ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নী :-
ইষ্টপোষণ যা’র অবশ
লোহার বাঁধায় সিদ্ধি বিবশ। ১।
ইষ্টভরণ পিতৃপোষণ
পরিস্থিতির উন্নয়ন,
এ না ক’রে যা’ই করিস্ না
অধঃপাতেই তোর চলন। ২।
আত্মরক্ষা-উপকরণে
ইষ্টভরণ করতে হয়,
কর্মশক্তির যা’য় সমাহার
তা’রেই তো কয় পুরুষকার,
পুরুষকারে দৈব যোজন
তা’রেই ইষ্টভৃতি কয়। ৩।
ক্ষিপ্তকুটিল বিষদংশনে
দৈন্য-জীর্ণ জীবন-কৃতি,
পূর্ব্বপুরুষ তবুও ছাড়েনি
দেছে প্রাণ তবু ইষ্টভৃতি;
ক্ষীণ করে ধরি’ দীপ্ত কৃপাণ
যজন-যাজন-ইষ্টপ্রাণ,
কম্পিত দেহ বিহ্বল যদিও
থামেনি জাগাতে জাতির মান;
ওই ওঠে দ্যাখ্ আর্য্যতপন
কৃষ্টি-পূজারী অমিত ভাতি,
তপোবহ্নি-হোমে জাগ দুৰ্দ্দম
শক্তি-পাবক আর্য্যজাতি। ৪।
হ’স্ না যোগী, হ’স্ না ধ্যানী,
গোঁসাই-গোবিন্দ যা’ই না হ’স্,
যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি
না করলে তুই কিছুই ন’স্ । ৫।
দীক্ষা নিলে জানিস্ মনে
ইষ্টভৃতি করতেই হয়,
ইষ্টভৃতি-বিহীন দীক্ষা
কভু কি রে চেতন রয়? ৬।
দিন-গুজরানী আয় থেকে কর্
ইষ্টভৃতি আহরণ,
জলগ্রহণের পূর্ব্বেই তা’
করিস্ ইষ্টে নিবেদন;
নিত্য এমনি নিয়মিত
যেমন পারিস্ করেই যা,
মাসটি যবে শেষ হবে তুই
ইষ্টস্থানে পাঠাস্ তা’;
ইষ্টস্থানে পাঠিয়ে দিয়ে
আরো দুটি ভুজ্যি রাখিস্,
গুরুভাই বা গুরুজনের
দু’জনাকে সেইটি দিস্;
পাড়া-পড়শীর সেবার কাজে
রাখিস্ কিন্তু কিছু আরো,
উপযুক্ত আপদ্গ্রস্তে
দিতেই হবে যেটুক পার;
এ-সবগুলির আচরণে
ইষ্টভৃতি নিখুঁত হয়-
এ না করে ইষ্টভৃতি
জানিস্ কিন্তু পূর্ণ নয়। ৭।
শ্রেয়-প্রেয়-ইপ্সতেরে
সেবার দীপন রাগে,
আগ্রহাতুর সন্দীপনায়
রঙ্গিল-প্রীতির ফাগে;
শরীর-মনের যুক্ত নিবেশ
তৎপরতার সাথে,
আহরণে নিত্য-নবীন
অর্ঘ্য দিয়ে তাঁ’তে;
সার্থকতায় মন-মগজে
স্থিতির অভ্যুদয়,
আপৎকালে প্রতিক্রিয়ায়
করেই আপদ ক্ষয়;
উদ্বর্দ্ধনে সন্দীপনায়
তুলেই ধরে গৌরবে,
নিপাত করি’ শতেক ব্যাঘাত
ব্যর্থ ক’রে রৌরবে;
এ অভ্যাসে অভ্যস্ত যে
সামর্থ্যী-যোগ পায়,
ইষ্টভৃতির তুকই ঐ
ব্যর্থ ব্যাঘাত তা’য়। ৮।
যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি
মহান্ ভয়ে তরার নীতি। ৯।
যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি
করলে কাটে মহাভীতি। ১০।
যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি
তিনটি আয়ুধ ল’য়ে,
চল্ রে চ’লে আর্য্য ছেলে
জীবনপথটি ব’য়ে। ১১।
জপধ্যান মনে-মনে
সেবায়-মুখে যাজন,
যা’ই করিস্ না করিস্ রে তুই
ইষ্টভৃতি পালন;
দুঃখ-দৈন্য আপদ-বিপদ
যখনই যা’ আসুক,
দেখিস কেমন যাবেই উবে
যত যাই না থাকুক। ১২।
বিপদ-আপদ বেড়াজালে
শক্তিই যদি পেতে চাস্,
শ্রদ্ধাভরে ইষ্টভৃতি
নিত্য পালিস্ কাটবে পাশ;
নিত্য করিস্ ইষ্টভৃতি
প্রাণপণে যা’ পারিস্,
দৈনন্দিন এই করাটাই
আনবে ব’য়ে আশিস্;
ধৰ্ম্ম-কর্ম যতই করিস্
ইষ্টভৃতি ফেলে,
সবই জানিস্ হ’ল ব্যর্থ
ওরে আর্য্য ছেলে। ১৩।
সব চেয়ে তোর বড় ধন্দা
ইষ্টভৃতি হ’লে,
তখন থেকেই দেখতে পাবি
জীবন কেমন ফলে। ১৪।
ইষ্টধন্দার তুক্ কী জানিস্?
ইষ্টভৃতি পালা,
এই তুকেরই খাঁটি পালা’য়
জুড়োয় অযুত জ্বালা। ১৫।
ইষ্টভৃতির ধান্ধাই যদি
মাথায় মজুত রইল না,
লক্ষ টাকা করলেও দান
ধৰ্ম্ম তোরে বইল না। ১৬।
লাখ চাহিদার খোরাক জোগাস্
ওই দশাতেই নিত্যদিন,
প্রেষ্ঠে দিতে থমকে গেলি
দেওয়ার বুক এমনি ক্ষীণ। ১৭।
ইষ্টভৃতির ভোজ্যই রীতি
অনুকল্পে জোটে যা’,
বিনিময়ে ভোজ্য মেলে
এমনি দিয়ে রাখিস্ তা’। ১৮।
যতই আসুক আপদ-বিপদ
যেমনই হোক প্রাণ-,
ইষ্টভৃতি আনেই আনে
সবার পরিত্রাণ। ১৯।
দৈনন্দিন আহার যেমন
ইষ্টভৃতি রাখিস্ তেমন,
এইটিই জানিস্ নেহাৎ কম
এরও কমে কি নয় বিষম?
পারলে কমে যাসই না
কপটব্রতী হ’স্ই না। ২০।
জীবন যদি যায়ই রে তোর
ইষ্টভৃতি ছাড়িস্ না,
ধৰ্ম্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষের
ঐ নিশানা ভুলিস্ না। ২১।
ইষ্টভৃতির অপব্যয়ে
সেই প্রবৃত্তির বাড়বে ঝোঁক্,
কোন্ আপদে ফেলবে তোকে
রোখাই কঠিন হবে রোখ। ২২।
ভিক্ষা করেও ইষ্টভৃতি
করলে আর্য্যছেলে,
অযুত তীর্থ পর্যটনের
ফল তাহাতে মেলে। ২৩।
সামর্থ্যে ক’রে অপলাপ
করলে ভিক্ষা হয় রে পাপ,
ভিক্ষা করা ইষ্টভৃতি
হীনসামর্থী অধম নীতি। ২৪।
নিজের যেমন ভাল-মন্দ
সুখ-সুবিধায় মন,
তেমনতরই ইষ্টভাইকেও
করিস্ সুযতন;
ওতে জানিস্ ইষ্টপ্রীতি
বাড়েই অনুক্ষণ-
ইষ্টভ্রাতার অনুরাগে
তোলেই জীবন-মন। ২৫।
ইষ্টভৃতির ভ্রাতৃভোজ্য
অশ্রদ্ধাতে দেয় যে,
ইতোভ্রষ্ট-স্ততোনষ্ট
অবিলম্বেই হয় সে। ২৬।
ইষ্টভৃতির ভ্রাতৃভোজ্য
অবজ্ঞা ক’রে নেয় না,
পায়ে লক্ষ্মী সেই তো ঠেলে
নারায়ণে চায় না। ২৭।
ইষ্টভৃতি ইষ্টকেই দিস্
করিস্ না তাঁ’য় বঞ্চনা,
অন্যকে তা’ দিলেই জানিস্
আসবে বিপাক-গঞ্জনা। ২৮।
তোল্ ওরে তোল্ মন্থনী রোল
যাজন-সেবায় ইষ্টভৃতি,
ফেনিলস্নিগ্ধ অমর সুধায়
সার্থকি তোল আর্য্য-ঋতি। ২৯।
কালবোশেখী জলদ কালোর
ঝিলিক হারটি গলায়
ঝড়-বাহনে চলছে মেঘের
এলো-মেলো নাচদোলায়,
তপের আগুন জ্বাল্ এখনই
সর্ব্বশিবের মিলন কর্,
জীবনবৃদ্ধি অমোঘ মন্ত্রে
অযুত বেতাল সামলে ধর্,
ইষ্টস্বার্থী যাজন-সেবায়
আন্ রে ঝঞ্ঝা আগুন রাগ,
বল্ ওরে বল্ বিষাণ-রাবে
ইষ্টভৃতি রাখ সজাগ। ৩০।
ইষ্টভরণ ধান্ধা যাহার
মগজ থাকে জুড়ে’,
সব প্রবৃত্তি ইষ্টার্থে তা’র
বিনিয়ে ওঠে ফুঁড়ে’;
সমাহারী দীপ্ত নেশায়
কৰ্ম্ম-সন্দীপনা
ঐ আবেগে অটুট হ’য়ে
আনে সম্বর্দ্ধনা;
স্থবির স্নায়ুর স্বস্থ-টানে
চলৎ স্নায়ুর গতি
সংবেদনার সংক্রমণে
দেয়ই সাড়ায় নতি;
আত্মম্ভরি দরিদ্রতা
অলস ঠুনকো মান
অমনি নেশার ক্রমোৎকর্ষে
লভেই তেমনি ত্রাণ;
সংগ্রাহী তা’র এমনি আবেগ
শক্তি-সরঞ্জামে,
বুদ্ধি-সহ কুশলতায়
আপৎকালে নামে;
ওড়ে বিপদ ছাইয়ের মতন
ঝলক দীপন রাগে
সম্পদে সে অটুট চলে
ইষ্ট-অনুরাগে। ৩১।
বাঁচা-বাড়ার চাস্ যদি বর
নিখুঁতভাবে স্বস্ত্যয়নী ধর্,
আপদ-বিপদ দরিদ্রতা
যতই আসুক কাটবেই তা’,
সুখ-সমৃদ্ধি দিন-দিন
উঠবে ফুটে হ’য়ে নবীন,
আয়ুটারও হ’য়ে আয়
সম্ভব যা’ তা’ পাবি তা’য়;
শ্রীবিগ্রহের মন্দির ভেবে
যত্ন করিস্ শরীরটাকে,
সহনপটু সুস্থ রাখিস্
বিধিমাফিক পালিস্ তা’কে;
প্রবৃত্তি তোর যখন যেমন
যেভাবেই উঁকি মারুক,
ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাতে ঘুরিয়ে দিবি
তা’র সে ঝোঁক;
যে-কাজে যা’ ভাল ব’লে
আসবে মনে তৎক্ষণাৎ
হাতে-কলমে করবি রে তা’
রোধ করে তা’র সব ব্যাঘাত;
পাড়াপড়শীর বাঁচা-বাড়ায়
রাখিস্ রে তুই স্বার্থটান,
তা’দের ভাল’য় চেতিয়ে তুলিস্
ইষ্টানুগ ক’রে প্রাণ;
নিজের সেবার আগে রোজই
শক্তি-মত যেমন পারিস্,
ইষ্ট-অর্ঘ্য ভক্তিভরে
শুচিতে নিবেদন করিস্;
এই নিয়মে নিত্যদিন
প্রতি কাজেই সর্ব্বক্ষণ
স্বস্ত্যয়নীর নিয়মগুলি
পালিস্ দিয়ে অটুট মন;
ত্রিশটি দিন পূরে গেলে
মাসিক অর্ঘ্য সদক্ষিণায়
ইষ্টভোজ্য পাঠিয়ে, বাকি
মজুত রাখবি বর্দ্ধনায়;
চিরজীবন এমনি ক’রে
ইষ্টস্থানে হয় নিরত,
তা’কেই বলে স্বস্ত্যয়নী
সবার সেরা মহান ব্রত। ৩২।
যত পারিস্ নিত্য রাখিস্
ইষ্টনেশায় করে ভর,
স্বস্ত্যয়নীর এই নিয়মের
থাকিস্ কড়া অনুচর;
কড়ি গুণে হিসাব ক’রে
করিস্ না রে নিবেদন,
যেদিন যেমন প্রাণ চায় তাই
করতে থাকিস্ উৎসর্জ্জন;
অর্থ কতই পড়বে জমা
দেখতে-দেখতে কত হয়,
এই নিয়মে চ’লেই দেখিস্
স্বস্ত্যয়নীর দিগ্বিজয়। ৩৩।
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচ পাঁতি
চরিত্রেতে রাখ গাঁথি,’
প্রতি কথা ব্যবহারে
দীপ্ত করে তোল্ তা’রে;
এমনি যদি চলতে পারিস্
জীবনটা তুই দেখেই নিস্,
দুঃখ-আঘাত-অভিঘাত
যতই কেন করুক উৎপাত
তোর চলনা চলতেই র’বে
এতে অন্য নাহি হবে। ৩৪।
স্বস্ত্যয়নী নিয়েই যদি
আগের করা দুষ্কর্ম
পেয়েই ধরে হুমকি দিয়ে
করতে চায় হতভম্ব,
আগলভাঙ্গা বুকের জোরে
স্বস্ত্যয়নী ধরিস্ কষে,
তুকে-তাকে দেখিস্ কেমন
আপদ-বিপদ যাবেই ধ্ব’সে। ৩৫।
পুরুষকার আর দৈবমিলন
ইষ্টভৃতে হয়,
উন্নয়নের অদম চলায়
স্বস্ত্যয়নী বয়;
ঈশানদেবের শক্ত মেয়ে
ঐ রে স্বস্ত্যয়নী,
ওর পূজোতে ধৰ্ম্ম
বাঁধা আপদ-বিমৰ্দ্দনী। ৩৬।
ঐ অদূরে মানসচক্ষে
দ্যাখ দাঁড়িয়ে স্বস্ত্যয়নী,
ত্রিশূল-মাথায় বজ্র আগুন
রুদ্র হাসে দৈন্যঘ্নানী;
পাঁচটি আয়ুধ মন্ত্রতেজে
চকমকে ঐ অঙ্কে গোঁজা,
অমর-করা বর-অভয়
দৈন্যবিষের পুণ্য ওঝা;
এখনও তোর সময় আছে
ওঠ রে মেতে স্বস্তিগানে,
মায়ের পূজোয় বুক বেঁধে নে
স্বস্ত্যয়নী নাচুক প্রাণে। ৩৭।
যে-ই যত বড় হোক না কেন
ভর দুনিয়ার মাঝে,
যেমন ক’রেই হোক জানিস্ তা’য়
স্বস্ত্যয়নীই আছে। ৩৮।
সুচলনার একটিই পথ
ওই স্বস্ত্যয়নী,
নিখুঁতভাবে চলবি যত
শ্রেষ্ঠ-উদ্দীপনী। ৩৯।
স্বস্ত্যয়নী যে-জন করে
জীবন-বৃদ্ধি তা’রেই ধরে-
ধৰ্ম্ম থাকে বাহন হ’য়ে তা’র,
বাঁচা-বাড়া উন্নয়নে
মহাজ্যোতি-বিকিরণে
অন্তরায়ে করেই চুরমার। ৪০।
যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি
স্বস্ত্যয়নীর প্রথম ধাপ,
ও না করলে স্বস্ত্যয়নীর
হয়ই জানিস্ অপলাপ। ৪১।
ইষ্টভৃতি অটুট ধরি’
স্বস্ত্যয়নী কর্ সাধন,
ছুটবে আপদ-বিপদ যত
কাটবে রে তোর সব বাঁধন। ৪২।
ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নী
সাধু সহজ যা’র,
যে-কাজেতেই থাক্ না সে-জন
দক্ষ জীবন তা’র। ৪৩।
ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নী
সহজ হয়নি যা’র,
ক্ষীণ-সম্বেগী সে মানুষ
ব্যর্থতায় চুরমার। ৪৪ ।
স্বস্ত্যযনীর নিখুঁত পালা’য়
জীবন ফেঁপে ওঠে,
বংশক্রমে লক্ষ্মী বাড়ে
হাভাত যায় রে টুটে। ৪৫।
দারিদ্র্যে আর দুর্বিপাকে
যতই না হোক লাঞ্ছনা,
নিখুঁতভাবে করতে থাক্ তুই
স্বস্ত্যয়নীর সাধনা;
আপদ-বিপদ গ’লে গিয়ে
দেখিস্ সুফল আনবে ডাকি,’
পরাক্রমটি উঠবে ফুটে
সুসম্ভারে সকল ঢাকি’। ৪৬।
যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি
সহ স্বস্ত্যয়নী নিলে,
ঐ সাধনে ধীরে-ধীরে
পুরুষার্থ যাবে মিলে;
স্বস্ত্যয়নী স্বভাব-প্রাণে
ইষ্টভৃতির অটুট পালন,
জীবন ফলে ফুল্লরোলে
শক্তিরও হয় প্রখর চলন। ৪৭।
বেকার-ভরা জাতটা যদি
দক্ষ ক’রেই তুলতে চাস্,
অথামবেগে স্বস্ত্যয়নী
যত পারিস্ বিলিয়ে যাস্;
অর্থনীতির গড়গড়ি তোর
যতই করুক স্পর্দ্ধনা,
স্বস্ত্যয়নী বিনা জানিস্
হবে না দেশের বর্দ্ধনা। ৪৮।
স্বস্ত্যয়নীর ইষ্টোত্তর
পালবে জন-জাতটা তোর,
ইষ্টোত্তর বাড়বে যত
জনউন্নত হবেই তত,
দেশে হাভাত থাকবে না
আলসে-কুঁড়ে রইবে না। ৪৯।
স্বস্ত্যয়নী মুক্তি আনে
রাষ্ট্র সহ প্রতি প্রাণে। ৫০।
স্বস্ত্যয়নী ইষ্টভৃতি
বিপাকতারণ বজ্রনীতি। ৫১।
আহার্য্য আর উপভোগের
আহরণ হ’তে ইষ্টভৃতি,
পারিবারিক সংস্থান থেকে
স্বস্ত্যয়নী করাই রীতি। ৫২।
দৈন্যঘাতী জীবনপ্রভা
চকমকিয়ে দুলিয়ে তোল্,
অটুট রাখি’ অবাধে চল্
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচটি বোল। ৫৩।
ঋদ্ধ অমর বীর্য্যতপায়
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচটি তাল,
ধর্ রে রুখে ঝঞ্ঝাবেগে
দৈন্যঘ্নী ঐ স্বস্তিঢাল। ৫৪।
অপটু-উপায়ী অক্ষম যা’রা
ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নী,
তৃপ্তিদীপী যাজন-ভিক্ষায়
করলেও তা’ উন্নয়নী। ৫৫।
ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নীর
ভিক্ষা করতে হ’লেই বুঝিস্,
যাজনসেবায় ভিক্ষাটিকে
পূরণ করতে হবেই জানিস্ । ৫৬।
আহার-উপভোগে আহরণ করে
ইষ্টের বেলায় ভিক্ষা,
সেবাবিমুখ ভিক্ষা জীবী
এমনি যা’দের শিক্ষা,
সামর্থ্যে করি’ অপলাপ
অলস-কর্ম্মী পরভুক,
ঠকিয়ে পাবার ফন্দিবাজী
তা’তেই পটু মারতে তুক,
ইষ্টভৃতি-স্বস্ত্যয়নী
ভিক্ষা ক’রেই সারতে চায়,
হামেসা ভিক্ষা এমন জনায়
দিলে কিন্তু পাপেই ধায়। ৫৭।
পারগতায় ফাঁকি দিয়ে
ইষ্টভৃতি-স্বস্ত্যয়নীর
পন্থা থাকতেও ভিক্ষা করা-
খোরাক ওটা দৈন্যব্যাধির। ৫৮।
পাঞ্চজন্যে স্বস্ত্যয়নী
উঠল বেজে অমর বুকে,
জৃম্ভি’ জীবন বৃদ্ধিতপায়
তৎসৎ ওঁ উঠছে ফুঁকে। ৫৯।
কেশরফোলা সিংহগ্রীবা
আর্য্যদ্বিজ দীপ্ত প্রাণ
স্বস্ত্যয়নী শস্ত্র নিয়ে
দৈন্যে বিদ্ধ কর্ রে বাণ। ৬০।
শ্রেষ্ঠোপচারে ভোজ্য কিংবা
অনুকল্পে অর্থ তা’র,
নিবেদনই স্বস্ত্যয়নীর
অনুষ্ঠানটি জানিস্ সার;
যেমন জনের যে-ক্ষমতা
তা’রই শ্রেষ্ঠ আহরণ,
করাই হ’চ্ছে স্বস্ত্যয়নীর
আসল অটুট উৎসর্জন;
এর বিকল্পে যখন যেমন
হবে জানিস্ সংস্থিতি,
তা’তেই পালিস্ স্বস্ত্যয়নীর
অনুষ্ঠানী ভিন্নীতি। ৬১।
ঝমঝমিয়ে দক্ষ তালে
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচ বিধি,
রিমি-রিমি থাকবি চলায়
নিত্য পালি’ ঐ নীতি,
ধৰ্ম্ম পাবি অর্থ পাবি
কাম-মোক্ষ হবে দাস,
বাঁচবি রে তুই, বাড়বে জাতি
দুর্ব্বিপাকের কাটবি ফাঁস। ৬২।
স্বস্ত্যয়নী পালে না
উন্নতিতে চলে না। ৬৩।
যেমন গ্রহই থাক্ না রে তোর
গ্রহের ফেরে পড়বি কম,
থাকতে আয়ু ঘা’ল হ’বি না
থাকিস স্বস্ত্যয়নীক্ষম। ৬৪।
দারিদ্র্যব্যাধি করতে রে দূর
স্বস্ত্যয়নীই অস্ত্র,
জাতির আঘাত-অপনোদনে
ঐটিই মহাশস্ত্র। ৬৫।
জীবন-বীমা স্বস্ত্যয়নী
জাতের বীমাও ওই,
স্বস্ত্যয়নী-অবজ্ঞাতে
কিসে পাবি তুই থই?
লেন-দেন হ’তে উপচে রাখার
সঙ্গতি যা’তে হয়,
অর্থনীতির চুমকী তুকটি
ওর সমাধানে রয়;
তাইতো বলি বাতুল পাণ্ডা
স্বস্ত্যয়নীই ধর্,
নিজে বাঁচ্ আর দেশটা বাঁচা
ধরিস্ নে আর পর। ৬৬।
যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি
ধ’রেই ধর্মপথে চল্,
স্বস্ত্যয়নী জীবন-যুদ্ধে
অস্ত্র কর্-বাড়বে বল। ৬৭।
আর কিছু যদি নাও করিস্
স্বস্ত্যয়নী রাখ্ অচল,
সর্ব্ব নীতি পূজবে তোরে
পাবিই বুকে অযুত বল। ৬৮।
যা’ করেই বেড়াস্ না তুই
ভাবনা কি রে তোর?
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচটি নীতি
পালিস্ জীবনভোর। ৬৯।
শোন্ রে আর্য্য ছেলেমেয়ে
শক্তি যদি চাহিস্,
যেমন পারিস্ সারাজীবন
স্বস্ত্যয়নী পালিস। ৭০।
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচটি নীতির
যেটি পালন করছ না,
সেইটি জেনো বিপাক পথে
আনতে পারে লাঞ্ছনা। ৭১।
যত ব্রতই করিস্ না তুই
সেরা স্বস্ত্যয়নী,
করতে-করতেই দেখতে পাবি
উন্নয়নের খনি। ৭২।
অনটনে যদিও থাকিস্,
ভিক্ষাতেও স্বস্ত্যয়নী রাখিস্,
এরই ফলে দেখতে পাবে
ক্রমেই সম্পদ ফেঁপে যাবে;
প্রশ্নশূন্য অটুট ঝোঁকে
আমার কথা পেলেই দেখিস্ । ৭৩।
সমাজ-রাষ্ট্রে স্বস্ত্যয়নী
যতই বেশি পালবে,
স্বাবলম্বে আসবে স্বরাজ
স্বাধীনতা মিলবে। ৭৪।
10