপ,
তিনই বলের মাপ। ৮।
অগুণ যত বেড়ে চলে,
দরিদ্রতাও ততই ফোলে। ৯।
ভাবের অভাব যেই হ'লো,
অনটনও সেই এলো। ১০।
ভালই কর, মন্দই কর
যে-বিধিতে চ'লে,
তেমনতর ভাল-মন্দ
সেই চলনে ফলে। ১১।
মন্দবুদ্ধি হ'টবে যত
সৎবোধনাও বাড়বে তত। ১২।
কোষ্ঠী ফলে ক'রলে,
ধৰ্ম্ম ফলে ধ'রলে। ১৩।
মান না দিয়ে মান পেতে চায়
অপমানই তা'র পিছে ধায়। ১৪।
না ক'রেও যে মজুরী খায়,
চৌর্য্য-দোষে তা'রে পায়। ১৫।
অপ্রত্যাশায় যেমন দান
দাতাও তেমনি পান প্রতিদান। ১৬।
চল্লি পথে বাধা কিছু
আনেই বিপদ প্রায়-ই পিছু। ১৭।
দেখবি-শুনবি চলবি-ফিরবি
যেখানে যেমন সাজে,
কথায়-কাজে মিল নাই যা'র-
সেটা কিন্তু বাজে। ১৮।
কথায়-কাজে মিল যেখানে
রকমারি বিচরণে,
সেটাই কিন্তু বাস্তবতায়
আসে বেশী নিদর্শনে। ১৯।
মনের হিসাব বোধের সাড়া
চলনায় যা'দের সমান গতি,
চিন্তা-ভাবে প্রয়োজনে
একই যেমন, তেমনি রতি। ২০।
বাস্তবেতে যেমন হবে
বিভবও হবে তেমনি,
ঐশ্বর্য্যের সাথে আধিপত্য এসে
ক'রবে তোমায় সেমনি। ২১।
দূরদর্শী সুচলনে
আপদ-বিপদ্ কমই হয়,
করণীয় সিদ্ধ হ'য়ে
বিভূতিতে দীপ্ত রয়। ২২।
সব বিষয়ে অনুকম্পী
আগ্রহদীপ্ত আবেগ নইলে,
জানাই বল, শোনাই বল,
বোধ-বিপর্যয় ফলেই ফলে। ২৩।
বিপর্যস্ত যে-ধারণা
বিপর্যয় তা' টেনেই আনে,
ধরণ-ধারণ ঠিক রাখিস্ তাই
নইলে থাকবি ভ্রান্ত মনে। ২৪।
ভাব দিয়ে হয় কথার দাম
প্রয়োজনে কড়ি,
চোখের নেশায় কালো-কুৎসিত
হ'য়ে ওঠে পরী;
ভাববৃত্তি যেমন কৃতী
যেমন চলায় যেমন থাকে,
চলায়-বলায় ব্যক্তিত্বকে
ঘুরিয়ে নেয় সে তেমন পাকে;
ধরলি ভাবে যেমনটি যা'
চলনও হবে তেমনি,
ভাল-মন্দ যা'ই হোক না
চলবিও জানিস্ সেমনি;
ভাবটি তোমার অন্তরজোড়া
যেমনতর চ'লবে নেশায়,
চলন-বলন-ফলন তোমার
হবেও কিন্তু তেমনি দিশায়। ২৫।
দেওয়া-থোওয়া অনুচর্য্যায়
ভাববৃত্তি অটুট হয়,
নেওয়ায় কিন্তু বৃত্তি-সেবায়
হয়ই ছিন্ন, পায়ই লয়। ২৬।
লক্ষ্মীদেবীর তিরস্কারেও
শুদ্ধিপথে যে-জন চলে,
সিদ্ধি আসে দীপ্ত প্রভায়
ঐশ্বর্য্য তা'র স্বতঃই ফলে;
ইষ্টানুগ সক্রিয়তার
উদাম চলা থামলো যেই,
লজ্জাশীলা ভাগ্যদেবী
হাত গুটিয়ে বল্লো সেই;
যেমনতর আগ্রহ তোর
কৃতি-অনুরাগে,
ভাগ্যদেবী তেমনি ক'রে
অন্তরে তোর জাগে। ২৭।
শ্রেয়-বন্দনার নন্দনাতে
নন্দিত হয় পরিবেশ,
ধৃতি-কৃতি-চৰ্য্যা সহ
ব্যক্তিত্বেরও হয় উন্মেষ। ২৮।
বলি একটা আসল কথা-
শ্রেষ্ঠনিষ্ঠ চর্য্যারতি,
সেটার গোড়া কাটা গেলেই
কাটা যাবে সব নিরতি। ২৯।
স্বার্থ লাগি' প্রণয়ের ভান
সর্ব্বনাশে টানে,
নিষ্ঠাপ্রতুল প্রেষ্ঠচর্য্যা
লক্ষ্মী ঘরে আনে। ৩০।
চেষ্টা যা'দের নিষ্ঠা-আলোকে
দৃষ্টি দিয়েই চলতে চায়,
ব্যতিক্রম-দুষ্টি তা'দের
রুখতে নারে কৃতি-চলায়। ৩১।
সুকৃতিসহ পুণ্য যখন
দ্বন্দ্বে দীর্ণ হয়,
ত্রাসত্রস্ত পায়ই সে-দেশ
সঙ্কটে বিলয়। ৩২।
কৃতি যখন ধৃতিরই স্থাপক
প্রীতিসুন্দর বাস্তবে,
সত্য তখন শান্তিসহ
সেথায় শুধু সম্ভবে। ৩৩।
ক'রেছ কী, হবেই বা কী
যা' ক'রেছ হ'য়েছ,
সুখ-সুবিধা অসুখ-বিসুখ
তেমনতরই পেয়েছ। ৩৪।
অন্তরেতে বিদ্ধ হ'য়ে
কৃতিকুশল সিদ্ধ যোগে,
যেমনতর যা'ই হয়েছ
পাচ্ছ কিন্তু তেমনি ভোগে। ৩৫।
অন্তর-বিদ্ধ যে-ভাব হ'ল
ফুটলো কাজে-কর্ম্মে,
তা'তেই যে তুই সিদ্ধ হ'লি
এলো জীবন-ধর্ম্মে। ৩৬।
চেষ্টা-যত্ন যেমন তোমার
মানসগতি যেমনতর,
কৃতিমুখর যা'তে তুমি-
হওয়া-পাওয়াও তেমনতর। ৩৭।
দাবীর তোড়ে জোর-জবরে
করেই বিরোধ সৃষ্টি-
কৃতিচর্য্যী অনুকম্পায়
হয়ই সোহাগ বৃষ্টি। ৩৮।
লোভের দায়ে পড়ে পায়ে
কৃতিদীপ্তি নাই কোনো,
নরকও তা'দের উপেক্ষা করে
এমনি বিবশ, ঠিক জেনো। ৩৯।
ভক্তি বনাম আসক্তিতে
চ'লবে ক'রবে যেমন পথে,
ফলও আসবে তেমনতরই
তেমনতর অবস্থাতে। ৪০।
ধরা বিনা করা কি হয়-
করা ছাড়া পায় কোথা?
ধরা-করা-বিহীন পাওয়া
সে-পাওয়ায় নাই সার্থকতা;
করার পথেই হওয়া থাকে
থাকলে কৃতি-নেশা অঢেল,
উচ্ছলাতে উল্লে ওঠে
হয় না অবসাদে ঘায়েল। ৪১।
সুপ্তিই যদি দীপ্তি হয়
ধৃতি তবে কোথায়?
কৃতির সেবা না করিস্ তো
বৃদ্ধি যাবে বৃথায়। ৪২।
সুব্যাভারে শুদ্ধ অন্তর
চর্যায় তৃপ্তি হয় মনের,
সৎ-আচারে ধৃতি বাড়ে
তপে শক্তি বাড়ে প্রাণের। ৪৩।
যে-ওজতে জন্ম তোমার
প্রকৃতিতে তা' থাকেই থাকে,
নিষ্ঠা-চেষ্টা-যত্ন-তপে
শুভর পথে বাড়াও তা'কে। ৪৪।
রণন যেমন বস্তু মতন
নানান ধাঁজে বর্ণিত হয়,
রেত-রণনও তেমনতরই
রজকে তেমনি উচ্ছলয়। ৪৫।
স্বার্থ-স্বার্থ সবাই করে,
স্বার্থসেবা সবাই চায়,
স্বার্থের স্বার্থ নষ্ট ক'রে
আপন স্বার্থ টেকার নয়। ৪৬।
পরের স্বার্থ নষ্ট করাই
তোমার স্বার্থ পায়ে ডলা,-
যা'দের স্বার্থসেবায় হ'ল
অর্থান্বিত তোমার চলা;
পরের ক্ষতি ক'রে কেন
নিজের ক্ষতি আনবি ডেকে?
বান্ধবতার চর্য্যা নিয়ে
প্রীতির সোহাগ আনরে হেঁকে;
আত্মস্বার্থ করতে সিদ্ধ
লোককে বেঁধে কাঠগড়ায়
যা'রাই চলে, ধরলে তা'দের
দুঃখ ফেরে পায়-পায়;
স্বার্থসিদ্ধির প্রীতি তোমার
স্বার্থ লাগি' সব পার',
স্বার্থই যদি অর্থ হ'লো
পরার্থ-ধার কী ধার'?
পরার্থ যদি স্বার্থ হ'তো
স্বার্থ পেতো সলীল গতি,
বিভব তোমার বিভূতি হ'য়ে
রাখতো সতে অটুট মতি। ৪৭।
কষ্ট দিয়ে কা'কেও কিন্তু
হয় না কা'রও শ্রেয়োলাভ,
কষ্ট দিয়ে কষ্টই পায়
সঙ্গে-সঙ্গে বাড়ে বিলাপ। ৪৮।
ফাঁকি দিয়ে আনন্দ যা'র
দুঃখ দিয়েই তৃপ্তি,
আপসোসের অন্তর নিয়ে
শুভচর্য্যায় তা'র ইতি। ৪৯।
অবস্থা ও রকম দেখে
চাহিদা দেখে অন্তরের,
চলিস্ও তুই যেমনি চালে
ফলও পাবি সেই তালের। ৫০।
জানার ধাপে উঠবি যত
সহজ হবে ততই চলা,
সহজ হবে চলন-ফেরন
সহজ হবে বুঝ-বলা। ৫১।
সংশুদ্ধ হ' নিজে আগে
অন্যেও কর্ তেমনি,
পারস্পরিক অনুকম্পা
ফলও দেবে সেমনি। ৫২।
দিগবলয়টা যেমনতর
তোমার কাছে দেখছ যা'-
বলয় থাকলেও অন্যের কাছে
তেমনতর হয়তো না। ৫৩।
ভাবিস্ নে সব সমান হবে
সমান বুদ্ধিমান,
জন্ম-কর্ম্ম যেমন হবে
তেমনি তো আধান। ৫৪।
বিষয়টাকেও ক'রলি বিলীন
কৃতজ্ঞতাও দিলি বিদায়,
গরব-চলায় চ'লতে গিয়ে
হারালি যে চলার উপায়। ৫৫।
অসতের ভেতর থাক যদি
অসৎ হ'য়েই উঠবে,
সতের কাছে অসৎ গেলে
সৎ-পোষণাই জুটবে। ৫৬।
মামার বাড়ী উদাম ঝোঁক
লঙ্ঘি' বাপে, খুড়ো-জ্যাঠায়,
পরিণামে বিচ্ছিন্নতায়
ঋদ্ধি যা' তা' আপনি হারায়। ৫৭।
শ্বশুরবাড়ীর ন্যাওটা হ'য়ে
যে ছেলেরা চলে,
দেখতে পাবে অচিরেতে
অধঃপাতেই ঢলে। ৫৮।
বিপাক আসে কিসে?
যেখানে যেমন চলতে হবে
হারালে তা'র দিশে। ৫৯।
প্রকৃতির যে অনুশাসন
ছিঁড়েকুড়ে, না মেনে তা',
করবি যেটা তাইতে বিপদ্
র'বে না তা'য় সার্থকতা। ৬০।
ইষ্টার্ঘ্যটি গায়েব ক'রে
ধরলি রে তুই যেমন চলন,
বুঝিস্ না কি ঐটি ধ'রে
ব্যাধের মত আসছে শমন?
ইষ্টে বিশ্বাসঘাতী হ'লে
দগ্ধ-বেচাল জীবনখান,
আপদভরা দাউ-দহনে
খাক্ হয়ই সে ধৃষ্টপ্রাণ। ৬১।
পয়সা নিয়ে ইষ্টসেবা
পালন করতে পরিবার,
বোধবিদ্যা নিকাশেই ধায়,
ব্যর্থ জীবন হয়ই তা'র। ৬২।
স্বার্থপোষণ যা'কে দিয়ে
তা'র পোষণে নাই রতি যা'র,
আকাশ ফুঁড়ে দেবতা এলেও
রাখতে নারে জানিস্ তা'র;
খাচ্ছ যাহার, নিচ্ছ যাহার
যা' হ'তে তোমার বর্দ্ধনা,
চর্য্যাতে তা'র মুহ্য হ'লে
থাকবে কোথায় রক্ষণা?
সে-গাছ কভু আর পাবে না
গোড়া কেটে যা'র খাচ্ছ ফল,
পাওয়ার আশা পড়ল ভাটায়
আর কি হবে উজান জল? ৬৩।
আইন-কানুন নীতি-নিষেধ
যাহাই কিছু বল না,
সত্তাধৃতি যা'য় না আনে
বর্দ্ধনাও তা'য় আসে না। ৬৪।
মিথ্যা কিংবা সত্তাখর্ব্বী
আবৃত্তি নিয়ে থাক যদি,
পেয়ে বসবে সেটাও তোমায়
ক্ষয় নিয়েই তো নিরবধি;
বর্দ্ধনায় যে খর্ব্ব করে
আসলেও সে যায় নেমে,
শক্তি তা'দের অবশ, অলস
উদ্দীপনা যায় থেমে। ৬৫।
কাল নিয়ন্তা দেখবি যেথায়
ব্যতিক্রমদুষ্ট উন্নতি,
সম্বোধনাবিহীন চর্য্যা-
দুঃস্থিতিই হয় পরিণতি। ৬৬।
দোষ ও ত্রুটির গান গেয়ে তুই
লোকের হৃদয় ভাঙ্গিস্ না,
হাল-হামেশা করলে এমন
অনুকম্পা পাবি না। ৬৭।
সন্দেহশীল মনটি নিয়ে
চিন্তা-চলন আরো কথা,
আঁচা তোমার হবে না ঠিক
হবে ব্যাহত, হবে বৃথা। ৬৮।
ব্যতিক্রমদুষ্ট মন নিয়ে যা'রা
সাত্বত সংস্কার ভাঙ্গে,
সন্তান-সন্ততিও তেমনি ক'রে
তা'দের রঙেই রঙে। ৬৯।
তোমার সত্তা আহত যেথায়
অন্যেও তা'তে আহত হয়,
সত্তা-হনন অনাচারে
পদে-পদেই কিন্তু ভয়। ৭০।
অলস করায় ব'সে পাওয়ায়
অজ্ঞ-স্থবির বাচক জ্ঞানী,
অপটুত্বে সর্ব্বস্বান্ত
হ'য়ে ওঠে ভাগ্যধ্যানী। ৭১।
হাওয়াবাজি কল্পনাতে
নিশ্চয় ক'রে ধরবি যা'য়,
দুঃখ ছাড়া পাবি নাকো,
বাস্তবে তা'র ঠাঁই কোথায়? ৭২।
ভ্রান্তি জানিস্ ক্লান্তি আনে
ক্রান্তি হারায় নিঝুম হ'য়ে,
দৃষ্টি-আলোক শিষ্ট-পথে
যায় না কিন্তু সহজ ব'য়ে। ৭৩।
নষ্টামি আর পাগলা চালে
চলবি যতই নিত্যদিন,
খর্ব্ব হ'বি, দীর্ণ হ'বি
ক্রমে-ক্রমেই হ'বি হীন। ৭৪।
বাহাদুরির বহন নিয়ে
থাকলে মেতে নিত্যদিন,
জ্ঞান-গবেষণ মুহ্য হবে
ব্যক্তিত্বটাও হবে ক্ষীণ। ৭৫।
শুধু সাহায্যে যতই চলবে
ততই হবে অপটু,
পারার শক্তি পয়মাল হবে
জীবনটাও হবে কটু। ৭৬।
'না' যা'তে হয় সেই চলনে
চললে কি আর হওয়ায় পাবে?
না-এর সাথে সব যা'-কিছু
কোথায় কখন ভেসে যাবে। ৭৭।
অদৃষ্টেরই অন্তরালে ভাববৃত্তিদ্যুতি
ব্যক্তি-ধীকে নাচায় যেমন তালে,
তেমনি নাচে ভর-দুনিয়া
চলে তেমনি চালে। ৭৮।
ধাপ্পাবাজি, জুয়াচুরি
অসৎ পথে চলবি যত,
অদৃষ্ট তোর ভাগ্যদেবী
বিধ্বস্তিতে মজবে তত। ৭৯।
নিষ্ঠাবিহীন শিষ্টাচারে
হয় না কা'রো উন্নতি,
ধাপ্পাবাজির মক্স নিয়ে
না হয় দ্যোতন-সংস্থিতি। ৮০।
করলে অকৃতজ্ঞ ব্যাভার
দুষ্কৃতিই হবে দূষক,
দুষ্কৃতি আর দূরদৃষ্ট
হবেই যেন শাসক। ৮১।
আপন দোষে ভোগে মানুষ
মুখ্যতঃ তা' হয়,
পরের দোষে ভোগে মানুষ
গৌণ ভোগ তা'য় কয়। ৮২।
সুখী হ'তে আসলি ভবে
ঐ কামনা করলি কত,
সুখী কা'কেও করলি নাকো
কাম্য যা' তা' করলি হত। ৮৩।
প্রকৃতি যা'র যেমনতর
জীবন-সম্বেগ যা'র যেমন,
এই দুনিয়ায় সেই মানুষটি
প্রতিষ্ঠাও পায় তেমন। ৮৪।
আগ্রহেরই অন্তরালে
উদ্দেশ্যটি থেকে,
চালায়, বলায়, ঘোরায়, ফেরায়
অদৃষ্টকে ডেকে। ৮৫।
তুই যা' করিস্, ধরিস্ যা' তুই
পাসও তেমনি তাহার ফল,
ঐ তো বিচার ভগবানের-
আকাশে ওঠে সাগর-জল। ৮৬।
ভাল যে-সব ক'রে থাকিস্
অন্তরে যে স্মৃতি পায়,
জীবন-ধৃতিও তেমনি ক'রে
তেমনতরই তা'তে ধায়। ৮৭।
আত্মগৌরব করিস্ নাকো
পরের গৌরব কর্ বেজায়,
ইষ্টানুগ পরচর্যায়
থাকলে থাকে সব বজায়। ৮৮।
ঊর্জ্জনাতে সৎচলনটি
উছল তো'তে যতই হবে,
বিহিতভাবে আগ্রহটা
সার্থকতায় নিয়ে যাবে। ৮৯।
ভজন-বুদ্ধি সবারই আছে
অল্প-বিস্তর যা'র যেমন,
যা' ভজে যে, যেমন ক'রে,
ভাগ্যলিখা তা'র তেমন। ৯০।
দৃপ্ত যদি নাই র'লি তুই
শুভপ্রসূ নিষ্পাদনে,
তৃপ্তি রে তোর আসবে কোথায়-
মুগ্ধ হ'য়ে ভজন-গানে? ৯১।
শ্রদ্ধা যদি থাকতই তোমার
স্বভাবে ফুটে উঠলে তা',
সব বিষয়ের তাল নিয়ে
ব্যক্তিত্বে ফটুত্ সততা। ৯২।
সু-কে যা'রা যেমন ভজে
সেবা-অনুরাগে যত্ন ক'রে,
চর্য্যানিপুণ সদবোধি তখন
সৌভাগ্যকে আনেই ধ'রে। ৯৩।
ধারণ-পালন করিস্ যদি
'সু'কে সমাদরে,
সুধা পাবি, চলবি সুধায়
জীবন ধন্য ক'রে। ৯৪।
শাসন যদি তুষ্টি না দেয়
পোষণ পাবে কোন্ পথে?
তুষ্টি-পুষ্টিই শাসনের ফল
নিষ্ঠা ফোটে যা'য় সৎ-এ। ৯৫।
নিষ্ঠা-উতল আবেগ-আনতি
অনুগতি নিয়ে,
যত্নসহ উদ্ভাবনায়
অর্থ ওঠে জীইয়ে। ৯৬।
আদর ক'রে কেউ যদি দেয়
স্নেহ-সম্ভ্রম-প্রাণে,
তৃপ্তিভরে নিও সেটা
দিও-ও তেমনি টানে। ৯৭।
যে-নিষ্ঠাতেই নিষ্ঠ থাক
ভাব-দেবতা হন রঙিল,
চলবেও তুমি সেই পথেতে
গতিও হবে রূঢ়-সলীল। ৯৮।
নিষ্ঠাবিহীন অনুরতি
ইষ্টে হোক্ বা প্রেষ্ঠেই হোক্,
না থাকলে সেথা নিদেশ-বহন
আনে উচ্ছৃঙ্খল পাগল রোখ। ৯৯।
তৃপ্তি দিলেই তৃপ্তি আসে
ধৃতিচর্য্যায় ধৃতি,
যেমনভাবে যা' করবি তুই
ফলেও তেমনি কৃতি;
তৃপ্তি তুমি পেতে গেলেই
তৃপ্ত কর তাঁ'রেই আগে,
যাঁ'র তৃপণায় তোমার ভিতর
নিটোল হ'য়ে তৃপ্তি জাগে। ১০০।
তা'ই তো ভাল পেলাম যা' তা'
তাঁ'র দয়া যা' দিল,
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
বুঝলি না-দিন গেল। ১০১।
ধন্য যিনি, পুণ্য যিনি
দেখলে তাঁ'কে করলে সেবা,
চললে যে তাঁ'র নিদেশ-মতন
উথলে ওঠে তাঁ'রই বিভা। ১০২।
ইষ্টেতে তোর প্রতিষ্ঠা হ'লে
ফলবে মেওয়া পায়-পায়,
উচ্ছলি' তোর সত্তা ফেঁপে
রিক্ত হবে বেঘোর দায়। ১০৩।
ঈশ্বর সবায় ধ'রেই আছেন
ধারণ-পালন-উৎসবে,
জন্ম যেমন তেমনি হ'য়ে
জীবনবৃদ্ধি-বৈভবে। ১০৪।✅



10